দেবজিৎ অর্ঘ্য-মুখোপাধ্যায়
তারপর রোদ বাঁক নেয় শীতকালের দিকে। আমরা মিঠে হই। গায়ে চিহ্ন ওঠে। আলোর বিষাদ কড়া হয়। কোনও কবি তার বিগত বছরের লেখা পুড়িয়ে দেবে মাঘের রাত্তিরে। রাশি ফলবে ভালো এই শীতে। ফুলের দাম কমে আসে। কোচিংগুলোয় জলদি সন্ধ্যে নামে। এক মুদ্রা দিয়ে ক্রমাগত আমাদের অনুমান ক্ষমতা মাপা হয়েছে। নখে লেগে গেছে প্রেয়ার, দীর্ঘ বছর। মগজে সন্ত্রাস জমছে, শিশির পড়ছে।
আমরা উপুড় হয়ে ভাসি। উড়ি। শুই। এমন কি আদরও। বিশ্বাস করো, এই শুখা জমি, বাটিক প্রিন্ট, জলের এক তলা আর অনেক ওপর থেকে আমাদের দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। নিজেকে নিয়ে যতবার ইয়ো ইয়ো খেলতে ইচ্ছা করেছে, ব্যাপারটা শেষতক হাত মারাতে গিয়েই থেমেছে। আমি নিজের দিকে হাজারবার হাত ছুঁড়ে দিই। রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত কোনও কাজ ছাড়া আমার হাত তেমন কিছু পারে না।
আমার চিড়িয়াখানা ছুঁয়ে আসতে ইচ্ছা করে। ময়দানে দেখেছি গাছের জন্মদাগের আড়ালে লেখা সাগরিকা+সোহম। শীতের দাগ ওসব। কেউ গিয়ে ঘাসের ওপর শুকনো অ্যাক্রেলিক রেখে আসে। আমি সবুজে সবুজ মেলাই। কেউ নিজেকে টানতে টানতে নেশার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ যুদ্ধ নিয়ে প্রচুর মিথ্যে কথা বলছে। কেউ ছাদের মধ্যে পিসতুতো দাদাকে খোঁজে। খ্যাপামির দরুণ কেউ মারিজুয়ানা কিনল প্রথমবার।
গরমের ভ্যাপসা গলিতে, বান্ধবীর ঘাম লেগে থাকা রুমাল, কোল্ড ড্রিঙ্কসের বোতলের গায়ে আমি শীতকালের জাতিস্মর দেখতে পাই। তারা ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করে হার ছিনতাইবাজদের মতো। আমি বুক সামলে রাখি। আর মাঝে মাঝে জানলা খুলে দেখি, বর্ষা এল কিনা। কেউ বলে গেল, “আকাশ আংশিকভাবে ভাবে মেঘলা থাকবে। বাতাসে আর্দ্রতা পঁচানব্বই শতাংশ”। আমার তা শ উচ্চারণ ভালো লাগে।