প্রতিভা সরকার
প্রশ্নের পর প্রশ্ন সমস্ত সত্তাকে টলিয়ে দিচ্ছে। চোদ্দই আগস্ট মিছিল সংগঠনের সময়ই ডাক ছিল কলেজ স্ট্রিট, যাদবপুর বাসস্ট্যান্ড ও অ্যাকাডেমির সামনের চত্বর। তখন থেকেই বিভিন্ন হোয়াগ্রুপে চেতাবনি ভেসে আসছে কালো পোশাক পরবেন না, সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেবেন না। যদিও স্বতঃস্ফূর্ত মানুষের ঢল সেসবের তোয়াক্কা করেনি। কিন্তু সেদিন না হোক তার পরের দিন শহরের সমস্ত মিছিলের অভিমুখ কেন হল না নবান্ন, লালবাজার বা আরজিকরের দিকে, বোকা মাথায় সেসব ঢোকে না। পাড়ায়, মোড়ে, অনেক আশা নিয়ে যাঁরা রাত জেগেছিলেন, তাঁদের বিরাট ঢেউ কেন একসঙ্গে আছড়ে পড়ল না প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলোর সামনে? জাস্টিস চাই শুধু বললেই হল? কার কাছ থেকে চাইছি, জাস্টিস এই অবস্থায় কে দেওয়ার অধিকারী, সেসব পরিষ্কার করে বলার দায় নেই? আর এখন তো দেখছি লোকজন আলাদা আলাদা মিছিলেই বেশি আগ্রহী। অথচ অনেক মানুষের ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল একসঙ্গে মিছিল করবার। তাঁদের সে ইচ্ছা ফলবতী হতে পারল না কেন?
সামাজিক মাধ্যম বা আন্তর্জাল পত্রপত্রিকায় আর রাজনৈতিক কথাবার্তা লিখব না ভেবেছিলাম। টুকটাক মন্তব্যই ঠিক আছে। কারণ প্রবল জ্ঞানগর্ভ উপদেশ মেনে চলতে, অন্যের মতানুযায়ী লিখতে আমার স্বতঃস্ফূর্ততা নষ্ট হয়। যেমন ধরুন যে-কোনও নিন্দাবাক্যের অতীত একটি ধর্ষণের প্রতিবাদ জানালেন, সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য উড়ে আসবে, সে তো হল, কিন্তু চক্রান্ত নিয়ে লিখবেন না? আপনি লিখলেন উন্নাওয়ের কথা, সঙ্গে সঙ্গে সরল জিজ্ঞাসা, নন্দীগ্রাম নিয়ে লিখলেন না? এইভাবে কুরু রাজসভায় দ্রৌপদীর লাঞ্ছনা অবধি পৌঁছে গেলে যে প্রতিবাদের ফোকাস হারিয়ে যায়, এটা বুঝেও অনেকে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলতে থাকেন।
আরও অসুবিধে, এইরকম মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম ঘটনা নিয়েও দলাদলি শুরু হয়। তুই বেড়াল না মুই বেড়ালের আকচাআকচি। লিখব কী! অবাক হয়ে দেখি আর ভাবি সামাজিক মাধ্যমের এই রমরমা প্রাকস্বাধীনতা যুগে থাকলে প্রীতিলতা বা ইলা মিত্রের মতো যোদ্ধা আমরা পেতাম কি! হয়তো পেতাম, কারণ এর মধ্যেও যে অজস্র তরুণ-তরুণী রাত জাগছেন, পথ আলপনা দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এঁরা আছেন বলেই মনে হয় এত রক্ত শ্রম বিফলে যাওয়ার নয়!
তাই ফিরে লিখতে হয়। মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলির অন্যতম যদি ঘটতেই থাকে ঘরের পাশে, তাহলে নির্বিকার হয়ে থাকা যায়? চিৎকার করে কাঁদতে পারি না, তাই “যাহা আসে তাহা কই মুখে।” যে-শহরকে তিলোত্তমা নামে ডাকা হত, যে-রাজ্যকে জ্ঞানগরিমায় প্রথম সারির মধ্যেও এগিয়ে থাকা হিসেবে গণ্য করা হত, তাকে ঘিরে শকুনের পাখার ছায়া দেখেও যে চুপ করে থাকতে পারে, তাকে শত ধিক!
