শ্রীজাতা গুপ্ত
১.
যদি বলো
আরেকবার নতুন করে ভাবতে পারি
প্যারিসের ছাদ
খোলা ক্যাফেটেরিয়া
তুমি,
শরতে যুদ্ধ নেই।
২.
আমার প্রিয় রং স্কুবা-ডাইভিং
সামুদ্রিক চিল
তুমি দেখবে,
ঝিনুকের মৃত্যু-চেতনা
অথচ,
তোমার কথা ভেবেই…
৩.
আমরা যদি আগের মত হই
বন্ধু,
আবার,
শিকড়ে শিকড় টেনে
তোমাকে শোনাব সেই বইটার গল্প
যা পড়ার পর গাছ সেজে থাকি।
৪.
প্রথম শর্ত
মণির রং
কী আশ্চর্য, এখনও তোমার চোখ দেখিনি
যেদিন বেড়াতে যাব, দেখব, এক চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘা
অন্যটায়…
৫.
ঠিকানা চাইলে যে জানতে চায়, “কেন?”
যে বলে, ‘চুপ করো! প্লিজ, চুপ করো!”
তার জন্য চিঠিতে কোনও প্রেজেন্ট-কন্ডিশনাল রাখব না।
৬.
“জানিও, লাগল কেমন…”
এই বলে বেপাত্তা লোক
যার
দোষ-গুণ-ভালোবাসা
হেডলাইন
গান, যত,
ভাঙনের দিনকাল শেষ হলে
শুনব না আর।
৭.
“কথা হবে। ভালো থেকো।
শরীরটা ঠিক নেই…”
তারপর
স্পেস ছেড়ে রাখব খাতায়
সেখানে উঠবে ফুটে জলরং।
৮.
বাগান ফেলে রাখব জানলায়
নিষ্ফল রেণু মেখে
ডানা ভেঙে
মথ্ প্রজাপতি এসে বসবেই।
জানলায় রাখব
সমাধিফলক
দুই চোখ
৯.
ক্ষেতভরা ভুট্টা হবে
রেশমি চুলের মত রোঁয়া
ফসলের পাকা লোভ
চুঁইয়ে
ফোটোজেনিক রোদ
ট্রাক্টর চেপে কাজে যাওয়ার তাড়া থাকবে
কুঁড়েঘর, শাড়ি-কেটে পর্দা
দুলে উঠলে দেখা যাবে গরাদ-সমান্তরাল এক-জোড়া পা ঝুলছে সিলিং থেকে।
১০.
“দেখো তো, বৃষ্টি এল?”
শ্রাবণ দেখেও সেই বাইরে বাড়াবে হাত।
মৃত কপালের ভাঁজে আঙুল বুলিয়ে বলবে,
ঠিক! প্রাণ শেষ।
স্পর্শ
শুধু স্পর্শ ছাড়া
আর কোনও বিশ্বাস নেই।
১১.
আরও কিছু সময় একসঙ্গে কাটাতে চাইলে
‘শর্তাবলি প্রযোজ্য’-র খাতা দেখিয়ে বলবে,
আমাদের ঘনিষ্ঠতায় অনুমোদন নেই রাষ্ট্রের।
১২.
রুক্ষ মানুষের ঠোঁটে জিভ রাখা হবে।
এক ফোঁটা, দুই ফোঁটা বৃষ্টির জল
খটখটে বাসিরুটি ভেঙে দেখা যাবে
রুক্ষ মানুষের মন
উনুনে নরম আঁচ
অন্ন বাসস্থানের খোঁজ।