Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

কৌশিক পালের লেখা

অ-‘করা’য়ত্ত 

 

আপাতত যেটা বোঝা যাচ্ছে, জিএসটির স্ল্যাব ছাড়া সব কিছুই ভ্যাটের মতো। শুধু ঘুরে ফিরে ট্যাক্সটাই বাড়ছে বিপুল পরিমাণে। বোঝার ওপর শাকের আঁটি হচ্ছে প্রতিমাসে রিটার্ন জমা করার চাপ।

ধরুন একজন হোলসেল ডিস্ট্রিবিউটর বছরে এক কোটি টাকার লেনদেন করেন, এবং কম্পিউটার জানেন না। চার শতাংশ কমিশন পান অর্থাৎ চার লাখ টাকা। বিজনেস এক্সপেন্স বছরে এক লাখ টাকা বাদ দিলে তিন লাখ টাকা অর্থাৎ মধ্যবিত্ত হিসেবে মাসে পঁচিশ হাজার টাকা রোজগার করেন। এবার চারজনের একটি পরিবারের পেছনে পঁচিশ হাজার টাকা খুব বেশি নয় নিশ্চিত! তাঁর জিএসটি রিটার্ন ফাইল করার জন্য মাসে যদি দুটি হাজার টাকাও খরচ হয় সেক্ষেত্রে একমাসের রোজগার এই ট্যাক্সিং সিস্টেমটা মেন্টেন করতেই খরচ হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যদি ডিজিটাল ট্রানজাকশনের খরচ ধরেন তো আরও কিছু টাকা বাদ পড়বে।

ছোট কারবারিদের হাত থেকে ব্যবসার রাশ যদি বড়র দিকে যায়, তাহলে পাড়ায় পাড়ায় কিছু ব্র‍্যাণ্ড স্টোর বাড়বে, কিছু মালিক শ্রমিকে পরিণত হবেন। ব্যবসার এই বহুস্তরীয় ব্যবস্থা ভেঙে গিয়ে ক্রেতারা ছুটবেন কোম্পানির নিজস্ব স্টোরের দরজায়।

উৎপাদিত দ্রব্যের একীভূত কর ব্যবস্থা (সিঙ্গল পয়েন্ট ট্যাক্সিং) ভারতের মতো দেশে অধিক উপযোগী হতে পারত, যেখানে ট্যাক্স দেয়ার থেকে ট্যাক্স হিসেব করা বেশি কঠিন ব্যাপার।

আবার ধরুন, এক ব্যবসায়ী এম আর পি-তে খুচরো বিক্রি করেন। যেমন বিস্কুটের প্যাকেট, চকোলেট, ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিদিনের ব্যবহারের জিনিস। প্রতি মাসের বিক্রি তিন লাখ টাকা ও কমিশন দশ শতাংশ। ধরুন, তিনি কম্পিউটার জানেন। এবার, আমি তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম কম্পিউটার সফটওয়ার ও ইলেকট্রিক বিল সহ মাসে যে খরচটা বাড়ছে, সেই হাজার টাকা ব্যবসায়ের খরচ হিসেবেই ধরা হল।

এবার তার দশ শতাংশ লাভের মূল্যে জিএসটি ধরা হলে তাঁর লভ্যাংশ ১ শতাংশ কমে যায়। যেটা মাসে ৩ হাজার ও বছরে ৩৬ হাজার টাকা। এই ছত্রিশ হাজার টাকা তিনি ক্রেতার কাছ থেকে ফেরত পাবেন না, কারণ এম আর পির অধিক দাম তিনি নিতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট উৎপাদক কোম্পানি যদি এই খুচরো বিক্রেতার মার্জিন অপরিবর্তিত রাখতে চান, তাহলে তিনি বিক্রীত দ্রব্যের ওজন কমিয়ে এবং বিক্রেতার কমিশন বাড়িয়ে এক পার্সেন্ট মেক আপ করতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে জি এস টি প্রকারান্তরে মূল্যবৃদ্ধি করল।