কিন্তু কীই বা হচ্ছে রাজ্যের মানুষের বহুদিন অদেখা এই বিপুল প্রতিবাদের স্বতঃস্ফূর্ত বিস্ফোরণের পর? রাতের পর রাত খুব সংগঠিত না হলেও মানুষ পথে নামছে এখনও। প্রথমে যে আবেগের আগুন জ্বলেছিল, তার আঁচ জাগতিক নিয়মেই কমে আসছে। প্রথমে নাকি দাবি ছিল একদফা, এখন সেখান থেকে সরে গিয়ে শুধু কুশীলবের শাস্তির দাবি দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু সেটাও হবে বলে আশ্বস্ত হতে পারছে না কেউ। কারণ বাংলাদেশি মডেলে জ্বলে ওঠা এই আন্দোলনে বাংলাদেশি মরিয়া ভাব কই! নিয়াই ছাড়ুম— এই জেদ কই! অথচ এ তো একদিনের ঘটনা নয়। আরজিকর তো বহুদিন হলই ঘুঘুর বাসা। আরও তরুণ প্রাণ, এইরকম অকথ্য অত্যাচার সইতে হয়নি হয়তো তাদের, কিংবা হয়েছে আমরা জানি না, শারীরিক না হলেও মানসিক তো বটেই, নিঃশব্দে তারা ঝরে গেছে অকালে। আত্মহত্যাই ছিল কি সেইসব মৃত্যু? ঠিকমতো তদন্ত হয়েছিল সেইসব ঘটনার? সন্দীপ ঘোষ সম্বন্ধে এযাবৎ যে-সব তথ্য সামনে এসেছে, প্রমাণ ছাড়া কথা বলব না ভেবে যদি মনে করি তার অল্পই সত্যি, তাহলেও তো ভবিতব্য ভয়ানক! অথচ একে একের পর এক নতুন পদ দেওয়া হচ্ছে। এখন স্বাস্থ্যভবনে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি। আবার শুনতে পাচ্ছি, না তিনি আর তা নন। যাই-ই হোক না কেন ডঃ আখতার আলির তদন্তের আবেদনে তাকে বদলি করে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে এটা তো ঘটনা। এমন অফিসার ছাড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে? কার স্বাস্থ্য?
সারকামস্ট্যানশিয়াল এভিডেন্স বা পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ বলে একটি বস্তু আছে। তিলোত্তমা-হত্যায় তার সবগুলোই সন্দীপের বিপক্ষে যায়। সবচেয়ে সেরা হচ্ছে, পুনর্নির্মাণের নামে লাগোয়া ঘরগুলো ভেঙে ফেলা। আর এখন তো তদন্তকারীরাও বলছেন খুব সম্ভব সেমিনার রুমে ধর্ষণ এবং হত্যা হয়নি, অন্য কোথাও সেগুলো সুচারুরূপে সমাধা করে এখানে তাকে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। শেষ শয্যা পাতা হয়েছে ইলেক্ট্রিসিটি যাওয়ার তারের ওপর? সজ্ঞানে কেউ করে? এ-কাণ্ড হত্যাকারীর তাড়াহুড়ো নয়? মীনাক্ষী মুখার্জি বনেটের ওপর হুমড়ি খেয়ে না পড়লে মৃতদেহ নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যাওয়া গাড়ির গন্তব্য কোথায় ছিল? আমরা শুনিনি, অসহায় বাবা-মায়ের কণ্ঠস্বর, “আরে আরে, মেয়েটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?” পোস্টমর্টেম অবধি পৌঁছাতে পারত তো ব্যাপারটা? কাগজে পড়লাম বাবা বলছেন, আমার মেয়ের মৃতদেহের আগে আরও তিনটি মৃতদেহ লাইনে ছিল। তাদের সরিয়ে মেয়ের মৃতদেহটি তাড়াহুড়ো করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কেন এই তাড়া?
প্রশ্নের পর প্রশ্ন, সমস্ত সত্তাকে টলিয়ে দিচ্ছে। চোদ্দই আগস্ট মিছিল সংগঠনের সময়ই ডাক ছিল কলেজ স্ট্রিট, যাদবপুর বাসস্ট্যান্ড ও অ্যাকাডেমির সামনের চত্বর। তখন থেকেই বিভিন্ন হোয়াগ্রুপে চেতাবনি ভেসে আসছে কালো পোশাক পরবেন না, সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেবেন না (স্ক্রিনশট আছে)। যদিও স্বতঃস্ফূর্ত মানুষের ঢল সেসবের তোয়াক্কা করেনি। কিন্তু সেদিন না হোক তার পরের দিন শহরের সমস্ত মিছিলের অভিমুখ কেন হল না নবান্ন, লালবাজার বা আরজিকরের দিকে, বোকা মাথায় সেসব ঢোকে না। পাড়ায়, মোড়ে, অনেক আশা নিয়ে যাঁরা রাত জেগেছিলেন, তাঁদের বিরাট ঢেউ কেন একসঙ্গে আছড়ে পড়ল না প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলোর সামনে? জাস্টিস চাই শুধু বললেই হল? কার কাছ থেকে চাইছি, জাস্টিস এই অবস্থায় কে দেওয়ার অধিকারী, সেসব পরিষ্কার করে বলার দায় নেই? আর এখন তো দেখছি লোকজন আলাদা আলাদা মিছিলেই বেশি আগ্রহী। মিছিল নাকি হয়ে দাঁড়িয়েছে স্ট্যাটাস সিম্বল, এইরকমও শুনতে পাচ্ছি। অথচ অনেক মানুষের ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল একসঙ্গে মিছিল করবার। তাঁদের সে ইচ্ছা ফলবতী হতে পারল না কেন?
