পাঁচটি কবিতা
সবকিছু ঠিকঠাক
রাষ্ট্র বলেছে, সবকিছু ঠিক ঠিক—
থেকেছিও চুপ,
অর্থাৎ সম্মতি।
স্বপ্নে দেখেছি শয়ে শয়ে পরী
উড়ছে খোলা হাওয়ায়
সারাটা উপত্যকায়—
পরীগুলো সব পাখি হয়ে ঘোরে,
ওড়ে নীল আকাশে—
পাখির মাংস বড় সুস্বাদু
দেবতারা ভালোবাসে—
ওখানেই কাল পেয়ে যাব ঠিক
সাধের দুকাঠা জমি।
রাষ্ট্র বলেছে সবকিছু চললে ঠিক
ওখানেই পাবে সাধের শরীর
রম্ভা উর্বশীর…
আমাদের যাহা কিছু
আল যদি দিতে হয় দাও, তাও শুধু তলের বাধ্যতায়,
নির্বিবাদ আবাদ শেষে ফসলের গোলা হোক যৌথ খামার।
এপাড়া ওপাড়া নয়, একটাই ডাকঘর আমাদের পাড়ায়,
ইঁদুরের সাধ্য নেই এড়াবে সতর্ক চোখ তোমার আমার।
আমাদের বৃন্দগান রাগ আহির বা মিঞা কি টোরি,
ভবা পাগলার দোতারায় গান ধরে মনসুর ফকির।
ভোরের ভৈরবী মেশে ফজরের আজানে, কাটে কালো রাত্তির,
ছেলের লাশের পাশে ক্ষোভের আগুন নেভায় ইমামের আর্তি।
সবরমতী তীরে উল্লাসে মাতে নরমেধ যজ্ঞ সেনা,
প্রতিরোধে স্থির ইমাম রাশিদি, যশপাল সাক্সেনা।
উত্তরীয়
লোভ ছিল এক উত্তরীয়র,
পেয়েছিও তা, হোক না তাহা ভিক্ষাবৎ–
বলতে হয়েছে, “যুগ যুগ জীও”,
আন্ কথা বলে কার হিম্মত!
হিম্মত ছিল যে লোকটার,
লোকে বলত, ‘চা র ণ ক বি’—
কাল রাতে এক এনকাউন্টার,
প্রথম পাতায় আজকে ছবি।
ছবি হয়েও আগুন পাখি
বলো কোথায় লজ্জা ঢাকি!
কেউ বলছে রাজার জয়,
কেউ বলছে রানির—
উত্তরীয় গলায় আমার
আন্ গান আজ থোড়াই জানি।
নাইজেরিয়ার মেয়ে
গাত্রবর্ণ নিকষ কালো, নিশ্চিত নরখাদক—
দিবালোকে রাজধানীতে ওরা মহাপাতক;
রাজধর্ম নীরব থাকে, পথের ধারে মার—
একা একা ফুঁপিয়ে কাঁদে মেয়ে নাইজেরিয়ার।
তোর জন্য মোমবাতি নেই,
তোর রং যে কালো
এ পোড়া দেশে কেন এলি বোন,
এদেশ নেই যে ভালো।
ধর্ম দেখে, বর্ণ দেখে রাজধর্ম বিচার—
“নাজিবাবা পার করেগা”, সাইকোসিস বিয়ার।
রাজকাহিনি
এক…
দেশ বলেছে
দেশ দেবে না,
ঠিকানা জবাইবাড়ি—
ভুখা পেটে সব
খড়কুটো নিয়ে
ছুটছে রাজার বাড়ি।
দুই…
হিন্দু নয়,
মুসলিম নয়,
মরছে চাষি অভাবে!
ট্যুইট করে
জানায় রাজা,
“আত্মহনন স্বভাবে…”
তিন…
রাগলে মজুর কারখানাতে,
সীমান্তে হয় শত্রু হানা—
তৈরি থাকে রাজার পুলিশ,
ছররা, পেলেট, বুলেটদানা…
চার…
ভাত চাইলে বলে,
“হাতজোড়া, মুখপোড়া…”
কাজ চাইলেই,
“যত নষ্টের গোড়া”-
তবু স্বাধীনতা
তোমার রথে
সাতটা ঘোড়া জোড়া।
পাঁচ…
“অধ্যয়ন বিনা আর
কীবা ছিল অপরাধ…!”
নিরুত্তর রঘুপতি
সম্মুখে শম্বুক নিষাদ—
“জিজ্ঞাসিছে ঘৃণ্য শূদ্র!
ঘোর অনাচার…”
পাতকের শিরশ্ছেদ:
বশিষ্ঠ নিদান।