প্রিয়ক মিত্র
পূর্ব প্রকাশিতের পর
মাটিতে শুয়ে থাকা প্রমথরঞ্জনের দু চোখ বিস্ফারিত। গলা দিয়ে স্বর বেরোচ্ছেই না বুকের ওপর শাজাহানের বুটের চাপে।
প্রমথরঞ্জন এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না, শাজাহান জীবন্ত হয়ে তার বুকে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে।
সেই রাতে গোবিন্দরাম, শাজাহান আর প্রমথরঞ্জন যখন মুখোমুখি হয়েছিল, তখন ওই পাণ্ডববর্জিত বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে যে রোমহর্ষক নাটকটি অভিনীত হয়েছিল, তার সাক্ষী ছিল দুই হাবিলদার। বলা যেতে পারে, তারা ছিল নীরব দর্শক।
প্রমথরঞ্জন যে কোথায় বন্দুক চালানো শিখেছিল, কেউ জানে না। কিন্তু তার টিপ হয়ে উঠেছিল অব্যর্থ। কাজেই রাতের অন্ধকারেও তার গুলিতে গোবিন্দরাম ও শাজাহানের নিহত হওয়া কেউ আটকাতে পারত না! প্রমথরঞ্জন তাদের সামনে দাঁড়িয়ে, একথা অনুধাবন করার পর আর একটি কথাও খরচ করেনি দু পক্ষের কেউ। তখন, সেই রাতের অন্ধকারে, একটা অঘোষিত ডুয়েলের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। গুলি যখন চালাতে হবেই, তখন গুলি চালানোই উচিত। কথা না বাড়িয়ে।
গোবিন্দরাম আর শাজাহান দুজনেরই হাত চলে গিয়েছিল কোমরে, পিস্তল বের করার চেষ্টা দুজনেই একসঙ্গে করেছিল। দুজন হাবিলদারের দিকে পিঠ ফিরিয়ে ছিল ওরা। প্রমথরঞ্জনের হাতে নিঃসাড়ে কখন পিস্তল উঠে এসেছিল, দেখতে পায়নি ওরা। কিন্তু শাজাহানদের পিস্তল বের করতে দেখে তারা সতর্ক হয়েছিল। তবে বিন্দুমাত্র সময় তারা পায়নি। তার আগেই গুলি ছুটে গেল প্রমথরঞ্জনের পিস্তল থেকে।
শাজাহান আর গোবিন্দরাম মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।
কিন্তু গুলি খেয়ে নয়।
একটা আশ্চর্য কায়দা জানা ছিল শাজাহানের। প্রতিপক্ষ ট্রিগার টিপছে বুঝতে পারলেই গুলি খেয়ে মরার কায়দায় মাটিতে শুয়ে পড়া। গুলি যখন বেরোবে, ততক্ষণে মাটির দিকে কিছুটা হেলে যাবে দেহ। ফলে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে বাধ্য।
কিন্তু এই কায়দায় শত্রুপক্ষের চোখ এড়ানোটা আদতে সোজা হয় না সবসময়। গুলি বেরোনোর আগেই যদি শিকার মাটিতে পড়ে যায় বা পড়ার মতো অবস্থা হয়, তাহলে তা শিকারির চোখ এড়াবে না। ঘটনা হচ্ছে, ট্রিগারে হাত দেখে মরার ভান করতে গেলে এমন সময়ের গোলমাল হতেই পারে। আবার গুলি ছিটকে বেরোনোর পর তৎক্ষণাৎ লুটিয়ে পড়া যায়। সেক্ষেত্রে ঝুঁকি থেকে যায়। মোদ্দায় এমন একটা সময় শরীরটা এলিয়ে দিতে হবে পেছনদিকে, যাতে শত্রু ভেবেই নেয়, গুলি লেগেছে লক্ষ্যে। তারপর যদি কেউ নিশ্চিত হতে কাছে আসে, তখন পাল্টা আঘাত। না এলে সেই মুহূর্তে প্রাণ বাঁচানো।
