Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

নয়া সংরক্ষণ বিল ও ভবদুলালের না-লেখা বই : কিছু কথা

দেবব্রত শ্যামরায়

 

দিল্লির হাড়-কাঁপানো শীতে, জানুয়ারি মাসের আট ও নয় তারিখ আমাদের দেশের আইনসভার দুই কক্ষে সংবিধানের ১২৪ তম সংশোধনী বিল প্রভূত শীতলতার সাথেই গৃহীত হল।

হ্যাঁ, শীতলতাই বলব, কারণ শাসক ও বিরোধী দুজনেই এই বিল পাস করানোর ব্যাপারে প্রায় বিতর্কহীন ও একমত ছিল। আট তারিখ লোকসভায় মাত্র চার ঘণ্টার বক্তব্য-প্রতিবক্তব্যের পর এই বিলের স্বপক্ষে ভোট পড়ল ৩২৩টি, বিপক্ষে মাত্র তিন। পরের দিন রাজ্যসভায়, যেখানে শাসক দল বিজেপির গরিষ্ঠতা নেই, সেখানেও দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে (স্বপক্ষে ১৬৫, বিপক্ষে ৭) পাস হয়ে গেল বিলটি। অর্থাৎ যে বিল ভারতের সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বুনিয়াদি ধাঁচকে ভেঙেচুরে সম্পূর্ণ বিপরীত পথে নিয়ে গেল, দু’দিনে তার বিরোধিতা করলেন সাকুল্যে দশজন সাংসদ। বিলটির বিরুদ্ধে এই সাংসদদের ব্যক্তিগত মত বা দলগত অ্যাজেন্ডা যা-ই থাকুক না কেন, ইতিহাস সত্যবাদী হলে একদিন এই দশ বিরোধীর খোঁজ পড়বে। সদর্থে।

কী এমন রয়েছে এই সংশোধনী বিলে? এক ঝলক দেখে নেওয়া যাক।

১। ভারতীয় সংবিধানের ১২৪তম সংশোধনী বিলটি সমাজের সাধারণ শ্রেণিভুক্ত জনসাধারণের আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশের জন্য শিক্ষা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করছে।

২। শিডিউলড কাস্ট, শিডিউলড ট্রাইব ও অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণি বা ওবিসি-দের বাদ দিয়ে বাকি জেনারেল কাস্ট-ভুক্ত দরিদ্র নাগরিকদের জন্য এই সংরক্ষণ লাগু হবে। অর্থাৎ জেনারেল কাস্ট-ভুক্ত হিন্দু যেমন ব্রাহ্মণ, জাঠ, মারাঠা, গুজ্জর, ভূমিহার ছাড়াও মুসলিম, খ্রিস্টান ইত্যাদি অন্য ধর্মের উচ্চবর্ণ ভারতীয় নাগরিকই এই সংরক্ষণের সুবিধা পেতে পারেন। প্রসঙ্গত, ‘উচ্চবর্ণ’ শব্দটির উল্লেখ এই বিলে নেই, কিন্তু জনসংখ্যার বিচারে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের কথা ধরলে শূদ্রদের বাদ দিলে বাকি তিন ‘জেনারেল কাস্ট’ উচ্চবর্ণ তো বটেই।

৩। এই নতুন সংশোধন সংবিধানে ১৫ ও ১৬ নং পরিচ্ছেদ যেখানে শুধুমাত্র জাতভিত্তিক সংরক্ষণের উল্লেখ আছে, সেখানে ‘আর্থিকভাবে অনগ্রসর’ অংশকে শিক্ষাক্ষেত্রে ও সরকারি চাকুরিক্ষেত্রে সংরক্ষণ দেওয়ার কথা সংযোজিত করা হল।

প্রশ্ন, এইসব আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া নাগরিক নির্বাচনের মানদণ্ড কী হবে? বিলে এর উল্লেখ নেই। অথচ একই সঙ্গে সবক’টি প্রধান সংবাদমাধ্যমে কোনও এক অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী (পড়ুন বিজেপির দলীয় প্রচার অনুযায়ী) দরিদ্র হওয়ার জন্য ‘যোগ্যতামান’-এর যে উল্লেখ পাচ্ছি, তা এইরকম—

