Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব

চণ্ডী মুখোপাধ্যায়

 


সাংবাদিক, চলচ্চিত্রবেত্তা, বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভামুখ্য

 

 

 

 

জনমোহিনী উদ্বোধন

মাত্র আট মাসের ব্যবধান। কলকাতা পেল একই বছরে দুবার আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসিব। মহামারির ধাক্কায় পিছিয়ে যায় ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কেআইএফএফ। তাই ২৭ এবং ২৮ একই বছরে। সিনেফিলদের পক্ষে সুখবরই এটা। ২৮তম কেআইএফএফ-এ ফিরে এল আবার মেগা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। আরবসাগরের তীরের তারকারা নেমে এল কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে। ২৮ ডিসেম্বর। বিকেলে। মঞ্চে মুম্বাই তারকারা— অমিতাভ, শাহরুখ, শত্রুঘ্ন সিনহা, জয়া বচ্চন, মহেশ ভাট, রানি মুখার্জী, অরিজিৎ সিং এবং এদের পেছনের সারিতেই কলকাতার টলিউড। এই নক্ষত্রমালার মধ্যেই উদ্বোধন হল চলচ্চিত্র উৎসব। প্রদীপ জ্বালালেন অমিতাভ। স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত। তিনি মঞ্চ-ভাষণে অমিতাভ বচ্চনকে ভারতরত্ন দেওয়ার সুপারিশ করলেন। সকলেই দু-এক মিনিট। শুধু অমিতাভ অনেকক্ষণ। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাস বললেন। তাঁর ভাবনায়। ব্যারিটোন ভয়েসে। অতএব পিন-নীরবতা পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে। উদ্বোধনী ছবি ‘অভিমান’। অমিতাভ-জয়া। পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর এইবছর জন্মশতবার্ষিকী। সেন্টিনারি ট্রিবিউটে তিনি ছাড়াও রয়েছেন দেশ-বিদেশের কয়েকজন— পাসোলিনি, অ্যালা রেনে, মাইকেল ক্যাকোয়ানিস, অসিত সেন, ভারতী দেবী, কে আসিফ, দিলীপকুমার, আলি আকবর খান। অবশ্য এই সূত্রে ফিরে দেখা গেল পাসোলিনির ‘ওডিপাস রেক্স’, ‘অ্যাকাটোন’, ‘দ্য গোসপেল অ্যাকোরডিং টু সেন্ট ম্যাথু’, ‘সালো’ এবং অ্যালা রেনের ‘হিরোশিমা মুন অ্যামুর’ এবং ‘প্রাইভেট ফিয়ার অফ পাবলিক প্লেসেস’-এর মতো বিশ্ব সিনেমারে ধ্রুপদী সিনেমাগুলো।
গত কয়েকবছর ধরেই এই চলচ্চিত্র উৎসবে সরাসরি সমান্তরালে দুটো সংস্কৃতি— এক, জনপ্রিয় স্রোত; দুই, অন্যভাবনার স্রোত। জনপ্রিয় স্রোত ধরেই এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে অমিতাভের ‘কালাপাহাড়’, ‘দিওয়ার’ বা ‘ব্ল্যাক’। পাশাপাশি কান ভেনিস বার্লিন প্রমুখ চলচ্চিত্র উৎসবের থেকে বাছাই করা চলচ্চিত্রের স্রোত। সিনেফিলদের কাছে যেটা এক বড় প্রাপ্তি। সাম্প্রতিককালের পৃথিবীর চলচ্চিত্রের হালহদিস জানার পথ। যা আমাদের সিনেমাভাবনায় অন্য এক দিগন্ত এনে দেয়। খুলে দেয় সিনেমা দুনিয়ার নতুন নতুন ভাবনার দরজা। বিশ্ব-দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগের এক পথ।

 

