Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

এই পথে আমাদের ক্রমমুক্তি হবে?

বিহঙ্গ দূত

 


এই তিনে মিলে থ্রেট সিন্ডিকেট চলছে। চলবে হয়তো আরও বহুদিন। গণতন্ত্রকে ভিতর থেকে বিকৃত করার খেলা এখন অতীত। এখন চল হচ্ছে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে বসিয়ে রেখে পাশাপাশি সুবিধা অনুযায়ী সিস্টেম তৈরি করে ফেলা। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মিটিংয়ে বারংবার নির্বাচনের দাবি তুলছিলেন তাঁরা। অন্যদিকে শাসকপক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গড়ে দেওয়ার দিকে চাপ দিচ্ছিলেন। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে জানি যে-সব স্থানে ঝামেলা বেধেছে সেখানেই এঁরা অন্তর্বতীকালীন কমিটির ফুলঝুড়ি ছুটিয়েছেন। সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো আর ফেরেনি। তাই ডাক্তারদের আন্দোলন কোথাও গিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনও বটে

 

আরজিকরের নারকীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে থ্রেট কালচার শব্দটি নিতান্তই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজের একদল ছেলেমেয়েকে এই আন্দোলনেই স্লোগান দিতে দেখা গেছিল— ‘থ্রেট কালচারের গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে!’ রাগ ছিল কর্তৃপক্ষের অন্দরে চলতে থাকা ঘুঘুর বাসা আর তার মদতপুষ্ট পেটোয়াদের রক্তচক্ষুর বিরুদ্ধে। তদবধি থ্রেট কালচার লব্জটি গুনগুনাচ্ছে প্রতিটি মিছিলে। দখল নিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিসনদেও। থ্রেট বা হুমকি শব্দটি বঙ্গরাজনীতির অত্যন্ত চলতি বুলি। এর সঙ্গে সংস্কৃতি জুড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য-আন্দোলনের ভিতরকার যন্ত্রণা একধাক্কায় ছুঁয়ে গেছে আপামর জনতাকে। মূলত এই লব্জটিই আন্দোলনকে জুড়ে দিয়েছে এক বৃহত্তর আঙ্গিকে।

‘জাস্টিস ফর আরজিকর’ স্লোগানে কিছুদিন শাসক তাল মিলিয়েছিল। তারাও শান্তিমতে নিজেদের মতো করে জাস্টিসের বিধান দিচ্ছিল। কেউ বা মিডিয়ায় সাতদিনের মধ্যে ফাঁসির নিদান দিচ্ছিলেন। কেউ বা মধ্যযুগীয় বিচারব্যবস্থার রীতিনীতি ফেরত আনার দাবিদাওয়া তুলছিলেন। কিন্তু গণআন্দোলনের চাপে বিচারবিভাগীয় তদন্ত যত এগিয়েছে আন্দোলনের তর্জনী তত ঘুরেছে শাসকের দিকে আর তত অস্থির দেখিয়েছে অচলায়তনের প্রতিভূদের। এর প্রথম কারণ বোধহয় মধ্যরাতের রাস্তাদখলের ডাক। এই ডাক নিরাপত্তা বা সুরক্ষাকেন্দ্রিক যত না ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ছিল নারী ও প্রান্তীয় লিঙ্গের মানুষের স্বাধীনতার। আরও গভীরে বলতে গেলে ভয় ভাঙার। আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠা কতকগুলি ছবির মধ্যে প্রধান ছিল বাবার পিঠে বসে বাচ্চাটির প্ল্যাকার্ড ধরা ছবিটি যাতে লেখা ছিল— আমি ভয় ছাড়া বাঁচব!