দুটো বিরুদ্ধ যুক্তি একটু আলোচনা করে নিই। প্রথম, কেউ বলছেন বা বলতে পারেন কম্পিউটার বা সফটওয়্যার ব্যবহার কেন সবাই শিখে নিচ্ছে না। যদিও তারা এটা জানাবেন না কম্পিউটার বা সফটওয়্যারের খরচটা এক্ষেত্রে কে দিচ্ছে! আর চাইলেই আইন করে কাউকে কোনও পরিষেবা কিনতে বাধ্য করা যায় কিনা সেটাও অজানাই থাকবে।

আর দুই, কেউ আবার নিউইয়র্ক টাইমসের একটি খবর উল্লেখ করছেন– মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি আইন করে বিলে ক্রয়মূল্য উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করেছে। তাতে ব্যাপারটা যে অসম্ভব স্বচ্ছ হচ্ছে সে বিষয়ে তর্ক নেই।

কিন্তু একটু পেছনে যাওয়া যাক, ইন্সিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সংক্ষেপে আই আর ডি এ) একটি আইন করে বীমা দলিলে সংশ্লিষ্ট এজেন্টের নাম ফোন নম্বর ও বীমা বিক্রির ফলে প্রাপ্ত কমিশন উল্লেখ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। আমাদের দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মনোভাব সাশ্রয়মুখী। বিখ্যাত বই ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’ বর্ণিত ইকোনমিক অ্যাপ্রোচ আমাদের দেশে কার্যকরী করা সম্ভবপর নয়। আমি নিজেই দেখে আসছি ছোট থেকে একটি বালতি কেনা হলে প্রথম অবস্থায় রান্নাঘরে, একটু ময়লা বা পুরনো হলে চানঘরে, ও সব শেষে ময়লা ফেলার বালতি হিসেবে ব্যবহার হতে। অর্থাৎ বালতির সংখ্যা একই, কিন্তু সেটা বিভিন্ন সময়ে নিজের অবস্থার রূপান্তরের সাথে সাথে আলাদা পরিষেবা দিচ্ছে এবং গৃহস্থকে প্রতিবার একসাথে তিনটি বালতি কেনা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে। আপনি বলতে পারেন, এই মনোভাব দেশে বালতি ইন্ডাস্ট্রি-র রোবাস্ট গ্রোথের পথে অন্তরায়, কিন্তু সঙ্গে এটাও ভাবতে পারেন যে এই পৃথিবীতে অনাবশ্যক জঞ্জাল ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে এই পদক্ষেপ কতটা জরুরী (বিশ্বাস না হলে আমেরিকার প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলির ক্ষয়ক্ষতি হিসেব করে দেখুন)। পুরনো কথায় ফিরি, ইনসিওরেন্স দলিলে কমিশন উল্লেখ শুরু হবার পরে, সাধারণ মধ্যবিত্তরা— ‘দাদা, এতটা গলা কাটছেন’ জাতীয় মন্তব্যে কান ভরিয়ে দেওয়া শুরু করল। গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে, কোম্পানিগুলি প্রিমিয়ামে ডিসকাউন্ট দিয়ে পলিসিগুলি অনলাইন বিক্রি করতে শুরু করল। আজ পর্যন্ত ওপরের লেভেলের এজেন্টদের কাছে একটা পলিসি কোয়ার্টারলি পেমেন্ট করতে গেলে বীমাক্রেতা প্রথম পেমেন্টটা এজেন্টের কাছ থেকে ফেরত পেয়ে যান। আমার দেখা অনেক ছোট এজেন্ট বীমা ব্যবসা বন্ধ করে বড় এজেন্টদের কাছে হিসেব দেখে উদরপূর্তি করেন।

একবার কমিশন লেখা শুরু হলে, কমিশন লেখা ফেরানো যায় না। যে দেশে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা বেতন পাওয়া স্কুল শিক্ষক পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বহুজাতিকের পাপায়া জুস ক্যাপসুল কিনে খান অথচ বাসে ভাড়া কম দিয়ে বিনা টিকিটে চলে যান, মেলায় এসে তিনশো টাকার তাঁতের শাড়ি খোঁজ করেন, সে দেশে বিলে ক্রয়মূল্য বা অন্যান্য অ্যাকাউন্টিং কস্ট দেওয়ার চিন্তা কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটা কি কেউ চিন্তা করেছেন…?

