সুবীর সরকার
মুদ্রণপ্রমাদ
এই যে ভাষাপুল ডিঙিয়ে চলে যাচ্ছি আমরা
এই যে হবিগঞ্জে দেখে ফেলা সেই বাংলার
দাঁড়কাক
বিপন্ন আমার ভাষা। আজ লিলুয়া বাতাসে উড়ে
যায়।
কাঠের বন্দুক যদি শিরোনাম ভাবি
তবে মাঠে মাঠে জ্বলে উঠবে আগুন
আমাদের ভয়ভীতি নেই। পাগলের আলজিভ
থেকে
গড়িয়ে নামে লালা।
মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকা ডাহুক পাখি
শুকিয়ে যাওয়া চোখে জল নেই
আপাতত মুদ্রণপ্রমাদের কথাই বরং ভাবা
যাক
মানুষ পালটে যাবে এটাই স্বাভাবিক
খোলা মাঠে আমরা নামিয়ে দেব গানের
আসর
হিরে বসানো নারীর চোখ, তাকাতে পারি
না
গ্যাস চেম্বারের মধ্যে ঢুকে পড়ছে আমার
দেশ
লোকদেবতার থানে ঢাক বাজে
আমি বেলুনসমেত ঢুকে পড়ি
ঘুড়ি ও লাটাই নিয়ে ঢুকে পড়ি
উড়তে শেখা পাখি আমাকে সাইলেন্স
চেনায়
কেউ কি কান্না মুছে দিতে পারো!
দ্যাখো, পুরনো সার্কাসের হলুদ বাঘ আবার
ফিরতে চাইছে
টানেলে টানেলে হিম ঢুকে পড়ছে
হলদিবাড়ির রাস্তায় শুয়ে থাকছে মস্ত
অজগর
জীবন তো কনসার্ট।
সুপুরির ছায়া জড়িয়ে কেবল
বাজে
আমি ঢিল ছুঁড়ে ফাটিয়ে দেব মাটির
কলসি
জলাধারের ছবি তুলে উপহার পাঠাবো প্রাক্তন
বান্ধবীকে
এই বাঁ-হাতি খালের দেশ
এই গান ও বাথানের দেশ
কাঠের বন্ধুকের গায়ে শ্যাওলা জমলে খুঁজতে
শুরু করি
শিকারকাহিনি।
গোপন গানের মত তুমি ঢুকে পড়েছিলে
জীবনে
প্রলাপ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলে দিক ও দিগরের
ভিতর
এখন হালকা জঙ্গলে গান শুনতে যাই
গণকবরের পাশে মুখোশ পরে হাঁটি
শিরদাঁড়ায় কেউ বুঝি মরণ ঢুকিয়ে
দিচ্ছে
প্রবেশ কিংবা প্রস্থানের এই জীবন
এখন অবসর ও অবসাদ একসাথেই
আসে
আমাদের নখে সহজ হয়ে ডুবে থাকা
ময়লা
সেদ্ধ ডিম থেকে খসিয়ে দেওয়া
কুসুম
করমর্দন ভালোবাসি কারণ আমার করতল
মসৃণ
ঘোর চলে গেলে ডেকে আনা হবে ঘোড়ার
গাড়ি
এই অনেক রোদের পৃথিবীতে প্লিজ
পাশ কাটিয়ে চলে যেও না আর
তুমি।
ডায়েরি
আসলে তামাকচাষীরা কখনোই বুঝতে পারবে না
পাট চাষিদের কষ্ট
সব মাছ বেছে খেতে নেই।
সব দুপুরে লুডু খেলতে হয়
না
চলো, সরবতে বিষ মেশাই
খুব রেগে গেলে ঘনঘন জামা খুলে
ফেলি
বিষণ্ণতা আমার প্রিয় শব্দ নয়
ফড়িঙের গান আমাকে প্রেমিক হতে দেয়
নি
লম্বা ছুটি ফুরিয়ে গেলে
যাযাবরের মিছিলে ঢুকে পড়তে থাকে
বেলুন
রেফারি আসলে একজন গুপ্তঘাতক
ষড়যন্ত্র ফেলে রেখে মাঠে মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন
তাঁতি ও তান্ত্রিক
তোমার চোখে আমি পোড়ামাটি ছুড়ে দেব
হাসি একটি মেয়ের নাম
আবার রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনতে হয়
হাসি
আর জাতীয় সড়ক থেকে
দূরে দাঁড়িয়ে থাকছে বিকেল
তথ্যচিত্র
একটা নয় পিলারের সেতু
বায়োপিক জুড়ে রান্নার বই
মরে যাওয়া সাপের পাশে চিরাগ
জ্বলে
লাগাতার কাশি হচ্ছে
নূতন জলে একটু ভিজে
আসা
আমি তো আগুনে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে ফেরা
মানুষ
খাঁচা ভেঙে বেরিয়ে আসা বাঘ
গুটিগুটি জলকামানের দিকে
অথবা ঘুম কমে যাচ্ছে
খিদে কমে যাচ্ছে
জঙ্গলে হায়নার হাসি
হরিণের পিঠে শালিক
আসলে দুরান্তর বলে কিছু নেই
সরে যাওয়া বলেও কিছু নেই
রোদচশমা ভেঙে গেলে একটুও মনখারাপ
হয় না আমার
বরফের বিছানায় এখন হলুদ চাদর
আদর হারিয়ে যায়
টিকটিকি এসে ঢোকে তথ্যচিত্রের
ভিতর