শতাব্দী দাশ
বলশেভিক বিপ্লবের শতবর্ষ দুনিয়া জুড়ে পালিত হচ্ছে। ধনতান্ত্রিক সভ্যতার বুকে দাঁড়িয়ে, মুক্ত বাজার আর উদারনীতিক অর্থনীতির যুগে এ’ বড় আশার কথা। আমাদের ছোটবেলায় সোভিয়েত ছিল রূপকথার দেশ, একটা আশ্বাস যে এমন কোনও ঠাঁই আছে, যেখানে উচ্চনীচ, ধনী-গরীব, বড়-মেজ-সেজ সবাই সমান। সুদূর সাইবেরিয়ায় বরফ-সাদা প্রান্তর থেকে সেই রূপকথা ভেসে এসে কল্পনার প্রিজমে পড়ে সাতটা রঙ হয়ে ছড়িয়ে পড়ত। দুনিয়া কাঁপানো দশ দিনের শতবর্ষে লেখাপত্র,উন্মাদনা ও উত্তেজনা যা চোখে পড়ছে — তা দেখে ধারণা হয়, সেই ম্যাজিক প্রিজম এখনও বহু মানুষ হৃদয়ে বহন করেন। কিন্তু নস্ট্যালজিয়ার অরাজনৈতিক অবস্থান পেরিয়ে যদি ভারতীয় বামপন্থার বর্তমান অবস্থার একটা রূপরেখা আঁকা যায়?
এই উপমহাদেশে বাম রাজনীতির ইতিহাস শুরু বিশ শতকের বিশের দশকে। মানবেন্দ্র রায়ের উদ্যোগে কিছু নির্বাসিত ভারতীয় ১৯২০ সালের ১৭ই অক্টোবর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। ভারতে সে পার্টি আসে চোরাগোপ্তা পথে। তারপর কুড়ি ও ত্রিশের দশকে স্বাধীনতার লড়াই-এ কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা, ১৯২৫ সালের গুরুত্বপূর্ণ কানপুর কনফারেন্স, পার্টির আন্ডারগ্রাউন্ড অবস্থান, ৪৬-এ তেভাগা, অতঃপর ত্রিপুরা, কেরল, তেলেঙ্গালায় কমিউনিস্টদের উদ্যোগে রাজা-জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, ৫০-এর দশকে দিল্লীতে মে দিবস পালনের ঘটা, ৫২ সালে লোকসভায় সিপিআই-এর প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠা, ১৯৫৭-তে কেরল জয় ও কমরেড নাম্বুদিরিপাদের দায়িত্বগ্রহণ, ১৯৬৪-তে পার্টি ভাগ হয়ে যাওয়া ও সিপিআইএম-এর জন্ম, লাল সূর্যের নকশালবাড়ি, ৬৭ আর ৬৯ সালের ইউনাইটেড ফ্রন্ট, খাদ্য আন্দোলন, পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএমের ত্রিশ বছরের একচ্ছত্রবাদ — এই সুদীর্ঘ পথ পেরিয়ে একবিংশ শতকের ভারতীয় বামপন্থী রাজনীতিতে এসে পৌঁছেছি আমরা।
সংসদীয় গণতন্ত্রে ভোটের হিসেব নিকেশ আসবেই। সেই বিচারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই মুহূর্তে বামপন্থীদের, বিশেষত সিপিআইএমের, সামনে আশু চ্যালেঞ্জ হল টিকে থাকা। ভৌগোলিক পরিসর বা ভোট পার্সেন্টেজ সবই সীমাবদ্ধ হয়ে আসছে। কারণ কী? কিছুটা হয়ত তা বামপন্থী দলগুলির অন্তর্গত তাত্ত্বিক বিরোধের জন্য, বিশেষত সিপিআই ও সিপিআইএম-এর মধ্যে যূথবদ্ধতার অভাবের কারণে। কিছুটা হয়ত সমকালকে বুঝতে না পারা ও পার্টিগত রক্ষণশীলতার জন্য। আবার, পাব্লিক ডিসকোর্স যখন টুইটারীয় ১৪০ ক্যারেক্টারে সীমাবদ্ধ, তখন বামপন্থী প্রজ্ঞার তাত্ত্বিক অধ্যয়নের মানসিকতাও বোধহয় ফুরিয়ে এসেছে। অন্যদিকে ক্লাস-স্ট্রাগলকে ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ে শতবিভক্ত ভারতীয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না করতে পারাও হয়ত ব্যর্থতার আরেক কারণ। এছাড়া নানা ক্ষেত্রে নীতিগত দিশাহীনতা তো আছেই — যেমন জোটের ক্ষেত্রে। একদিকে কারাট ক্যাম্পের কংগ্রেসের সাথে জোট নিয়ে অনমনীয়তা, অন্যদিকে ইয়েচুরিদের বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোটের তত্ত্ব বামপন্থীদের সামনে একটি জটিল প্রশ্নচিহ্ন বিগত অনেক বছর ধরে। অবশ্য ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জোট সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কাছে বামেদের শোচনীয় হার অসহায়তা আরও প্রকট করেছে। যে কারণেই হোক, সংসদীয় বামপন্থা যে প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। অথচ ২০১৫ সালের প্লিনামে গভীর আলোচনা হয়েছিল, শোনা যায়, কীভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা যায় আবার, তা নিয়ে।
