Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

নীরা আর্য: যাঁকে ভারতবাসী প্রায় ভুলেই গেছে

অশোক মুখোপাধ্যায়

 



প্রাবন্ধিক, মানবাধিকার-কর্মী, সেস্টাস-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক

 

 

 

 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস ২১ অক্টোবর ১৯৪৩। তার আসন্ন আশিতম বার্ষিকী স্মরণ উপলক্ষে সেই আজাদ হিন্দ বাহিনির এক বীর কন্যার জীবনের লড়াই এবং পরিণামের কথা স্মৃতির পর্দায় ভেসে উঠল। এক অনন্যসাধারণ সংগ্রামের সেই কাহিনি প্রায় রূপকথার মতোই শুনতে লাগে। অথচ একদিন তা ছিল কঠিন বাস্তব ঘটনাক্রম। আর সেই বীর সেনানীর প্রতি স্বাধীন ভারতের শাসকদের আচরণও এক বিস্ময়কর ঘটনা! যার ফলে আমরা অধিকাংশ মানুষ তাঁকে ভুলতে বসেছি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সরকারি ইতিহাস বইতে, নানা পাঠ্যপুস্তকে, বিভিন্ন সহপাঠ গ্রন্থে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সংগ্রহশালায়, আজাদির প্রদর্শনীতে, এক কথায় সর্বত্র তাঁর অনুপস্থিতি আমাদের প্রায় কারও চোখে লাগে না। কেননা, জানলে তবে তো লাগবে।

তাঁর কথাই দু কলম বলা যাক।

 

নীরা আর্য (৫ মার্চ ১৯০২-২৬ জুলাই ১৯৯৮) তাঁর নাম। তিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাগপত জেলার একটি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা শেঠ ছজুমাল ছিলেন সেই সময়ের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, যাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য সারা দেশেই কমবেশি ছড়িয়েছিল। নীরা ছাত্রজীবন থেকেই একজন একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক হিসাবে গড়ে ওঠেন। নিজের দেশকে ভালবাসার জন্য এবং দেশের কাজ করার জন্য যেটা সর্বাগ্রে প্রয়োজন সেই সাহস এবং আত্মসম্মানবোধ তাঁর ছিল প্রচুর পরিমাণে। পিতার ব্যবসার খাতিরে হায়দ্রাবাদে থাকার সময় শ্রীকান্ত জয়রঞ্জন দাসের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। নীরা আর্যের স্বামী শ্রীকান্ত জয়রঞ্জন দাস ছিলেন ইংরেজ শাসকের একজন অনুগত সিআইডি কর্মকর্তা। তাঁকে ইংরেজ সরকারের পক্ষ থেকে এক সময় গোপনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে হত্যা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

সম্ভবত সেই দায়িত্ব নিয়েই তিনি সস্ত্রীক রেঙ্গুনে গেলে নীরা তাঁর স্বভাবজাত দেশপ্রেমিক আগ্রহ অনুযায়ী আজাদ হিন্দ বাহিনিতে যোগ দেন এবং অচিরেই ঝাঁসির রানি রেজিমেন্টের একজন সৈনিক হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে ইংরেজ সরকার তাঁকে আজাদ হিন্দ বাহিনির একজন গুপ্তচর রূপে কাজ করার অভিযোগও এনেছিল। তাঁর ভাই বসন্ত কুমারও আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈনিক ছিলেন।

নীরা তাঁর স্বামীর গোপন উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। শ্রীকান্ত জয়রঞ্জন একবার সুযোগ পেয়ে রাস্তায় নেতাজির গাড়ি লক্ষ করে তাঁর উপর গুলি চালায়, কিন্তু ওই গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে জখম করে নেতাজির ড্রাইভারকে। এই ঘটনার পর সুভাষচন্দ্র বসুকে বাঁচানোর জন্য নীরা নিজের স্বামী শ্রীকান্ত জয়রঞ্জন দাসকে আপনহাতে হত্যা করেছিলেন। কথিত আছে, এর পর থেকে নেতাজি তাঁকে নাগিন বলে ডাকতেন। আজাদ হিন্দ ফৌজের আত্মসমর্পণের পরে, ১৯৪৬ সালে যখন দিল্লির লালকেল্লায় তাঁদের বিচার শুরু হয়েছিল, তখন সমস্ত সেনাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নীরাকে তাঁর স্বামীর হত্যার অভিযোগে আটক করে রাখা হয়। তাঁর আলাদা করে বিচার হয় এবং তাঁকে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের সাজা দেওয়া হয়। তিনি আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন। সেখানে সেলের ভিতরে নীরাকে চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল।

