Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার আশায় জনমুখী হবে বাজেট

প্রশান্ত ভট্টাচার্য

 

বিজেপির অর্থনীতি বিষয়ক বিভাগের মুখপাত্র গোপালকৃষ্ণ আগরওয়াল বাজেট পেশের দু’ সপ্তাহ আগে এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তাঁদের দলের আদর্শ যা, সেদিকে দৃষ্টি রাখা হোক। অর্থাৎ যত বেশি মানুষের আর্থিক অবস্থা ভাল করা যায় সেদিকে দৃষ্টি রাখা হোক। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি বিকশিত হোক। আর  মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রিত হোক। একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, বিজেপি মনে করে না, অর্থমন্ত্রকের কথামতো চলতি আর্থিক বছরে মুদ্রাস্ফীতির হার মোট জাতীয় উৎপাদনের ৩.৩ শতাংশে বেঁধে রাখতেই হবে। কৃষকদের দুর্দশা ঘোচানো এখন সবচেয়ে জরুরি। কৃষকের হাল ফেরানোর কথা না ভেবে রাজকোষের ঘাটতি নিয়ে মাথা ঘামালে চলবে না।

ভাবটা এই, অর্থশাস্ত্রীরা যাই বলুন, কৃষকের উপকার করার মূল সূত্র কৃষির উৎপাদন-ব্যয় কমানো এবং বিপণন ব্যবস্থার সুযোগসুবিধে বাড়ানো সে কথা চুলোয় যাক। কৃষিঋণ মকুব চলতেই থাকবে। মসনদ দখলের দৌড়ে কখন অর্থনীতির ভূমিকা মুখ্য হবে বা গৌণ হবে সেটা সেই সময়ের রাজনীতিই ঠিক করবে! এক কথায় রাজনীতি শেষ কথা বলবে। ক্ষমতাবান রাজনীতির নজর এড়িয়ে কিছুই কার্যকর হবে না। এই পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবর্ষের জন্য জাতীয় বাজেট কী রকম হতে পারে সেটাই এখন দেখার।

উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ সালের অর্থবর্ষে দেশের রাজকোষ ঘাটতি ছিল ৫.৯ লক্ষ কোটি টাকা। যা মোট জাতীয় উৎপাদনের ৩.৫ শতাংশ। গোপালকৃষ্ণ আগরওয়াল শুধু বলার জন্যই বলতে মুখ খোলেননি, মোদী সরকারের আগামী বাজেটের দিশাটা কী হবে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন।

চিকিৎসার জন্য আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। যে পর্যায়ের অসুস্থতা তাতে তাঁর পক্ষে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করা সম্ভব নয়। জেটলির অনুপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রকের ভার দেওয়া হয়েছে  রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের ওপর। ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে অন্তর্বর্তী বাজেট তিনিই পেশ করবেন বলে ঘোষণা কেন্দ্রের। তবে জেটলিই করুক বা গয়াল, ফারাক তো কিছু হবে না। মোদী-শাহর পাখির চোখ লোকসভা নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে এবার মধ্যবিত্তকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে ‘‌‌জনমুখী বাজেট’‌ করার কাজে নেমেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে কৃষি ও কর্মসংস্থানে। চেষ্টায় খামতি রাখছেন না অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সূত্রের খবর, চাকরিজীবীদের কথা মাথায় রেখে বাড়তে চলেছে আয়কর ‌ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা। আড়াই লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ঊর্ধ্বসীমা ৩ লক্ষ টাকা করা হতে পারে। সেইসঙ্গে, কর-কাঠামোতে বদল করা হতে পারে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রকে বিপুল সংখ্যক প্রস্তাব এসেছে।

এদিকে, সম্প্রতি নীতি আয়োগে দেশের নামকরা কয়েকজন অর্থনীতিবিদের সঙ্গে বৈঠক সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠক ছিল ‘‌আর্থিক নীতি: ভবিষ্যতের রূপরেখা’‌‌ নিয়ে। বাজেটের আগে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বৈঠকে মোদী ছাড়াও ছিলেন অরুণ জেটলি, নীতিন গাডকারি, রাধামোহন সিং, যোজনা রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রজিৎ সিং এবং নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার-সহ উচ্চপদস্থ আমলারা। জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে নতুন কর্মসংস্থান তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় এবারের বাজেটে নতুন করে কর্মসংস্থানের জায়গা রাখা হবে।