এর চটজলদি নিরাময় আনার জন্য সরকার ‘রাতের সাথী’ প্রকল্প নিয়ে আসে। কিন্তু মুশকিল ঘটে অন্যত্র। ‘রাতের সাথী’-র গভীরে মেয়েদের কর্মসঙ্কোচনের চক্রান্ত দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু তা বাদ দিলেও সাদা চোখে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য নিরাপত্তা প্রদান। ১৪ আগস্ট যে মেয়েরা, প্রান্তীয় লিঙ্গের মানুষেরা রাস্তা ভরালেন, স্লোগান দিলেন গলা চিরে তাঁরা ঠিক নিরাপত্তা চাননি। কেননা এ-অংশের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া ঠিক সরকারের কম্ম নয়। কারা তাঁরা? আশাকর্মী, নার্স, চারটে পাঁচের ট্রেন ধরতে আসা ফুলওয়ালি, নাইট শিফট সেরে ফেরা কর্পোরেট কর্মী, দূরপাল্লার যাত্রী শিক্ষিকা, মহিলা ক্যাবচালক… আরও কত বলব? এঁরা ধাক্কা খেতে খেতে এ-সমাজে এগিয়েছেন, এগোচ্ছেন, এগোবেন। দানাপানির জোগান জোটাতে রাতবিরেতে যে কাজে বেরোতে হয় তার মধ্যে বাধ্যতা আছে অবশ্যই। আর একটু তলিয়ে দেখলে স্বাধীনতাও আছে। এই স্বাধীনতা চাইতে তাঁরা পথে নেমেছেন। এইখানে সরকারের উলটা বুঝলি রামের দশা হয়েছে। তারা ক্রমাগত আন্দোলনকে কোনও একটা ছকে বাঁধতে চেয়েছে। ডাক্তারদের আন্দোলন, ধর্ষণের বিচার চেয়ে আন্দোলন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আন্দোলন ইত্যাদির উপর জোর দিয়ে তারা ঠেকনা দিতে চেয়েছে নিজেদের পদ্ধতিতে। রাতের সাথী তারই রূপায়ণ। কিন্তু আন্দোলনের আরও এক বিরাট উদ্দেশ্য আছে। এটা ভয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন আর স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন। তাই আন্দোলনে জাস্টিসের স্লোগানের সঙ্গে মিশে গেছে অতিপরিচিত আজাদির স্লোগান। ১৪ আগস্টের রাতে বহু স্থানেই এই স্লোগান উঠেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের আজাদির স্লোগানে অ্যালার্জি আছে তা তো সুবিদিত, কিন্তু এই স্লোগানে রাজ্যের শাসকপক্ষের এত চিড়বিড়ানি তা আগে ধরা যায়নি। বনগাঁর মিছিল থেকে ফিরে এক শাসকপক্ষীয় বন্ধু খানিক দাঁতকিড়মিড় করতে করতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন— আপনারাই ঠিক করুন বিচার চান? না আজাদি? সেইদিন উত্তর দেওয়া হয়নি। উত্তর— আজাদিই হল যথার্থ বিচার! যুগে যুগে শত আন্দোলনের মূলকথা লেখা আছে এই স্বাধীনতায়। বহুরূপে সে ঈশ্বর মাঝে মাঝে দেখা দেন। তাই রাস্তাজুড়ে একদল নাছোড় যুবতী লিখে রেখেছিল— ইয়ে কালি রাত সে আজাদি!

আন্দোলনের দ্বিতীয় ও সর্বাত্মক স্লোগান ছিল থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে লড়ার ডাক। বিষয়টি একটু বিশদে আলোচনার অপেক্ষা রাখে। হুমকি কী ও কেন তাই নিয়ে অ্যাকাডেমিক প্রবন্ধ লেখার কোনও ইচ্ছা নেই। তবুও গোদা মাপে কর্মজগতের হুমকি সংস্কৃতির একটা শ্রেণিবিভাগ করতে চাই। কর্মজগতের হুমকি মূলত তিনভাগে বিভক্ত। এক. অতিরিক্ত কাজ করানোর জন্য; দুই. অনৈতিক কাজ করানোর জন্য; এবং তিন. এটি খানিক অদ্ভুতুড়ে। ভুক্তভোগী মাত্রই বুঝবেন অবশ্য। কাজ না করানোর জন্য।

এই তিনে মিলে এক সুবিশাল সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে বঙ্গপ্রদেশে। এর মধ্যে অতিরিক্ত কাজ করানোর দাবিতে মালিকপক্ষের হুমকিটি সুবিদিত। পুজোর আগে কর্পোরেট সেক্টরে টার্গেট পূরণের চাপে অন্তত তিনটি আত্মহত্যার খবর এসেছে। ডাক্তারদের আন্দোলনের সূত্রেও আপামর জনতা এতদিনে জেনে গেছেন যে ডিউটি টাইম তাদের টানা করতে হয় তা একাধারে অমানবিক ও নৃশংস। এ পোড়া দেশ এখন শাইনিং হতে চাইছে। তাই এ-দেশে অতিরিক্ত কাজের চাপ বাড়বে। অন্যথায় ছেঁটে ফেলার হুমকি চলবে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর তেমন জোরালো হয় না। কেননা বেসরকারি হলে পরিষেবা ভাল হবে জাতীয় মন্ত্র বুকে নিয়ে আমরা খুদকুঁড়ো জোটাতে নেমেছি। এই অশালীন চাবুক পেটার সংস্কৃতিতে আপনাকে স্বাগত। হাঁফ ফেলা, দম ফেলার অবকাশকে আলস্য বলে ধরা হবে এ-ভাবনা গত কুড়ি বছর আগেও এত সর্বাত্মক ছিল না।

