সোমনাথ মুখোপাধ্যায়
দীপনারায়ণ স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নকে সর্বতোভাবে রূপ দেওয়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, গ্রামীণ মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই কাজ করা কখনওই সম্ভব হত না। তাঁর আত্মম্ভর আশা একদিন কয়েক লক্ষ, কয়েক কোটি রাস্তার স্কুল গড়ে উঠবে বাংলার নানা প্রান্তে, ভারতের আনাচেকানাচে, এমনকি বিশ্বের নানান জায়গায়। দীপনারায়ণ নায়েক একটা রাস্তা দেখিয়েছেন। এবার সেই পথে পথচলার দায়িত্ব আমাদের
তাঁর নাম দীপনারায়ণ নায়েক। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়ার জবা তিলকামাঝি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে পোশাকি পরিচয়ের গণ্ডি ছাপিয়ে বছর চৌত্রিশের এই তরতাজা প্রাণবান যুবক এখন তাঁর এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন “রাস্তার মাস্টারমশাই” হিসেবে। এমন বিস্ময়কর গরিমার শিরোপা নিয়েই এই বঙ্গসন্তান এখন বিশ্বজয়ের অপেক্ষায়।
আসুন আমরা পরিচয় করি এই মানুষটির সঙ্গে।
জন্মসূত্রে ওষুধের দোকানের এক সামান্য কর্মচারী পরিবারের সন্তান। প্রায় দিন আনি দিন খাই গোছের এক অতি সাধারণ পরিবার। পাঁচ ভাইবোনের সংসারে অনেক অভাব সঙ্গী করে একটু একটু করে বেড়ে ওঠা। অর্থাভাবে বড় দিদিদের মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে দিতে দেখেছেন। একটু নিশ্চিন্ত জীবনের আশায় কলেজের শিক্ষার পাট চুকিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ম্যানেজমেন্ট কোর্স নিয়ে পড়াশোনা করতে। কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতা এক্ষেত্রে বাধা হয়ে ওঠার কারণে মাঝপথেই সরে দাঁড়াতে হয়। একটা চাকরি চাই। ২০১০ সালে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিলেন তিলকামাঝি গ্রামের সরকারি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রথমদিন ক্লাসে গিয়েই বুঝতে পারেন তাঁর কাজটা কঠিন। আর পাঁচজনের মতো নিছক চাকরির নিয়ম মেনে স্কুলে এলাম-গেলাম-মাইনে পেলাম করলে চলবে না। আসলে যে মানুষ নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থাকে তাঁর ভাবনা অন্যান্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবেই। দীপনারায়ণের ক্ষেত্রেও এমনটাই হল। একজন কৃষক যেভাবে বীজ বোনার আগে জমির চরিত্র যাচাই করে নেওয়ার কথা ভাবেন ঠিক কোন্ ফসলের উপযোগী এই মাটি, শিক্ষক দীপনারায়ণ সেভাবেই তাঁর কর্মভূমির মানবজমিনের হালহকিকত পরখ করে নেওয়ার কাজ শুরু করলেন। শুরুর অভিজ্ঞতা যে খুব সুখকর ছিল এমনটা নয়। তিলকামাঝি নিদারুণ দারিদ্র্যক্লিষ্ট আদিবাসী গ্রাম। সেখানে নিয়মমাফিক নাম-কা-ওয়াস্তে স্কুল আছে বটে তবে স্কুলে পঠনপাঠন প্রধান উপলক্ষ নয়। গ্রামের ছেলেমেয়েরা যারা স্কুলে আসছে তাদের সকলেই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। এমনতরো ছাত্রছাত্রীদের দেখলে যেখানে শহর বা শহরতলির স্যার-ম্যামদের চোখ কপালে উঠে যায় সেখানে দীপনারায়ণের চোখের আলো গিয়ে পড়ল তাদের সমস্যাগুলোর দিকে। চির উপেক্ষায় উপেক্ষিত আদিবাসী সমাজের মূল সমস্যাগুলোকে বুঝতে খুব দীর্ঘ গবেষণার প্রয়োজন হয়নি তাঁর। যেখানে অভিভাবকদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছয়নি, অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার যাঁদের নিত্য যাপনসঙ্গী, তাঁরা তাঁদের সন্তানদের পঠনপাঠনে প্রাণিত করবেন কোন্ মন্ত্রণায়? কাঠির ডগায় বারুদ থাকে বলেই না দেশলাইকাঠি আগুন জ্বালাতে পারে! নিজের অদম্য ইচ্ছেশক্তির কাছে কোনও কিছুই যে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, নিজের জীবন থেকে সেই শিক্ষা পেয়েছেন দীপনারায়ণ। তাই কোন্ পথে চললে শিক্ষাদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হবে তাঁর কর্মভূমির মানবসম্পদ তা খুব সহজে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। শুরু হল বন্ধুর উষর জমিতে তাঁর নিভৃত নিরলস পদচারণা।
সাইকেল নিয়ে একটার পর একটা গ্রাম ঘুরে ঘুরে বেড়ানো শুরু করলেন দীপ। উদ্দেশ্য গ্রামের মানুষজনের কাছে বিদ্যালয় নামক সামাজিক প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা। বিদ্যালয় যাপনের অন্তর্লীন তাৎপর্যকে অভিভাবকদের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে পারলে তাঁরাই আগ্রহী হয়ে উঠবেন সন্তানদের পঠনপাঠনের বিষয়ে। একজন যথার্থ শিক্ষককে সমাজের কাছে তিল তিল করে বিশ্বস্ত হয়ে উঠতে হয়। গ্রামের লোকজন এতকাল দেখে এসেছেন— “তাঁদের পাশে থাকার অঢেল প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে বা যারাই এখানে পা রেখেছে তারাই কাজ হাসিল করে ভেগে গেছে। অথচ এই সাইকেল-চড়া বাবুটি তো তাদের মতো নয়! এই মানুষটি যে এক দরদি মনের মানুষ। তাঁর চোখে এক নতুন স্বপ্নের উদ্ভাস। এঁকে বিশ্বাস করা যায়। আর তাছাড়া তাঁদের তো নতুন করে কিছু হারানোর নেই!”
শুরুতে এভাবেই বাজিমাত করলেন দীপনারায়ণ। প্রায় ঘুমিয়ে পড়া গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ঘিরে শুরু হল এক নতুন স্বপ্নের উন্মীলন।
এমন স্বপ্নই দেখেছিলেন মহারাষ্ট্রের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাস্টারমশাই রঞ্জিত সিং মহাদেব ডিশালে। তাঁর ইচ্ছে ছিল একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কিন্তু কোনও বিশেষ কারণে তাঁর সেই মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়নি। আর তাই কলেজের পাট চুকিয়ে কলেজ-প্রশিক্ষক পিতার অণুপ্রেরণায় একজন প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক হিসেবে কর্নাটক রাজ্যের সীমান্তবর্তী মহারাষ্ট্রের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হল এক নতুন লড়াই। আমাদের দেশে সরকার পরিচালিত প্রাথমিক শিক্ষার পরিকাঠামো মোটেই যথাযথভাবে শিক্ষা-উপযোগী নয়। সেখানে যাঁরা পড়ানোর জন্য যান তাঁদের অবস্থা অনেকটাই নিধিরাম সর্দারের মতো। রঞ্জিত খোঁজখবর নিয়ে দেখলেন কর্নাটক রাজ্যের সীমান্তবর্তী হওয়ায় এই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা সকলেই কন্নড় ভাষায় কথা বলে অথচ তাদের পাঠ্যপুস্তকগুলো সবই মারাঠি ভাষায় লেখা। এই দুর্লঙ্ঘ্য ভাষাপ্রাচীর অতিক্রম করে তারা শিক্ষাদরিয়ায় নাও ভাসাবে কী করে? শুরু হল রঞ্জিত সিং মহাদেব ডিশালের নতুন সংগ্রাম। শিক্ষক হিসেবে তাঁর দায় ছিল শিক্ষার্থীদের মনের কাছাকাছি পৌঁছনোর, আর সেই অন্তরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি শুরু