অর্ণব চৌধুরী

কুয়াশা

 


চাদর জড়িয়ে কেউ ঢেকে নিচ্ছে সমস্ত কুয়াশা
তুমি তার আস্তিনের ভিতরে যে নীল মজলিস
নৌকার শরীর ভেবে ভাসিয়ে দিয়েছ জল রঙে

একদিন ফুটে ওঠা আলোর কুহরে দেখো, ছবি
দিনান্তের শেষ সন্ধ্যা, ক্রমান্বয়ে বিলীন ছায়ায়
ঝরা পাতাদের মতো ঝুপ করে সরে যাবে দূরে
আর বিদ্যুতের আভা ফুটে উঠবে চোখের দুপাশে


অথচ মেঘের নীচে কতকাল দাঁড়িয়ে রয়েছি
এই বুঝি এসে পড়বে হাতে মৃত প্রজাপতির প্রাণ
নিখুঁত কুঁড়ির মতো সুর ভরে জেগে উঠবে বুক
এই জন্মভরা সন্ধ্যা, উদাসীন পতঙ্গের গান


আনন্দ হারানো সুর, তারকাটা নিয়মের মতো
যখন নিঃশব্দে ধরে হাত, শুরু হয় প্রবঞ্চক দিন
কারা যেন হাততালি দিতে দিতে চলে যায় দূরে

আমরা অন্ধ সংশয়ের নিচে শুয়ে পড়ি
মাথার ওপর এই সুবিশাল মহাকাশ, শিশিরের স্তব্ধ কণা
জমে ওঠে তোমার দুপাশে
কন্ঠ বেয়ে নেমে যায় আলোর প্রকাশ


কুয়াশার কুণ্ড ভেঙে ছুটে আসছে হাওয়ার জাহাজ
বারান্দার পাশে এই ক্ষীণকায় জানলায় জড়সড় আমি
খানিক এগিয়ে যাই, অস্পষ্ট কাঁচের ফাঁকে দগ্ধ গৃহস্বামী
ঝেড়ে ফেলছে গুল্ম ঘাস, পোড়া গাছেদের নীল নিঃশ্বাসের ঝাঁঝ

কত না সহজ এই দীর্ঘ বছরের বাঁচা– উল্লাস, অভয়
খুলে খুলে যাচ্ছে শুধু, আমরা তার দুইদিকে চুপিসারে
অপস্বপ্ন রেখে যাব ভাবতে ভাবতে হাত পাতি, তখুনি নিঃসাড়ে
অদ্ভুত সত্যের মতো সমস্ত বিলীন, আর যা নিরভিনয়

সে সব কুড়োতে গিয়ে দেখি, জ্বলজ্বলে মুক্ত মেঝের ওপর
প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পড়ে আছে, দূরে কুকুরের চিৎকারে
উদ্ভট শুনশান পাড়া সামনে তখন ; শেষ প্রহর ভেঙেচুরে
তারপর সব কালো, পোড়া গোল ছাই, পড়ে থাকে অবিনশ্বর

এভাবেই গল্প শেষ, তবু শুনি ওদের গলায়
গতকাল রাত্রে নাকি জাহাজ নোঙর করেছিল জানালায়

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4593 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...