শাজাহানকে এই ‘ট্রিক’ শিখিয়েছিল তার প্রথম শিক্ষক, ডেভিস সাহেব, যাকে দেখে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল শাজাহান।
এক্ষেত্রে যদিও এই ট্রিক নিখুঁতভাবে কাজে লাগল। প্রমথরঞ্জনের মতো দুঁদে খুনিকেও তা বোকা বানাল, কারণ, রাতের অন্ধকার। গুলি এসে লাগার আগেই শাজাহান মাটিতে পড়ল, সঙ্গে হাত ধরে টেনে পাশে শুইয়ে দিল গোবিন্দরামকেও। পড়ে গিয়ে শুধু ঠোঁটের কোণে একটা শক্ত নুড়ির ঘা খেল শাজাহান, আর গোবিন্দরাম মাথায় অল্প চোট পেল।
হাবিলদারদের কাছে খবর ছিল যে এক কালান্তক খুনিকে ধরতে যাচ্ছে এই দুই সাহেব, যখন তারা দেখল দুই সাহেবকে ঘায়েল করে সেই ভয়াবহ খুনি সাক্ষাৎ যমদূত হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে, তখন তারা কালবিলম্ব না করে গা ঢাকা দিল।
ঘোড়ার গাড়ি ফেলে রেখে অনাদি চৌধুরীর বাড়ির দিকে হাঁটা লাগাল প্রমথরঞ্জন।
মাথায় চোট পাওয়া গোবিন্দরাম কিঞ্চিৎ টলমল ছিল। হাবিলদার দুজনকে পালিয়ে যাওয়ার আগেই পাকড়াও করল শাজাহান। তাকে দেখে প্রথমে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলেও পরে শাজাহানদের কেরামতি বুঝতে পেরে মোহিত হয়ে গেল হাবিলদাররা। তাদের দুজনকে যথেষ্ট ধমক দিয়ে আহত গোবিন্দরামকে ওই ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে তাদের পাহারায় নিয়োগ করে শিকারি বেড়ালের মতো এবাড়ির দিকে এগিয়েছিল শাজাহান।
শাজাহান জানত না, সে ছাড়াও আরও সাতজন থাকবে এই ঘরে।
শাজাহানের বুটের চাপ আরও বাড়ছে, হাঁসফাস করছে প্রমথরঞ্জন।
এখন এই ঘরে জীবন্ত লোক আটজন, তার মধ্যে আহত অবস্থায় রয়েছে জনার্দন সান্যাল, সূর্য মিত্র এবং সনাতন হাজরা। জয়চাঁদও আপাতত মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে। এখনও হাতকড়া পরা অবস্থায় হতভম্ব হয়ে রয়েছে লতা। একটা মৃতদেহ পড়ে রয়েছে, মহেশ সেনের। আর শাজাহান এবং প্রমথরঞ্জনের মধ্যে এই মুহূর্তে চলছে এই নাটক। যার নীরব দর্শক বাকিরা। ঘটনার গতি এত ঘন ঘন পাল্টাতে থাকছে, যে কারও কিছু করার থাকছে না। সকলেই কমবেশি হতভম্ব। বিশেষ করে সূর্যবাবু, জয়চাঁদ, লতা আর ফাদার। কারণ শাজাহানের বাড়িতে মারণ হামলা চালানোর কথা তারা জানত। স্বদেশিদের শমন শাজাহান। কুখ্যাত দারোগা। শরীরে তার বিন্দুমাত্র দয়ামায়া নেই। তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে, ডাকাতির নাটক করে তাকে বোকা বানিয়ে জেল ভেঙে পালিয়ে তারা ভেবেছিল শাজাহানের হাত থেকে তারা মুক্তি পেয়েছে। আজ তাকে, এই রুদ্রমূর্তিতে সামনে দেখে এরা বিস্মিত, হতবাক, ত্রস্ত।
কিন্তু এই ঘরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এই মুহূর্তে একটি ঐতিহাসিক জড়পদার্থ। সে কোন অলৌকিক ইতিহাস! আদৌ ইতিহাস কি?
