Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

চারশো পারের গপ্পো এবং ভবিষ্যৎ-কল্পের অঙ্ক

মনসুর মণ্ডল

 


ভারতে ধর্মসম্প্রদায়গুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধি সম্পর্কে বিরোধী শিবিরের বাস্তব তথ্যসমৃদ্ধ ও যুক্তিসম্মত বিচার-বিশ্লেষণ আছে ঠিকই, আবার তার সঙ্গে যুঝবার জন্য ভিন্নতর অস্ত্রও মজুত আছে বিভেদকামীদের হাতে— যেখানে তাদের অসঙ্গতি-দুর্বলতা, তা চাপা দেওয়ার জন্য আগেভাগেই মুসলিম অনুপ্রবেশের ধুয়ো তুলে রেখেছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ভাষণে সমধিক কুশলতা দেখিয়েছেন। এসব করে নির্বাচনে কতটুকু ফায়দা তোলা সম্ভব, এই প্রশ্নের চেয়েও খুবই স্পর্শকাতর বিষয় হল, মুসলিম জনবিস্ফোরণের কল্পকথাকে বাস্তব বলে দাঁড় করানোর সর্বাত্মক প্রয়াস দীর্ঘমেয়াদে দেশে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ককে আড়াআড়ি বিভাজনের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে

 

সম্বৎসর অথবা সংসদীয় নির্বাচনে মুসলিমবিদ্বেষ প্রচার, এই হল বিজেপি-সহ আরএসএস-এর ছাতার নিচে থাকা সঙ্ঘ পরিবারের সংগঠনগুলোর চিরাচরিত কর্মকাণ্ড। এগুলো তাদের হিন্দুত্বের রাজনীতি অনুশীলনের প্রধান দিকগুলোর মধ্যে একটি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হল না। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে মুসলিমবিরোধী বাতাবরণ সৃষ্টি করা— এ কিন্তু আগের নির্বাচনগুলোর সময় যেমনটি করা হয়েছিল, ঠিক সেরকম নয়, এবারের ঘটনাগুলি আগেকার বিভাজন-মেরুকরণের সমস্ত প্রচেষ্টাকে ছাড়িয়ে গেছে। এবার আর মাপা পদক্ষেপ নয়, স্থানিক প্রচেষ্টা হিসাবে নয়, এবার খোলাখুলিভাবে এবং দেশের গোটা মুসলমান সম্প্রদায়কে নিশানা করে তারা একটানা ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রচার করে চলেছে। এবং এর মধ্যে মোটা দাগে এমন কিছু প্রসঙ্গ উত্থাপন করছে, সেসব শুধুমাত্র বিদ্বেষ-বিভাজনের বিষয় নয়, এমনকি সেসব ভারতের সাংবিধানিক নীতি ও প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র-শাসনপ্রণালীকে নাকচ করে দেয়। এসব থেকে বোঝা যায়, বিজেপি এখন সরাসরি ও কোনও রাখঢাক না করেই বহুবিস্তৃত ধর্মীয় মেরুকরণের উদ্দেশ্যে ধাবিত।

এবারের বক্তব্যগুলোর একটি বিশেষ দিক হল, তাতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গলা মিলিয়েছেন তাই নয়, বরং তিনিই বিদ্বেষ ছড়ানোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ফলে প্রভাবের দিক থেকে বলা হোক অথবা ঘৃণা-বিদ্বেষের প্রচার ও প্রসারের দিক থেকে, সবই বেশ ওজনদার হয়ে উঠেছে। নির্বাচনের তৃতীয় দফার পর রাজস্থানের বাঁসওয়ারার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বললেন, কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে অ-মুসলিম দেশবাসীর সম্পত্তি, এমনকি হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র অর্থাৎ সোনার গহনা পর্যন্ত কেড়ে নিয়ে সেইসব লোকেদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে, যাদের এক-গাদা বাচ্চা আছে, যারা অনুপ্রবেশকারী। এদের ধর্মীয় পরিচয়ও জানালেন, বললেন, এরা মুসলমান।