করলেন কন্নড় ভাষা শেখা। কাজটা খুব সহজ মোটেই ছিল না, কিন্তু একটু একটু করে বরফ গলতে শুরু করল। কন্নড় ভাষায় মনের কথা বলতে ও লিখতে পারার ফলে অনেক সহজ হয়ে যায় ছাত্রছাত্রীদের বন্ধ মনের দরজার কড়া নেড়ে তাদের জাগিয়ে তোলা। অনাদরে পড়ে থাকা স্কুল আঙিনা আবার শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পদচারণায় গমগম করতে শুরু করল। যে সমস্ত অভিভাবকেরা মেয়েদের পঠনপাঠনের বিষয়ে একদম নিরুৎসাহী হয়ে নাবালিকা বয়সেই বিয়ে দিয়ে দিতেন তাঁরাও সংস্কারের বেড়া ভেঙে বাড়ির মেয়েদের স্কুলে পাঠানো শুরু করলেন।
ভাবছেন তো, এই কাজের বিশেষতা কোথায়? মারাঠি ভাষার মাধ্যমে পাঠ সঞ্চালনার ক্ষেত্রে যে সমস্যা ছিল তাকে দূর করতে QR CODE TEXT BOOK চালু করলেন রঞ্জিত। এরফলে CODE INDEX-এ আঙুল ঠেকাতেই নিজেদের পছন্দের কন্নড় ভাষায় পাঠ্যপুস্তক পাঠের সুযোগ মিলল। এতদিন দেশি তরোয়ালকে বেমানান বিদেশি খাপে ঢোকানোর যে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চলছিল তার আর প্রয়োজনই রইল না। একদা অনাগ্রহী শিক্ষার্থীদেরও নিবিড় পাঠবন্ধনে বেঁধে ফেলা সম্ভব হল রঞ্জিত উদ্ভাবিত প্রযুক্তির দৌলতে। রঞ্জিতের এই অনবদ্য প্রয়াসকে সাদর স্বীকৃতি জানায় মহারাষ্ট্রের শিক্ষাবিভাগ। আর এই অভিনব শিক্ষা উদ্ভাবন তাঁকে ২০২০ সালে এনে দেয় বিশ্বসেরা শিক্ষকের স্বীকৃতি। ভারতের পক্ষে প্রথম।
আবার ফিরে আসি দীপনারায়ণের কথায়। তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল বিদ্যালয়কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের জীবনে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানো। এদেশের আদিবাসী সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জাতীয় জীবনের মূলধারার সঙ্গে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে শিক্ষা যে একটা শক্তিশালী সেতুবন্ধ তা গভীরভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন দীপনারায়ণ। তাই আদিবাসী সমাজের প্রতিবন্ধকতাগুলোকে দূর করতে তাঁর নিরন্তর প্রয়াস জারি রয়েছে।
করোনা অতিমারি পর্ব গোটা পৃথিবীর মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। সংক্রমণের আশঙ্কায় স্কুল, কলেজ সহ অন্যান্য কর্মপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখতে হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পঠনপাঠনের প্রক্রিয়া দারুণ ভাবে ব্যাহত হয়েছে। আদিবাসী অধ্যুষিত তিলকামাঝি গ্রামের গরিষ্ঠ জনগণ নিরক্ষর। ফলে সন্তানদের পঠনপাঠনের বিষয়ে তাঁরা মোটেই সচেতন নন। যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় বর্গের মানুষেরা সংখ্যায় বেশি সেখানে অনলাইনে পঠনপাঠনের বিলাসী ব্যবস্থা অকল্পনীয়। তাহলে উপায়? এখান থেকেই শুরু হল দীপনারায়ণের নতুন লড়াই। একদিকে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে সবাইকে রক্ষা করা, প্রতিষেধক টিকা গ্রহণে সকলকে রাজি করানো, এই বিষয়ে গ্রামসমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বেড়া ভাঙা, অন্যদিকে তাঁর শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন পাঠে ব্যস্ত রাখা যাতে করে এতদিনে তারা যা শিখেছে তা বিস্মৃত না হয়। কীভাবে এটা সম্ভব হবে?