নীরা আর্য স্বাধীনতার পরে ফুল বিক্রি করে জীবনযাপন করেছিলেন, তবে কোনও সরকারি সহায়তা বা পেনশন গ্রহণ করেননি। তাঁর ভাই বসন্ত কুমারও একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, যিনি স্বাধীনতার পরে সন্ন্যাসী হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা নিয়ে তাঁর আত্মজীবনীও লিখেছেন। বিশিষ্ট উর্দু লেখিকা ফারহানা তাজ-কে নীরা তাঁর জীবনের কিছু কিছু কাহিনি শুনিয়েছেন। তার ভিত্তিতে ফারহানা নীরার জীবন নিয়ে একটি উপন্যাসও লিখেছেন, যা স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা ও অবদানকে তুলে ধরে। তাঁর সেই জীবনী পড়ে জানা যায়, গ্রেপ্তারের পরে তাঁকে প্রথম কলকাতার এক কারাগারে রাখা হয়েছিল। তারপর তাঁকে আন্দামান জেলে পাঠানো হয়।

আর সেখানেই ঘটে এক নিদারুণ নৃশংস অত্যাচারের দৃষ্টান্ত।

তাঁদের যখন কারাগারের ভেতরে নিয়ে রাত দশটায় মহিলা কয়েদিদের সেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, শোওয়ার জন্য কম্বল ইত্যাদির কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। প্রবল শীতের রাতে তাঁর মনে মনে একটা উদ্বেগ হচ্ছিল যে, সেখানে গভীর সমুদ্রের অজানা দ্বীপে কাটিয়ে কীভাবে আমরা স্বাধীনতা পাব। রাত বারোটার দিকে একজন প্রহরী দুটি কম্বল নিয়ে এসে একটিও কথা না বলেই গায়ের উপর ফেলে দেয়। কম্বল গায়ে পড়ে যাওয়ায় তাঁর ঘুম ভেঙে খারাপ লাগলেও কম্বল পাওয়ার পরে খানিকটা আরাম হয়। যদিও গলায়, হাতে এবং পায়ে লোহার শক্ত ও ভারি শেকল দিয়ে বেঁধে রাখায় তাঁর শুতে বা বসতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল।

সকালে সূর্যোদয়ের পর তিনি দেখে খুশি হলেন, সেই বদ্ধ ঘরের এক পাশে একটি জানলা রয়েছে। তার পর জেলখানার এক কামার এল। হাতের বেড়িগুলি কাটতে গিয়ে তাঁর হাতের একটু কেটে যায়, তবে পা থেকে শিকল-বেড়িগুলি কাটানোর সময় সেই কামারের হাতুড়ির কয়েকটা বাড়ি পায়ের উপর পড়ে হাড়ে দু-থেকে তিনবার চোট লাগে। প্রবল ব্যথা পেয়ে নীরা বলে ওঠেন, “আপনি কি অন্ধ নাকি যে পায়ে হাতুড়ি মারছেন?”

সে বলল, “আমরা তোমাকেও মেরে ফেলতে পারি, তুমি কী করবে?”

“আমি এই কারাগারে বন্দি, আমি আর আপনার সঙ্গে কীই বা করতে পারি?” এই বলে তিনি তাদের গায়ের উপর থুথু ছিটিয়ে বললেন, “মহিলাদের সম্মান করতে শিখুন।”

সেলুলার জেলের ইংরেজ সুপারও তখন সেখানে ছিলেন, তিনি উচ্চকণ্ঠে বলে উঠলেন, “তোমাকে একেবারে ছেড়েই দেওয়া হবে, যদি তুমি আমাদের বলে দাও তোমাদের পাণ্ডা সুভাষ বসু কোথায় আছে।”

“তিনি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন,” নীরা জবাব দিয়েছিলেন, “এটা এখন সারা বিশ্ব জানে।”
“বসু বেঁচে আছে… তুমি মিথ্যা কথা বলছ যে সে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছে।” জেলার বলল।
“হ্যাঁ, নেতাজি বেঁচে আছেন।”
“তো সে এখন কোথায়…?”