আসলে ঠিকঠাক বিরোধীর অভাবে এই দেশের যে-অবস্থা, এই রাজ্যেরও তাই। বেশ কিছু মানুষ বামের ভেকধারী হলেও মনেপ্রাণে চান না তৃণমূল শাসনের অবসান হোক। রামের জুজু দেখিয়ে, রাম-বাম শব্দবন্ধ তৈরি করে, ভোটের সময় এক মঞ্চ, আরজিকরের সময় আর এক মঞ্চ তৈরি করে এরা তৃণলগ্ন হয়ে থাকবে, কিন্তু বাম ঐক্য তৈরি করে সমাজবদলের পথে হাঁটবে না। সে-কাজটা যে বড় কঠিন, ফুটেজ খাওয়ার মতো সহজ নয়। সিপিএমই যে একমাত্র বাম, সহি বাম, এমন কথা এখন তো আর কেউ বলে না। তবু আমরা যারা বাম ঐক্যের কথা ভাবি এবং সমর্থন করি তাদের দিন দিন হতাশার চোরাবালিতে ঠেলে দিয়ে শতধাবিভক্ত বামের মধ্যেকার ফাটল আরও চওড়া করে শাসকের ছাড়া আর কার কী লাভ হচ্ছে কে জানে!
অরাজনৈতিক শব্দটির অর্থ যখন যে-দলের খারাপ দেখব তাই বলার স্বাধীনতা, ঘটনা বোধহয় এরকম নয়। বরং অরাজনৈতিকের আড়ালে রাজনীতি ঢেকে রাখবার এই প্রবল রাজনৈতিক খেলা যতদিন চলবে ততদিন তিলোত্তমারা অযোগ্য দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের হাতে এইভাবেই ধর্ষিতা হবে, বিনা দোষে প্রাণ যাবে তাদের, শহরে, গ্রামেগঞ্জে সর্বত্র। মনে রাখতে চাই, এইরকম বিচারহীন মৃত্যুগুলো সব কটাই ঘোর রাজনৈতিক।
যদি নির্ভয়ার মতো হাল হয় তিলোত্তমার, বা কামদুনির দুর্ভাগিনীর মতো— অবাক হব না। কালের নিয়মে সবাই ভুলে যাবে। আর কতই তো হয় এরকম, ১৪ আগস্টের পর গ্রামেগঞ্জে কটি মেয়ের এই হাল হয়েছে, হিসেব রেখেছি কি? শুধু যখন শ্রেণিস্বার্থে আঘাত লাগে, গরিবের মেয়ের গায়ে হাত পড়ার বদলে আমাদের নিজেদের ঘরে এসে রেপিস্ট ঢোকে, নৃশংস মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তখন দুদিন চ্যাঁচামেচি করি আমরা। চিৎকার কর মেয়ে বলে সুকৌশলে সেই চিৎকারের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিই। বুঝতে বুঝতে নতুন ঘটনা এসে যায়। নতুন কৌশল আবিষ্কৃত হতে থাকে। আর তাছাড়া অরাজনৈতিক স্বাধীনতার অর্থ যদি হয় খারাপ দেখলেই মুখর হওয়া, তাহলে এখন এত রাখঢাক কীসের? কেন রং নিয়ে, স্লোগান নিয়ে, এমনকি একসঙ্গে মিছিল করা নিয়ে, মিছিলের গন্তব্য ঠিক করা নিয়ে এত মতানৈক্য?
