তৈমুর রহমান
এখন ভারত যে উগ্র দেশপ্রেমে উত্তাল, তা সমালোচনা করবার জন্য অনেককেই সংবাদ মাধ্যমগুলি “টুকরে টুকরে গ্যাং”-এর সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শীতাতপ আলোকজ্জ্বল স্টুডিয়োতে আয়োজিত মিডিয়া কোর্টে তাঁদের নামের সঙ্গে “রাষ্ট্রদ্রোহী” বিশেষণও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। অবিশ্রান্ত চিৎকারে সেখানে প্রমাণ করা হচ্ছে পাকিস্তান-বিরোধিতাই দেশপ্রেম। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত এই প্রচারে ক্রমাগত চাপা পড়ছে সুস্থ স্বাভাবিক কণ্ঠস্বর। রাশিয়ান লেখক আন্তন চেকভ বলেছিলেন, “ভালোবাসা, শ্রদ্ধা বা বন্ধুত্বে মানুষ যতটা না এক হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি হয় চিহ্নিত এক শত্রুর প্রতি ঘৃণাতে।” পাকিস্তানেও একই পরিস্থিতি। বালাকোটে পাল্টা আক্রমণের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যসাধনের লাগাতার প্রচারে ভারতে আসন্ন নির্বাচনে মেরুকরণে ত্রস্ত দেশের কৃষকদের সহায়ক মূল্যপ্রদান প্রভৃতি জ্বলন্ত সমস্যাগুলিকে নস্যাৎ করবার মানসিকতা স্পষ্ট। অথচ, বালাকোটে এয়ার-স্ট্রাইক ব্যর্থ বলা সত্ত্বেও পাকিস্তান যে ভারত সীমান্তে পাল্টা হাওয়াই আক্রমণ চালায়, তাতে প্রমাণ হয় ক্ষমতার দম্ভে তাঁরাও বিজেপির সমকক্ষ। এই আক্রমণ প্রতিরোধে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্থমানকে যুদ্ধবন্দি করা হল। দুদিন পরে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার পরেও আমরা দেখছি পাকিস্তান এবং ভারত আগের মতোই প্রচারসর্বস্ব উগ্রতা থেকে নড়েনি। কাশ্মিরে এখনও চলছে গুলিগোলা বর্ষণ। কাশ্মিরকে নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে চলছে ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের আস্ফালন। সারা বিশ্ব তথা দক্ষিণ এশিয়ার আর্থিক তথা মানবিক সূচকগুলিতে দুই দেশের অধঃপতন যে ক্রমশ ত্বরান্বিত হচ্ছে, তা দেখেও দেখছেন না দুই প্রতিবেশী দেশের অহংকারী শাসকরা। সীমান্ত-নির্ভর এই উত্তেজনা আর উদ্গারে দেশপ্রেমের নামে পরস্পরের প্রতি ঘৃণা যেখানে সযত্নে লালিত, সেখানে যারা যুক্তিবোধে বিশ্বাসী, তাঁরা শাসকদের চক্ষুশূল। পাকিস্তানে এমনই এক জন তৈমুর রহমান। পাকিস্তানের মজদুর কিষান পার্টির সভাপতি এই তরুণ সঙ্গীতজ্ঞ কলকাতাবাসীর অচেনা নয়। তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে বোঝা যায় পারস্পরিক এই অবিশ্বাস এবং ঘৃণা এই উপমহাদেশকে কতটা বিষাক্ত করছে।
ভূমিকা ও অনুবাদ : সত্যব্রত ঘোষ
আমরা দেখছি পাকিস্তান আর ভারতের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি বহাল রয়েছে। মিডিয়ায় দুই দেশের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা শুনলে মনে হয় যেন দুটি মানুষের লড়াই চলছে। সেক্ষেত্রে কৌতূহল হওয়া স্বাভাবিক, প্রথমে কে কাকে আক্রমণ করেছিল। কেন করেছিল? কোন দেশ প্রথম গুলি চালায়? কিন্তু যুদ্ধকে এভাবে উপর-উপর দেখাটা ভুল। কারণ, দেশ বললে একটি মানুষের নয়, লক্ষ লক্ষ মানুষের কথা ভাবতে হয়। একশো কোটির বেশি মানুষ বাস করে ভারতে। তার সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে ভাবলে কিছু বিদ্বেষী মানুষের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করা উচিৎ।