নীরা আর্য তখন তাঁর বুকের উপরে হাত রেখে বললেন, “নেতাজি আমার হৃদয়ে বেঁচে আছেন।”

এই কথা শুনে জেলারের চোখমুখ রাগে লাল হয়ে গেল। সে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “তাহলে আমরা নেতাজিকে তোমার হৃদয় থেকেই সরিয়ে দেব, ছিনিয়ে আনব।” তার পর তারা বন্দিনির শাড়ির আঁচলে হাত দিয়ে এক হ্যাঁচকা টান দিল, জামার বুকের দিকটা ছিঁড়ে দিয়ে কামারের দিকে ইশারা করল। সেই কামার জেলের ফুলবাড়িতে গাছের পাতা কাটার মতো বড় সাইজের সরঞ্জাম ব্যবহার করছিল। সেগুলো তার সঙ্গেই ছিল। ওরকম একটা সাঁড়াশির মতো যন্ত্রকে উঠিয়ে সে নীরার ডান পাশের স্তনটিকে উন্মুক্ত করে কাটার চেষ্টা করে। যন্ত্রটির ধার কম ও কিছু অংশ বোধ হয় ভাঙা থাকায় মাংসের স্তর খুব একটা কাটতে পারেনি। কিন্তু স্তনের উপর যে বিষম চাপ পড়েছিল তাতে তাঁর অসহনীয় কষ্ট ও যন্ত্রণা হয়েছিল।

তারপর জেলার তাঁর গলা চেপে ধরে বলেছিল, “যদি আবারও জেলের স্টাফদের মুখের ওপর কথা বলো, তাহলে তোমার দুই বুকের উপরিভাগ আলাদা করে দেব। বেঁচে গেলে আজ। তোমার ভাগ্য ভালো যে এটি আগুন দিয়ে উত্তপ্ত করে আনা হয়নি। যদি এটি আগুন দিয়ে উত্তপ্ত করে আনা হত, তবে তোমার দুটি স্তন সম্পূর্ণরূপে ছিঁড়ে আলাদা করে দিতাম।”

 

নীরা আর্য আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রথম মহিলা গুপ্তচর হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। সুভাষচন্দ্র বসু নিজেই নীরাকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পবিত্র মোহন রায় আজাদ হিন্দ ফৌজের গোয়েন্দা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন, যার অধীনে মহিলা ও পুরুষ উভয়ই বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করতেন। নীরা আর্যর এক সময় সঙ্গীরা ছিলেন মনবতী আর্য, সরস্বতী রাজনামণি এবং দুর্গা মল্ল। গোর্খা যুবক ড্যানিয়েল কালের সঙ্গে তিনি আইএনএ-র জন্য ব্রিটিশদের সেনাবাহিনির মধ্যে ঘুরে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করতেন। নীরা আর্যর সঙ্গে একটি মেয়ে ছিল সরস্বতী রাজনামণি। সে নীরা আর্যর থেকে বয়সে ছোট ছিল। মূলত বর্মার লোক এবং সেখানেই জন্মগ্রহণ করেছিল। তারা ছেলেদের মতো পোশাক গ্রহণ পরে ব্রিটিশ অফিসারদের বাড়িতে এবং সামরিক শিবিরে কাজ শুরু করে। তারা আজাদ হিন্দ ফৌজের জন্য প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছিল। তাদের কাজ ছিল কান খোলা রাখার, সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলি নিয়ে আলোচনা করা, তারপরে নির্দিষ্ট অফিসে তা পৌঁছে দেওয়া। কখনও কখনও তাদের হাতে খুব গুরুত্বপূর্ণ নথিও এসে যেত। যখন সমস্ত মেয়েদের গুপ্তচরবৃত্তির জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল, তাদের স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে ধরা পড়ার সম্ভাবনা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করতে হবে।

একবার একটি মেয়ে সেরকম পরিস্থিতিতে এটা করতে অক্ষম হয় এবং তাকে ব্রিটিশ বাহিনির লোকেরা গ্রেপ্তার করে ফেলে।

