ফ্যাতাড়ু-বজরা ঘোষ
জ্যোতিসচচ্চা
ফেসবুকে এই যে কিসব চলচে! এট্টার পর এট্টা হুল্লোড় বাওয়া, হুজুগ পেলে ভালোই লাগে। আপনি আগামি দিনে কি হবেন? আপনার কবে বিয়ে হবে? কবে বিয়োবেন? কার সাতে শোবেন? কে হবে আপনার প্রিয় শত্তুর? আপনি আগামি জন্মে বুনিপ হবেন! এসব জ্যোতিসচচ্চা দেকে ব্যোমকে যাচ্চি!
এ কি সত্যি হচ্চে? না খিল্লি। খিল্লি আমার খুব ভাল্লাগে। তাই বোলে জ্যোতিসকে খিল্লি বলবেননি। ইসৃতি ইরানি রেগুলার জ্যোতিসের কাচে গিয়ে ধন্না দেয়। বিজেপি এম্পি মহারাজ রমেশ পোকরিয়াল খোদ পাল্লামেন্টে বলেচে ‘জ্যোতিষবিদ্যার তুলনায় বিজ্ঞান নেহাতই তুচ্ছ। জ্যোতিষবিদ্যাই পৃথিবীতে সেরা বিজ্ঞান’। তন্ত মন্ত মারন উচাটন বসিকরন কালা জাদু টোনা, সব সালা বিজ্ঞান।
হুঁ, ইয়ার্কি না। গোরুর রাজত্বে শুয়োরের বাড়বাড়ন্ত।
আমার গুরু গোপাল ভাঁড় জ্যোতিসচচ্চা করেচেন। মুসসিদাবাদের নবাব যকন হেঁদু পন্ডিত জ্যোতিসদের জিগালো মাটির নিচে কি আচে, সবার পাইকিরি হারে আমাসা শুরু হয়। কিচ্চু বিদ্যে নেই ভাল কতা, দু চাট্টে ঢপ মেরে বেরিয়ে আয়, তা না সবকটা হাজতে ঢুকলো। গেল গোপাল। জ্যোতিস সেজে, খাটের পায়ায় লাল শালু জড়িয়ে। নবাবকে বল্ল হুজুরালি, সর্বং সারং খট্টাঙ্গ পুরাণম্। হিন্দু পণ্ডিতং ন শক্যং ভূতলগণনম্।
মানে এসব বলা কোন হেঁদু জ্যোতিসির অওকাদের বাইরে, শালারা ভোগে গেলে চিতায় পোড়ে। মাটির তলে যায় নেড়েরা। ওরাই বলুক।
কাম ফতে।
এরেই কয় উপস্তিত বুদ্দি। ফেসবুকের জ্যোতিস কি জিনিস জানি না তবে এট্টা গোপন খপর জানাচ্চি। ব্যাংকসাল কোটের ভিকিরি মার্কা কিচু উকিল আচে, দেকবেন ওধানে গেলেই তেড়ে আসবে। আর কি লেকচার। কি করাবেন এফিডেভিট? আসুননা সস্তায় কোরে দিচ্চি, এধারে আসুন, আমি আরো কম রেটে, আরে ইধার আও, সস্তা ওর বড়িয়া… এই করে জালিয়ে মারে। এরা পাট্টাইম জ্যোতিসির কাজ করে। একবার মুততে গেচি উল্টোদিকের পাব্লিক টয়লেটে, আমার পাসে আরেক কালো কোট হিসু কত্তে কত্তে বল্ল কি দাদা এফিডেফিট হবে নাকি? বুজুন। মনে হচ্চিল মুকে মুতে দি।
এই মালগুলো কোট বন্দ হলেই আসন নিয়ে বোসে যায়। জ্যোতিসবিদ্যা মহাবিদ্যা। সুদু বুদ্দি কাজে লাগিয়ে ভাট ছাড়ুন। কপাকপ মুরগি পড়বে জালে।
একবার হাওড়া ব্রিজের ওপর এক জ্যোতিস বোসে হাত পা দেকছিল। বিদেস থেকে এক সায়েব এসেচে ঘুত্তে। সে ভাবল বাজিয়ে দেকি এ ক্যামন মাল। হাত দেকচে। ভুত ভবিস্যত বলচে, এট্টু চেটে আসি। সেতো জানেনা ব্যাংকসাল কোটের টেম্পোরারি উকিল কাম জ্যোতিস কি মাল!
গিয়ে সুদোলো ভাই ফিজ কত? না, ১০০ টাকা। ঠিক হ্যায় হম ১০ ডলার দেংগে। ভুত ভবিস্যত ছাড়ো বর্তমান বলো দিকি। একন কটা বাজে? সায়েব দেকে নিয়েচে জ্যোতিসির হাতে ঘড়ি নেই। দেসি জ্যোতিসিকে জব্দ করার এমন মওকা ছাড়তে নেই। জ্যোতিসি সালা জজ মোক্তার চরিয়ে খায়। এট্টু প্যাঁচে পড়লেও সামলে নিল। দেকলো সামনে দাঁড়িয়ে আচে বিরাট এক ষাঁড়। অং বং চং মন্তর আওড়ে পেচন থেকে ষণ্ডবাবাজির বিরাট অণ্ডকোষটা তুলে ধরলো। তারপর উবু হয়ে বসে কি দেকে ফিরে এলো। বল্লো সায়েব একন টাইম হচ্চে…. এই।
সায়েব চমকে চোদ্দ! যাহ সালা। ষাঁড়ের বিচি ঘসে টাইম জেনে নিলো। এ কি সাংঘাতিক পাওয়ার রে মাইরি। ডলার গুনে দিয়ে সে কেটে পড়তেই রাস্তার লোকেরা চেপে ধল্ল জ্যোতিসি মহারাজকে! গুরু জয় হোক। প্রভু কি করে পারলেন! ষাঁড়ের ইয়ে ঘষে টাইম বলচেন! আহা আহো।
লোকটা হেসে বললো আরে দূর। ওই বিচিটায় আড়াল হচ্চিল। উটে গিয়ে তুলে ধল্লাম…
সোজা হাওড়া স্টেসনের বাইরে সায়েবরা অত্ত বড় ঘড়ি বসিয়েচে না। দূর থেকেই দেকা যায়।
এরেই কয় বুদ্দি।
সাদে কি বলচে বিজ্ঞানসম্মত বিদ্যে এই জ্যোতিস। বুদ্দি খাটাও। আর সব বোলে দাও। গাড়োলে সব মেনে নেবে।
আজ সুভ রাত্তির।
পরে দেকা হবে।