সোমেন বসু
বেটি,
আবার একটা চিঠি লিখতে বসলাম তোকে। আসলে, কী জানিস, বড় হচ্ছিস তো, প্রশ্নগুলোও বড় হচ্ছে তোর, বোধহয় তোর চেয়েও বেশি গতিতে। সংখ্যায়, ওজনেও। সংখ্যাটা সমস্যা নয়, কিন্তু ওজনটা বিপদে ফেলে দিচ্ছে মাঝেমাঝেই!
এই সেদিন যেমন, টিভিতে খবরের চ্যানেলটা চলছিল, তুই সামনে বসে খেলছিলি আপন মনে, হঠাৎ কোদ্দিয়ে একটা শব্দ যে তোর কানে গাঁথল, আর তুইও ছুটে এসে আমাকে জিগিয়ে বসলি— বাবা বাবা, ভোত্ মানে কী?
বুঝিয়ে দেওয়া যায় হয়তো সহজ করে, সহজ মানে সাড়ে চার বছরের মাপে ঠিকঠাক, কিন্তু সে পদ্ধতি বা বিদ্যে আমার আয়ত্ত নয় রে মা! অতএব ভুজুং— ওই যে পোলিও খাইয়ে তোর আঙুলে যেমন দাগ মেরে দেয়, বড়দেরও দেয় ভোট দিলে! এই ১৯শে মে দেখবি, মানে এই মার্চ, তারপর এপ্রিল, তারপর মে মাসের নাইনটিন হবে যেদিন, সেদিন দেখবি, মা-আমি-দিদুন সবাই ওরকম আঙুলে কালি লাগিয়েছি। আমরা গিয়ে ভোট দেব, একটা যন্ত্র থাকে, তাতে সুইচ টিপে ভোট দিতে হয়, তখন ওখানে যেসব কাকু-পিসিরা থাকে, তারা আঙুলে কালি লাগিয়ে দেয়। ওটাকেই ভোট বলে!!!
তোর আরও প্রশ্ন ছিল, আমারও ভুজুং এমত নানাবিধ, কিন্তু সেসব কথা নয়। কথাটা হল, এই যে শিখলি ভোট মানে আঙুলে কালি, সেটাই একটু ভেঙে বলে রাখার চেষ্টা করি এই চিঠিতে। পড়িস, বড় হলে, ইচ্ছে হলে…
সেদিন, ভোট ঘোষণার পর, কয়েকটা লাইন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল, জানিস। লিখিনি কোথাও। এখানে, এই তোকেই বলি…
আমরা সারাদিন খেটে আসি মাঠে-ঘাটে-কলকারখানায়। এসে, বিষ গতরে, হয়তো একটু হাঁড়িয়া, চোলাই, হয়তো বা একটু গরম ভাত। আর তারপর বেভুল বেঘোর ঘুম। এইরকম কোনও কোনও ঘুমের রাতে ভোট আসে। আমরা ঘুমোই। সকালে উঠি সূর্যের সঙ্গে, ক্লান্তিহীন একটা ঝরঝরে শরীর নিয়ে। তখন ভোট চলে গেছে। আমরা আবার কাজে চলে যাই মাঠে-ঘাটে-কলকারখানায়…
হাসি পেল একটু। এখন যদি শুনতিস বা পড়তিস এগুলো, ঠিক শুধোতিস আমরা কই মাঠে-ঘাটে-কলকারখানায় যাই? ঠিকই বাবা! এই আমরা আমি-তুই নই! কিন্তু… আ-ম-রা-ই!
