Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

তারান্তিনো, সিজন দুই— একত্রিশ

প্রিয়ক মিত্র

 

পূর্ব প্রকাশিতের পর

অসহনীয় এক নীরবতা খেলে যাচ্ছিল ভবানীপুরের পুরনো এই ঘরটার ভেতর। শাহিদ মনে মনে ভাবছিল, এভাবে এই কথাটা বলে ফেলা তার কতটা উচিত হল। তার নানা কোনওদিনই খুব বিশ্বাসী লোক ছিল না, তার আব্বু বা চাচাও খুব একটা আস্তিক নয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া মুসলমান ওরা কোনওদিনও ছিল না। কিন্তু যে বস্তুটা নিয়ে শাহিদ এমন একটা কথা বলল, সেটা প্রায় ওদের একটা পারিবারিক অভিজ্ঞান হয়ে উঠেছে। নানু থেকে চাচা হয়ে সে, কেউই ওই আংটির মহিমায় যে আলাদা করে বিশ্বাসী ছিল, তা নয়। কিন্তু তারা ওটা কোনওদিন কাছছাড়া করেনি, হারানোর কথা স্বপ্নেও ভাবেনি কখনও। আজ সেই জিনিসটা শাহিদের কাছে নেই। পৃথিবীতে কোথাও একটা আছে, সরিতের কাছে। সরিৎ কি পালিয়ে এসেছে এখানেই? না কি সে অন্য কোনও দেশে রয়েছে? যেখানেই থাকুক, সেই হিরে আর আগের অবস্থায় নেই। মাঝেমধ্যে শাহিদের মনে হত, হিরেটার মধ‍্যে একটা আপাত-সুন্দরের সম্মোহনী শক্তি আছে। জেল্লা আছে। ওটাই ওই আংটিটাকে ঘিরে মোহের কারণ। কিন্তু শেষপর্যন্ত যা ঘটল, তার কোনও ব‍্যাখ‍্যা কি ওর কাছে আছে?

—তোর নানু বলত, অনেকেই নাকি ওটাকে অপয়া বলে। আমার হাতে কিন্তু নানু এই কারণেই দিয়েছিল ওটা, যাতে আমাদের ইনকিলাবে কখনও না কখনও ওটা কাজে লেগে যায়। লাগেনি। কিন্তু সেই ট্র‍্যাডিশন বজায় রাখতেই, তুই যখন বাইরে গেলি, তখন তোর হাতে ওটা তুলে দেওয়া। ওটা যদি বিজ্ঞানের কোনও কাজে লাগে, তাহলে তো ভালই হয়। ওটা দখলে রাখতে আমরা চাইনি কোনওদিনই।
—কিন্তু…

শাহিদ থমকাল। এখনও সে বলে উঠতে পারেনি, হিরেটার ওই পরিবর্তিত অবস্থাটাও তার কাছে নেই।

একটু ভাবল সে। বলল না কথাটা। বদলে অন্য একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল তার চাচাকে।

—আমাকে একটা কথা বলো। এই হিরেটা দেখে কখনও অন‍্যরকম কিছু মনে হয়নি?

একটু যেন থমকালেন মহম্মদ ইলিয়াস। কী বেশ মনে করতে চেষ্টা করছেন যেন। তারপর একটু থেমে থেমে বললেন,

—সিঙ্গাপুরে একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল বটে।

চোখ জ্বলজ্বল করে উঠল শাহিদের। সে জানে, তার চাচার কিছু মানসিক বৈকল্য দেখা দিলেও, ওই সময়টার কথা তার স্মৃতিতে ছবির মতো গাঁথা।

—কী ঘটনা চাচা?

শাহিদ অধীর। ওই বিশেষ ঘটনার পর প্রায় পাঁচ বছর কেটে গেছে। কিন্তু আজও, এত বিপদ পেরিয়ে এসেও শাহিদকে সবচেয়ে বেশি যেটা তাড়া করে, তা হল এই আংটিটার আসল সত্যি, যা তার বৈজ্ঞানিক বুদ্ধিতে ধরা পড়েনি। কী এমন হতে পারে একটা আকাশি রঙের হিরের ভেতর? কী থাকতে পারে ওই হিরের মধ্যে? কেন মহাকাশ থেকে অচেনা একটা বার্তা পেয়েছিল বলে মনে হয়েছিল ওদের? ওই হিরের মধ্যে কি সত্যিই ভিনগ্রহের আভাস নিহিত?