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে দেশে সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি গঙ্গাবক্ষে লঞ্চে চড়ে সাজানো ইন্টারভিউয়ে মুসলমান সম্পর্কে তাঁর ভাষণ প্রসঙ্গে ভিন্ন কথা বললেন— তিনি নাকি হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে দেশের গরিব পরিবারগুলোর একগাদা বাচ্চাকাচ্চাদের কথা বলতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি দেশের মানুষের সম্পত্তি বেহাত হওয়া, মঙ্গলসূত্র ছিনতাই হয়ে যাওয়ার মতো আলটপকা কথাবার্তার ভ্রান্তি ঘোচালেন এই বলে যে, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এসসি, এসটি, ওবিসিদের সুযোগগুলো কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের দিয়ে দেবে। সেইসঙ্গে এও বলতে ভোলেননি যে, তিনি যতদিন আছেন, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ বা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া বরদাস্ত করবেন না।

মিথকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনও যুক্তি-তথ্যের প্রয়োজন হয় না। মিথ দীর্ঘদিন ধরে জনশ্রুতির পথ ধরে গড়ে ওঠে এবং অজ্ঞতা ও গোঁড়ামির সঙ্গে হাতধরাধরি করে বহুদূর হেঁটে চলে। মুসলিমরা একাধিক বিবাহ করে, মুসলিম মেয়েদের গর্ভ খুবই উর্বর, তারা অধিক বাচ্চা পয়দা করে— এদেশে দীর্ঘকাল ধরে আরোপিত সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু দ্বন্দ্ব ও ‘অপর’ ভাবনার পরিণামে এই কল্পকথা মিথে পরিণত হয়েছে। অধুনিকতার ছোঁয়ায় মিথের ইতিহাসে ঠাঁই হয়; কিন্তু একুশ শতকে পৌঁছেও মুসলিমদের নিয়ে এইসব অলীক ধারণা হিন্দুত্বের বিভেদকামিতার সোহাগে ‘যাই-যাই’ করেও যায় না। মিথের অঙ্গে মিথ্যের জেল্লা চড়বে, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই, যখন শুরু থেকেই এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকেছে। ফলে এ নিয়ে একাধিক এপিসোড প্রদর্শিত হয়েছে রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে। দেশে ধারাবাহিকভাবে অত্যধিক হারে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে বিজেপি এবং তার চেয়ে অধিক সঙ্ঘ পরিবারভুক্ত একাধিক সংগঠন ইতিপূর্বে মাঝেমাঝেই শোরগোল তুলেছিল। শোরগোল তোলা হত অধিক সন্তানের জন্ম দেওয়া ও অনুপ্রবেশের ফলে দেশের সমাজ-অর্থনীতিতে মুসলিম জনসংখ্যাবৃদ্ধিজনিত চাপের বিপদের প্রাসঙ্গিকতায়। তাদের উত্থাপিত এই ‘সমস্যাকে’ পরবর্তীতে অদূর ভবিষ্যতে ভারতে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার আশঙ্কার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল— যেমন হরিদ্বার ধর্মসংসদে একদল সাধুদের দিয়ে বলানো হয়েছিল, দেশে যেভাবে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ২০২৯ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন মুসলিম হওয়া অসম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর বিষয়টিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক অবয়ব দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক পরামর্শদাতা পরিষদের (ইএসি-পিএম) রিপোর্ট সামনে এনে। ইএসি-পিএম তার রিপোর্ট ‘শেয়ার অফ রিলিজিয়াস মাইনরিটিজ: এ ক্রস কান্ট্রি অ্যানালিসিস’-এ জানাচ্ছে, দেশে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে মুসলিমদের সংখ্যা সবচেয়ে বেড়ে উঠেছে, পক্ষান্তরে হিন্দুদের সংখ্যা কমে গেছে। রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সময়কালে ভারতে হিন্দু জনসংখ্যার আনুপাতিক হার ৮৪.৬৮ শতাংশ থেকে কমে ৭৮.৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, পক্ষান্তরে মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখিত সময়কালে ৯.৮৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪.০৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই তথ্যের সঙ্গত পেয়ে বিজেপি-প্রভাবিত সংবাদমাধ্যম, বিজেপির আইটি সেল মায় ভক্তকুল লম্ফঝম্ফ শুরু করে দিয়েছে।