সেই যে আফ্রিকার জঙ্গলে এক ময়াল সাপের পেট থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি হীরে, সেই হীরে কালক্রমে কলকাতার শোভাবাজারের সিংহবাড়ির অভিজ্ঞান হীরের আংটি হয়ে উঠল। সেই হীরে পর্তুগিজ জাহাজ থেকে চুরি করে এনেছিল কাফ্রি কিশোর ওমান। চুরির মাল হতে পারে, কিন্তু ক্রীতদাস ওমানের অধিকার ছিল ওই হীরের ওপর, যা তার থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল সদ্য সাবালক হতে চলা কলকাতা শহরে। তারপর ইতিহাসের চাকা ঘুরল। প্রায় এক শতাব্দী পর সেই হীরের আংটি আবার ফিরে পেল ওমানের বংশশধররা। কিন্তু তাদের সেই অধিকার ক্ষণস্থায়ী হয়ে রইল। ওই আংটিকে ঘিরে একটা মিথ্যে গল্প ফেঁদে ওমানের বংশধরদের পরিবারকে দাসত্বশৃঙ্খলে বেঁধে ফেলল একটি জমিদার পরিবার। এই সব গল্পই পাঠক জানেন। কিন্তু পাঠক, নিয়তি দেখুন, কে জানত, ইতিহাস কোথায় রাস্তা পার হতে গিয়ে মুখোমুখি হবে তার সহোদর ইতিহাসের?
মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলে আরও একটি ময়াল সাপের পেট থেকে উদ্ধার হল আরও একটি আকাশি রঙের হীরে, আফ্রিকার জঙ্গলে প্রথম হীরেটা খুঁজে পাওয়ার ঠিক একশো বছর পর। আর সেই হীরে অপয়া বুঝে সেই রাজপরিবার তুলে দিল এক অভাগা কোবরেজের হাতে, যে খুন হল, এবং যার শেষ কানাকড়িও ঠগীদের ভোগে গেল। আফ্রিকার যে দাস-পাচারকারীদের দল হীরেটা কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল, তাদের থেকে হীরে চুরি করেছিল ওমান। তারপর দীর্ঘ লালসার ইতিহাসের ভেতর দিয়ে যাত্রা করতে হয়েছিল সেই হীরেকে। এই হীরে মধ্যপ্রদেশের রাজার দখলেই থাকতে পারত, কিন্তু কী আশ্চর্য, ঠগীদমনকারী বাহিনির সদস্য হরিধন হাজরার হাতে এসে পড়ল সেই হীরে। নির্লোভ হরিধনের কী যে হল, রেখে দিলেন সেই হীরেকে নিজের কাছে। বংশানুক্রমে সেই হীরে রয়ে গেল হরিধনের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে। যেমন এখন আছে, তার নাতি সনাতন হাজরার কাছে। বা এতদিন ছিল। এখন এই ঘরে যে নাটক হবে, তার ওপর নির্ভর করবে এই আংটির ভবিষ্যৎ।
আমরা আবার ফিরে আসি এই ঘরে।
সকলের চোখ এখন নবাগত শাজাহানের দিকে। তার পায়ের বুট চেপে রয়েছে প্রমথরঞ্জনের বুক।
কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ কাহিল হয়ে পড়ল প্রমথরঞ্জন।
বুটসুদ্ধ পা তার বুক থেকে নামিয়ে আনল শাজাহান। তারপর তার মুখের কাছে ঝুঁকে পড়ে বলল, এই বাড়িতে কী মতলবে এসেছিলিস বল?
