প্রশান্ত ভট্টাচার্য
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি চিকিৎসা করাতে মার্কিন দেশে থাকায় ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’-এর নামে মোদির ‘পূর্ণাঙ্গ’ বাজেট প্রস্তাব করলেন। গোয়েল মশাই তাঁর বাজেট বক্তৃতাটিকে নির্বাচনী ইস্তেহারে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এটি আমাদের জানা, যে রঙের দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, ভোটের বছরে নানারকম ফন্দিফিকির করে বাজেট থেকে খানিকটা বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিয়ে থাকে। তবে এবার যেটা করা হয়েছে, তা হল সবরকম নীতিবোধ জলাঞ্জলি দিয়ে ভোটের বছরে ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’-এর নামে ‘পূর্ণাঙ্গ’ বাজেট প্রস্তাব করা। আমার জানা নেই অতীতে এমন কোনও নজির আছে কি না!
সাময়িক কালের মধ্যে, ২০০৪-০৫ অর্থবর্ষের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করেছিলেন বাজপেয়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। তিনিও কর ছাড়ের পথ ধরেননি। তবে কয়েকটি প্রকল্পের পরিধি আরও বাড়িয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে মধ্যবিত্তদের জন্য বিমানে যাতায়াতের সময় সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রের ওপর থেকে কর কমিয়ে দেন। আবার ২০০৯-১০ অর্থবর্ষের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশের সময় তখনকার অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বড় ঘোষণার পথে হাঁটেননি। কিন্তু সেই বাজেট পেশের আগেই কৃষকদের ঋণ মকুব করার কথা ঘোষণা করেছিল মনমোহন সরকার। অনেকে বলেন এই ঘোষণা দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার গঠনে সহায়ক ভূমিকা নিয়েছিল। ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদাম্বরম কর ছাড়ের পথে হাঁটেননি। তবে কয়েকটি শুল্কে ছাড় দিয়েছিলেন।
এবার মোদি সরকার কী করে তা জানার আগ্রহ ছিল সচেতন ও সংশ্লিষ্ট মানুষের মধ্যে। কিন্তু এমন নির্লজ্জের মতো বাজেটের নামে ভোটের ইস্তাহার কেউ পেশ করেননি। এটা নিছক রাজনৈতিক পদক্ষেপ কিনা, তা নিয়ে তর্ক তুললে তা চলতে পারে কিন্তু এমন করাটা যে শ্রেয় নয়, সেটা নিয়ে তর্ক করার কোনও অবকাশ নেই। কেননা, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও হীন মানসিকতার পরিচয়। এই কাজ করতে গিয়ে মন্ত্রীমশাই সত্যের অপলাপ করতে বা অর্ধসত্য ভাষণেও পিছপা হননি।
আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশে কখনও নির্ভেজাল অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাজেট পেশ হয় না, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বাজেট হয়। আর সেদিক থেকে পীযূষ গোয়েল ফুল মার্কস পাবেন। লাগে টাকা দেবে কোনও গৌরী সেন— এই মেথোডলজির ওপর দাঁড়িয়ে সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের রাজনৈতিক মুনাফাটি লুটবে বিজেপি আর বাজেটের প্রস্তাব অনুযায়ী খরচের দায় নিতে হবে পরবর্তী সরকারকে। এমন একটি বাজেট ভারতে অতীতে কেউ কখনও করেননি।
বিশিষ্ট ধনবিজ্ঞানী ড. রতন খাসনবিশ যথার্থই বলেছেন, “বাজেট ঘোষণার রাজনৈতিক সুবিধা নেবেন পীযূষ গোয়েলরা। আর এই বাজেট অনুযায়ী খরচের দায় নেবে পরবর্তী সরকার।”
গোয়েলের এই বাজেট নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী, কেননা, বাজেটে এমন বুক বাজিয়ে নির্বাচনী রাজনীতি করবার দুঃসাহস এর আগে ভারতীয় রাজনীতিতে কেউ দেখাবার হিম্মত রাখেননি।