মহম্মদ ইলিয়াস বলতে থাকলেন— ১৯৪২ সালের মে মাস নাগাদ। সবে আইএনএ-র দায়িত্ব রাসবিহারী বোসের হাত থেকে নিয়েছেন সুভাষচন্দ্র বসু। আমি, আরও বেশ কিছু সিপাহির মতো, ভারত থেকে গিয়ে জয়েন করেছি ওখানে। আমার পকেটে তখন আব্বুর দেওয়া এই হিরে। ওখানে তো অনেকরকম লোক ছিল। যুদ্ধবন্দিও ছিল কেউ কেউ। তার সঙ্গে কিছু ফেরার আসামিও গিয়ে ভিড়েছিল ফোর্সে, ইনিশিয়ালি। একদিন আমি আমার টেন্টে বসে হিরেটা নিয়ে আপনমনেই নাড়াচাড়া করছি, একজনের চোখে পড়ে যায়। সে ভাবে, আমি বুঝি স্মাগলার। কথাটা নিয়ে চুকলি করে আমাদের ইউনিটের ক‍্যাপ্টেনের কাছে। তিনি আমাকে ডেকে পাঠান। খানিক জিজ্ঞাসাবাদ করে হিরেটা নিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দেখেন। আমি বলি, এই হিরে যুদ্ধে কাজে লাগে যাতে, সেজন্যই নিয়ে আসা। বললে আপনার কাছে গচ্ছিত রাখতেও পারি। ক‍্যাপ্টেন একটু নাড়িয়েচাড়িয়ে ফেরত দেন। বলেন, নিজের কাছেই রাখতে। সময় হলে উনি নিজেই চেয়ে নেবেন। এই ছিল আইএনএ!

—তারপর?

অধৈর্য হয়ে উঠছে শাহিদ। তার জানা দরকার, হিরেটার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল কি না। সে জানে, একবার আজাদ হিন্দ ফৌজের কথা উঠলেই জগৎসংসার-বিস্মৃত হয় চাচা।

—তারপর ওটা নিয়ে টেন্টে ফেরার পর রাতে একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটে! আমি হিরেটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে ছিলাম। কী জানে, কেন। কিন্তু চোখ ফেরাতে পারছিলাম না কিছুতেই। এর মধ্যে আরেকটা ব‍্যাপার পাকাচ্ছিল। ক‍্যাপ্টেনের ঘরে সেসময় একজন ছিল, যার এই হিরেটার প্রতি চোখ পড়ে যায়। রাতে টেন্টে শুয়ে আছি। সে এসে ডাকল বাইরে। বেরোলাম। বেরোনোর আগে হিরেটা বালিশের তলায় রেখে গেলাম। সিঙ্গাপুরের পেনাংয়ের কাছে আমরা ছিলাম। প্রচণ্ড ঠান্ডা রাতে। একেবারে সামুদ্রিক হাওয়া যেন উড়িয়ে নিয়ে যাবে, এমন অবস্থা। আচমকাই আমার কোমরে পিস্তল ধরে সে ফিসফিস করে বলল, হিরেটা আমাকে এনে দাও। ওটার একটা হিল্লে করি। তুমি আধা, আমি আধা। ভাল কথায় বলে তোমাকে কোনও কাজ হত না। তাই হুমকি দিয়েই বললাম সরাসরি।

এসব কথাই কমবেশি অপ্রাসঙ্গিক লাগছে শাহিদের। কিন্তু চাচার বলার গুণে সে মোহিত হয়েই শুনছিল। সেই কিশোরবেলার মতো বিস্ময় নিয়ে সে জিজ্ঞেস করল, তারপর?

মহম্মদ ইলিয়াসের ঠোঁটের কোণে এবার একচিলতে হাসি দেখা দিল।

—আমিও তো ট্রেনিং পেয়েছি ওই একই ফৌজ থেকে। ও কী ভাবছিল নিজেকে? সদ‍্য শেখা যুযুৎসুতে ওকে প্রায় নিঃশব্দে কাত করে দিলাম তৎক্ষণাৎ। পাশের টেন্ট থেকে যদিও একজন বেরিয়ে এসেছিল। কিন্তু ও আর বাড়াবাড়ি করেওনি। পিস্তলটা ছিটকে পড়েছিল। সেটা কুড়িয়ে নিতে নিতে দাঁতে দাঁত ঘষে বলেছিল, দেখে নেব। যদিও তাকে পরেরদিন ফৌজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে ব্রিটিশের চর হয়। তারপর কী হয়েছিল জানি না।

চাচার এহেন বীরত্বের গল্প তাকে আজও শাহিদকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ঠিকই। কিন্তু আজ ওর হতাশই লাগছিল যেন। এটাই কি চাচার বলার মতো গল্প?

কিন্তু এরপর মহম্মদ ইলিয়াস যা বললেন, তাতে মুহূর্তেই উৎকর্ণ হয়ে উঠল শাহিদ।

—আসল ঘটনা ঘটল তাঁবুতে ফেরার পর।
—কী?