প্যারাডক্সটি হল, ভারতের মতো দারিদ্রকীর্ণ একটি দেশে অস্তিত্বরক্ষার লড়াই করতে হচ্ছে বামপন্থীদের — যাদের মূল তাত্ত্বিক ভিত্তি ও কর্মসূচীই ছিল সর্বহারাদের সংগ্রামের পথ প্রস্তুত করা। ২০১৪ সালে লেফট ফ্রন্টের জাতীয় ভোটের শেয়ার ছিল ৪.৮%, যেখানে কিনা ১৯৮৯ সালে তা ছিল প্রায় ১০.৬%। ভোট শতাংশের হিসেব কষলে দেখা যাবে, এই অধোগতি শুধু পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক নয়, বরং সার্বিক, সর্বভারতীয়। ন্যাশনাল ইলেকশন স্টাডিজ (NES)-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, চাষী-আধা দক্ষ শ্রমিকদের মধ্যেই বামেদের ভোটার ছিল বেশি। কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকে শহুরে দোকানদার, হকার, মধ্যবিত্ত কর্মীদের মধ্যে বামেদের প্রভাব কমেছে, কমেছে এমনকি চাষী ও অদক্ষ-শ্রমিকদের মধ্যেও। আবার ২০০৬ সালের অ্যাসেম্বলি ইলেকশনে যেখানে ২৫ বছরের কমবয়সী ভোটাররা বামেদের ভোট দিয়েছেন ৫০%, ২০১৪-তে তা কমে দাঁড়িয়েছিল ২০%-এ।
ভোট রাজনীতি সংসদীয় গণতন্ত্রের অংশবিশেষ। ভোটে হারজিত দিয়ে একটি পার্টির সার্বিক অবস্থার নিরূপণ করা যায় না হয়ত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, সিটুর মতো একটি শ্রমিক সংগঠনের স্থান ভারতীয় শ্রমিক ইউনিয়নগুলির মধ্যে নেমে এসেছে পঞ্চমে। মারুতি মুভমেন্টের জয় শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অধ্যায় হয়ে থাকলেও সেই আন্দোলনের বীজ প্রোথিত হয়েছিল অনেক আগেই, তেরো চোদ্দ বছর আগে। এই দশকে তার ফল পাওয়া গেছে মাত্র।
স্বাধীনতার পর থেকেই কংগ্রেস দলের সাথে জোট নাকি জোট নয় –এ বামেদের কাছে বড় বালাই। কংগ্রেস ভেঙেই তৈরি হয়েছিল কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি জয়প্রকাশ নারায়ণের হাত ধরে, যা অবশ্য পরে বিলুপ্ত হয়। আবার ইন্দো-চীন যুদ্ধের সময় চীনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব নিয়েই সিপিআই দলে ভাঙন। তারপর জাতীয়তাবাদী বামপন্থীদের প্রো-কংগ্রেস অবস্থান গ্রহণ সিপিআই অবতারে। অন্যদিকে সিপিআইএমের অবস্থান ছিল আন্তর্জাতিক বামপন্থার পক্ষে, অতএব খানিক চীন-ঘেঁষা। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পরে সিপিআই-সিপিএম অ্যালি হয়ে ওঠে আবার, কিন্তু সে প্রায় আট বছর পর। এখনও বাম রাজনীতি ইয়েচুরি বনাম কারাত ক্যাম্প কংগ্রেসের সাথে জোট নাকি জোট-বিরোধিতা — সেই ঝগড়াঝাঁটিতেই আবদ্ধ আছে। পরমাণু চুক্তির পর ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেওয়াই হোক বা ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন জোট বিতর্ক।
শুধু মতাদর্শগত বিরোধ নয়, ব্যক্তিত্বের সংঘাতও অনেক সময় কারণ হয়েছে দলীয় ভাঙনের। তবে সবচেয়ে বড় কারণটি বোধহয় নীতিগত অবক্ষয়।