এই সংরক্ষণের আওতায় আসতে হলে ব্যক্তির আয় বছর ৮ লক্ষ টাকার কম হতে হবে, অধিকৃত চাষের জমির পরিমাণ ৫ একরের বেশি হলে চলবে না, বাসগৃহের মাপ হাজার বর্গফুটের কম হতে হবে, বসবাসের জমির পরিমাণ নোটিফায়েড বা বিশেষ তালিকাভুক্ত পৌর এলাকায় ১০৯ বর্গগজের বেশি হওয়া চলবে না, নন-নোটিফায়েড পৌর এলাকায় সেই মাপ ২০৯ বর্গগজের বেশি হওয়া চলবে না।

বেশ কথা। এবারে একটা সোজাসাপ্টা প্রশ্ন উঠতেই পারে, বস্তুত ওঠাই উচিত, যে এমন একটি কল্যাণকর বিল যা অদ্যাবধি সংরক্ষিত নিম্নবর্গের কোনও ক্ষতি না করে সর্বধর্মনির্বিশেষে সমাজের অন্য ও বৃহত্তর অংশের আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া নাগরিকদের সংরক্ষণের আওতায় আনছে, তাতে উষ্মা বা বিরোধিতারই বা কী আছে?

সেই প্রশ্নে যাওয়ার আগে এই বিল নিয়ে যে খুচরো সমস্যাগুলি আছে, যা যথাক্রমে আইনি ও টেকনিকাল, অর্থাৎ প্রয়োগগত, সেগুলো বলে ফেলা যাক।

প্রথমত, ১৯৯১ সালে নরসিমা রাও সরকার ‘এসসি, এসটি, এবং ওবিসি বাদে সমাজের অন্যান্য শ্রেণির আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্য ১০% সংরক্ষণ’ অর্থাৎ এই একই আইন পাস করিয়ে নিতে  চেয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক দু’বছর পর ‘ইন্দ্র সাহনি ও অন্যান্য বনাম রাষ্ট্র’ খ্যাত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সরকারের এই আইন প্রণয়নের আর্জি নাকচ করেন এবং এক  দীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন যেখানে এ বিষয়ে সংবিধানের অবস্থান বিশদ ব্যাখা করা আছে। আগ্রহীদের জন্য গোটা মামলাটি রইল।

বস্তুত, এই রায় বলে যে সামগ্রিকভাবে সংরক্ষণ শতাংশের ভিত্তিতে কখনও ৫০%-এর বেশি হতে পারে না। বর্তমানে দেশে সংরক্ষণের শতাংশ (শিডিউল্ড কাস্ট, শিডিউল্ড ট্রাইব, ওবিসি মিলিয়ে সর্বমোট) ৪৯.৫%, মোদি সরকারের এই বিল যাকে এক লাফে ৫৯.৯%-এ নিয়ে গেল। ইতিমধ্যেই এই বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু করেছে ‘ইউথ ফর ইকুয়ালিটি’ নামক একটি সংস্থা।

ইন্দ্র সাহনি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় বক্তব্য ছিল, আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে সংরক্ষণ সংবিধানসম্মত নয়। মোদি সরকার এই দ্বিতীয় বাধাটি আট ও নয় তারিখ পেরিয়ে গেলেন। সর্বোচ্চ আদালত এখন আর এই আইনকে টেকনিকালি ‘সংবিধানসম্মত নয়’ বলতে পারবেন না, কারণ সরকার এক্ষেত্রে খোদ সংবিধানকেই ‘সংশোধন’ করে নিয়েছেন। নরসিমা রাও সেবার এতটা আঁটঘাট বেঁধে নামেননি, তিনি শুধুমাত্র একটি একজিকিউটিভ অর্ডার-এর ভিত্তিতে আইন প্রণয়নে এগিয়েছিলেন। অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট ২৫ বছর আগে নিজের নয় জন সদস্যের এক সুবিশাল বেঞ্চের দেওয়া সেই ‘সংরক্ষণে ৫০ শতাংশের সিলিং’ রায়টিকে এবার অগ্রাহ্য করেন কিনা, বা করলে তা কী যুক্তিতে, সেটাই দেখার।