অদম্য দীপনারায়ণ এক অভিনব উপায় উদ্ভাবন করলেন। এতদিনের প্রথানুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসতে হত নতুন নতুন পাঠ নিতে, এবার স্কুল পৌঁছে গেল তাদের বাড়ির দুয়ারে। গ্রামের রাস্তার ধারের বাড়িগুলোর দেওয়ালের কিছু অংশকে কালো রং করে তৈরি করা হল ব্ল্যাকবোর্ড। সেখানেই মকশো করে অক্ষর পরিচিতি, হাতের লেখা, আঁক কষা, ইংরেজি অক্ষর আর শব্দের সাথে পরিচয় লাভ করা, ছবি আঁকা— সব চলতে লাগল একদম স্কুলের মতো করে। পাশাপাশি চলল স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বোধের শিক্ষা, পরিবেশ চর্চা, বাড়িঘর-এলাকা সাফসুতরো রাখার কাজ থেকে শুরু করে হালফিলের টেকসই যাপনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করার প্রয়াস। শুধুই কি গুরুগম্ভীর পাঠের আলোচনা? মোটেই না। দীপনারায়ণের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ছেলেমেয়েরা শিখছে ছড়া, ছড়ার গান, ছন্দোবদ্ধ অঙ্গসঞ্চালন, ব্যায়াম সবকিছু। খোলা আকাশের নিচে, গাছগাছালির ছায়ায়, নিজেদের ঘরলাগোয়া রাস্তা জুড়ে চলেছে এক অবিস্মরণীয় কর্মকাণ্ড যা কেবল নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচিতে আবদ্ধ না থেকে এক যথার্থ আনন্দময় শিক্ষার অবারিত পটভূমি নির্মাণ করেছে যা পরিস্থিতির গুরুত্বের বিচারে কেবল অনবদ্য বা অনন্য নয়, এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্তের উৎকৃষ্টতম উদাহরণ। শিক্ষকের নিজস্ব উপলব্ধি আর জীবনবোধের সঙ্গে নিজের কর্তব্যনিষ্ঠা ও উদ্ভাবনী শক্তির মিশেল ঘটলে শিক্ষা তথা সমাজের কি ফলপ্রসু জাদুকরি রূপান্তর ঘটতে পারে দীপনারায়ণের কর্মকাণ্ড তার বাস্তব উদাহরণ।
দীপনারায়ণের কচিকাঁচা ছাত্রছাত্রীরা আজ সমাজবদলের আশ্চর্য অনুঘটক হয়ে উঠেছে এরই মধ্যে। তাঁর তৈরি ছেলেমেয়েরাই আজ হয়ে উঠেছে খুদে মাস্টারমশাই আর দিদিমণি। বাড়ির নিরক্ষর বাবা, মা, দাদু, ঠাকুমারা এইসব ছেলেপুলেদের কাছ থেকে শিখছেন নানা পাঠ। আজ তিলকামাঝি সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের একদা অক্ষরজ্ঞান পরিচয়হীন মানুষজন সবাই প্রায় সাক্ষর হয়ে উঠেছেন। নিজেরাই নিজেদের যেন নতুন করে আবিষ্কার করেছেন। একটু একটু করে ভাঙছে অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারের বেড়া। শিক্ষার হাত ধরেই সমাজ থেকে দূর হচ্ছে নারীনির্যাতন, নাবালিকা বয়সেই বিবাহ, মদ্যপানের অভ্যাস। আলো ফুটলেই আঁধার দূর হয়ে যায়। শিক্ষা তো সেই আলোরই প্রতিরূপ। এই আলোর রোশনাইয়ে ঝকমক করে উঠবে তিলকামাঝি সহ আরও আরও অনেক একদা পিছিয়ে থাকা গ্রাম আর গ্রামের মানুষজন।
দীপনারায়ণ স্বপ্ন দেখেছিলেন। তবে গালগর্ভ স্বপ্ন দেখেই থেমে থাকেননি। তাকে সর্বতোভাবে রূপ দেওয়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা করেছেন। তিনি নিজেই বলেছেন, গ্রামীণ মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই কাজ করা কখনওই সম্ভব হত না। তাঁর আত্মম্ভর আশা একদিন কয়েক লক্ষ, কয়েক কোটি রাস্তার স্কুল গড়ে উঠবে বাংলার নানা প্রান্তে, ভারতের আনাচেকানাচে, এমনকি বিশ্বের নানান জায়গায়। দীপনারায়ণ নায়েক একটা রাস্তা দেখিয়েছেন। এবার সেই পথে পথচলার দায়িত্ব আমাদের।
আগামী পাঁচ নভেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দানের সভা। সেই সভায় ঘোষিত হবে সেরার সেরা শিক্ষকের নাম। আসুন আমরা সবাই দীপনারায়ণের সাফল্য কামনা করি।