শ্রীরূপা বন্দ্যোপাধ্যায়
চরম সন্ত্রাসের পরিবেশ উপেক্ষা করে সন্দেশখালির অত্যাচারিত খেটে খাওয়া মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা যেভাবে গণপ্রতিবাদের ঢেউ তুলেছেন তাকে অজস্র অভিনন্দন। এই মানুষগুলির পাশে সর্বশক্তি নিয়ে দাঁড়ানো এখন দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে সময়ের আহ্বান। কিন্তু একটি বিষয়ে প্রতিবাদীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। তাঁরা যদি মনে করেন শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে হটিয়ে তার জায়গায় অন্য কোনও রাজনৈতিক দলকে বসালেই এই জঘন্য অত্যাচার, এই অন্যায় দাপট বন্ধ করা যাবে, তাহলে তা হবে ভয়ঙ্কর একটি ভুল। সাম্প্রতিক ঘটনাটিতেও আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিস্থিতিকে ভোটের স্বার্থে কাজে লাগাতে বিজেপি কীভাবে সেখানে সাম্প্রদায়িক তাস খেলার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে
খবরের কাগজের প্রথম পাতায় এখন সুন্দরবন সংলগ্ন প্রত্যন্ত দ্বীপাঞ্চল সন্দেশখালি। গোটা এলাকা যাদের হাতের মুঠোয়, তৃণমূল কংগ্রেসের সেইসব দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার আর শিবু হাজরাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষের তীব্র ক্ষোভ, যাদের অধিকাংশ মহিলা।
ঘটনার সূত্রপাত জানুয়ারি মাসে। রেশন দুর্নীতির তদন্তের সূত্রে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গত ৫ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় বাহিনিকে সঙ্গে নিয়ে হানা দিয়েছিল ইডি। কিন্তু শাহজাহানের অনুগত বাহিনির তাড়া খেয়ে পালিয়ে বাঁচতে হয় ইডির আধিকারিক-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনিকে। পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে হাসনাবাদের তৎকালীন সিপিআইএম বিধায়ক মন্ত্রী গৌতম দেবের স্নেহধন্য ছিল এই শেখ শাহজাহান। এখন তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তার খাতির। সিপিএম আমলে এই শেখ শাহজাহান ছিল তাদের কুখ্যাত অ্যাকশন স্কোয়াডের সক্রিয় কর্মী। বোধহয় উপযুক্ত সম্মান দিতেই এহেন ক্ষমতাশালী শেখ শাহজাহানকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মৎস্য ও প্রাণীসম্পদের কর্মাধ্যক্ষের পদে বসিয়েছে বর্তমান শাসকদল! ফলে সন্দেশখালি ও সংলগ্ন ভেড়ি অঞ্চলগুলিতে তার একচ্ছত্র দাপট। তার ঘোষিত সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে ১৭টি গাড়ি, আড়াই কোটি টাকার গয়না, ৪৩ বিঘা জমি, ব্যাঙ্কে প্রায় ২ কোটি টাকা। বোঝা কঠিন নয়, এর বাইরেও তার হাতে রয়েছে আরও বিপুল পরিমাণ সম্পদ। এলাকার কয়েকশো অনুগত যুবককে নিয়ে রয়েছে তার বাইক-বাহিনি। এদের কাজে লাগিয়েই এলাকায় নিজের দাপট জারি রেখেছে শেখ শাহজাহান।
যাই হোক, সেদিন ইডি বাহিনি পিছু হটে যাওয়ার পর পরই গোপন আস্তানায় চলে যায় শেখ শাহজাহান। এই প্রতিবেদন তৈরি হওয়া পর্যন্ত সে গ্রেফতার হয়নি, যদিও এলাকার মানুষের বক্তব্য, তার সমস্ত গতিবিধি পুলিশের জানা। এদিকে শাহজাহান এলাকা থেকে সরে যেতেই একটু একটু করে ফুটে বেরোতে শুরু করে তার ও তার স্যাঙাত উত্তম সর্দার এবং শিবপ্রসাদ ওরফে শিবু হাজরার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের চেপে রাখা ক্ষোভ। শেখ শাহজাহানদের উত্থানে আড়ালে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন এলাকায় দলের যেসব পুরনো নেতারা, তাঁরাও ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন।