মূল কথায় ফেরা যাক। আপাতত, যেটা মনে হচ্ছে যে নিজে নিজেই করে ফেলা যাচ্ছে, সেটা কিন্তু সত্যিই নিজে নিজে করে ফেলা যাচ্ছে না। এই ধরুন জিএসটি টি আর এন আপনি নিলেন, তার পরে অ্যাপ্লিকেশন ফাইল করার সময় আপনাকে বিভিন্ন অদ্ভুত তথ্য দিতে হবে; যেমন– ইনকাম ট্যাক্স জুরিসডিকশন, কমিশনারেট, আই টি সার্কল ইত্যাদি। এবার এগুলো ওই বিভাগে কর্মরত মানুষ ছাড়া অন্য কারও পক্ষে জানা একটু মুশকিল আছে।

আমার জুরিসডিকশন কাঁথি, কিন্তু ইনকাম ট্যাক্সের অনুযায়ী তমলুক। আবার কমিশনারেট কী আমি জানি না। এবার জিএসটি প্র্যাকটিশনারের তালিকা দেওয়া আছে, যারা আপনাকে সমস্ত কাজ করিয়ে এনে দেবে টাকা নিয়ে। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, ট্যাক্স যেহেতু আমি দেব, আমার সুবিধার্থে ট্রেড লাইসেন্সের ওপর উল্লেখ করে দেওয়া যায় আইটি জুরিসডিকশন বা অন্যান্য টেকনিকাল ব্যাপারগুলি। ভারতবর্ষে কোনও ট্রেড লাইসেন্সেই তা উল্লিখিত থাকে বলে মনে হয় না।

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের এত সমন্বয়ের অভাব, এবং তার সম্পর্কিত দায়ভার যখন করদাতাকেই নিতে হয়– তখন করদাতার পক্ষে সেটা আরেকটু সহজ করার দায় ছিল নতুন করব্যবস্থার। সেটা আদপেই হল না।

তাছাড়া জিএসটি প্র্যাক্টিশনারের তালিকা দিয়ে দেওয়ার একটা অন্য দিক আছে। আমি বুঝতে পারছি যে তারা অবশ্যই সাহায্য করবেন যেভাবে গৃহশিক্ষকরা সাহায্য করেন পড়াশোনায়। আমরা কি অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষাদপ্তরের ওয়েবসাইটে গৃহশিক্ষকদের তালিকা দেখতে পেতে পারি! কে জানে…!

জিএসটির বক্তৃতায় দেখলাম বেশ কয়েকবার ইমানদারির প্রসঙ্গ উঠল! যে দুটি ব্যাপারে আমার সবচেয়ে আপত্তি সেটির প্রথমটি হচ্ছে এই ইমানদারিতা। ব্যবসা করা মানেই সেটার মধ্যে একটা অস্বচ্ছতা আছে, এটা ধরে নেওয়া হচ্ছে কেন! সেলসের সঙ্গে যুক্ত ট্যাক্স সম্পূর্ণভাবে উপভোক্তার ঘাড়ে চাপে! আমার সাথে সন্ধেতে এক কাজু ব্যবসায়ীর কথা হচ্ছিল, তিনি কাজুবাদামের বস্তা বিল ছাড়া কাঁধে বয়ে নিয়ে আসেন ও হাজার খানেক টাকা ট্যাক্স বাঁচান! এই ঠাণ্ডা ঘরের আরাম ছেড়ে কষ্ট করে তিনি যে হাজার টাকা সেলস ট্যাক্স বাঁচান তার ফলস্বরূপ ক্রেতা হাজার টাকা কমে পান এক বস্তা কাজু! তাহলে আমরা ব্যবসায়ীকে চোর বলছি কেন!