যুদ্ধের বাস্তব চেহারাটা কেমন, সেই প্রসঙ্গ আলোচনায় প্রতিটি দেশ দাবি করে যে, আমরা তো শুধু নিজেদের সীমান্তকে রক্ষা করছি। প্রত্যেক দেশের ন্যারেটিভ একটাই— অন্য দেশটি আমাদের আমাদের আক্রমণ করেছে। ইউরোপিয়ান ঔপনিবেশিকরাও তাদের যুগে একই ন্যারেটিভ শুনিয়েছিল। আমরা নিরীহ। আফ্রিকার উপজাতির মানুষরা আমাদের আক্রমণ করেছে।
ভারতের মিডিয়াগুলিতে বলা হচ্ছে, পাকিস্তান জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়, ক্রশ-বর্ডার টেররিজমকে মদত দেয়। কাশ্মির এবং অন্যান্য এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে। তাই এখন ভারতকে নিজেদের সীমান্তগুলিকে রক্ষা করতে হবে। এবং পাকিস্তানে যে টেররিস্ট ক্যাম্পগুলি চলছে, পাকিস্তান সরকার যাদের হঠাতে পারেনি, ভারত সেখানে গিয়ে সেই ক্যাম্পগুলি ধ্বংস করবে। উল্টোদিকে পাকিস্তান সরকারের ন্যারেটিভ আপনারা জানেন। তাদের বক্তব্য, এইসবের সঙ্গে তাঁরা একেবারেই যুক্ত নয়। পুলওয়ামার ঘটনাটিতে তাঁদের কোনও হাত নেই। এই ধরনের পরস্পরবিরোধী দাবি শুনলে দুই দেশের সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়। কার দাবি সঠিক এবং বাস্তবে কীই বা ঘটছে তা জানা এবং তার রাজনৈতিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা আপনার পক্ষে কঠিন।
যুদ্ধ নিয়ে কথা উঠলে মনে রাখতে হবে প্রুসিয়ান আর্মি জেনারেল কার্ল ভন ক্লসউইত্জ কী বলেছিলেন, “War is politics, carried out by violent means.” অর্থাৎ, যুদ্ধটাও এক ধরনের রাজনীতি। অধিকারের রাজনীতি। এর ডায়নামিক্স ঘটে দুটি শ্রেণির মধ্যে— উপরতলার শাসক এবং যারা তাঁদের দ্বারা শাসিত। সারা পৃথিবীর প্রায় সত্তর শতাংশ দরিদ্র মানুষ ভারত, পাকিস্তানে আর বাংলাদেশে থাকে। বিক্ষোভ এই নিয়ে নয় যে কার কাছে কতগুলি মিসাইল আছে। বিক্ষোভ এই নিয়ে, শাসকরা যে সুবিধাগুলি ভোগ করছেন, তা শাসিতদের সঙ্গে ভাগ করতে নারাজ। এই অসাম্য আছে বলেই দরিদ্রদের ব্যবহার করতে পারে ধনীরা। ভারতের মতো, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষদের মুখেও ‘এলিট’দের অবিচারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ : আমরা পানীয় জল পাই না, স্বাস্থ্য পরিষেবা পাই না। আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুল নেই। যারা শিক্ষিত, তাদের কর্মসংস্থান হয় না, ইত্যাদি। অথচ দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এই বঞ্চিতরাই সব ভুলে শাসকদের প্ররোচনায় অন্য দেশকে গালাগালি দেয়। যুদ্ধের রাজনীতিকে আমি এভাবেই দেখেছি।
শাসকদের জন্য যুদ্ধটা একটা হাতিয়ার। তাঁরা সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায় করে এই বলে যে, অন্য দেশ আমাদের হুমকি দিচ্ছে। সেই কারণে, ভোটের ঠিক আগে আমেরিকা, পাকিস্তান বা ভারত উগ্র জাতীয়তাবাদের বাতাবরণ সৃষ্টি করে। এই প্রবণতা নতুন নয়। অনেকেই এই বিষয়ে লিখেছেন। এখনও তাই ঘটছে।
ভারত আর পাকিস্তান যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তা কাশ্মির নিয়ে। কাশ্মির ভূভাগ এবং সেখানকার অধিবাসীদের কে নিয়ন্ত্রণ করবে। একে ‘স্বাধীনতার লড়াই’ বলে মেনে নেওয়া যায় না। দুই দেশই চাইছে অন্য দেশ যেন কাশ্মিরকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে। সত্যিই যদি ‘স্বাধীনতার লড়াই’ হত তাহলে আপনারা দুই দেশের মানুষকে এমন নিকৃষ্টভাবে পোকামাকড়ের মতো জীবন নির্বাহ করতে দেখতেন না।