হিন্দুদের সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার কল্পকথা রচনার উপযুক্ত জবাব ইতিপূর্বে একাধিক জনসংখ্যা বিশারদের তথ্য-ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে লেখা হয়ে আছে। এখানে মনে হয় একটি পরিসংখ্যান উল্লেখ করলেই যথেষ্ট হবে— প্রজনন হার (Total Fertility Rate—TFR)-এর দিক থেকে যদি দেখি, এনএফএইচএস (ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে) দেখাচ্ছে, ১৯৯২-২০১৫ সময়কালে হিন্দু ও মুসলমানে টিএফআর-এর ব্যবধান ১.১ থেকে ০.৫-এ নেমে গিয়েছিল। বর্তমানে (এনএফএইচএস-৪ থেকে এনএফএইচএস-৫) ব্যবধান আরও কমে দাঁড়িয়েছে ০.৩। এরকম বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে ‘ন্যাশনাল কমিটি টু রিভিউ দ্য ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার প্রোগ্রাম’-এর প্রাক্তন চেয়ারপার্সন দেবেন্দ্র কোঠারি ২০২৩-এর প্রথমদিকে বলেছেন, দেশে হিন্দু জনসংখ্যার আনুপাতিক হার ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী ৭৯.৮ শতাংশ থেকে পরবর্তী জনগণনাকালে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৮০.৩ শতাংশে দাঁড়াবে। কোভিডের জন্য ২০২১-এর জনগণনা স্থগিত ছিল এবং কোনও অজ্ঞাত কারণে তা এখনও করা হয়নি।

ভারতে ধর্মসম্প্রদায়গুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধি সম্পর্কে বিরোধী শিবিরের বাস্তব তথ্যসমৃদ্ধ ও যুক্তিসম্মত বিচার-বিশ্লেষণ আছে ঠিকই, আবার তার সঙ্গে যুঝবার জন্য ভিন্নতর অস্ত্রও মজুত আছে বিভেদকামীদের হাতে— যেখানে তাদের অসঙ্গতি-দুর্বলতা, তা চাপা দেওয়ার জন্য আগেভাগেই মুসলিম অনুপ্রবেশের ধুয়ো তুলে রেখেছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ভাষণে সমধিক কুশলতা দেখিয়েছেন। এসব করে নির্বাচনে কতটুকু ফায়দা তোলা সম্ভব, এই প্রশ্নের চেয়েও খুবই স্পর্শকাতর বিষয় হল, মুসলিম জনবিস্ফোরণের কল্পকথাকে বাস্তব বলে দাঁড় করানোর সর্বাত্মক প্রয়াস দীর্ঘমেয়াদে দেশে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ককে আড়াআড়ি বিভাজনের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

 

পড়ুন, ইলেকশন এক্সপ্রেস ২০২৪

 

এসসি, এসটি, ওবিসিদের সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের দিয়ে দেওয়ার অভিযোগে কংগ্রেসকে জড়ানোর বিষয়টি যদি খতিয়ে দেখি, দেখব, তফসিলি জাতি, জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি ও সংখ্যালঘুদের অধিকার ও সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচির জন্য কংগ্রেসের আগে-পরের যেসব পদক্ষেপ ও বক্তব্য রয়েছে, সেখান থেকে সংখ্যালঘু বিধায় মুসলমান প্রাসঙ্গিকতাকে চুরি করে বিভাজনের রাজনীতির রং মাখানো হয়েছে। তাকে একঘেয়ে মুসলিম তোষণের দোষারোপের গাড্ডায় ফেলা হয়েছে। এর চেয়েও গুরুতর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি সংরক্ষণের বিষয়ে সংখ্যালঘু প্রশ্নে মুসলিম প্রাসঙ্গিকতা টেনে এনে তাতে ধর্মীয় ভিত্তিতে সংরক্ষণের অবান্তর দোষারোপ করেছেন। আদতে তিনি সংখ্যালঘুবর্গের সংরক্ষণকে ধর্মীয় ভিত্তিতে সংরক্ষণ বলে বোঝাতে চেয়েছেন। এভাবে তফসিলি হিন্দু ও আদিবাসীদের মধ্যে নিজেদের সংরক্ষণ সম্পর্কে আশঙ্কা তৈরি করে তাদের মধ্যে মুসলিমদের প্রাপ্ত ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে বিরোধী জনমত ও মুসলিমবিদ্বেষ তৈরি করতে চাওয়া হচ্ছে। এই অপপ্রয়াস পরিণামে কী ভয়ানক সম্প্রদায়গত বৈরিতার জমি তৈরি করতে পারে, ১৯৮৫-৮৬ সালের গুজরাত ও সাম্প্রতিক মণিপুর তার সাক্ষ্য বহন করছে।

