পীযূষ দত্ত
লেখক বাংলা সাহিত্যের ছাত্র
২০২৪ লোকসভা ভোটের দেরি আছে। এখনও অবধি বিরোধী দলগুলির গতিপ্রকৃতি দেখে আন্দাজ করার চেষ্টা করা যেতে পারে, যে বিরোধী জোট ঠিক কেমন চেহারা নিতে চলেছে
সামনের বছর লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগেই এক এক করে যেন চুপসে যেতে শুরু করেছে ফোলানো-ফাঁপানো বেলুনগুলি। যে পুলওয়ামাকে হাতিয়ার করে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড় তুলেছিল বিজেপি, সেই পুলওয়ামা নিয়ে এবার নতুন তথ্য হাজির হল বাজারে। আর সেই তথ্যসূত্র আর কেউ নন, তৎকালীন জম্মু-কাশ্মিরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। দ্য ওয়ারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি প্রবীণ সাংবাদিক করণ থাপারকে জানান, “পুলওয়ামার সময় পাঁচটি বিমানের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছিল সেনাবাহিনি। সেকথা আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানাই। তবে সেদিন আমার কথায় কর্ণপাত করেননি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।” সত্যপাল মালিক আরও জানান, যে পরবর্তীতে এ ঘটনার কথা তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানালে, তিনি সত্যপাল মহাশয়কে ‘চুপ করে থাকার’ নির্দেশ দেন।
এই সাক্ষাৎকারের ক্লিপিং সোশাল মিডিয়া নামক পাতটিতে পড়তে না পড়তেই ভাইরাল হয়ে গেছে। আর হবে নাইবা কেন। পুলওয়ামা ঘটনার সময় যখনই সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তখনই সাঙ্গপাঙ্গ সমেত দোরে দোরে হুমকি দিতে হাজির হয়েছিল বিজেপি।
অন্যদিকে ‘দুষ্ট দমন’-এর নামে একের পর এক ভুয়ো এনকাউন্টার সাজিয়ে চলেছেন আদিত্যনাথ সরকার। অতিসম্প্রতি আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাইকে পুলিশ এবং মিডিয়ার সামনে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হল। আদিত্যনাথ সরকার বা বিজেপি এ ঘটনার দায় নিজেদের ঘাড়ে নেবেন না সেটাই স্বাভাবিক। তবে বিষয় হল, এ ঘটনার সমালোচনা করার বদলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আতিক আহমেদের দুষ্কর্মের ফিরিস্তি হাজির করা শুরু করেন। যা কতকটা যেন ঘুরপথে এই এনকাউন্টার সংস্কৃতিকেই সমর্থন করা।
তবে এইসব ঘটনা কি উপমহাদেশের নাগরিকদের চোখ এড়িয়ে গেল? মোটেই না।
এবার প্রশ্ন হল, ২০২৪-এর লোকসভার আগে এই ঘটনাগুলি বিরোধীদের নয়া হাতিয়ার হতে পারে কি না? দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকার পরিবর্তনে এই সমস্ত ঘটনা আদৌ কোনও প্রভাব ফেলতে পারে কি না?
তবে এই লেখায় আমরা সত্যপাল মালিকের তথ্য ফাঁস বা আতিক আহমেদের খুনের ঘটনাকে নিয়ে কাটাছেঁড়া করব না। বরং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোটের যে জটিল অঙ্ক সামনে আসছে, তার জটগুলিকে খানিক আলগা করবার চেষ্টা করব।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে আর মোট পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনেই। তবে এই সমস্ত নির্বাচনের মাঝেই দলগুলির মধ্যে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে ২০২৪-এর লোকসভার জন্য। ইতিমধ্যেই বিরোধী শিবিরে জোটের আওয়াজ উঠেছে। বিজেপিকে পরাস্ত করতে ২০২৪ নির্বাচনে বিরোধী ঐক্য যে সময়ের দাবি, তা বুঝতে রকেট সায়েন্স লাগে না। তাই এবার বিরোধী শিবিরে জোট নিয়ে শুরু হয়েছে পার্মুটেশন-কম্বিনেশন।
লোকসভা ভোটের দেরি আছে। এখনও অবধি বিরোধী দলগুলির গতিপ্রকৃতি দেখে আন্দাজ করার চেষ্টা করা যেতে পারে, যে বিরোধী জোট ঠিক কেমন চেহারা নিতে চলেছে।
জোটের ক্ষেত্রে আপাতত সোজাসরলভাবে দুটি সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। একদিকে রয়েছে কংগ্রেস, এবং কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে একটি জোট তৈরির সম্ভাবনা। আরেকদিকে তৃণমূল এবং সমাজবাদী পার্টির মতো রাজ্যভিত্তিক দলগুলি, আর তাদেরকে কেন্দ্র করে একটি অকংগ্রেসি জোট গড়ে ওঠার সম্ভাবনা।
এই দুটি আলাদা জোট আদতে কতটা বিজেপিকে সরকার থেকে সরাতে সক্ষম হবে তা বলা কঠিন। তবে এই তৃতীয় ফ্রন্ট তৈরির কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমেই আমাদের নজর দিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের দিকে।