নীরা আর্য এবং রাজনামণি স্থির করেছিলেন যে তাঁরা তাঁদের সেই সঙ্গীকে ছাড়িয়ে আনবেন। তাঁরা হিজড়া নর্তকীর পোশাক পরেন এবং যেখানে তাদের সঙ্গী দুর্গাকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল সেখানে পৌঁছে যান। তাঁরা অফিসারদের নাচেগানে ভুলিয়ে নেশার ওষুধ খাইয়ে তাঁদের সঙ্গীকে নিয়ে পালিয়ে আসেন। তখন অবধি সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, তবে পালানোর সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল; পাহারায় থাকা একজন সেনা তার বন্দুক থেকে গুলি করলে সেটি রাজনামণির ডান পায়ে লাগে, প্রচুর রক্তপাত হয়। সেই অবস্থাতেই তাঁরা তিনজন একটা উঁচু গাছের উপরের ডালে উঠে পড়লেন। নিচে চারদিকে অনুসন্ধান ও তোল্পাড় চলতে থাকায় তাঁদের তিনদিন ধরে টানা গাছের উপর ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বসে থাকতে হয়েছিল। তিনদিন পরে নিচে একটু খালি হলে তাঁরা সাহস করে নেমে আসেন এবং নিরাপদে আজাদ হিন্দ ফৌজের ঘাঁটিতে ফিরে আসেন। রাজনামণির সাহসিকতায় নেতাজি খুশি হয়ে তাকে আইএনএ ঝাঁসি রানি ব্রিগেডে লেফটেন্যান্টের পদ দান করেছিলেন এবং নীরা আর্যকে ক্যাপ্টেনের পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছিল।

 

দেশ স্বাধীন হলে স্বাধীন ভারত সরকার আরও অনেক রাজবন্দির সঙ্গে নীরা আর্যকে জেল থেকে মুক্তি দেন এবং আন্দামান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনেন। সরকারি সাহায্য পেনশন তাম্রপত্র ইত্যাদি গ্রহণ না করে নীরা আর্য আত্মসম্মান বজায় রেখে জীবন ধারণ করেছেন এবং হায়দ্রাবাদের রাস্তায় ফুল বিক্রি করে দিন গুজরান করেছেন। তিনি হায়দ্রাবাদের ফালকনামায় একটি কুঁড়েঘরে থাকতেন। সরকারি জমিতে থাকার কারণে শেষ জীবনে একদিন তাঁর কুঁড়েঘরটিও ভেঙে ফেলা হয়। বৃদ্ধাবস্থায় তিনি অসুস্থ অবস্থায় চারমিনারের পাশে রাস্তার ফুটপাতে দিন কাটিয়েছেন। চারপাশের কেউ সম্ভবত জানতও না, ইনি সেই বীরকন্যা নীরা আর্য, সুভাষচন্দ্র বসুর অন্যতম সাহসী সহযোদ্ধা।

অবশেষে ওসমানিয়া হাসপাতালে ২৬ জুলাই ১৯৯৮ এক গরিব অসহায় রুগ্নশীর্ণ বৃদ্ধার জীবনাবসান হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনেক অনুসন্ধানে জানা যায় এক বীর রমণী এইভাবে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। স্থানীয় “দৈনিক আলোচনা”র একজন সাংবাদিক খবর পেয়ে তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর জন্য সসম্মান শ্মশানযাত্রার ব্যবস্থা করেন এবং অনেকে সেই অন্তিম যাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন।

 

বর্তমান কেন্দ্রীয় শাসক দলের উদ্যোগে ভারতের ইতিহাসের অনেক গৌরবজনক পাতা ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। আর এই যে পৃষ্ঠাটি এখানে তুলে ধরা হল, এটি কোনোদিনই স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ধারার বইপত্রে জায়গা পায়নি। ইদানীং নেট দুনিয়ার সৌজন্যে সামাজিক মাধ্যমে কিছু কিছু তথ্য তাঁর সম্পর্কে ভেসে উঠেছে। আমার সংগ্রহ সেখান থেকেই।

সুভাষ বসুর বিদেশে চলে গিয়ে জার্মানি জাপানের সহযোগিতায় আজাদ হিন্দ বাহিনি গড়ে তুলে ব্রিটিশ বিরোধী মুক্তি সংগ্রামের রণনীতি ও রণকৌশল নিয়ে, তার যৌক্তিকতা ও সারবত্তা নিয়ে, আমাদের অনেকেরই নানারকম প্রশ্ন আছে। সেই সব প্রশ্ন আলোচনার জায়গা এই নিবন্ধ নয়। এখানে শুধু এটাই স্মরণ করতে চাই, বসু তাঁর স্বল্পস্থায়ী প্রয়াসকালেই কত অসাধারণ চরিত্র সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। নানা কারণে লক্ষ্মী সেহগলের নাম আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এই একজন আমাদের জানার বাইরে ছিলেন।

দেখা যাক, আজাদ হিন্দ সরকারের আশিতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিক দিবসে নীরা আর্যকে আমরা এক মুষ্টি সম্মান জানাতে পারি কিনা!