Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

সুতপা মুখোপাধ্যায়ের কবিতা

সুতপা মুখোপাধ্যায়ের পাঁচটি কবিতা

পাঁচটি কবিতা

 

দূরত্ব

জানি না কেন আগুন ছুঁতে চাইছি এই অবেলায়
এক দিগভ্রান্ত বৃষ্টিশেষে বারান্দার কার্নিশে একটু ঝুঁকে
তুমি দাঁড়িয়ে থাকো না কতকাল,
সময়ের বুকে কাগজের নৌকো ভাসিয়ে
আমি মাপতে বসেছি জলপ্রপাতের দূরত্ব
সন্ধে নামে তোমার পাড়ায় আমার
না জানা রাস্তার ধারে
হৃদয়ের দরজা বলে যদি কিছু থাকে তার
অর্গল রেখেছি শিথিল
হাওয়ারা যায় নিরুদ্দেশের খোঁজে
তোমার ছায়ার কাছাকাছি।

 

আলো

জলজ আলোর নীচে নীলের গভীরে রেখে
তীব্র চুম্বনের মত তপ্ত দিনে চলে গেছ
এখানে নদীর বুকে ঢেউ
জলের বুকে আলোর খেলা তীক্ষ্ণ শীৎকারের মত
আশ্চর্য নতজানু।
মায়াবী আঁধারে ছেয়ে আছে শ্মশানভূমি
নগ্ন দূরত্বে তুমি
আচরাচর জ্যোৎস্নাবিহীন রূপকথায়
নিবিড় সঙ্গমের মতো

 

শব্দেরা

মাঝে মাঝে শব্দেরা দগ্ধ করে
গভীর নগ্নতার মত খুলে যায় সব আবরণ
সেই অব্দি নদীর গতায়াত
ধূলিসাৎ হতে থাকে দিন
তোমার হৃদয়ে ঠোঁট রাখা হয় না কতকাল
কতকাল তীব্র রমণ খেলা ভেসে গেছে
বন্দরের নিঃসঙ্গতা থেকে দূরে
এখানে আঁধার বেলা তুমুল
এক বসতি গড়ে বুকে
তৈরি হয় জানলা, কপাট, ঘরবাড়ি
দগ্ধ শব্দের পোড়া কাঠে

 

করতল

মৃত অশ্বের গায়ে চাবুক ছুঁইয়েছ তুমি
তোমার গভীর জয়পতাকা উতরোল ভূমিকে
দাঁড় করিয়েছে নিয়ন্ত্রণরেখায়।
দিগন্তে এখন তীব্র বানভাসি
ভেঙ্গে যাচ্ছে বসত
যজ্ঞবেদি থেকে উছলে উঠছে আগুন
তোমার ধূমায়িত করতলে একটি তারা
স্ফটিকপাত্রে রেখে যাচ্ছে তার প্রাণ।

 

চিঠি

তোমার না লেখা চিঠি কোন বসন্তে আসবে বলে
আমার ঝোড়ো হাওয়ার দিনগুলি বয়ে গেছে
তীব্র দিনরাতের পথ ধরে নক্ষত্রের কিনারায়।
এখন চরাচরে শান্তি, ফেলে যাওয়া কুরুভূমির মতো।
আলোর অনুগমনে ব্যাপ্ত অন্ধকারের দরজায়
হাত রাখি শব্দহীন।