দ্বিতীয়ত, এই নতুন সংরক্ষণ পাওয়ার ক্ষেত্রে দরিদ্র হওয়ার যোগ্যতামান বলে যা প্রচারিত হচ্ছে তা সত্যি হলে ভারতবর্ষের প্রায় ৯৭% শতাংশ উচ্চবর্ণের মানুষকে সেই বিচারে দারিদ্রের স্তরে ফেলে দেওয়া যায়। বছরে আট লাখ অর্থাৎ মাসে ৬৬,০০০ হাজার টাকা আয় যদি দারিদ্রের ঊর্ধ্বসীমা নয়, তাহলে প্রায় আপামর ভারতবাসীই দরিদ্র। আর এভাবে প্রায় গোটা দেশকে সংরক্ষণের আওতায় এনে ফেললে সংরক্ষণটাই অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। আমার বিশ্বাস, সরকার অবশ্যই তা জানেন এবং দারিদ্রের যোগ্যতামান হিসেবে যা প্রচারিত হচ্ছে তা আসলে ভোটের আগে সুকৌশলে হাওয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে শাসক দল। নয়া সংরক্ষণ আইন বাস্তবে প্রয়োগ হওয়া এখনও দূর কি বাত, কিন্তু এই ফাঁকে নিজেদের টার্গেট ভোটব্যাঙ্ক উচ্চবর্ণ হিন্দুর সামনে মিথ্যের রাঙা মুলো নাচিয়ে দু-দশটা ভোটও যদি বাড়িয়ে নেওয়া যায়, মন্দ কী?

আর্থিকভাবে অনগ্রসর হওয়ার যোগ্যতামান না হয় আলোচনা করে, তর্কবিতর্কের ভিত্তিতে ঠিকঠাক করে নেওয়া যাবে, কিন্তু তৃতীয়ত, যেটা ঠিক করা যাবে না তা হল সরকারি চাকরির বাজার, যার ক্রমসংকোচন আঁতকে ওঠার মতো। ২০১৩ থেকে ২০১৫-এর মধ্যে দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সরাসরি নিয়োগের সংখ্যা কমেছে ৮৯%। ২০১৩ সালে সারাদেশে শূন্যপদে নিয়োগের সংখ্যা ছিল ১,৫১,৮৪১ যা ২০১৫-তে কমে হয়েছে মাত্র ১৫,৮৭৭। সংসদে দাঁড়িয়ে এই তথ্য দিয়েছেন নিয়োগ, পেনশন ও অভিযোগ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র প্রসাদ স্বয়ং (তথ্যসূত্র : দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮)। সরকারের বর্তমান শ্রমনীতি, সরাসরি কর্মী কমিয়ে সস্তায় চুক্তি কর্মীর নিয়োগ ও আইটির বহুল ব্যবহারের ফলে এই শূন্যপদের ক্রমসংকোচন কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। সরকারি চাকরির পদই যদি না থাকে সংরক্ষণ পেয়ে আর্থিকভাবে অনগ্রসর মানুষ করবেটা কী? বেসরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে তো সংরক্ষণ প্রযোজ্যই নয়। তাহলে এই নয়া সংরক্ষণ আইন কি আসলে ভবদুলালের সেই বই যা এখনও ছাপা হয়নি, লেখাই হয়নি, এমনকি নামটাও ভাবা হয়নি ঠিকঠাক, অথচ লেখক শুধিয়ে বেড়াচ্ছেন— আমার বইখানা আপনাদের লাইব্রেরিতে রাখেন না কেন, মশাই?