গুজরাতে ১৯৮৫ সালে ফেব্রুয়ারিতে সংরক্ষণকে কেন্দ্র করে দলিত ও মুসলমান-বিরোধী দাঙ্গা শুরু করে হিন্দুত্ব বাহিনি, যা শেষ অবধি সাম্প্রদায়িক চেহারা নেয়— মুসলিমদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। ওই বছর মার্চে নির্বাচনে রাজ্য সরকারে ক্ষমতায় এসে মাধব সিং সোলাঙ্কি সরকার সরকারি চাকরিতে তথাকথিত নিম্নস্তরের জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৮ শতাংশ করার ঘোষণা করলে আগুনে ঘৃতাহুতির মতো দাঙ্গা ভয়ানক চেহারা নেয়। ওই বছরই জুলাইয়ে সোলাঙ্কি সরকারের পতন হয়েছিল। কিন্তু দাঙ্গার আগুন নিভতে সময় লেগেছিল ১৯৮৬-র অক্টোবর পর্যন্ত। দাঙ্গায় ২৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছিল, কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিল।

মণিপুর গত বছর কয়েকমাস ধরে জাতি-হিংসার আগুনে পুড়ে খাক হয়েছিল। সেখানে ঘৃণার আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে। সেখানে তফসিলি জাতি হিসেবে স্বীকৃত মেইতেইদের, যারা মূলত হিন্দু, তফসিলি জনজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি ঘিরে তফসিলি জনজাতি কুকি-জোমিদের, যারা সকলেই সংখ্যালঘু খ্রিস্টান, বিরোধিতার পরিবেশে জাতি-হিংসার আগুন জ্বলে উঠেছিল। শুরু থেকে চরম পরিণাম পর্যন্ত পুরো পরিস্থিতির পিছনে ছিল আরএসএস-বিজেপির সক্রিয় মদত।

গুজরাত ও মণিপুর— দুটি ক্ষেত্রেই গভীরে তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, বিজেপি-সহ পুরো সঙ্ঘ পরিবার পশ্চাৎপদ জাত, জাতি, পিছড়েবর্গের আর্থ-সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে সংরক্ষণ নীতির বিরোধী। কিন্তু বিষয়টি সংবিধানিক নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সব ধরনের সম্প্রদায়ের ব্যাপক মানুষের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। সঙ্ঘ পরিবার তাদের ভাবনার পক্ষে প্রতিকূল এই অবস্থাকে মোকাবিলা করতে চায় আগে থেকে তৈরি মুসলমান তথা ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্পর্কে বিভেদ-বিদ্বেষ-বঞ্চনার রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা দিয়ে।

‘এবার চারশো পার’ নিয়ে বিজেপি বড়ই ধন্দে আছে। ফলে এতদিনে তারা দেশে যতদূর মুসলমান-বিরোধী আবহ সৃষ্টি করতে পেরেছে, এখন নির্বাচনে তার ষোলো আনা উশুল করতে বদ্ধপরিকর। তাদের বাগাড়ম্বরের উল্টো চারশোতে তাদের হার হলেও আজকের এই প্রচেষ্টা বিফলে যাওয়ার নয়— এইসব মিথ, মিথ্যা, আশঙ্কাকে যদি তাদের প্রভাবিত জনমনে বদ্ধমূল করতে পারে, তা ছাইচাপা আগুনের মতোই হয়ে উঠবে। একদিন চরম রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ভস্মে ঘি ঢালার মতো তাতে বিস্ফোরণ ঘটতেই পারে। সুতরাং তাদের আজকের অপপ্রয়াস ভবিষ্যৎ-কল্পের ব্যাপারও বটে।


*মতামত ব্যক্তিগত