উৎসবের উৎসব

৪০ দেশ। ১৮০টি ছবি। ১২টি প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হল। ১৮০টি ছবিকে ভাগ করা হয়েছে ১৪ বিভাগে। যার মধ্যে প্রতিযোগিতামুলক বিভাগ পাঁচটি: আন্তজার্তিক ছবির— ইনোভেশন অফ মুভিং ইমেজ, ভারতীয় ছবি, নেটপ্যাক্ট-এশিয়ান ছবি, স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি, তথ্যচিত্র। এই পাঁচ বিভাগই প্রতিযগিতামূলক। দেশ-বিদেশ থেকে জুরি এসেছেন। তাঁরাই বিচার করবেন পাঁচ বিভাগের পাঁচ সেরা ছবি। এই জুরিগণের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের তনভির মোকাম্মেল।

আর অবশ্য এই উৎসবের প্রধান স্রোত— সিনেমা ইন্টারন্যাশানাল। এখানেই রয়েছে বিদেশের সেরা ছবিগুলো। এই বিভাগটিকে ফেস্টিভ্যাল অফ ফেস্টিভ্যালসও বলা যেতে পারে। কেননা ছবিগুলি নির্বাচিত হয়েছে পৃথিবীর সেরা সেরা চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা সেরা ছবি থেকে। অবশ্যই সেই দিক থেকে প্রতিবারই এটা উৎসবের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি। এবারও সেই দিক থেকে নিরাশ হননি দর্শকেরা।

এ সব ছাড়া ছিল সেন্টিনারি ট্রিবিউট। সিনেমা দুনিয়ায় যাঁদের শতবার্ষিকী তাঁদের নিয়ে ছবির মেলা। সেই সূত্রে এই বিভাগে রয়েছেন অ্যালা রেনে, পাবলো পিয়ের পাসোলিনি, মাইকেল কাকোয়ানিস, হৃষিকেশ মুখার্জী, অসিত সেন, ভারতী দেবী, কে আসিফ, আলি আকবর খান ও দিলীপ কুমার। যাঁরা গত বছর মারা গেছেন তাঁদের জন্যে স্পেশাল ট্রিবিউট— অ্যাঞ্জেলা ল্যান্সবেরি, শিব কুমার শর্মা, প্রদীপ মুখোপাধ্যায় এবং তরুণ মজুমদার। এবারের উৎসবের উদ্বোধক অমিতাভ বচ্চনকে লিভিং লিজেন্ড চিহ্নিত করে তাঁর সুপারহিট তিনটি ছবি— ‘কালাপাহাড়’, ‘ব্ল্যাক’ এবং ‘দিওয়ার’।

‘গেমস অন’ নামে এক বিভাগে শুধু খেলার ছবি। খান সাতেক ভারতীয় খেলাভিত্তিক ছবি: ‘কোনি’, ‘চক দে ইন্ডিয়া’, ‘ভাগ মিলখা ভাগ’, ’মেরি কম’, ‘এম এস ধোনি— দ্য আনটোল্ড স্টোরি’, ‘দঙ্গল’ এবং ‘৮৩’। আর ছিল ভারতীয় রেয়ার ল্যাঙ্গুয়েজ ফিল্ম। যেটা অবশ্যই এক অন্য জগতের সন্ধান।

এইসব মিলে মিশে সাতদিনের উৎসব জমজমাট। মহামারির পর নন্দন প্রাঙ্গন আবার চলচ্চিত্রময়। দেশবিদেশের ডেলিগেট, পরিচালক মিলে নন্দন প্রাঙ্গনে এই সাতদিন চলচ্চিত্র মেলা।

 

স্মৃতিময় হিরোশিমা

আবার ফিরে দেখা গেল গোদারের চলচ্চিত্র জীবনের প্রথমদিককার চারটে ছবি। ‘ব্রেথলেস’ গোদারের প্রথম ফিচার ছবি যা আমুল পালতে দিয়েছিল ফরাসি সিনেমার গতিপ্রকৃতিকে। পুরনো যা কিছু প্রায় বাতিল করে ফরাসি সিনেমায় নতুন তরঙ্গ আনে এই ছবি। সিনেমার ইতিহাসে যা এক উল্লেখযোগ্য সময়। সেই পর্বের গোদারের আরও তিনটি ছবি দেখানো হল— ‘এ উয়োম্যান ইজ আ উয়োম্যান’, ‘কন্টেম্পট’ এবং ‘আলফাভিল’।