এই জন্যই দেশ এই মুহূর্তে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উত্তাল হলেও খুব দ্রুত কিছু উন্নতি হবে এরকম মনে হয় না আমার। আরও একটু কড়া তথ্য দিই। মেয়েকে ক্যারাটে শেখাবার, ছেলেকে সেন্সিটাইজ করাবার কথাগুলো শুনতে চমৎকার। কিন্তু সে তো অনেকদিনের কথা। যে শিশু আজ জন্মাল বা কিছুদিন আগে জন্মে এখন কিশোর বা তরুণ, এই পরিবেশে তাকে সেন্সিটাইজ করিয়ে সমাজে বদল আনতে আনতে আরও কতশত আরজিকর ঘটে যাবে কে জানে! আপাতত আমরা কাদের কোলে আছি, কাদের বিরুদ্ধে গলা ছাড়ব না তেমন করে ঠিক করেছি— সেইটা জেনে নেওয়া যাক।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR) এবং ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ (NEW) আমার দেশের মোট ৪৮০৯ জন বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিধায়কদের মধ্যে ৪৬৯৩ জনের নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করেছেন, যার মধ্যে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত সাংসদ ও বিধায়কদের সংখ্যাটাও আছে। শুনলে অবাক হবেন এই প্রতিবেদনে গত ৫ বছরে ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৭৫৫ জন সংসদ সদস্য এবং ৩৯৩৮ জন বিধায়কের মধ্যে বিশ্লেষিত তথ্যে ১৫১ জন বর্তমান সংসদ সদস্য/বিধায়ক নিজেরাই স্বীকার করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অপরাধের মামলা রয়েছে।
অপরাধগুলি কেমন? যেমন নারীর শ্লীলতাহানি (IPC ধারা-৩৫৪); বিয়ের জন্য অপহরণ (IPC ধারা-৩৬৬); ধর্ষণ (IPC ধারা-৩৭৬); একই মহিলার ওপর বারবার ধর্ষণ (IPC ধারা-৩৭৬(২)(n)); নারীনির্যাতন (IPC ধারা-৪৯৮এ); পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে নাবালিকা কেনাবেচা (IPC ধারা-৩৭৩) এবং নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে শব্দ, অঙ্গভঙ্গি বা কাজ করা (IPC ধারা-৫০৯)। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে, বিজেপি-র সর্বোচ্চ সংখ্যক সংসদ সদস্য/বিধায়ক রয়েছে, মোট ৫৪ জন, এর পরেই রয়েছে কংগ্রেসের ২৩ জন এবং তেলুগু দেশম পার্টির (TDP) ১৭ জন। আর এই হুল্লোড়ে রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম কে জানেন? আমাদের এই রাজ্য।
রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সর্বাধিক সংখ্যক সংসদ সদস্য/বিধায়ক রয়েছে, মোট ২৫ জন (৪ জন সংসদ সদস্য এবং ২১ জন বিধায়ক), এর পরে অন্ধ্রপ্রদেশে ২১ জন এবং ওড়িশায় ১৭ জন সংসদ সদস্য/বিধায়ক রয়েছেন যারা নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা ঘোষণা করেছেন।
সমস্ত দেশেই কোনও বামদলের সাংসদ বা বিধায়ক এই তালিকায় নেই।
আপাতত এই দুষ্টচক্রের খপ্পরে পড়ে আছি আমরা। আশু মুক্তির সম্ভাবনা দেখি না। আখতার আলির মতো মেরুদণ্ডওয়ালা মানুষ কোটিকে গুটিক। আগেও ভিজিল্যান্সে সন্দীপের অন্যায়ের কথা জানিয়েছিলেন, এখনও মামলা ঠুকতে দুবার ভাবেননি।
হাসি পায়, প্রশাসনিকভাবে এতদিন পরে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একটি মাত্র কেস রুজু করা গেছে, সেটি হচ্ছে ধর্ষিতার নাম-ঠিকানা প্রকাশ করবার জন্য কলকাতা পুলিশের সুয়ো মোটো কেস! হা হা, মেয়েটার প্রাণ চলে গেল নিষ্ঠুর অত্যাচারের ফলে, দুর্নীতির চূড়ায় বসে থাকা মানুষদের অঙ্গুলিহেলনে প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে হত্যা, ওষুধ জাল, রোগী নিগ্রহ, আরও কত কী হল, এখন শুধু নামঠিকানা প্রকাশের দায়! সত্যিই পশ্চিমবঙ্গ এক প্রমোদ-তরণী! এই ডামাডোলে একমাত্র ভরসার কথা আখতার আলির মতো প্রতিবাদী মানুষের খোঁজ পাওয়া। যিনি প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভীমরুল-চাকে ঢিল ছুড়েই চলেছেন।
আশ্চর্য কী, নতুন পোস্টার পড়ে এই বলে যে, আসুন পতাকাবিহীন হই, পতাকা নিলে নিন সংগঠকের পছন্দমতো রঙের, আসুন গান গাই, বড়জোর সন্দীপের এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের অপসারণ চাই। মেডুসার মতো যে প্রশাসনের মাথায় অজস্র বিষাক্ত সন্দীপের কিলবিলে বিনুনি, তার নাম উচ্চারণ করাও বারণ।
কথা বোলো না
কেউ শব্দ কোরো না
ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন
গোলযোগ সইতে পারেন না।
*মতামত ব্যক্তিগত