৩১ জানুয়ারি প্রথম পথে নামেন সন্দেশখালির মানুষ। তাঁরা ব্লক অফিস ও ব্লকের ভূমিদপ্তরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান, ডেপুটেশন জমা দেন। জমিতে নোনা জল ঢোকানোর দুটি স্লুইস গেট বন্ধ করে দেন। গ্রামবাসীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ক্রমাগত আরও বেশি করে প্রকাশ্যে আসতে থাকে। ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রামবাসীরা মিছিল করেন। সেদিন এলাকায় তৃণমূলেরও একটা মিছিল বেরিয়েছিল। গ্রামবাসীরা সেই মিছিলের লোকজনকে লাঠিসোঁটা, বাঁশ ইত্যাদি নিয়ে তাড়া করেন। দলীয় কর্মীরা কার্যত পালিয়ে বাঁচেন। পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি কয়েক হাজার গ্রামবাসী, বিশেষ করে মহিলারা লাঠি, ঝাঁটা, কাটারি, যে যা পারেন হাতে নিয়ে সন্দেশখালি থানা ঘেরাও করেন। রাস্তায় বসে পড়ে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। দাবি ওঠে অবিলম্বে শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে হবে। শোনা যায় সেদিন মহিলারা শিবু ও উত্তমের উপরেও চড়াও হয়েছিলেন। পরদিন বিক্ষোভ ছড়ায় পার্শ্ববর্তী দ্বীপ জেলিয়াখালিতেও। শিবু হাজরার বাড়ি সেখানেই। তার পোল্ট্রি ফার্মে আগুন লাগিয়ে দেন মহিলারা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের নানা ছবি, ভিডিও। এ যেন এক গণঅভ্যুত্থান। সাড়া পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। শাসকদলকে বাগে পেয়ে বিজেপি-সিপিএমের মতো বিরোধী দলের নেতারা গরম গরম বাইট দিতে শুরু করেন। এলাকায় পৌঁছবার চেষ্টা করে প্রচারের আলোয় আসার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। এমনকি এই সুযোগে সাম্প্রদায়িক তাস খেলারও অপচেষ্টা চালান বিজেপি নেতারা।
কিন্তু প্রশ্ন হল, সন্দেশখালিতে কেন হঠাৎ এভাবে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল বিক্ষোভের আগুন? এই আগুন আসলে বেশ কয়েক বছর ধরে ভিতরে ভিতরে ধিকি ধিকি করে জ্বলছিলই। সন্দেশখালি ও সংলগ্ন দ্বীপাঞ্চলগুলি এককালে ছিল কৃষিপ্রধান এলাকা। মাছের ব্যবসা, বিশেষত চিংড়ির ব্যবসার রমরমা হওয়াতে এখন সেইসব চাষের জমি অনেকটাই মাছের ভেড়িতে পরিণত হয়েছে। এলাকায় মূলত গরিব মানুষের বাস। বর্তমানে গ্রামগুলিতে পুরুষের সংখ্যা খুবই কম। তাঁরা অভিবাসী শ্রমিক হিসাবে এখন ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। গোটা এলাকায় রাজনৈতিক দল হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া আর কারও অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। সিপিএমের অ্যাকশন স্কোয়াডের সক্রিয় সদস্য শেখ শাহজাহান ২০১৩-তে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর ধীরে ধীরে অন্যান্য নেতাদের হটিয়ে এলাকার ওপর একচ্ছত্র দাপট প্রতিষ্ঠা করে। কয়েকজন শাগরেদ, বিশেষ করে উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরাকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় সে গুণ্ডারাজ কায়েম করে। এই উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরা আবার এককালে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ ছিল। শেখ শাহজাহান ও তার স্যাঙাতরা গত কয়েক বছর ধরে এলাকার মানুষের ওপর যথেচ্ছাচার চালিয়ে আসছে। লাভজনক ভেড়ির ব্যবসা আরও ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলতে গ্রামের মানুষের বিপুল পরিমাণ চাষের জমি লিজে নেওয়ার নাম করে কার্যত এরা বিনামূল্যে দখল করে রেখেছে। বারবার বলা সত্ত্বেও গ্রামের মানুষ তাদের পাওনা লিজের টাকা পাননি। এমনকি জমির মালিকের অনুমতির তোয়াক্কা না করে তাদের চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে অবাধে সেগুলিকে ভেড়িতে পরিণত করেছে এই নেতারা। ১০০ দিনের কাজ নিয়েও এরা চালিয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি। গ্রামবাসীদের নামে ১০০ দিনের কাজের টাকা আদায় করে সেই সব টাকা শাহজাহান ও তার বাহিনি ভোগ করত। মহিলারা আপত্তি করলে তাদের বলা হত— সরকার তো মাসে মাসে ৫০০ টাকা করে দিচ্ছে, ওই নিয়েই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