পাকিস্তানে অন্তত তিরিশ লক্ষ চুক্তি শ্রমিক রয়েছে। এই মানুষগুলি যে দাসত্বের ফাঁসে বন্দি, তা পাকিস্তানের মানবিক রক্ষা সংস্থাও স্বীকার করে। ভারতেও তাই। স্বাধীনতার লড়াই হলে প্রথমে তো ইটভাটাগুলিতে এবং অন্যত্র যে বন্ডেড লেবারার-রা আছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। তাদের যে ন্যূনতম মানবিক অধিকারটুকু আছে, তা ফেরাতে হবে। শাসক সম্প্রদায়ের কেউই এই ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করে না। দরিদ্র মানুষদের দুরবস্থা নিয়ে পাকিস্তান বা ভারত— কোনও দেশের সরকারের বিশেষ মাথাব্যথা নেই। অথচ সাধারণ মানুষের কাছে ভোট চাইতে গেলে তাঁরা একই কথা বলে এসেছেন। গরীবদের দুঃখে তাঁদের হৃদয় কতটা কাঁদে। তাঁরা যদি নির্বাচনে জেতেন, তাহলে সবকিছু বদলে যাবে। কথাগুলি রেটোরিক ছাড়া আর কিছুই নয়। বাস্তবে কিছুই বদলায় না। একের পর এক নির্বাচনে উপরমহলের পছন্দসই প্রার্থীদেরই ভোটে জেতানো হয়। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, দুর্নীতি রুখবেন, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবেন, দেশের উন্নয়নে মন দেবেন। কিন্তু কিছুই হয় না।
এখন আমরা আরেকবার যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছি। পরিস্থিতি সেদিকেই যাচ্ছে। এর পরিণাম কী? ভারত বা পাকিস্তান— কেউই এ যুদ্ধে জিতবে না। দুই দেশই হারবে। এছাড়া আর কিছুই ঘটবে না। আমরা সবাই একটা বৃত্তে আটকে ঘুরপাক খাচ্ছি। ভারতের ধারণা, জৈস-এ-মহম্মদ তাদের সীমান্তে ঢুকে আক্রমণ হেনেছে পাকিস্তানের সহায়তায়। তার উচিৎ জবাব দিতে সীমান্ত অতিক্রম করে জঙ্গি শিবিরগুলি ধ্বংস করা হয়েছে। পাকিস্তানের বক্তব্য ভারত যা করেছে, আমরাও বুঝিয়ে দেব যে আমাদের ক্ষমতা কম নয়। ভারতের আক্রমণে সত্যিই যদি ক্ষতি না হয়ে থাকে, তাহলে আমার তো মনে হয়, পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণ করবার কারণ ছিল না। আমরাও কম শক্তিশালী নয়— এটুকু প্রমাণ করবার জন্য ভারতের মিসাইল হানার জবাবে দুটি জেট স্ক্র্যাম্বেল করা হল। বিমানগুলিকে মেরে নামাল ভারত। পাকিস্তান এরপর বলবে ভারতের চারটে প্লেন উড়িয়ে দাও। তার জবাবে ভারত আটখানা পাকিস্তানের প্লেন ধ্বংস করবে। এভাবেই এসকেলেশন ঘটবে। যতক্ষণ না পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
তাই বয়ানবাজিতে মনযোগী পাকিস্তান এবং ভারতের মানুষের কাছে একটাই আবেদন। এই ফাঁদে আর পা দেবেন না। যুদ্ধের এই নেগেটিভ সাইকেলটি থেকে আমাদের বার হয়ে আসা প্রয়োজন। এতকাল ধরে উপরমহলের ক্ষমতারক্ষার রাজনীতির মারপ্যাঁচে নারকীয় হয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন। তাঁরা তো এখনও গোলাম। দারিদ্রসীমার নিচে যে ক্ষুধার্ত মানুষদের অবস্থান, তাঁদের গোলাম ছাড়া আর কী বলব। প্রতিদিনের জীবনে স্বাধীনতা বলে তাদের কিছু নেই। ন্যূনতম অধিকারটুকুও নেই। ইটভাটির বাইরে যে রাজনীতি চলে, তাতে তার কোনও জায়গাই নেই। তাই পাকিস্তান এবং ভারতে প্রগতিশীল মানুষদের আবেদন, নিজেদের দেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করুন। যাতে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতিতে ডি-এসকেলেশন ঘটে। ক্রসবর্ডার টেররিজমকে নির্মূল করবার জন্য দুই রাষ্ট্রপ্রধান যেন সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে একটি প্রোটোকল বানায়। দুই দেশ সহযোগী হয়ে যাতে পরস্পরের সঙ্গে ইনফরমেশন শেয়ার করে।