জানা গিয়েছে রাজকোষের ঘাটতি মেটাতে ফের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তি বিক্রির পথে কেন্দ্রীয় সরকার। বাজেট আলোচনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত শীর্ষ দুই সরকারি অফিসারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরেও বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ৮০ হাজার কোটি টাকা ঘরে তোলার লক্ষ্য মাত্রা নিয়েছিল মোদী সরকার। তার পুনরাবৃত্তি হতে পারে এবছরের বাজেটে। আগামী অর্থবর্ষে শুধু সম্পত্তি বেচে মোট ৮০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্য মাত্রা নেওয়া হতে পারে। জানা যাচ্ছে, বেচার তালিকায় সবার ওপরে আছে এয়ার ইন্ডিয়ার নাম। রাষ্ট্রায়ত্ত এই  বিমান সংস্থাটি বেশ কিছুদিন ধরে লোকসানে চলছে।এ ছাড়া অন্তত ২০টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় স্বল্প সংখ্যক অংশিদারিত্ব বিক্রি করতে পারে সরকার। যার মধ্যে অন্যতম, আইআরসিটিসি, রেল’টেলের মতো সংস্থা। এর পাশাপাশি ভারত সরকারের আন্ডারটেকিং তিনটি বিমা সংস্থার সংযুক্তিকরণ ঘটিয়ে গঠিত সংস্থার বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে সরকার আয়ের পথ খুঁজতে পারে।

গত ছ’ মাসে অর্থমন্ত্রকের কাছে যে সব প্রস্তাব জমা পড়েছে, তাতে কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা কমপক্ষে ৩ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাবই বেশি। এবার বাজেটে মধ্যবিত্তের ভাগ্যে কী জুটবে, তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ভোটের মুখে এবার ‘‌কৃষি বাজেট’‌ হতে চলেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষিক্ষেত্রের হাল ক্রমশ বেহাল হয়েছে। তাই এবার বাজেটে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রূপায়ণে আরও নতুন নতুন প্রকল্প ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র। শর্তসাপেক্ষে কৃষিঋণ মকুবের মতো কোনও চমকপ্রদ ঘোষণা হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। ‘‌১০০ দিনের কাজ’ বা মনরেগা প্রকল্পেও ‌এবার বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে। মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই এই প্রকল্পে এক ধাক্কায় বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছিল, সেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে এবার বরাদ্দ বাড়ানো।

এবারের বাজেটে ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোগগুলিতে অর্থাৎ স্মল মিডল ইন্ডাস্ট্রি (এসএমই), কিছুটা রিলিফ দিতে পারে। জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার এমএসএমইতে কিছুটা মনোনিবেশ করেছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সম্প্রতি এমএসএমই ক্ষেত্রকে দেশীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে এই সেক্টর অর্থনীতির বর্তমানে যে একীকরণের পর্যায় চলছে তার নেতৃত্ব দেবে। মোদী সরকারের দাবিতে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলির ঋণ পুনর্গঠনের নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে।

রেটিং সংস্থা আইসিআরএ অনুমান করেছে যে ছোট ব্যবসার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের কাঠামো তৈরি করা হবে। এবারের বাজেটে যে ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোগগুলিতে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে অনুপ্রেরণা দেবে তা অনুমান করা যায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার চাকরি বা কর্মসংস্থান সৃষ্টি  হয়েছে বলে গলা ফাটাচ্ছে। সরকার বিশ্বাস করে যে এমএসএমইগুলি প্রধান কর্মসংস্থান জেনারেটর আর সে কারণেই, এমএসএমইগুলিতে মনোযোগ বেশি দিলে কাজের সৃষ্টির জায়গাগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, দেশে সম্ভাব্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য সরকার সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে চাকরির সৃষ্টিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে এমন কিছু অন্তর্বর্তী বাজেটে থাকবে বলেই বিশেষজ্ঞরা প্রত্যাশা করছেন।

জিএসটি নিয়ে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করার পরেও, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে তাঁর সরকার কর গঠনে পরিবর্তন আনতে থাকবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের বিধানসভা ভোটে বিজেপি হেরে যাওয়ার পরে, জিএসটি পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮টি বিভাগ থেকে ২৩টি আইটেমে ১২ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মোদীর এই সাক্ষাৎকার। সেই সাক্ষাৎকারেই প্রধানমন্ত্রী জানাচ্ছেন, জিএসটি’র  এখনও অনেক উন্নতির সুযোগ রয়েছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে জেটলি উল্লেখ করেছেন যে কিছু বিলাসিতা সামগ্রী ও তামাক জাতীয় ‘সিন’ সামগ্রী ছাড়া ২৮% স্ল্যাব শিগিরই পর্যবসিত হবে। তিনি আরো বলেন যে ভবিষ্যতে ১২% এবং ১৮%, এই দুই মান হারের পরিবর্তে একক মান হার হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে জিএসটি কাঠামোর বিষয়ে সরকার কিছু ঘোষণা করবে আশা করা যেতে পারে।