দ্বিতীয়ত, ব্যবসার লাভ হিসেব করলে সাধারণ হোলসেল সেক্টরে হিসেব রাখাটা কঠিন, জিএসটি রিটার্ন একটি সম্পূর্ণ অনলাইন ব্যবস্থা! এবার সব ব্যবসায় কম্পিউটার দূরস্থান, সব জায়গায় কারেন্ট পৌঁছয়নি। এই রিটার্নের হিসেব দেওয়ার জন্য যে খরচাটা হবে সেটা বাঁচানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অন এয়ার বললেন যে দশ বারো ক্লাসের বাচ্চা বাড়িতে থাকলে তারাই করে দেবে! পাঠক মনে রাখবেন, দশ বারো ক্লাসের বাচ্চার কাজ কিন্তু পড়াশুনো করা। পরীক্ষার মাসগুলোতে কে রিটার্ন ফাইল করবে সেটা বলা হল না অবশ্যই!

আমি ট্যাক্সবিরোধী কোনওভাবেই নই, কিন্তু আমার লাভের অংশ থেকে যদি সরকারের ট্যাক্স মেশিনারীকে রক্ষা করতে হয় তাহলে আমি তার বিরুদ্ধেই দাঁড়াব। সরকার ট্যাক্স নিতে পারে হাজারবার, কিন্তু কোনওভাবেই কোনও জিনিস বা পরিষেবা (কম্পিউটার, মোডেম, অ্যাকাউন্টেন্ট ইত্যাদি যা যা লাগবে) কিনতে বাধ্য করতে পারে না।

এখানে প্যান কার্ড থেকে ডিজিটাল সিগনেচার কিংবা রিটার্ন ফাইলিং সবেতেই টাকা দিতে হয়, ভোটার আই ডি কার্ড ছাড়া। অবচেতন মনে চুরির ইচ্ছেটা এভাবেই জন্মায়!

ভ্যাট যখন শুধু ভ্যাট ছিল, তখন একটা কম্পোজিট স্কিম বলে ব্যাপার দেওয়া হত। ০.৩০ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স দিয়ে দিলে ২৫ লক্ষ টাকা অবধি বার্ষিক লেনদেনের ক্ষেত্রে আলাদা করে রিটার্ন ফাইল করতে হত না। হিসেব সংক্রান্ত ঝক্কি থেকে রেহাই মিলত, যদিও এই করের দায় পরবর্তী ক্ষেত্রে হস্তান্তর হত না। মানে আপনি যদি গড়পড়তা ৫ শতাংশ লাভ করেন, সেক্ষেত্রে আপনার লাভের প্রায় ৬ শতাংশ টাকা এমনি এমনিই চলে যেত, যেটা শুধুমাত্র হিসেবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য। এটাকে আপনি ইনকাম ট্যাক্স বলতে পারবেন না, কারণ ট্যাক্স দেওয়া ব্যক্তি ইনকাম ট্যাক্সের আওতায় পড়েন না। আপনি কম পড়াশোনা জানার ট্যাক্স বলতে পারেন, কম্পিউটার নিরক্ষরতা ট্যাক্স অথবা শুধু ট্যাক্স দিতে চাওয়ার ট্যাক্সও বলতে পারেন। এই ট্যাক্স আপনিও চাইতে পারবেন না আর যে দিচ্ছে সেও এর হিসেব তার করের মধ্যে দেখাতে পারবে না।