আমাদের দেশটা, জানিস মা, গণতন্ত্র। আর ভোট হল সেই গণতন্ত্রের মহোৎসব। আর… বারবার ‘আর’ বলছি কেন? আচ্ছা আচ্ছা… গণতন্ত্রে তো বটেই, সব তন্ত্রেই, সবচেয়ে জরুরি এই ‘আমরা’ ঠিক করাটা। গণতন্ত্রে সবচেয়ে জরুরি কারণ, এখানে একটা ফাঁকি আছে! এখানে বলা হয়, আমরা সবাই সমান। সেই ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটার মতো। ওই উঁচু-উঁচু বাড়িগুলো যাদের, ধনী বোঝানোর আর উপায় এই মুহূর্তে পাচ্ছি না, আর এই তোর স্বপ্নাপিসি, ময়লা নিতে আসা রাজুকাকু, রিকশাকাকু, কল সারাতে এসেছিল যে পাইপকাকু, এই স-বা-ই সমান। সবারই একটা করে ভোট! এটা একটা বিরাট ফাঁকি! এখানে খুব স্পষ্ট আমরা-ওরা আছে, জানিস। তাই তোকে ভোট বলতে গেলে এই আমরা-টাই বলতে হবে বেশি করে।
আচ্ছা আয়, আমরা বরং শুরুতেই একটা রফা করে নিই। যখন তুই এই চিঠি পড়বি, যদি পড়িস আদৌ কোনওদিন, তখন ধরে নিচ্ছি তুই এই ভোট, গণতন্ত্র শব্দগুলোর অর্থ মোটা দাগের হলেও বুঝে গেছিস। না না, ফাঁকি মারছি না, ভুজুং-ও নয়! পড়ার সময় দেখিস, বুঝতে পারবি। তার চাইতে, আয়, তোকে বরং ক’টা গল্প বলি…
অনেক দূরে, দাদাভাই যেখানে গেছে তার কাছাকাছি, মহারাষ্ট্রের ভীমাভাই দাম্বালে। কৃষক। তুই যে শিখেছিস না, এফ ফর ফার্মার, সেই ফার্মার। শোন তোর অনির্বাণকাকু লিখেছে তাঁর গল্প…
এই একটা সমস্যা হবে, হাসিস না। পড়তে পড়তে তুই ভাববি, বাবা ধরে নিল আমি ‘ভোট’, ‘গণতন্ত্র’ বুঝে যাব পড়ার বেলায়, কিন্তু আবার কৃষক বোঝাবে! যাকগে, গল্পটা শোন…
বাষট্টির ভীমাবাঈ দাম্বালে। নাসিকের পেইন্ট তালুকের নিরগুদ কারাঞ্জলি গ্রামের ভীমাবাঈ। রোজ চারবার করে দেড় কিলোমিটার দূরের কুয়ো থেকে জল আনেন। আট থেকে দশ কুইন্টাল ধান ফলাতেন জমিতে। জমি মানে অন্যের। তাঁর নামে নেই। বৃষ্টি নেই। কুয়োতে জল নেই। ধান, অড়হর হয় না আর। ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে আঙুর, টমাটো তুলে এনে বিক্রি। ১৫০ টাকা আয়। ৪০ টাকা খরচা। শেয়ার করা অটোতে লড়াই।
শুনলি? চ, এবার পাঞ্জাবে যাই। সাঙ্গরুর জেলা। বড় হলে, যখন এই চিঠি পড়বি, হয়তো তখনই বা তার পরে, জানবি সবুজ বিপ্লবের কথা। এই পাঞ্জাব ছিল সেই তথাকথিত বিপ্লবের ধাত্রীভূমি। চল…
…সাঙ্গরুরের এক পরিবারে তিন ভাই এইভাবে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন। তাঁদের স্ত্রীরা জানালেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই আত্মহননের কারণ ঋণ। তিন ভাইয়ের মোট জমি ছিম চার একরের। তাঁদের মৃত্যুর পর প্রতি পরিবারের কাছে এখন পড়ে আধ একরেরও কম জমি। প্রত্যেক ভাইয়ের বাকি ঋণের পরিমাণ ছিল চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা। তাঁদের মৃত্যুর পর এই তিন পরিবার তাই বাধ্য হয়েছে জমি বিক্রি করে দিতে। জমি বেচেও তাঁদের আরও কিছু্ ধার নিতে হয়েছে বাড়ির খরচ মেটানোর জন্য।…