পাকিস্তান সরকারের কাছে আমি জানতে চাই, ভারতের পাঠানো প্রমাণের অপেক্ষায় না থেকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না কেন। সত্তর হাজার পাকিস্তানবাসী প্রাণ হারিয়েছে জঙ্গিদের হাতে। এদের জন্য বিলিয়ন ডলারের বেশি গচ্চা হয়েছে পাকিস্তানের। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল, এই জঙ্গিরা অন্য কোথাও নাশকতা ঘটিয়ে পাকিস্তানে ফিরে, পাকিস্তানকেই বারবার বিপদে ফেলে। তাই, প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করবার প্রয়োজন কী? আমরা কেন নিজেরাই প্রমাণ খুঁজে নিচ্ছি না? টেররিজমের কারণে আমরা যে যন্ত্রণা সহ্য করেছি, আমরা কি চাইব, অন্য দেশ সেই কষ্টভোগ করুক? তাছাড়া, তালিবান হোক বা জৈস-এ-মহম্মদ বা লস্কর-এ-তইবা— সব জঙ্গি দলই ফ্যাসিস্ট। এরা কেউই ওয়ার অফ ন্যাশনাল লিবারেশন লড়ছে না। একথা ঠিক, কাশ্মিরে প্রচুর মানুষ মারা গেছে সেনাবাহিনীর হাতে। অন্তত সাতচল্লিশ হাজার। হিউমান রাইটস অর্গানাইজেশন বলছে। আফগানিস্তানেও মারা গেছে। কিন্তু আফগানিস্তানে, বসনিয়ায়, কাশ্মিরে, মধ্য এশিয়ায় যে জঙ্গি সংগঠনগুলি সক্রিয় তারা সব ফ্যাসিস্ট। রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। যে ধরনের শাসনব্যবস্থা এরা তৈরি করতে চায়, তাতে মানুষের দুরবস্থা এখনকার তুলনায় বাড়বে বই কমবে না।
কাশ্মিরে এমন অনেক মানুষই আছে যারা সংবিধানসম্মত উপায়ে নিজেদের অধিকার অর্জনের জন্য সংগ্রাম করছে। সেখানে ডেমোক্রেটিক, সেক্যুলার এবং প্রগ্রেসিভ সংগঠন আছে। তাদের সঙ্গে এই জঙ্গি দলগুলির কোনও তুলনাই করা যায় না। ফ্যাসিজম রপ্তানি করে পাকিস্তানেরও কোনও লাভ হয়নি। সেই ফ্যাসিস্টদের আবার আমদানি করতে হচ্ছে। পাকিস্তানেও ফ্যাসিজম বাড়ছে। তাতে বরাবর ক্ষতিই হয়ে এসেছে। আফগানিস্তানে তালিবানদের শাসনে আদৌ কোনও উন্নয়ন ঘটেনি। অন্য কোনও দেশ তাকে ভালো চোখে দেখেনি।
কাশ্মিরে বাস্তব পরিস্থিতি ভালো নয়। কিন্তু জৈস-এ-মহম্মদ-এর মতো ডানপন্থী, প্রতিক্রিয়াশীল ফ্যাসিস্টদের হাত ধরে সেই দুরবস্থা থেকে কাশ্মির মুক্তি পাবে না, তাই ওদের স্বার্থে ভারতের সঙ্গে আবার লড়াই করাটা পাকিস্তানের পক্ষে বাঞ্ছনীয় নয়। এই ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলিকে একে একে ধ্বংস করতে হবে। সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে এরা আফগানিস্তানের ক্ষতি করেছে, পাকিস্তানের ক্ষতি করেছে, কাশ্মিরের ক্ষতি করছে। ভারতের ক্ষতি তো লাগাতার করছেই। দুই দেশের সরকারের কাছে আমরা কতটা আশা করতে পারি, জানি না। কিন্তু বামপন্থী এবং আলোকপ্রাপ্ত মানুষদের উদ্দ্যেশ্যে আবার বলব যে, দুই দেশের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই গরীব। এই দুই দেশেরই নিউক্লিয়ার বোমা আছে। এরা যদি অনবরত পরস্পরকে এমনভাবে নিজের শক্তি জাহির করে যেতে থাকে, এতে সবারই ক্ষতি। শাসকদেরও ক্ষতি। কারণ, লড়াই করতে করতে পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, তখন ভবিষ্যতের প্রজন্মরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ বলে তখন আর কিছু থাকবে না। সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখে শান্তি কাম্য।