অ্যালা রেনের সেই ষাটের দশকের সাড়াজাগানো ছবি ‘হিরোশিমা মুন আমুর’। এক নতুন আঙ্গিকে এক ফরাসি অভিনেত্রী এবং জাপানি ইঞ্জিনিয়ারের পারস্পরিক কথোকপনে উঠে আসে হিরোশিমার ভয়াবহ স্মৃতি। উৎসবে যা আজও সমসাময়িক করে তুলল। সঙ্গে ছিল রেনের আরেকটি ছবি ‘প্রাইভেট ফিয়ার্স ইন পাবলিক প্লেসেস’। এই ছবিতেও সেই দুটি চরিত্র, এক নারী ও এক পুরুষ। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে কথাবার্তার লেনদেনের মধ্যে আবিষ্কার করতে চাইছে ভালবাসার সংজ্ঞাকে। ভালবাসা কী, সেটাই ছবির কেন্দ্রীয় বিষয়। অ্যালা রেনের এই ছবিটি একুশ শতকের ছবি। ২০০৬ সালে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ‘রুপোর সিংহ’ জিতেছিল।

আর অবশ্যই সাম্প্রতিক কালের বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ছবির মধ্যে দিয়ে অনুভব করা গেল পৃথিবীর সিনেমা অতিদ্রুত কীভাবে নিজেকে পালটাচ্ছে। ২০২১-২২ সালের বেশ কিছু সেরা ছবি অবশ্যই এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল। কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালকের পুরস্কার পাওয়া ‘ডিসিশন টু লিভ’ ছবিটি দেখানো হল। দক্ষিণ কোরিয়ার এই ছবিটির পরিচালক হলেন পার্ক চান-উক। তা ছাড়া ফিলিপিনের পরিচালক লাভ ডিয়াজ, জার্মানির ফাতেহ আকিনদের মত অন্য ভাবনার পরিচালকদের ছবিও ছিল। লাভ ডিয়াজের ছবির নাম ‘হোয়েন দ্য ওয়েভস আর গন’। ফাতেহ আকিনের নতুন ছবি ‘রেনগোল্ড’ দেখা গেল। যেমন ছিল পাকিস্তানের ছবি তারিক সালের ‘জয়ল্যান্ড’। পাকিস্তানের ছবি দেখার সুযোগ আমাদের এখানে হয় না। সেই সুযোগ এনে দিল এই উৎসব। এ ছাড়া কিম কি দুক-এর নতুন ছবি ‘কল অফ গড’ দেখতে পাওয়াটাও নিশ্চিত এক অন্য অভিজ্ঞতা। তাছাড়া জাফর পানানির নতুন ছবি ‘নো বিয়ার’ দেখতে পাওয়া গেল। ওঁর শেষের দিকের ছবিটা ‘কল অফ দ্য গড’, কিম কি দুকের জীবনের শেষপর্বের ছবি যখন তিনি কিছুটা আধ্যাত্মিক আচ্ছন্নতার মধ্যে রয়েছেন। সেই ছাপ রয়েছে এই ছবিতে। এ ছবিটা ভেনিসের চলচ্চিত্র উৎসবে রীতিমত সাড়া জাগিয়েছিল। যেমন ছিল, ভেনিসের প্রতিযোগিতার ছবি ড্যারেন এরেনফস্কির ‘দ্য হোয়েল’। জাফর পানাহির ছবিটাও খুব ইন্টারেস্টিং, এবারের ওঁর ছবিটায় তুরস্কের একেবারে জনহীন সীমান্ত এলাকাকে ঘিরে। ‘ব্রোকার’ হিরোকাজু কোরে-ইদার ছবি। ছবিটি এবারের কান চলচ্চিত্র উৎসবে পেয়েছে রোবের ব্রেশঁ নামাঙ্কিত বিশেষ পুরস্কার। এছাড়া সমুদ্রের মাঝিদের জীবন নিয়ে আরেকটি ছবি শ্রীলঙ্কার ‘দ্য ওশিয়েন এঞ্জেল’। আরও অনেক ছবির উল্লেখ করা যেতেই পারে। যেমন ডেভিড ক্রনেনবার্গের ‘ক্রাইমস অফ দ্য ফিউচার’। বা কার্লা সাইমনের ‘আলকারাজ’। ছবিটা গোল্ডেন বিয়ার পেয়েছে। এগুলো সবই সাম্প্রতিক ছবি, যেমন লিয়া মেসিয়মের ‘দ্যা ফাইভ ডেভিলস’। মিয়া হানসান-এর ‘লাভ’। এরা মূলত নতুন যুগের ফিল্মমেকার। এ ছাড়া কানে গ্রাঁ পি পাওয়া ‘ক্লোজ’। পরিচালক লুকা ঢোন্টের। লোকার্নোতে গোল্ডেন লেপার্ড পায় ‘রুল-৩৪’। জুলিয়া মুরাটের ছবি। সেটাও এবারের অন্যতম আকর্ষণ।