শুনলি? চ, রাজস্থানে চ। সোনার কেল্লার দেশ। সেখানকার হুকুমচাঁদ মীনার গল্প শোন তোর দিঠিদিদির বাবার থেকে…
…যেমন ধরুন হুকুমচাঁদ মীনার পরিবারের কথা। হুকুমচাঁদ মীনা, ২৮ বছর বয়স, রাজস্থানে কোটার থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ব্রিজনগর গ্রামে থাকতেন। রসুন চাষ করেছিলেন ধারকর্জ করে, তারপর দাম না-পেয়ে গত মে মাসে আত্মহত্যা করলেন। ২৫ লাখ টাকা ধার ছিল, আর তাঁর রসুন বিকোচ্ছিল ৫ টাকা কিলো দরে। ফসল কিন্তু দারুণ ফলেছিল! ২০ বিঘাতে ২,৫০০ টন! না না, ২০ বিঘা জমি তাঁর নিজের নয়, বেশিটাই বর্গা নেওয়া। তা হলে চক্রটা কী দাঁড়াল? চমৎকার উৎপাদন, সেখান থেকে দামে ধ্বস, সেখান থেকে আত্মহত্যা।…
আরও যাবি? দক্ষিণে? কর্নাটক, অন্ধ্র… এমনকি এই আমাদের পশ্চিমবাংলাতেও?
থাক। আসলে এই গল্পগুলো এত-এত ছড়িয়ে আছে এই মুহূর্তের গোটা ভারতবর্ষে! তুই বড় হবি যখন, অন্তত এই চিঠিটা পড়ার মতো বড়ও, আশা রাখছি তখন আর থাকবে না গল্পগুলো। তা হলে একটু দেখে নিস খুঁজে, পেয়ে যাবি।
ভাবছিস বাবা ভোট বলতে গিয়ে, ‘আমরা’ বলতে গিয়ে এই গল্পগুলো শোনাচ্ছে কেন? কারণ, এগুলোই আ-মা-দে-র গল্প। ওই ভীমাবাঈ, ওই হুকুমচাঁদ, ওই সাঙ্গরুরের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে লড়ে যাওয়া মহিলারা… এঁরা সবাই তোর জেঠু-কাকু-পিসি, নির্দ্বিধায়। তোর ‘আমরা’য় যদি এঁরা না-থাকেন সসম্মানে, তবে মা, মনে রাখবি তোর মানুষ পরিচয়টাই প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবে।
আমরা মধ্যবিত্তরা, অনেকটা ফানুসের মতো। ওই যে, কালীপুজোয় ওড়ালাম। আমরা ওপরের চাকচিক্যে বিহ্বল হয়ে খালি ওপরে উড়তে চাই, পায়ের তলায় যে মাটি নেই, সে খবরও রাখি না। তাই আমরা না-পারি আকাশের তারা হতে, আর ওই পেছনের আগুনটা নিভে গেলেই মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকি চিমসানো মুড়ির মতো। তোর দেবুকাকু, উজানের বাবা, ক’দিন আগে খুব খেদের সঙ্গে লিখেছে, “…কিন্তু এই সমস্ত কিছুর চেয়ে অনেক বড় সমস্যা হিসেবে জেগে থাকবে কৃষিজীবী ভারতের দীর্ঘমেয়াদি সংকট, যার দিকে এতদিন শাসকের উপযুক্ত নজর পড়েনি। নজর পড়েনি দেশের শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্তের, যারা শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত বহুজাতিকের স্টোরে ঘুরে ঘুরে সতেজ সবজি কেনেন, অথবা বাড়িতে বসে মোবাইলে অ্যাপ টিপে চাল ডাল বেছে নেন, অথচ এসবের আসল উৎপাদকের কথা তাদের কোনওদিন মনেও পড়ে না। আর কত প্রজন্ম পেরোলে ভারতবর্ষের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের এই দুঃসহ যাপন বিষণ্ণতার চেতনা হয়ে আমাদের দেশের মধ্যবিত্তের রক্তে মিশবে?”