এর বিরুদ্ধে বারবার বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে মানুষ। কিন্তু শাহজাহানের সশস্ত্র বাইক বাহিনির দাপটে সেই প্রতিবাদ ঘরের কোণে মুখ লুকোতে বাধ্য হয়েছে। প্রতিবাদীদের অনেককে এলাকা ছেড়ে পালাতে পর্যন্ত হয়েছে। শাসকদলের সেবাদাস হিসেবে পুলিশ তার চিরকালীন ভূমিকা অক্ষুণ্ণ রেখে গেছে। শাসকদলের অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে এফআইআর পর্যন্ত নিতে তারা অস্বীকার করেছে। সুযোগ পেয়ে ক্রমেই বাড়বাড়ন্ত হয়েছে শেখ শাহজাহানদের। হুমকি, ধমকি, বাইক বাহিনি দিয়ে তুলে নিয়ে এসে রাতে অফিস ঘরে বসিয়ে রাখা, জোর করে কাজ করিয়ে নেওয়া, নোনা জল ঢুকিয়ে চাষের জমি নষ্ট করার পাশাপাশি মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনও চলেছে বলে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসছে। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস সন্দেশখালিতে এই দুষ্কৃতিরাজ রোখার কোনও চেষ্টা করেনি। উল্টে ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে শেখ শাহজাহান ও তার শাগরেদদের। কয়েক বছর আগে শিবু হাজরাকে সন্দেশখালি-২ ব্লকের সভাপতিও করা হয়েছে।
ইডির হামলায় ঝামেলায় পড়ে যাওয়া শেখ শাহজাহান আত্মগোপন করতেই তাই সন্দেশখালির ক্ষিপ্ত ত্যক্তবিরক্ত সর্বস্ব লুট হয়ে যাওয়া মানুষের বুকে জমে থাকা বিপুল ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে। শাসক দল ও পুলিশের প্রশ্রয়ে পরিপুষ্ট এইসব দুষ্কৃতিদের কোনও বিচার ও শাস্তি আদৌ হবে কি না, যদি না হয় তাহলে গ্রামে ফিরে অত্যাচারের মাত্রা তারা আরও কত গুণ বাড়িয়ে তুলবে— এইসব আশঙ্কার তোয়াক্কা না করে পথে নেমেছেন হাজার হাজার গ্রামবাসী। প্রতিদিন নির্যাতিত রিক্ত হতে থাকা মহিলারা সমস্ত ভয় জয় করে শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতে দিনের পর দিন বিক্ষোভ দেখিয়ে যাচ্ছেন।
এমনই হয়। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে এ-পথে হাঁটা ছাড়া মানুষের আর কোনও উপায় থাকে না। এই ধরনের ঘটনা এ রাজ্যে তো নতুন নয়, এর আগেও বারবার সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে এমনভাবেই বিক্ষোভের আগুন জ্বালিয়েছেন নির্যাতিত সর্বস্বহারা মানুষ। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে জঙ্গলমহলে সিপিএম নেতা অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডেদের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভে ফেটে পড়েছে মানুষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠ, উত্তর চব্বিশ পরগনার সুটিয়াতে সিপিএম, তৃণমূল উভয় আমলেই একই ধরনের অত্যাচার দেখেছে মানুষ। ফেটে পড়েছে গণবিক্ষোভ। পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারে বসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সে প্রতিশ্রুতি কবেই হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। আগের সরকারে যারা ছিল সিপিএমের ‘সম্পদ’, আজ তারা অনেকেই তৃণমূলের মহা মূল্যবান রত্ন। শুধু জামার রং পাল্টে তারাই আজ কোথাও মন্ত্রী, কোথাও জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত সমিতির মাথা। এই সন্দেশখালি এবং তার আশেপাশে ভাঙড় বা ক্যানিং এলাকায় শাসক দলের নেতার দাপট কিংবা সেই সব নেতাদের দখলে থাকা একরের পরে একর চাষের জমি, ভেড়ি, বিরাট বিরাট অট্টালিকা কোনও কিছুরই কি পরিবর্তন হয়েছে, শুধুমাত্র শাসকদলের নাম পরিবর্তন ছাড়া?