 

বাংলাদেশের বাংলা ছবি

অবশ্যই এপার বাংলার মানুষদের যথেষ্ট উৎসাহ ছিল ওপার বাংলার ছবি নিয়ে। বাংলাদেশের তিনটে ছবি ছিল এবার— মজিবর রেহমান সুমনের ‘হাওয়া’, ফক্রুল খানের ‘জে কে ৭১’ এবং মুহাম্মদ কাইউম ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে ওড়া’। ‘হাওয়া’ ছবির নায়ক চঞ্চল চৌধুরি উৎসবের অতিথি হিসেবে কলকাতায় এসেছিলেন। উদ্বোধন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এছাড়া ‘হাওয়া’ বাণিজ্যিকভাবে মুক্তিও পেয়েছে কলকাতায়। মানবতার ছবি ‘জে কে ৭১’। মুক্তিযুদ্ধের ওপর ছবি হলেও গল্পে এক অন্য আবহাওয়া রয়েছে। ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১। প্যারিসের ওরলি বিমানবন্দরে একটি বিমানকে হাইজ্যাক করে জঁ কে নামে একজন। জানা যায় জঁ কে একজন সমাজকর্মী। তাঁর দাবী কলকাতার উদ্বাস্তু ক্যাম্পে পড়ে থাকা বাংলাদেশি শিশুদের জন্যে ২০ টন ওষুধ এবং বেবিফুড পাঠাতে হবে। মানবিক এই দাবি মেনে নেয় ফরাসি সরকার, কিন্তু জঁ কে-কে গ্রেপ্তার করে তারা। ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে ওড়া’ ছবিটি দর্শকদের এক অন্য অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করে। এই ছবির নায়ক নিঃস্ব আত্মীয়হীন। দুমুঠো খাওয়ার তাগিদে ধানের মরসুমে ধান কাটতে যায় হাওরে। সে সেখানে শুধু খাওয়া-থাকার বিনিময়ে এক পরিবারে নানা গৃহস্থালির কাজ, ধান কাটা ইত্যাদির কাজে চুক্তিবদ্ধ হয়। ক্রমশ সে অন্য অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে থাকে। যুবক সুলতান ছেলের মতই জড়িয়ে পড়ে এই সংসারে। যে সংসারে রয়েছে পুত্রহারানো বাবা, বিধবা পুত্রবধূ এবং এক শিশুকন্যা। এই সংসারের সুখদুখের সঙ্গী হয়ে ওঠে ক্রমশ সুলতান। সংগ্রামেরও। এই সূত্র ধরেই ডকু ফিচারের মত করে পরিচালক মহাম্মদ কাইউম এই অঞ্চলের প্রাত্যহিক জীবনসংগ্রামকে তুলে ধরেন।