শুকনো গলায় প্রশ্ন শাহিদের।

—বালিশের তলায় হাতড়ে হিরেটা আছে কি না দেখতে গিয়ে আচমকা মনে হল, হাতে কেউ লোহার গরম শিক ঠেকিয়ে দিয়েছে। এক সেকেন্ডে হাত সরিয়ে নিলাম। তারপর ধীরে ধীরে হিরেটা বের করলাম। তখনও ওটা হাতে ধরা যাচ্ছে না, এত গরম। বালিশেরও একটা পিঠের কিছুটা, অবাক হয়েই দেখলাম, পুড়ে গেছে।

শাহিদ চুপ করে শুনল। সে জানে, আগে কেন বলেনি তার চাচা তাকে এই কথা, তা জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। তার চাচার কি বেঁচে ফেরার কথা ছিল? তার ওপর এমন পরাজয়ের গ্লানি তো ছিলই।

শাহিদের কাছে এখনও কিছুই পরিষ্কার নয়। ইশ, মৌলিনাথকে যদি বলা যেত বিষয়টা! চিঠি লিখবে একটা?

কিন্তু আরেকজনের সন্ধান পাওয়াও জরুরি। না, কোনও প্রতিহিংসা থেকে নয়, এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্যই তাকে লাগবে, যে ওই হিরেটা আসলে ঠিক কী? কারণ সে অনুসন্ধিৎসু। রডরিগেজের করাল গ্রাস থেকে নিজেকে সে বের করে এনেছে। নিশ্চয়ই সে এতকিছু করেছে বৈজ্ঞানিক কৌতূহল থেকেই। তাহলে এতদিনে সে নিশ্চয়ই জেনে গেছে, ওই হিরের আসল সত্যি?

কোথায় আছে সরিৎ?

 

হরি ঘোষ স্ট্রিটের বাড়ির বেসমেন্ট তখন থমথমে, নিশ্চুপ।

একটা বিশাল বড় কাঁচের জারের মধ্যে জেলি তখন খেলা দেখাচ্ছে। কখনও সে হলুদ একটা বেড়াল, কখনও একটা ছোট্ট ফ্লুরোসেন্ট মথ, কখনও বা মানুষের ছায়ামূর্তি। এ যেন তার নিজেরই আপনমনে খেলা। শিশুদের মতো।

একটা অ্যান্টেনা লাগানো টিভির দিকে তখন হাঁ করে চেয়ে সরিৎ দত্ত। দূরদর্শনে নাটকের ক্লাস নিচ্ছেন শম্ভু মিত্র। হাঁ করে সেদিকে চেয়ে থাকতে থাকতে সরিৎ যেন আনমনাই ছিল খানিক।

জেলি হঠাৎ স্থির হয়ে তাকে দেখল। তারপর দুম করে আলটপকা একটা প্রশ্ন করে বসল। প্রশ্ন করল, অর্থাৎ কোনও এক টেলিকাইনেটিক পদ্ধতিতে প্রশ্নটা পৌঁছে দিল।

—দীপক, ইন্দিরা গান্ধি কি মরে গেছেন?’

প্রথমে সরিতের চটকা ভাঙল। তারপর সে একটু গলা খাঁকরে খানিক উষ্মা প্রকাশ করেই বলল, বোকার মতো কথা বলছ কেন? তুমি তো সবই জানো। তোমার মেমরি ফেল করে না তো!

জেলি যেন পাত্তা না দিয়েই বলে চলল, ইন্দিরা গান্ধি, এমার্জেন্সি চলাকালীন, একটা মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। জানো?

সরিতের ভুরু কুঁচকে গেল। সে একটু থমকে বলল, কী?

—বিরোধীদের ঘরে ঘরে স্পাই ঢোকানোর জন্য, তাদের টেলিফোনের সঙ্গে একটা করে রেকর্ডার জুড়ে দিয়েছিলেন। সারা ভারতের রেকর্ডিং তিনি নয়াদিল্লিতে বসে শুনতে পেতেন।

সরিৎ হাসল।

—এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বে তোমার বিশ্বাস আছে না কি?
—ষড়যন্ত্র তত্ত্ব পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তত্ত্ব হে দীপক!

জেলির গলায় কেমন বদমাইশির সুর। সরিৎ হেসে ফেলল আবারও।

—তামাশাটা ভালই শিখেছ!
—মানুষের থেকে যে কতকিছু শেখার! যা হোক, তুমি কী ভাবছিলে? অনিলদা আর লিলিবৌদির কথা?

সরিৎ একবার চমকে তাকিয়েই মাথা নিচু করল।

—সবই তো বোঝো! হ্যাঁ। ওদের কথা আজ বড্ড মনে পড়ছিল। একটু থামে সরিৎ। তারপর বলে, তুমিই বা হঠাৎ এসব টেলিফোন ষড়যন্ত্র নিয়ে পড়লে কেন?