প্রমথরঞ্জনের গলা দিয়ে কিছুক্ষণ স্বর বেরোবে না। জানে শাজাহান।
তারপর সে নিজেই বলল, ‘আমি বলব? শোভাবাজারে যাকে খুন করেছিস, অনাদি চৌধুরীর যে আত্মীয়, সে এবাড়ির ভেতর কিছু একটা লুকিয়ে রেখেছে। অথবা এবাড়িতে সেটা আগে থেকেই ছিল। সেটা কী? গুপ্তধন?’
এখনও নেহাত গোঙানি ছাড়া কিছুই বেরোচ্ছে না প্রমথরঞ্জনের গলা দিয়ে।
–সেই গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েই ও অনাদি চৌধুরীকে বাড়িছাড়া করেছিল? তাই তো? দুর্গাপুজোর সময় যা ঘটে এবাড়িতে, তার সুযোগ নিয়ে অনাদি চৌধুরীকে নানাভাবে ভয় দেখিয়েছিল সে, যাতে সে বাড়ি ছাড়ে। তারপর এমন একজনকে বাড়ি বেচল, যে এবাড়িতে থাকবেই না। আর সেই সুযোগ নিয়ে গুপ্তধনটাও রক্ষা করা যাবে।
প্রমথরঞ্জনের চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসছে। শাজাহানের বুটের চাপ তাকে এমন কোথাও ঘা দিয়েছে, যাতে সহজে তার শরীর সবল হবে না এক্ষুনি। বুকে বুটের চাপ দিয়ে মানুষ মারতেও জানে শাজাহান।
–তোর ভুয়ো ডাক্তারি ঢাকার জন্য তোকে সাহায্য করত অনাদির এই জ্ঞাতি। তার জন্য তুই ঘুষও দিতিস বোধহয় তাকে। কিন্তু তার কীর্তিকলাপও তুই সব জানতিস। গুপ্তধনের সন্ধানও তোর জানা, তাই তো?
প্রমথরঞ্জনকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে এবার শাজাহান তাকাল ঘরের বাকিদের দিকে। সূর্য মিত্রর ওপর তার চোখ আটকে গেল।
ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি দেখা দিল শাজাহানের। তারপরেই সেটা মিলিয়ে গেল।
–এই বাড়ির দুর্গাদালানে কালীমূর্তি রেখে পুজো তো আপনিই করেছেন সূর্যবাবু। মূর্তিটা তো আপনার সঙ্গে আসেনি। পেলেন কোথায়?
সূর্যবাবুর হাত থেকে অনেকটা রক্ত বেরিয়ে যাচ্ছে। অতি কষ্টে সে বলল, পেছনের ঝোপে।
–হুমম। ওই কালীমূর্তিই পুকুরে ফেলে ভয় দেখানো হয়েছিল অনাদিকে। তারপর ওটা ঝোপে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু কী আশ্চর্য! খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই বাড়ির দুর্গাদালানে নাকি ঢাকা দেওয়া একটা দুর্গাপ্রতিমা ছিল। জজসাহেবকে অনাদি বলেছিল, সেই দুর্গাপ্রতিমা যেন ঢাকা দিয়েই রাখা হয়। খোলা না হয় কোনওদিন। সেই দুর্গাপ্রতিমা গেল কই?
সনাতন তার জামার কিছুটা অংশ ছিঁড়ে আহত পায়ের চেটোতে বাঁধছিল। গুলিটা খড়মটা দুভাগ করে দিয়েছে, কিন্তু পায়ে ঢুকতে পারেনি, ছুঁয়ে গেছে নেহাত। এবার সে মুখ তুলে তাকাল শাজাহানের দিকে।
–ঠিক ঠিক ঠিক! এটা আমার মাথায় আসেনি?