অন্যদিক থেকেও গোয়েলের এই বাজেট ব্যতিক্রমী, কারণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বন্যায় সরকারের নীতিগত অবস্থান বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসবার আগে নরেন্দ্র দামোদরমাস ভাই মোদি ঘোষিতভাবে ছিলেন অনুদান নীতির বিরোধী। কল্যাণমূলক অর্থনীতির কট্টর সমালোচক। এই সেদিনও মোদি খুব শ্লেষের সঙ্গে কর্নাটকের কুমারস্বামীর সরকারের কৃষিঋণ মকুবকে ‘ললিপপ’ বলে মন্তব্য করেছেন। মোদির লেফটেন্যান্ট, আপাতত শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে যাওয়া অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, সব সময় বলে এসেছেন কৃষিঋণ মকুব কোনও সমাধান নয়। সেই মোদির সরকারই ২০১৯ সালে ক্ষমতায় ফেরবার তাগিদে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ভরবার প্রতিশ্রুতি ফেরি করছেন! কৃষিঋণে সুদ মকুবের কথা ঘোষণা করলেন। আদতে একটি কৃষক পরিবার দিনে ১৬ টাকা ৪৩ পয়সা পাবেন কিনা, সেটা রাজনীতিবিদরা হিসাব করুন। আমার জিজ্ঞাসা, এই উদারতা মোদি কখন করলেন? যখন বলা হচ্ছে মোদীর ৫৭ মাস শাসনে দেশে কৃষকের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। একটি বিনীত প্রশ্ন, কৃষকের আয় যদি পাঁচ বছরে দ্বিগুণই হয়, তবে আর বাজেটে তাঁদের অর্থসাহায্য করার প্রস্তাব রাখা হল কেন? এ কি সরাসরি দ্বিচারিতা নয়? পীযূষের নানা গাঁথুনিতে সংশয়ের অবকাশ তৈরি করছে না?
কর্মসংস্থানের প্রশ্নেও পীযূষ গোয়েল কার্যত মেনে নিলেন, সরকার আর তল পাচ্ছে না। চারিদিকে যখন ঢক্কানিনাদে উন্নতি হচ্ছে, উন্নতি রাস্তায় না দাঁড়িয়ে থেকে মানুষের যাপনে জড়িয়ে গেছে, তখন সেই অনুপাতে কর্মসংস্থানও নিশ্চয় হয়েছে। তাহলে তার সমর্থনে কোনও তথ্য দেওয়ার বদলে এই ধোঁয়াশা কেন? জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা যখন ঝাঁপি খুলে দেখিয়ে দিয়েছে, ৪৫ বছরে নজির তৈরি করেছে কর্মসংস্থানে ব্যর্থতা। বেকারত্বের সর্বোচ্চ হারে পৌঁছোবার কৃতিত্বটি মোদি সরকারের। সরকারের পক্ষে অস্বস্তিকর এই পরিসংখ্যান চাপা দেওয়ার কী করুণ চেষ্টা।
কার্যত তিন শ্রেণির ভোটারদের মন জিততে পীযূষ বাজেটে তিনটি তাস খেলেছেন। এক, মধ্যবিত্তের মন জিততে বা ভোট গ্যারান্টেড করতে প্রথা ভেঙে অন্তর্বর্তী বাজেটে আয়করে রদবদল করেছেন। এমন উদাহরণ ভূভারতে বিরল। দুই, ছোট কৃষকদের জন্য সরকারের কোষাগার থেকে বছরে ৬ হাজার টাকা ‘সাহায্য’ পাইয়ে দেওয়া হবে। আর অসংগঠিত ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-মজুরের জন্য ঘোষণা হয়েছে পেনশন প্রকল্প। এই তিনটি ক্ষেত্রেই বেশ সুড়সুড়ি দেওয়া ভোট আছে। কিন্তু বাস্তবিক এর গভীরে গেলে দেখতে পাওয়া যায় নানা রকম যোগবিয়োগ। আমার পকেট থেকে খসিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার নকশা।
যেমন কৃষকদের জন্য খরচ হবে ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এই টাকাটা খরচ করার দায় নেওয়ার কোনও সাংবিধানিক বা নৈতিক দায়িত্ব পরবর্তী সরকারের নেই। অথচ এই ঘোষণাটা করে রাজনৈতিক সুবিধা নেবে দল হিসেবে বিজেপি। একইরকমভাবে বার্ষিক পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও কর দিতে হবে না, একথা ঘোষণা করে রাজনৈতিক সুবিধা পাবে বিজেপি। অথচ বাস্তবটা হচ্ছে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে ১২,৫০০ টাকা পর্যন্ত রিবেট দেওয়া হবে। এতদিন আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত থাকায়, ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে ঠিক ১২,৫০০ টাকাই কর বসত। এবার ঠিক সেই ১২,৫০০ টাকাই রিবেট দিয়ে দেওয়ায়, কোনও কর মেটাতে হবে না। সরকারের হিসেব, প্রায় ৩ কোটি মধ্যবিত্ত মানুষ এই সুবিধা পাবেন। গোয়েল ফর্মুলার ফলে সরকারের আয়কর আদায় কম হবে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর দায়িত্ব নিতে হবে পরবর্তী সরকারকে। জিএসটি’র লক্ষ্যমাত্রা এখন যা রয়েছে এই ঝোঁক বজায় থাকলে পরবর্তী সরকারের কোষাগারে এক লাখ কোটি টাকা কম আদায় হবে। এটা যদি সুবিধাবাদী রাজনীতির অর্থনীতি না হয়, তবে কোনটা সুবিধাবাদ? এই সুবিধাবাদী রাজনীতির এক নির্লজ্জ ফেরিওয়ালার হাতে দেশটা তুলে দেওয়া হয়েছে ২০১৪ সালের নির্বাচনে।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের কাছে ক্ষমতা হারানোর পরে আর দেশজুড়ে কৃষক আন্দোলন, সর্বোপরি জানুয়ারি মাসের ৮ ও ৯ তারিখের কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের সাফল্য দেখে কৃষক-মধ্যবিত্ত-শ্রমিক শ্রেণির ক্ষোভ নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। সেই ক্ষোভ প্রশমিত করতেই এই সব রিলিফের কথা বাজেটে। পাশাপাশিই হিন্দুত্বের আবেগে সুড়সুড়ি দিতেও বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে পীযূষ গোয়েলের বাজেটে। গোয়েলের নজর পড়েছে গোয়ালে। গোমাতাদের উন্নয়নে ‘রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ’ ঘোষণা করে ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। গৈরিক কুলের ইচ্ছেপূরণের কামধেনু হতে গিয়ে রাজকোষ ঘাটতি পূরণের লক্ষ্য ফের জলাঞ্জলি দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই গোয়েলের এই প্রস্তাবিত অর্থ বিলকে বাজেট না বলে ‘ভোটের ইস্তাহার’ বলছেন সমালোচকরা।
কৃষকদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে এই বাজেটে। মূল অর্থনৈতিক সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে৷ মোদি সরকার জাতীয় নমুনা সমীক্ষার রিপোর্ট চেপে যেতে চেয়েছিল৷ কিন্তু পারেনি৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে দেশে ৪০% কৃষক আর জমি চাষ করতে চান না৷ ভেবে দেখুন চাষি চাষ করতে চাইছেন না ঋণের ভয়ে। কৃষক যদি মাঠ থেকে মুখ ফেরায় তবে দেশের কী হাল হবে? এরপরেও স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ফসলের উৎপাদন মূল্যের দেড় গুণ করা হচ্ছে না। উলটে বাজেটে ২ হেক্টরের কম জমি যে কৃষকদের, বছরে তাঁদের ৬,০০০ টাকা করে সাহায্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রাহুল গান্ধি পাটিগণিত কষে বলেছেন, এর ফলে দৈনিক সাহায্যের অঙ্কটা হয় ১৭টাকা করে। রাহুল যথার্থই বলেছেন, এই অর্থ সাহায্য দেওয়া আসলে কৃষকদের অপমান করা। এছাড়াও কথা হল, যে কৃষকদের জমি নেই তাঁরা কী করবেন? জমির মালিক টাকা পাবেন, কিন্তু লিজ নিয়ে চাষ করে যে কৃষকরা, তাঁদের কী হবে? তাঁরা কিছুই পাবেন না৷ সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করেছেন৷ কিন্তু ওই টাকা কোথা থেকে আসবে তার কোনো দিশা নেই মোদি সরকারের বাজেটে। তার ওপর আগামীবার সরকারকে এই খাতে ৭৫ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা করতে হবে৷
দেশে মোট চাষযোগ্য জমির ২৩ %-এ জলসেচ ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি ৭৭% জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা নেই! ট্রাজেডি এটাই যে স্বাধীনতার পর ৭২ বছর অতিক্রান্ত, জয় জোয়ান জয় কিষান বলে মাঠ গরম করা হচ্ছে অথচ দেশে একটি বলিষ্ঠ কৃষিনীতির দিশা দেখাতে পারলেন না রাজনীতিবিদরা!