এই মিশ্রণ, এই সংশ্লেষণ অবশ্যকর্তব্য, বাবা। কারণ এঁরাই আমাদের দেশের বুনিয়াদি মানুষ। অতএব, এই সংশ্লেষণের সাফল্যই নির্ধারিত করে দেবে তোর রাজনীতি, তোর দেশ, দেশপ্রেম। হ্যাঁ দেশ। মনে রাখিস, দেশ মানে দেশের মানুষ। মানুষ বাদ দিয়ে কিছু হয় না।
আর সেই রাজনীতির মাত্র একটা অংশ হল ভোট।
এই মিশ্রণ হলেই, যদি তোর আমরা-য় ওতপ্রোতভাবে জারিত থাকেন ভীমাবাঈপিসি, হুকুমচাঁদকাকু, রাজুকাকু, স্বপ্নাপিসিরা, তখনই অবধারিতভাবে এই আত্মহত্যাগুলিকে হত্যা বলে বুঝতে পারবি, মা। কোনও এক শ্রেণির জনগণ যখন লাগাতার এবং ব্যাপক হারে আত্মহত্যা করে যান, তখন তাকে আত্মহত্যা বলে না। একটা রাষ্ট্র, যে নিজেকে কল্যাণকামী গণতন্ত্র বলে দাবি করে, সে অন্য সব কাজ বন্ধ রেখে ছুটে যাবে এই মানুষগুলোর কাছে, বন্ধ করবে এই অসহনীয় চক্রটাকে।
কিন্তু করে না। বদলে বড়-বড় বক্তৃতা দেয় নির্লজ্জের মতো! ঘৃণা করতে শিখিস এদের।
আর এবার বুঝতে পারছিস, কেন বলছিলাম ভোট আসে এবং চলে যায় আমাদের ঘুমের মধ্যেই?
শোন, আরও কিছু গল্প বলি…
গুরুগ্রাম, বা গুরগাঁওয়ের রামনিবাস যাদব, কুলদীপ সিং, পরশুরাম চন্দ… এঁরা সব শ্রমিক। শ্রমিক মানে যাঁরা কলকারখানায় এই সব কিছু বানান, বুঝলি বাবা? এই বই, খাতা, রং, চেয়ার টেবিল ঘর বাড়ি রাস্তা স-অ-ব। ওহ… হো! ওই দ্যাখ, আমি আবার শ্রমিক মানে বোঝাতে শুরু করেছি। আসলে তোর সাড়ে চারের শরীরটা ঘুরঘুর করছে তো চোখের সামনে, ভুল হয়ে যাচ্ছে! যাই হোক, জানতে পারবি ২০১৬ সালে আমাদের দেশে নোটবন্দি নামে একটা ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষ ফল এই শ্রমিকদের একটা বিরাট অংশের কাজ চলে যাওয়া। কালকের আনন্দবাজারে পড়লাম, এই বাংলা থেকে তিরুপুরে কাজ করতে যাওয়া একটি ছেলে এখন তিরুপুরের রাস্তায় রাস্তায় শুয়ে থাকে। যেদিন কাজ পায়, সেদিন আধপেটা জোটে, অন্যদিন নয়। নোটবন্দির জন্য তার মূল কাজ চলে গেছে। বাড়িতে ফিরতে তো পারেই না, জানাতেও পারে না, কারণ বাড়ির মানুষগুলো তার টাকার পথ চেয়েই বসে থাকে!