হঠাৎ সরিতের সারা শরীর অনুরণিত করে ঝনঝনিয়ে বেজে উঠল টেলিফোন। ফোনটা বাজছে বৈঠকখানায়। এখানে তার শব্দ আসার কথা নয়। কিন্তু জেলির কল‍্যাণে সে শুনতে পায় সেটা।

সরিৎ একবার জেলির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, আর তো ক-টা দিন! তারপর আমি কি এসব সুবিধে পাব?

কথাটা বলতে বলতেই বেসমেন্ট থেকে বৈঠকখানার দিকে রওনা দিয়েছিল সরিৎ।

হঠাৎ গম্ভীর গলায় পিছু ডাকল জেলি।

—দীপক!

পিছু ফিরল সরিৎ।

—তোমার পাপের শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। প্রায়শ্চিত্ত ইত্যাদি জানবে কেবল কিছু আধ‍্যাত্মিক ভাঁওতাবাজি। কারও ক্ষতি করে কেউ রেহাই পায় না এই ব্রহ্মাণ্ডে।

জেলির বলার ধরনে একরকম দৃপ্ত স্বর ছিল। তাতেই যেন কেঁপে উঠল সরিৎ।

—কেন বলছ এসব?
—বুঝবে পরে। জেলির স্বরে আবার চাতুরি। শুধু একটা গল্প বলি‌। রডরিগেজের একটা ভগ্নীপতি ছিল। বিল। রডরিগেজের চারকাঠি ওপর দিয়ে যেত। ওর বেচারি বোনটাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ে তো করেইনি, উল্টে নিজের ক্ষমতা বোঝাতে স্বয়ং রডরিগেজের বোনের ওপর এতগুলো গুলি চালিয়েছিল, যে ওর বোন একটা অকেজো ক‍্যাকটাসের মতো পঙ্গু হয়ে যায়।

সরিৎ অবাক! একইসঙ্গে বিভ্রান্ত।

—হঠাৎ এসব গল্প কেন?
—কিছুই না। মাথায় রেখো, বিল নামটা বললেই রডরিগেজ তেলেবেগুনে জ্বলে যায়। আর ওর রাগ ওর দুর্বলতা।
—হঠাৎ রডরিগেজের কথা উঠছে কেন?

অধীর কণ্ঠে জানতে চায় সরিৎ।

ফোনটা বেজেই চলেছে ওদিকে।

—ফোনটা ধরো! বলে জেলি।

সম্মোহিতের মতো ওপরে এসে ফোন ধরে সরিৎ। বেসমেন্টের সিঁড়ি ভেঙে সে গোপনে বানিয়েছে লিফট। দেওয়াল কেটে বানিয়েছে অ্যান্টিচেম্বারের দরজা। তা খোলার জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ফিট করেছে। ফলে এখন বৈঠকখানায় আসতে তার সময় লাগে।

ফোনটা ধরতেই সরিৎ আরও একবার বিদ‍্যুৎস্পৃষ্ট হল।

—হাউ আর ইউ, বাস্টার্ড?

রডরিগেজ! কিন্তু আইএসডি কল এলে টেলিফোনের আওয়াজ তো অন‍্যরকম হয়‌!

এর পরে রডরিগেজ যা বলল, তাতে তার আশিরনখ স্তব্ধ হয়ে গেল।

—আমি কলকাতার গ্র‍্যান্ড হোটেল থেকে বলছি। স‍্যামুয়েল আমার সঙ্গেই কলকাতায় এসেছে। তোমার আসল অ্যাড্রেস এখন আমরা জানি। তোমাকে সেখানে স্পটও করা গেছে। স‍্যামুয়েল যাচ্ছে, ওকে ওয়েলকাম কোরো।

সরিতের গলা শুকিয়ে কাঠ।

—একটা কথা মাথায় রেখো, রডরিগেজকে ঠকিয়ে চাঁদে গিয়েও কোনও কুত্তার বাচ্চা পার পাবে না। সেখানে তুমি এই পৃথিবীতে থেকে, নাম ভাঁড়িয়ে পার পাবে ভাবলে!

ফোনটা কট করে কেটে গেল।

 

দুদিন পরে শাহিদ ইলিয়াস আঁতকে উঠল খবরের কাগজের ভেতরের পাতায় একটি খবর দেখে।

হাতিবাগানে বীভৎস খুন! টেলিফোনের রিসিভার দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। মুখ প্রায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। খুন হয়েছে ভিকটিমের বাড়ির মধ্যেই। জানা গেছে, ভিকটিমের নাম সরিৎ দত্ত, পাড়ায় অনেকে দীপক নামে চিনত‌। সন্দেহভাজন এক বিদেশি। কালো চশমা ও অদ্ভুত পোশাকে কয়েকদিন ধরেই সে ওই পাড়ায় যাতায়াত করছিল।

 

[আবার আগামী সংখ্যায়]