Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

ঋক অমৃত-র কবিতা

পাঁচটি কবিতা

 

একটা বাস যখন প্যাসেঞ্জার তুলতে তুলতে যায়, আরেকটা কবিতা শব্দ, আমাদের বিরক্তি সমানুপাতে তখন বাড়তে থাকে। অথচ সেই শব্দ কিংবা প্যাসেঞ্জার কবিতাটি ও বাসের কাছে কিন্তু মহার্ঘ। কিছু পাঠক নেগেটিভ রিভিউ লেখে এই নিয়ে, ড্রাইভারকে কিছু প্যাসেঞ্জার গালাগাল দেয়। কোলাহল বাড়ে…

আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া কিন্তু এই জার্নির উদ্দেশ্য নয়।
কন্ডাক্টর চান যে আপনি একটু স্থিতধী হোন, খালাসি চান
আপনিও একটু চারপাশটা দেখুন।

 

টিকিট কাটা এমন স্বভাব, অনুরাগের ভ্রমণেও আজকাল ভাড়া চেক করি। নাছদুয়ার থেকে সদরে আসতে পাঞ্চাল পড়ে, কাশী পড়ে, মগধ পড়ে, এমনই সংসার। পা ছড়িয়ে বসে আছি ছাঁচানিতে। ঢাল নেমে গেছে খোয়াই পর্যন্ত। কোন পথে যাব? কোন দিকে অপেক্ষা করে আছে মাধুকরী?

এ সান্দ্র-সংকটে বৃষ্টি নামে। চৌকাঠে, হা-মণ্ডূক চেয়ে থাকে বাস্তুসাপ।

 

মুগ্ধতা নেই, শৈশবের কিছু স্মৃতিচারণ ছাড়া। কোথায় সে জন্মেছিল, হাতড়াতে হাতড়াতে একটি-দু’টি শব্দের স্পর্শে আসে। অচেনা জল, অচেনা রোদের সঙ্গে ডায়েরী আদান প্রদান করে

সেও তো বেশ পুরনো কথা, সেলাই থেকে ঝুরো ঝুরো মাটি ঝরে পড়ে। সে মাটি মুঠোয় ধরে নিংড়ে নিলে রক্ত বের হয়। সে মাটি খামচে ধরলে চিৎকার করে…

 

আমার ভুলে যাওয়ার সংখ্যা অগণন, আমার ভাষা শুধুমাত্র ক্রিয়া।

লোকাল ট্রেনের রচনা সংকলন থেকে একটি-দুটি
আলু, সিম, পোস্ত ও মাংসের ঝোল, উত্তরাধিকারে,
ওভারহেড তারে আটকে থাকে

তারপরও ভিড় বাড়ে। নারীর চেয়ে বেশি কাঙ্ক্ষিত
কর্মসংস্থান।শুধু লোকসমাগমহীন ব্রিগেড এ হৃদয়।
সূর্য ডুবে গেলে

দিনও ক্রমে বীতশোক হয়। অন্তর্হিত আলোয় মূর্তি ভাঙে
সমস্ত প্রশ্নেরা স্নিগ্ধ ডিনারের পর ঘুমিয়ে পড়ে

কে আছো জেগে, কে থাকে? রাতের পাহারাদার
কাকে এসে সাবধান করে যায়, ‘জাগতে রাহো’?

 

পাণ্ডুলিপির শেষে পূর্ণচ্ছেদ রূপে আসে যে লেখা, ঋক, সে নিরাকার নয়। কে পাঠায় তাকে? কে বলে “আর নয়! এইবার বাড়ি ফিরে এসো”!

গৃহস্বামী টের পায়; তারও আগে টের পায় বাড়ির গৃহিনী। ক্রমে চোখ খোলে, লেখার কণ্ঠে শুধু জল। ধীরে ধীরে চৌকাঠে এসে দাঁড়ায়

অথচ কপাট খুললে, মলাট বন্ধ হয়ে আসে।