এবার ক্ষীণকণ্ঠে কথা বলল প্রমথরঞ্জন।
–দড়ি বাঁধা হয়েছিল দুর্গাঠাকুরের কাঠামোর পেছনে, দেওয়ালে সাঁটা আংটার সঙ্গে। মজুরদের তেমনটা করতে বলা হয়েছিল। দুর্গার কাঠামো আসলে টানাই হয়নি। দড়ি ধরে যারা টানছিল, তারা আসলে দেওয়াল ধরে টানছিল। দেওয়ালে হালকা ফাটলও ধরেছিল সেজন্য। পুরোহিত বলেছিল, আরতি করতে হবে। ঠাকুর রুষ্ট হয়েছে। বাড়ির লোক যেন কেউ না থাকে আরতির সময়। তাই ফাঁকিটা কারও চোখে পড়েনি। একটা বাচ্চা ছেলের গল্প রটানো হয়, আরও ভয় বাড়ানোর জন্য। মজুরদের, প্রজাদের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দেওয়া হয়েছিল এই গল্প ছড়ানোর জন্য, অনাদি চৌধুরীকে নিয়ে কেউ খুশি ছিল না। তাই সবাই মেনে নেয়। শুধু পুরোহিত পাপবোধে ভুগছিল। তাকে পুড়িয়ে মারে নারায়ণ চৌধুরী, অনাদির জ্ঞাতি ভাই। এত বড় শয়তান ছিল সে, দিনের পর দিন আমার থেকে শুষেছে সব। আজ আমি সব শোধ তুলব তার। ওকে খুন করে কিছুটা তুলেছি, এখন ওর আগলে রাখা যখের ধন লুট করে বাকি শোধটা তুলব। বড়লোকদের শয়তানি অনেক দেখেছে প্রমথরঞ্জন। প্রমথরঞ্জন যা করেছে, টিঁকে থাকার জন্য। আজ আমি…
শুয়ে শুয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে এত অবধি বলল প্রমথরঞ্জন। তারপর হঠাৎ বলল, পালাচ্ছে।
এই আচমকা কথায় সকলেই আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। তারপর দেখা গেল, দরজা দিয়ে চুপিসারে বেরনোর তোড়জোড় করছে জয়চাঁদ। তার মুঠোয় ধরা হীরেটা।
হঠাৎ একটা বন্দুক গর্জে উঠল।
সনাতন হাজরা শুয়ে থাকা অবস্থায় পিস্তল থেকে গুলি চালিয়েছে।
গুলি জয়চাঁদের পিঠ ভেদ করে বেরোল। জয়চাঁদ মাটিতে পড়ল, সঙ্গে মুঠো আলগা হয়ে হীরেটা গড়িয়ে গেল মেঝেতে। আর চিতাবাঘের মতো ক্ষিপ্র গতিতে হীরেটা কবজা করল সনাতন।
হঠাৎ ফাদার তার জুতোর পেছন থেকে একটা খুদে মার্কিন ডেরিঙ্গার পিস্তল বের করে আনল।
শুয়ে থাকা সনাতনের দিকে পিস্তলটা বাগিয়ে ধরল সে।
শাজাহান তৎপর হয়ে তার কোমর থেকে বের করল পিস্তল। ডোন্ট মুভ এ ফিঙ্গার— ফাদারের দিকে নল তাক করে বলল সে।
পরমুহূর্তেই আরেকটা বন্দুকের সেফটি ক্যাচের শব্দ কানের সামনে পেয়ে সচকিত হয়ে মুখ ঘোরাল শাজাহান।
উঠে দাঁড়িয়ে তার দিকে বন্দুক তাক করেছে প্রমথরঞ্জন।
অর্ধমৃত জনার্দন সান্যাল আর সূর্যবাবু এবং হাতবাঁধা অবস্থায় থাকা লতা এই দৃশ্যের দর্শক আপাতত। বাকি চারজনের মধ্যে শুরু হয়েছে এক নতুন নাটক।
(এরপর আগামী সংখ্যায়)
তারান্তিনো-র সব কটি পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: তারান্তিনো — প্রিয়ক মিত্র