যদিও অর্থমস্ত্রী অরুণ জেটলি বহুবার বলেছেন যে কৃষিঋণ মকুব কোনও স্থায়ী সমাধান নয়। বিমা প্রিমিয়াম কমানো এবং সেখান থেকে আয়ের ব্যাপারে তাঁর কিছুটা সমর্থন আছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই এই ব্যাপারে জেটলিকে সমর্থন করেন না। আবার অনেকেই জেটলির পাশে। কিন্তু রাজনীতির চলনটা তো অর্থনীতির চলনে হয় না। সেখানে সবচেয়ে বড় ও কার্যকর কথা হল, ভোটে জেতা যাবে কী করলে।অতএব কৃষিঋণ এখনই এখনই মকুব না করলেও কৃষক সম্প্রদায়ের বর্ধমান অসন্তোষ প্রশমিত করে তাদের জয় করার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আশা আছে এবারের বাজেটে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি কৃষক ত্রাণ প্যাকেজ চালু করার জন্য মোদী সরকার বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে এবং আগামী বাজেটে তা প্রতিফলিত হতে পারে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ,  প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ‘একটি পরিবার এক উদ্দীপক’ নীতি গ্রহণের সম্ভাব্যতা নিয়ে গবেষণা করছে এবং বীজ, সার আর কৃষি যন্ত্রপাতি-সামগ্রী কেনার জন্য প্রতিটি যোগ্য পরিবার-পিছু প্রতি বছরে ১০ হাজার টাকা সরাসরি দেওয়ার ব্যবস্থার সংস্থান এবারের বাজেটে থাকতে পারে।

শেয়ার মার্কেট (বৈদেশিক) বিশেষজ্ঞ দলের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকার ২০১৮-১৯  সালের জন্য ৪০ বিএসএসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা টপকাতে পারেনি। এবং, পরবর্তী অর্থবছরে অর্থাৎ আগামী অর্থবছরের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ৩.৫ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। শুক্রবার একটি নোটে ব্যাংক অফ আমেরিকার মেরিল লিঞ্চ বলেন, ‘ঝুঁকিগুলি বেশি হয়’। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি ২০২০ অর্থবর্ষে ৩.৭  শতাংশে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ০.৪০ শতাংশ বেশি হলে সরকার ২০ অর্থবর্ষে ৩.৫ শতাংশের রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্য রাখবে।’  উল্লেখ্য, ওই রিপোর্ট বলছে, মোদী সরকার এই বছরগুলিতে আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেনি, ২০১৫ অর্থবর্ষ  ছাড়া আর কোনও বারই টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। এমনকী, ৮০ হাজার কোটি টাকার বাজেট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করেছে।

এই অবস্থায় বলা যায়, লোকসভা নির্বাচনের আগে, ১ ফেব্রুয়ারি পেশ করা বাজেটে, সরকার সুদের ছাড়  ঘোষণা করবে অথবা বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল সরাসরি আয় স্থানান্তর করে গ্রামীণ দুর্দশা মোকাবিলা করার চেষ্টা করবে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এবারের বাজেটে  আদর্শগতভাবে কোনো নতুন সরাসরি করের প্রস্তাব না দেওয়া এবং অর্থমন্ত্রীকে ক্ষুদ্র ও পিছিযে পড়া ক্ষেত্রগুলোতে চাপ কমানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ এঁদের আরও পরামর্শ, যে কৃষকরা নিয়মিত ঋণ শোধ করার চেষ্টা করছে তাদের ৪% হারের সুদ ছাড়ের জন্য ৩০হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হোক এবং  কৃষকদের আয়ের সহায়তার জন্য ৭০ হাজার কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হোক এবারের বাজেটে।

গত বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটের পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মত দিয়েছিলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে এই প্রকল্পগুলিকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে, গ্রামীণ ভারত থেকে ভোটের ঝুলি সহজেই ভরিয়ে নিতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী৷ আর তাহলে তিনি তাঁর পূর্বসূরি অটলবিহারী বাজপেয়ীর রেকর্ড ভেঙে প্রথম অকংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরপর দু’বার ক্ষমতায় থাকতে পারবেন৷

কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের এই যুক্তির ইতিবাচক ফল হয়নি। তাই এবার আবার সেই গ্রামীণ ভারতের দিকে নজর দিতে হচ্ছে মোদীকে। তবে এসব মানতে নারাজ বিজেপির কেন্দ্রীয় ভাবুকদের অন্যতম আশিস সরকার৷ গত বছরের মতো তিনি এবারও বলেছেন, তাঁদের কাছে দেশ ও দেশের জনগণই প্রথম৷ বিজেপির রাজনীতি দেশের সবার জন্য৷ তাই ভাল কাজ করার পর ভোটের ময়দানে কী ফল হবে, তা সাধারণ মানুষের হাতেই ছাড়া উচিত বলেই মনে করেন তিনি৷ ২০০৪ সালে ভারত উদয় বা ইন্ডিয়া সাইনিং ব্যর্থ ছিল বলে মানতে নারাজ আশিস সরকার। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘অনেক সময় ভাল পরীক্ষা দিয়েও তো খারাপ নম্বর আসে৷’ হয়তো তাই হবে! কিন্তু ‘সবকা বিকাশ’ কোনও কাজে আসেনি বলে দ্বিতীয়বার গদিতে আসীন হতে বাজেটের মাধ্যমে মোদী ফিরতে চাইছেন গ্রামীণ ভারতেই, ভরতুকির অর্থনীতিতেই।