বামপন্থার প্রবাহ ক্ষীণতর হয়েছে এমনটা যদি না-ও মানা যায়, সবাই এটা মানবেন যে, সাবেকি বামপন্থী কর্মীরা আজ অদৃশ্য। স্বার্থহীনতার তৃপ্তিতে ভরা যে যুবকের দল ‘বামপন্থী’ বলে নমস্য ছিলেন, তাঁরা বাণপ্রস্থে গেছেন। ক্রমশ সে জায়গায় এসেছে ‘কী পাব, কতটুকু আদায় করব’ মন্ত্র-জপা হিসেবি কর্মীরা। কথা ছিল, সংসদীয় গণতন্ত্রে ক্ষণিকের অবস্থানের। তারপর নাকি বিশ্বজোড়া যৌথ খামার। সেই ক্ষণিক-কে কাজে লাগিয়ে হয়ে গেল পাকা ঘরবাড়ি। ক্রমাগত সাফল্য বাড়াল আরও টিকে থাকার লোভ। এই টিকে থাকার পথে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এল। এক, গণপার্টি গড়ে তোলার ডাক এল আশির শুরুতে। দুই, সততা-দায়বদ্ধতায় খামতির প্রশ্ন তুললে উত্তর এল — গণতন্ত্রে এ সব একটু-আধটু থাকবেই। তদুপরি একবিংশ শতকে এসে পড়ল বিশ্বায়ন। উন্নয়নের সংজ্ঞা বদলাল দ্রুত। বলা শুরু হল যে, বিশ্বায়িত পৃথিবীতে শুধু গরিবের কুঁড়েঘর বানালে চলবে না, কৃষিজমিতে শিল্প করাই উন্নয়ন। ফলে গণপার্টিতে ক্রমশ জায়গা সংকুচিত হতে লাগল গ্রামের চাষাভুষোদের, ‘বাঘারু’দের। প্রচুর গ্যাজেটে শোভিত হয়ে যখন বামপন্থী নেতারা ‘আমরা মেহনতি মানুষের জন্য লড়ছি’ বললেন, তখন অন্তঃসারশূন্যতা স্পষ্ট হল।
পার্টির অভ্যন্তরে চিন্তার চর্চার আর প্রশ্ন করার অধিকার ‘গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’র নামে চাপা দেওয়া হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। অমর্ত্য সেন কয়েকবছর আগে বলেছিলেন, ‘বামেরা বড় ক্ষীণকণ্ঠ হয়ে পড়েছে।’ কিছুটা হয়ত দিশাহীনতা এর কারণ। কিন্তু প্রশ্ন করার অধিকার কেড়ে নিয়ে কণ্ঠহীনতা কি আরোপও করা হয়নি পার্টিগত উদ্যোগে স্তালিনিস্ত কায়দায়? অন্যদিকে, আগে আমরা সংসদীয় ও অসংসদীয় বামেদের দেখতেই অভ্যস্ত ছিলাম। এখন ধীরে ফেসবুকীয় বাম নামে নতুন এক শ্রেণির সৃষ্টি হচ্ছে। এটা শ্লেষ নয়। নিরপেক্ষভাবে বিচার করলেও দেখা যাবে, সোশ্যাল মিডিয়া বামপন্থার এক বাহক হয়ে উঠেছে ধনতান্ত্রিক শহুরে আবহে। সেই শহুরে বামপন্থা তামিলনাড়ুর কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে ভুলে গেছে সশরীরে। কিন্তু ঠিক একই সময়ে তারা খাদ্য আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে ব্যস্ত। কিংবা দুর্গাপুজোয় আমিষ না নিরামিষ — এই দ্বন্দ্বে। যে দেশ ‘গ্লোবাল হাঙ্গার ইন্ডেক্স’ অনুযায়ী ১১৯টি দেশের মধ্যে ১০০ তম, সে দেশে #মাই_ফুড_মাই_চয়েজ? সত্যি? একটি দক্ষিণপন্থী, কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল অনেক গুরুতর সমস্যার থেকে এইভাবে বামেদের নজর ঘুরিয়ে দিচ্ছে না তো? অথচ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে উদ্ভুত ‘শাহবাগ’ বা ‘হোককলরব’ যে সাড়া ফেলেনি তা তো নয়। কিন্তু এই দ্রোহ-কেও, যে কোনও বিপ্লবকেই বাস্তবের সাথে সম্পৃক্ত হতে হত। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়াল হতে পারে না ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যম। তাই ডিমনিটাইজেশন নিয়ে বিক্ষোভ মিমে আবদ্ধ হয়ে যায়। ক্যাম্পাসে একের পর এক দলিত ছাত্রের মৃত্যুর সুরাহা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক হিউম্যানিটিস-সোশ্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে গ্রান্ট বন্ধ হতে থাকে। কেন এই সব ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হতে হতে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্ম দেয় না? এমনকি সবচেয়ে বামঘেঁষা, সবচেয়ে তাজা লাল, তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতেও? ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারের ভারত সফর বিভিন্ন পকেটে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে বটে। কিন্তু বৃহত্তর ভারতীয় রাজনীতিতে তা খুব প্রভাব ফেলে কি?