সাগরদীঘি হাতছাড়া হওয়ার ক্ষত তৃণমূলের শরীরে এখনও দগদগ করছে। বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে এই পরাজয় মেনে নেওয়া কঠিন তৃণমূল সুপ্রিমোর পক্ষে। যদিও, বাম-কংগ্রেস জোটের জয়ী প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস কদিন আগেই সাগরদীঘিতে ‘উন্নয়ন ফেরাতে’ তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তারপরেও যেন ক্ষততে প্রলেপ পড়ছে না। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গ উঠলেই আক্রমণাত্মক হয়ে পড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩ মার্চ ২০২৩ প্রকাশিত একটি এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জোট প্রসঙ্গে বলেন, “কংগ্রেস এবং সিপিএমের সঙ্গে বিজেপির যে বোঝাপড়া রয়েছে, তারপরে তারা কীভাবে নিজেদের বিজেপি-বিরোধী শক্তি হিসেবে দাবি করে?”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, সাগরদীঘি উপনির্বাচনে সিপিএম এবং কংগ্রেস সাম্প্রদায়িক তাস খেলেছে। ফলে অঙ্ক খানিক সহজ হল। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা স্পষ্ট করেছেন যে বিজেপির সঙ্গে এই দুই দলের আঁতাত রয়েছে। যার ফলে তৃণমূলের জোটের তালিকা থেকে স্বভাবতই বাদ পড়ে গেল সিপিএম এবং কংগ্রেস।
অন্যদিকে, এই বিরোধী জোট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যোগী ভূমিকা নিচ্ছেন বিজেপির এককালের সতীর্থ, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতৃত্ব, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদব, ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন। বৈঠকগুলির ফলাফল এখনও খোলসা করেননি তিনি। তবে তৃতীয় ফ্রন্টের আলোচনা উঠতে, নীতীশ কুমার সাংবাদিকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কংগ্রেস ছাড়া কোনও বিরোধী জোটে তাঁর দল অংশগ্রহণ করবে না।
নীতীশ কুমারের এই উদ্যোগকে অনেকেই জরুরি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন। সম্প্রতি আরজেডির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভোলা যাদব জানান, নীতীশ কুমারের এই উদ্যোগ হয়তো আগামীতে একটা নতুন ইউপিএ সরকার গঠনের দিকে এগোবে। যা তাঁর মতে জরুরি এবং সময়োপযোগী।
এই বিরোধী জোটকে মজবুত করতে একটি ফর্মুলার প্রস্তাবও রেখেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ‘একের বিরুদ্ধে এক’। যার বক্তব্য হল, ৫০০টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি কেন্দ্রে বিজেপির একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে একজন করে বিরোধী জোটের প্রার্থীকে দাঁড় করানো। তবে এই ফর্মুলায় এখনও সর্বাত্মকভাবে সাড়া মেলেনি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিরোধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ। এখানে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস এবং সিপিএমের সরাসরি সংঘাত রয়েছে। ফলে এখানে কেউ কাউকে সিট ছাড়তে রাজি হবে কি না, তা বলা কঠিন। একই সমস্যা দেখা দিতে পারে কেরল, তেলেঙ্গানার মতো রাজ্যগুলিতেও। ফলে এই কারণেই এখনও জোটের ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে না।
তবে দলগুলির মধ্যে যে ব্যাপকরকম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, তা বলা বাহুল্য। কে বিজেপি সরকারের প্রধান বিরোধী দলের শিরোপা মাথায় বসাবে তা নিয়ে বেশ জমাটি প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়েছে।
একদিকে রাহুল গান্ধিরা তাঁদের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ দিয়ে গোটা দেশে কংগ্রেসের হারানো ইমেজ ফেরানোর চেষ্টায় নেমেছেন। কর্নাটক নির্বাচনের ফলাফল বলছে তাঁরা খানিক সফলও হয়েছেন। তবে শেষ কথা বলবে ২০২৪-এর লোকসভার ফলাফল।
রাহুল গান্ধির নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে এখনও জনসাধারণের মনে সংশয়ের অভাব নেই। জনসাধারণের একাংশ এখনও একথা মনে করেন যে মোদির বিরুদ্ধে দৃঢ় রাজনৈতিক মুখ নেই। তবে হালে সেই লড়াইয়ে রাহুল গান্ধিকে অনেকেই ‘মুখ’ বলে মনে করছেন। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-য় কংগ্রেস মানুষের থেকে প্রতিক্রিয়াও মন্দ পায়নি। দেখা গেছে বহু মানুষ এগিয়ে এসেছেন, হাত মিলিয়েছেন, সুখ-দুঃখের কথাও হয়তো বলেছেন। তবে এই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ তার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণভাবে হাসিল করতে পারল কি না, তা সময় বলবে। তা সত্ত্বেও এই যাত্রা যে ২০২৪-কে মাথায় রেখে কংগ্রেসের জনপ্রিয় ‘মুখ’ তৈরি করবার নয়া কৌশল, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন নেহাতই আজকের বা কালকের গল্প নয়। ‘দিল্লি যাবে হাওয়াই চটি’— এ স্লোগান তৃণমূলের বহুদিনের। ফলে প্রস্তুতিও বহুদিনের। হালে এই ভারত জোড়োর মতোই একরকম যাত্রায় বেরিয়েছেন তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। এই যাত্রা পঞ্চায়েতকে মাথায় রেখে হলেও, লোকসভায় নিজেদের গড় হারাতে চায় না তৃণমূল। মানুষের ক্ষোভ জানার পাশাপাশি, বিজেপির বিরুদ্ধে নিজেদেরকে একমাত্র বিরোধী দল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের জনতার মনে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তারা। ‘নব জোয়ার’-এর নামে তৃণমূলের পুরনো নেতৃত্বের একাংশকে একপ্রকার বাতিল করে নতুন নেতৃত্বকে স্থান দিতে চাইছে তারা। তাতে যদি খানিক বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা যায়।
অন্যদিকে তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ বাদেও, গোয়া, মেঘালয়ের মতো একাধিক রাজ্যে সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ঘনঘন দিল্লি যাতায়াত, নিজেদের বিজেপি-বিরোধী শক্তিশালী মুখ হিসেবে গড়ে তোলবার প্রয়াস হিসেবেই দেখা যেতে পারে।
৪ এপ্রিল ২০২৩, হিন্দুস্থান টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও বিরোধী জোটের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। ১৯টি বিরোধী দলকে নিয়ে একটি কনফারেন্সে তিনি বলেন, “মৈত্রীতন্ত্র, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতার আওয়াজকে এই দেশে আরও মজবুত করতে হবে।” তিনি যোগ করেন, “এটা কোনও একটি দলের উদ্যোগে সম্ভব নয়। সে আওয়াজ বেশি দূর পৌঁছবে না। এই আওয়াজ ঐক্যবদ্ধভাবে তুলতে হবে।” সেই কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ঝাড়খান্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, বিহারের ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লাহ এবং প্রমুখেরা।
একদিকে যত জোরদার হচ্ছে বিরোধী মুখ হওয়ার লড়াই, ততই যেন জটিল হচ্ছে বিরোধী জোটের অঙ্ক।
২০২৪-এর লোকসভায় প্রতিটা বিরোধী দলই দিল্লিতে নিজেদের রাজনৈতিক জমি দখলের চেষ্টায় মরিয়া। ভারতের মতো দেশে ভোট-রাজনীতির কেন্দ্রে থাকে এলাকাভিত্তিক ক্ষমতার রাজনীতি। সেখানে কোনপথে এই বোঝাপড়া এগোবে, বা আদৌ এগোবে কি না, তা বলা মুশকিল।
সম্প্রতি কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পর একটি টুইট মারফত নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই টুইটে কতকটা সচেতনভাবেই যেন রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেসের নাম নেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই টুইটের একদম শেষভাগে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গটিকে যেন ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে বিষয়টিকে খোলসা করেননি। ফলে এখনও অবধি সবই অনুমানের স্তরে। কোনও কিছুই স্পষ্ট নয়।
হালে, কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত ছিলেন না তিনি। দলের প্রতিনিধি হিসেবে কাকলি ঘোষদস্তিদারকে সেই অনুষ্ঠানে পাঠিয়েছিলেন।
তবে সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত না থাকলেও, বাকি ১৭টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। যা অনেকের মতে ২০২৪-এর বিরোধী জোটের বার্তা হিসেবে ধরা যেতে পারে।
এখানেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি আসে। এই জোট যদি আদৌ তৈরি হয়, তা কি স্রেফ বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর লড়াই হবে? অর্থাৎ এক দলকে সরিয়ে আরেকটি দল মাত্র? বা একটি রাজনৈতিক মুখের বদলে আরেকটি রাজনৈতিক মুখ? নাকি জনসাধারণের প্রাত্যহিক দিনের দাবিগুলিও সেখানে স্থান পাবে?
১৭টি বিরোধী দলের দাপুটে নেতা একসঙ্গে মঞ্চে হাত ধরে দাঁড়ালেই তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে না। ১৭টি নেতা এক হয়ে ‘জনপ্রিয় মুখ’ তৈরির বদলে যদি জনগণের প্রাত্যহিক দিনের বাকি সতেরো হাজার দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে হয়তো এই জোট জনমানসে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।