 

আগামী দিনের সিনেমা

এবারও ছিল সত্যজিৎ রায় মেমোরিয়াল লেকচার। বক্তা পরিচালক সুধীর মিশ্র। বিষয়— অ্যান্ডারস্টান্ডিং সিনেমা ইন দ্য টাইম অফ ওটিটি। একুশ শতকে এসে সিনেমায় আমুল বদল হয়েছে। ফিল্মের জায়গা নিয়েছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। ক্রমশ সিনেমা হলের জায়গায় চলে আসছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। সারা পৃথিবীতেই এখন ওটিটি রাজ। বড় পর্দার দিন কি তাহলে শেষ হতে চলেছে? সুধীর মিশ্র এই প্রশ্ন তোলেন। তিনি আরও বলেন, এখন সিনেমা দুনিয়ায় সবচেয়ে আলোচিত শব্দ কনটেন্ট। সিনেমার অন্যান্য অবলম্বন সঙ্গীত, আলো, শব্দ সবকিছুকে ম্লান করে দিয়েছে এই কনটেন্ট ক্রিয়েশন। যেমন আমদের এখনকার মুম্বাইতে একজন ক্যামেরাম্যানও বসে নেই। প্রত্যেকেই কনটেন্ট নির্মাণে ব্যস্ত। এখন বোধহয় রেণু সালুজার মত সম্পাদকের দিন শেষ। যে রেণু সালুজা একদা এই মুম্বাইতেই সিনেমাকে আরেকবার পুনর্নির্মাণ করতেন সম্পাদনার টেবিলে। এখন এই ওটিটি-র সময়ে সিনেমার আধুনিকতা বলে আলাদা করে কোনও শব্দ নেই। দর্শকদের আধুনিকতাই এখন সিনেমার আধুনিকতা। ফলে সিনেমা দেখার চোখও পালটেছে। কিন্তু এত আধুনিকতার সময়েও বিষয় নির্বাচনে কিন্তু আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি। গোয়েন্দা-মধ্যবিত্ত জটিলতা-যৌনতার বাইরে বেরোতে পারছি না।

এবারের উৎসবে আরেকটা আকর্ষণীয় বিষয় নিয়ে বলেন পরিচালক আলোকচিত্রী শাজি এন করুন। তিনি এবার মাস্টারক্লাস নিলেন। বিষয়— ভিশুয়াল মেটাফর অ্যান্ড মুভিং ইমেজ। নিজের চলচ্চিত্র জীবনের প্রেক্ষাপটে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।

 

ফলাফল

২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব প্রতিযোগিতামূলক। বিভিন্ন বিভাগের ফলাফল বেরোল শেষদিন। ইনোভেশন অফ মুভিং ইমেজ বিভাগে সেরা ছবি হল স্পেনের ‘আপন ইন্ট্রি’ এবং ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। সেরা পরিচালক আর্জেন্টিনার ছবি ‘হিটলার উইচ’-এর পরিচালক এমেস্ট্রো আরদিতো এবং ভিরনা মলিনা। ভারতীয় ভাষায় সেরা: ভাস্কর মৌর্য-র ছবি ‘মুঠা’। এবং সেরা পরিচালক দীপঙ্কর পারেখ ‘নানেরা’ ছবির জন্যে। এবারের এশিয়ান সিলেক্ট বা নেটপ্যাক্ট পুরস্কার— তাজিকিস্থানের মুহিউদ্দিন মুজাফরের ছবি ‘ফরচুন’। সেরা ভারতীয় তথ্যচিত্র এবং সেরা ছোট ছবি হল যথাক্রমে নেহা শর্মার ‘আনসেটেল্ড শেড’ এবং প্রত্যয় সাহার ‘ম্যয় মেহমুদ’।