বড় হয়ে ‘কাক্কুস’ বা টয়লেট নামের ডকুমেন্টারিটা দেখিস। সাফাইকর্মীদের নিয়ে বানানো। দেখলে বমি হবে, খেতে পারবি না দু’একদিন, ঘুম আসবে না রাতে। আর মনে করবি, তোর সেই নিজের মানুষগুলোর কথা যাঁরা এই কাজগুলো দিনের পর দিন নিজে হাতে করে চলেছেন, যে কাজগুলো শুধু দেখেই তোর নাওয়াখাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে! আর মনে রাখিস, আমাদের দেশে এক প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন, যিনি এই মানুষগুলিকে এই নরকযন্ত্রণা ভোগের থেকে উদ্ধার করতে চেষ্টা করার পরিবর্তে কিছু গিমিকবাজি করে এঁদের কাজটাকে মহান বানানোর মস্করা করেছিলেন।
আমরা যে অসমে বেড়াতে গেছিলাম, কাজিরাঙা। হাতি। সেই অসমের পাশেই মেঘালয়। এ-বছরের শুরুতে সেই মেঘালয়ে খনিতে জলে ডুবে হারিয়ে গেছেন ১৫ জন খনিশ্রমিক। আমাদের দেশের সরকার তাঁদের উদ্ধারের জন্য যতটুকু কম চেষ্টা করা যায় ততটুকুই করেছিল, জানিস মা?
‘জন হেনরি’ গানটা শোনাব তোকে…
জন হেনরির কচি ফুল মেয়েটি/ পাথরের বুকে যেন ঝরনা/ মা’র কোল থেকে সে পথ চেয়ে থাকে বসে/ বাবা তার আসবে না আর না…
বড় হয়ে, পারলে আদিবাসীদের গ্রামে যাস। বেড়াতে, ছবি তুলতে নয়। তাঁদের সঙ্গে মিশতে। তোর শহুরে খোলসটাকে ভেঙে যদি ঢুকতে পারিস তাঁদের মধ্যে, দেখবি সারল্য, আন্তরিকতা কাকে বলে। দেখবি, প্রকৃতির সঙ্গে কী নিবিড় বন্ধন এঁদের। নিজের এই জটিল কুটিল যাপনকে বিরক্তিকর মনে হবে তখন। অজান্তেই নতজানু হয়ে পড়বি এঁদের কাছে। তখন শুধু মনে করবি, আমাদের রাষ্ট্র এঁদের কাছে হাজির হয়ে এঁদের কাছে বাসস্থানের পাট্টা চাইছে, জমির উপগ্রহ চিত্র চাইছে! না-দিতে পারলে পুলিশ-মিলিটারি লেলিয়ে উচ্ছেদ করছে তাঁদের ভিটেমাটি থেকে!
আর কত বলব….
যাকগে, হয়তো পড়বি আর ভাববি বাবা তেড়ে জ্ঞান আর নির্দেশ দিয়ে গেল! না না, সেসব কিছুই না। তোর যাপনের অন্তিম নির্ধারক তুইই। আমি খালি কথাগুলো বলে গেলাম। সেগুলো হয় তোর যাপনে মিশবে, নয় পড়ে থাকবে এই চিঠিবন্দি হয়েই। সে তুই ঠিক করবি।
তবে একটাই শেষ কথা। রাজনীতি থাকাটা জরুরি। কারণ রাজনীতি না-থাকা আত্মা না-থাকার সামিল। আর ‘আমরা’ নির্ধারণ করাটা। এটা সচেতনভাবে করতে হয় আমাদের, মধ্যবিত্তদের। সচেতন না-থাকলেও ‘আমরা’ হয়। ফানুসরা।
এগুলি থাকলে ভোটও হয়ে যাবে।
শুধু খেয়াল রাখিস, নিজের রাজনীতি যেন নিজের মানুষ পরিচয়টাকে না প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়।
বাবা,
৩০ মার্চ, ২০১৯