ভোট-রাজনীতি, ক্ষমতার রাজনীতির দস্তুরই এমন। ১৯৭৭-এ বামফ্রন্ট সরকার কায়েম হওয়ার আগে রাজ্যের এলাকায় এলাকায় যেসব কংগ্রেসি মস্তানরা দাপিয়ে বেড়াত, কয়েক বছরের মধ্যেই শিবির বদল করে তাদের অধিকাংশই কীভাবে সিপিএমের অনুগত হয়ে গিয়েছিল, সে-কথা নিশ্চয়ই রাজ্যের মানুষের মনে আছে। শাসক বদলের গন্ধ পেলেই রংবদল, দলবদলের এই নোংরামি এখন আরও দক্ষতার সঙ্গে করতে শিখে গেছে ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক কেরিয়ার-সন্ধানীরা। যে বিজেপির নেতারা আজ সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এত বড় বড় কথা বলছেন, সারদা নারদায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের রাতারাতি নিজেদের দলের সম্পদে পরিণত করতে তাদের মতো দক্ষতা তো বোধহয় আর কেউই দেখাতে পারেনি! এ ব্যাপারে সামান্যতম চক্ষুলজ্জার পরোয়া করতেও রাজি নয় বিজেপি।
চরম সন্ত্রাসের পরিবেশ উপেক্ষা করে সন্দেশখালির অত্যাচারিত খেটে খাওয়া মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা যেভাবে গণপ্রতিবাদের ঢেউ তুলেছেন তাকে অজস্র অভিনন্দন। এই মানুষগুলির পাশে সর্বশক্তি নিয়ে দাঁড়ানো এখন দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে সময়ের আহ্বান। কিন্তু একটি বিষয়ে প্রতিবাদীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। তাঁরা যদি মনে করেন শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে হটিয়ে তার জায়গায় অন্য কোনও রাজনৈতিক দলকে বসালেই এই জঘন্য অত্যাচার, দলের প্রশ্রয়ে নেতাদের এই অন্যায় দাপট বন্ধ করা যাবে, তাহলে তা হবে ভয়ঙ্কর একটি ভুল। সাম্প্রতিক ঘটনাটিতেও আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিস্থিতিকে ভোটের স্বার্থে কাজে লাগাতে বিজেপি কীভাবে সেখানে সাম্প্রদায়িক তাস খেলার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যদিও এলাকার মানুষ এখনও পর্যন্ত সেই নোংরা খেলার শিকার বনতে দেননি নিজেদের। ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
তাঁদের এই লড়াইয়ে জনসাধারণের স্বার্থবাহী সঠিক রাজনীতির প্রতিষ্ঠা ঘটাতে হবে। তা না হলে স্বতঃস্ফূর্ত এই গণবিক্ষোভ আবারও হারিয়ে যাবে ভোট-রাজনীতির অন্ধগলিতে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই সন্দেশখালিতেও গড়ে তুলতে হবে নাগরিক গণকমিটি। কোনও রাজনৈতিক দলের নামকরা নেতারা নয়, এই গণকমিটির নেতৃত্ব দেবেন এলাকা থেকে উঠে আসা প্রতিবাদী মানুষের সাচ্চা প্রতিনিধিরা। শাসক তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের দাপট রুখতে হলে, এমনকি ভোটেও সরকার বদলের কথা ভাবতে হলে আজ প্রয়োজন জনস্বার্থকে সামনে রেখে তারই ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ গণকমিটি গড়ে তুলে সংগঠিত আন্দোলন। তবেই জয়ী হতে পারবে মানুষের ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত শুভশক্তি। তা না হলে আবারও এইসব শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার কিংবা শিবু হাজরারা সুবিধামতো অন্য একটি শাসকদলে নাম লিখিয়ে একই কাজ চালিয়ে যাবে। তাদেরকেই দলের সম্পদ বানিয়ে সাধারণ মানুষের উপর লুটপাট চালাবে এই তৃণমূল কংগ্রেসের মতোই অন্য কোনও নীতিহীন ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দল। এ জিনিস চলতে দেওয়া যায় কি?
*মতামত ব্যক্তিগত