অর্থাৎ গোবলয়ের তিন রাজ্যে নির্বাচনে ভরাডুবির পর এবং আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির ঝুলি থেকে বেরোনো নয়া সংরক্ষণ বিল বিমুদ্রাকরণের মতো আরও একটি পপুলিস্ট তঞ্চকতা; ভুলে ভরা। প্রসবের আগেই পর্বতগর্ভের মুষিকটির কথা আমরা জেনে গেছি। প্রশ্ন উঠবে, তাহলে কি ব্যর্থ হয়ে যাবে আর্থিকভাবে অনগ্রসর উচ্চবর্ণের জন্য ফেলা শাসকের বহুমূল্য চোখের জল? অথবা বিজেপি বিরোধিতার মোহে একটি সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক বিলের প্রতি আমরা অকারণে কঠোর হয়ে পড়ছি না তো? একই নিঃশ্বাসে আরও একটি বুনিয়াদি প্রশ্ন আসবে, আজ বিজেপি যা ভাবছে, শূদ্রজন বাদেও আর্থিকভাবে অনগ্রসর নাগরিকদের জন্য একইধরনের সংরক্ষণের ভাবনা গোড়াতেই আমাদের ভূয়োদর্শী সংবিধান-প্রণেতাদের ভাবনায় এল না কেন? প্যারাডক্সটা এখানেই। আমাদের সংবিধানে উল্লেখিত সংরক্ষণের ভিত্তি আর্থিক মাপকাঠি ছিল না, ছিল সামাজিক বৈষম্য। ভারতের যে সকল জাতিসত্তা ঐতিহাসিকভাবে শোষিত ও বঞ্চিত, তাঁদেরকে সামাজিকভাবে এগিয়ে থাকা অন্যান্য জাত বা উচ্চবর্ণের সঙ্গে সমপর্যায়ে তুলে আনার জন্য, ইতিহাসের অপরাধের ক্ষতিপূরণ করার জন্যেই সংরক্ষণের ধারণার অবতারণা। সংরক্ষণ কোনও ‘গরিবি হটাও’ বা ‘বেকারত্ব দূরীকরণ’ প্রকল্প নয়। দীর্ঘদিনের জাতিগত সামাজিক বৈষম্য ও সরকার ও সুশাসনের মধ্যেকার অসাম্য দূর করার জন্যে পিছিয়ে পড়া জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব জরুরি মনে করেছিল সংবিধান সমিতি [Clause (4) of Constitueny Assembly  Debate : “…there shall be reservation in favour of certain communities which have not so far had a ‘proper look-in’…. Into the administration.”]। এমনকি বাবাসাহেব আম্বেদকর এ-ও ভেবেছিলেন যে পিছিয়ে থাকা বর্ণগুলি প্রাথমিক সাহায্যটুকু পেয়ে গেলে অর্থাৎ স্বাধীন ভারতে শিক্ষা ও সামাজিক ন্যায়ের দ্রুত প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে যখন তাঁরা উপরে উঠে আসবে; ধরা যাক আর দুই দশক পর, সেদিন জাতভিত্তিক সংরক্ষণের আর কোনও প্রয়োজনীয়তা থাকবে না, জাত ব্যাপারটাই ক্রমে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে, অতএব আইনি ব্যবস্থাপত্র থেকে একে বাদ দিয়ে দেওয়া যাবে। রাষ্ট্রনেতাদের অপদার্থতা, দক্ষিণপন্থার আবর্ত ও রাজনীতিকদের কায়েমি স্বার্থ তা হতে দেয়নি। সেসব অবশ্য অন্য প্রসঙ্গ৷

সংবিধান প্রণেতারা ভেবেছিলেন, গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্য হল শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা ও পাশাপাশি সকলের উপযোগী কাজের ক্ষেত্র তৈরি করার মাধ্যমে জাতিধর্মনির্বিশেষে দেশের আপামর জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নত ঘটানো। তাঁরা সেদিন যেটা ভাবতে পারেননি তা হল স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও আর্থিক বৈষম্য এমনভাবে প্রকট থেকে প্রকটতর হতে থাকবে৷ সংবিধান প্রণেতাদের স্বপ্ন বা ইচ্ছে এক্ষেত্রে সফল হয়নি। সামাজিক বৈষম্যের স্বীকার নয়, এমন গোষ্ঠীর আর্থিকভাবে অনগ্রসর অংশের জন্য আনা মোদি সরকারের এই সংরক্ষণ বিল তাই আসলে একটি ঘোষণাপত্র। যে ঘোষণাপত্র জানিয়ে দেয় যে ভারতের গণতন্ত্র দীর্ঘ সত্তর বছরের ধস্তাধস্তির পর তার প্রান্তিক নাগরিককে সর্বনিম্ন স্বাচ্ছন্দ্যটুকু দিতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই তাকে আবার সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতির আড়ালে মুখরক্ষা করতে হচ্ছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই বিল মোদি সরকারের ব্যর্থতার সৎ, সাহসী উচ্চারণ। পাশাপাশি ব্যর্থ হল দেশের আইনসভাও। ২৫ বছর আগে একই ইস্যুতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত দীর্ঘ রায়ে সাংবিধানিক অভিমুখের যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, আমাদের জনপ্রতিনিধিরা, শাসক ও বিরোধী নির্বিশেষে, আজ তা স্মরণ করতে ব্যর্থ হলেন। এই বিলের তুমুল বিরোধিতা করে ভোটের বাজারে উচ্চবর্ণ জনতা-জনার্দনকে ঘাঁটানোর সাহস নেই ডান বাম কারওই। তাই ২০১৯-এর সংরক্ষণ বিল ভারতের সংসদীয় রাজনীতিতে আরেকটি বাঁকবদলের সূচক, একটি প্যারাডাইম শিফট, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে খোলাখুলি বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এইদিন আমরা ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির পথে অনুতাপহীন হাঁটা লাগালাম।