আর দেশের প্রধানমন্ত্রী নানা মঞ্চ থেকে হরেক কিসিম ফেরি করে চলেছেন নাটকীয় মুদ্রায়। যেমন সংসদ কক্ষে তাঁর স্টুজ গোয়েল একটি প্রকল্পের ঘোষণা করলেন, যার গাল ভরা নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী যোজনা’। এই যোজনায় শ্রমিকদের প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা পেনশন দেওয়া হবে। তবে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক-কর্মচারীরাই এই প্রকল্পের আওতায় পড়বেন। এই পেনশন পেতে গেলে মাসে ১০০ টাকা জমা রাখতে হবে৷ যদি শ্রমিক-কর্মচারীদের বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে আর ২৯ বছরের নীচে হয় তবে তাঁদের মাসে ৫৫ টাকা রাখলেই হবে৷ তবে ২৯ বছরের ওপরে বয়সিদের ১০০ টাকা জমা রাখতে হবে৷ শ্রমিক-কর্মচারীরা এই পেনশন পাবেন ৬০ বছর বয়সের পর থেকে৷ ততদিন পর্যন্ত প্রতিমাসেই টাকা জমা দিয়ে যেতে হবে৷ তবে আবেদনকারী শ্রমিক-কর্মচারীদের মাসিক রোজগার ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে হবে৷ এখন কথা হচ্ছে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে দেওয়া মানে বছরে ১২০০ টাকা৷ বয়স ২৯-এর হিসাবে ধরলে ৩২ বছর পর পেনশন পাওয়া যাবে৷ ওই সময় মাসে ৩০০০ টাকার কী দাম থাকবে ভেবে দেখুন তো! এর জন্য মোদি সরকার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে৷ ওই টাকা কোথা থেকে আসবে, তার কোনও উচ্চবাচ্য নেই বাজেটে। বাস্তবিক একে ঢপের পেনশন প্রকল্প বললে অশোভন মনে হতে পারে কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত নয়।
নরেন্দ্র মোদি সবচেয়ে ভালো জানেন, এই বাজেটের মেয়াদ পরবর্তী সরকার গড়া পর্যন্ত। কমবেশি আর ১০০ দিন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, সমাজ উন্নয়ন খাতে কী খরচ হবে তা ১০০ দিনের সরকার ঠিক করে না। সরকারের উচিত ছিল নতুন কোনও প্রকল্প না এনে বর্তমান প্রকল্পগুলোকে চালু রাখার টাকাটাই এই বাজেট করে পেশ করা। আসলে লোকসভা ভোটের আগে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তদের মন জুগিয়ে চলার লোভ সামলাতে পারেননি নরেন্দ্র মোদি। তাই ণত্ব ষত্ব জ্ঞান লোপ পেয়েছে। আর সে জন্য খয়রাতি করতেও পিছপা হননি তিনি।
হিন্দুত্বের পথে হেঁটে গোরক্ষাও চলে এসেছে বাজেটে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, খয়রাতির টাকা আসবে কোথা থেকে? সত্যিই কি কৃষকরা দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হবেন?
ভোটের লক্ষ্যে সেই ‘জনমনমোহিনী’ পথেই হাঁটলেন গুজরাতের ‘বিকাশপুরুষ’ নরেন্দ্র দামোদরদাস ভাই মোদি। একটা সময়ে ১০০ দিনের কাজ হোক বা খাদ্য নিরাপত্তা আইন, ইউপিএ জমানায় মনমোহন সিংয়ের খয়রাতি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তখনকার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী মোদি। আর আজ, ৫৭ মাস দিল্লির মসনদে থেকে ‘অচ্ছে দিন’ আনতে ব্যর্থ হয়ে এই বাজেটে মোদি ফের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষার চেষ্টা করছেন। তাই সারা পৃথিবীর মধ্যে সম্ভবত ভারতেই সবচেয়ে কম পয়সায় মোবাইলে কথা বলা যায় এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় বলে জানালেন মন্ত্রী।
২০০১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দেশে ৪ লক্ষ কৃষক আত্মহত্যা করছেন! সেই খবর আমরা ইন্টারনেটের সাহায্যে সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে দিচ্ছি। বাহবা সময় তোর সার্কাসের খেলা!