অন্য দিকে, অ-সংসদীয় পথে যাঁরা দিনবদলের লড়াইয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদেরও সংখ্যা আশির দশকের পর কমল।
তবু কিছু আশার আলো অসংসদীয় বামপন্থার চর্যাতেই দেখা যায়। চরমপন্থী বামেরা আজও অনেকেই নিজ নীতিতে সৎ থেকে মানুষের মধ্যে কাজ করছেন। কিন্তু কোথাও গিয়ে তারাও মূলস্রোতের রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। সহজেই তাঁদের উগ্রপন্থী বা নৈরাজ্যবাদী দাগিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। দক্ষিণপন্থীরা দাগিয়ে দিচ্ছেন। সংসদীয় বামপন্থীরা সেই সতীর্থদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হচ্ছেন বা চাইছেন না। বামপন্থা টিকে আছে চা বাগান শ্রমিকদের বিচ্ছিন্ন লড়াই-এ। ভাঙড়ের জমি পুনর্দখলের যুদ্ধে। জঙ্গলে জঙ্গলে, খিদের রাজ্যে।
প্রতীকী আন্দোলন, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টাপোস্টি, হ্যাশট্যাগ ইত্যাদিরা আর সেফটি ভালভের কাজ না করুক। দুটি একটি পোস্ট-মিমেই যদি সব ক্ষোভ প্রশমিত হয়, তবে আর একটিও বিপ্লব মনে হয় সম্ভব নয়। সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষত, ব্যবহৃত হোক প্রচার ও মত-বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে। আন্দোলনক্ষেত্রের অবস্থান হোক তা থেকে কিঞ্চিৎ দূরেই। বামপন্থীর কাজকর্মের পরিসর হোক মাটির কাছাকাছি। আজও কিন্তু বামপন্থী জনমুখী নীতিগুলিকেই ভাঙিয়ে জয় ছিনিয়ে আনে তৃণমূল কং বা আপ। বামপন্থীদের এককালের ‘হাল যার, জমি তার’ নীতিকে কাজে লাগিয়েই ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আপ লড়েছিল গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিকে ইস্যু করে, যদিও পরে তাদের তাত্ত্বিক দুর্বলতাজনিত নানারকম বিচ্যুতি, ভ্রান্তি, দুর্নীতি আমরা দেখেছি। এ’সব প্রমাণ করে, একটি মানবমুখী, মানবকেন্দ্রিক, মানবতাবাদী দর্শন হিসেবে বামপন্থার অসীম আবেদন আজও অক্ষুণ্ণ। সমস্যা বা খামতি সে দর্শনেও আছে। কিন্তু মূল সমস্যাটা মনে হয় বামপন্থীদের। তাঁদের জনমুখী নীতি ও কার্যক্রমে স্থিত হওয়ার কথা ছিল পূর্বসূরীদের থেকে অর্জিত সব তাত্ত্বিক প্রজ্ঞা নিয়ে। সেই অসীম উত্তরাধিকার নিয়ে আজ অভুক্ত, বিক্ষত দেশে যদি লড়াই-এ ফেরা না যায়, তবে আর কবে?