এত কিছু বলার কারণ হচ্ছে, এখনও ৭৫ লক্ষ টাকা অবধি জিএসটি কম্পোজিশন যোজনার হিসেবে আপনি হিসাব ছাড়াই ০.৫ শতাংশ কর দিয়ে একইভাবে হিসেব, কম্পিউটার অথবা অ্যাকাউন্টেন্ট না রাখার দায়মুক্ত হতে পারেন। ৭৫ লক্ষ টাকার ০.৫ শতাংশ হচ্ছে প্রায় ৩৭৫০০ টাকা। এটা যদিও কনজাম্পশন ট্যাক্স কিন্তু দিতে হবে একজন বিক্রেতাকেই, তার কারণ হচ্ছে বিক্রেতা চাকরী না খুঁজে কিংবা কোনও অসদুপায় অবলম্বন না করে শুধু সৎ পথে ব্যবসা করার ভুলটুকু বেছে নিয়েছেন এ দেশে।

একটা বিশেষ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেষ করি।

জিএসটি কিন্তু ট্যাক্স অন কনজাম্পশন! অতএব কনজিউমারকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক প্রতি মাসে কেনা জিনিসের ওপর ট্যাক্স জমা দিয়ে আসার!

ওপরের কথাটা লিখলাম, কারণ কিছু বাদামী সাহেব যারা ট্যাক্সপেয়ারদের টাকায় পড়েন ঘোরেন ও পরে চাকরী করে বেতনও পান এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্যেও একটা চাকরীর ব্যবস্থায় নিয়োজিত থাকেন, তাঁরা সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীদের বিশেষ করে ছোট ও মাঝারীদের—‘এই তুমলোগ চোরি করতা হ্যায়’ বলে বকে দেন।

জিনিস কিনবেন যিনি, আইন অনুযায়ী ট্যাক্স দেবার দায় তার। ব্যবসায়ী তিনি ছোট হোন বা বড়, তিনি উপভোক্তার ট্যাক্সটুকু সংগ্রহ করে সরকারী খাজানায় জমা দেন নিজের দায়িত্বে। এবার মজার জিনিস হচ্ছে দু’তরফই এই দায় নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীকেই চোর বলে। সরকারও ভুলে যান যে আট শতাংশ লভ্যাংশের নীচে লাভ দেখালেই অডিট কোপে পড়তে হচ্ছে, সমস্ত কোম্পানী সেই আট শতাংশ মার্জিন আদৌ দিচ্ছে কিনা। আর বাদামী সাহেব তো বুটজুতোর ফিতে বাঁধতে বাঁধতে ব্যবসায়ীদের গালি দেওয়াটা নিত্যকর্ম বলে মনে করেন।

আমার মনে হয়, এই অবিচারের নিষ্পত্তির জন্য প্রত্যেক নাগরিকের কাছে তার ট্যাক্সেবল কনজাম্পশনের রিপোর্ট চাওয়া হোক মাসের শেষে, এবং তার ওপর ট্যাক্স নেওয়া হোক। সরকারের অধিকারও থাকুক যে কোনও সময়ে অডিট চাওয়ার! এবার সাধারণ ব্যবসায়ী যা কেনাবেচা করবেন, তার জনিত ইনকাম ট্যাক্সটুকু দিয়েই দায়িত্ব সারবেন। হ্যাঁ, তিনি যেখানে ক্রেতা হবেন সেখানে সেই উপভোক্তার ট্যাক্স দেবেন বইকি!

লাফাবেন আরও? এই বেশ মজা হয়েছে বলে?

শেষে বলি, যারা আমার বক্তব্যের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা খুঁজবেন তাদের জন্য কোলাকুলি, কারণ জিএসটি বিল ড্রাফট করেছেন তিনি একজন বামফ্রণ্ট মন্ত্রীসভার সদস্য, যিনি পরে কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের অর্থমন্ত্রী, যে রাষ্ট্রপতি বিলে সাইন করেছেন, তিনি কংগ্রেস দ্বারা মনোনীত হয়েছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী বিজেপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।