দ্বিতীয় হুমকিটিই এই আন্দোলনের মূল উপজীব্য। অনৈতিক কাজের হুমকি। জুনিয়র ডাক্তারদের কথায় উঠে এসেছে হাসপাতালে যাবতীয় দুর্নীতির মূল মস্তিষ্ক উপরমহল থেকে চালিত হলেও কর্মী হিসাবে বাছা হত তাদেরকেই। এ-কাজ করার জন্য গণতান্ত্রিক কাঠামোকে কবর দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ফলে যাবতীয় কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে রয়েছে টানা পাঁচ বছর। অথচ কমিটিগুলো উঠে যায়নি। সেখানে ইলেকটেড মেম্বার বসে না। সিলেকশন হয়। এই সিলেকটেড মেম্বাররা ক্ষমতার অলিন্দে বাস করা লোকজন। তারা ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি নয়। এই দালালদের হাতে গোটা কলেজের ভার ন্যস্ত। গোটা কর্মসংস্কৃতির পরতে পরতে এদের রক্তচক্ষুর প্রভাব ছড়িয়ে আছে। স্বাস্থ্যব্যবস্থার এই দুর্নীতির স্বরূপ চিনতে পেরে শিউরে উঠেছে আপামর জনতা আর মেলাতে পেরেছে নিজেদের কর্মজগতকে। দোষ একা আসে না। অনুষঙ্গ নিয়ে আসে। তাই জাল ওষুধ, মৃতের সঙ্গে পর্ণোগ্রাফির মতো অভিযোগেও বিষয়টি ক্ষান্ত হয়নি। প্রভাবশালীদের মজলিশে মনোরঞ্জন করতে ছাত্রদের ব্যবহার করা হত এহেন বিকৃত সামন্ততান্ত্রিক অভিযোগ অব্দি উঠে এসেছে।

এরপর আসি অদ্ভুতুড়ে তৃতীয় হুমকির ধাঁচায়। এই নিরবচ্ছিন্ন দুর্নীতি আসলে বেঁচে থাকে প্যারালাল সিস্টেম সেট করার মাধ্যমে। এই সেট সিস্টেমে আপনি খাপ খাওয়াতে না পারলে ঘাড়ট্যাঁরা, প্রতিবাদী, ওঁচা, দলছুট হবেন। বহুরকমের ঘা-গুঁতো খেতে খেতে আপনার বদলির ফাইল ঘুরবে এ-দফতর থেকে ও-দফতরে। সিনিয়র যে-সব ডাক্তারেরা আন্দোলনের অভিভাবকের কাজ করছেন তাঁদের অনেকেই বদলি হতে হতে পরিযায়ী জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। আর দ্বিতীয় পদ্ধতি হল কাজ না করতে দেওয়া। পাতি বসিয়ে রাখা যাকে বলে। আপনার রাগ, রক্তশিখা আপসেই শুকিয়ে আসবে। এই বৃহৎ চলমান সিস্টেমের এক অপ্রয়োজনীয় নাটবল্টু হয়ে ঝুলে থাকতে থাকতে আপনি অন্তঃকরণে ক্লান্ত হবেন। একা হবেন।

এই তিনে মিলে থ্রেট সিন্ডিকেট চলছে। চলবে হয়তো আরও বহুদিন। গণতন্ত্রকে ভিতর থেকে বিকৃত করার খেলা এখন অতীত। এখন চল হচ্ছে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে বসিয়ে রেখে পাশাপাশি সুবিধা অনুযায়ী সিস্টেম তৈরি করে ফেলা। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মিটিংয়ে বারংবার নির্বাচনের দাবি তুলছিলেন তাঁরা। অন্যদিকে শাসকপক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গড়ে দেওয়ার দিকে চাপ দিচ্ছিলেন। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে জানি যে-সব স্থানে ঝামেলা বেধেছে সেখানেই এঁরা অন্তর্বতীকালীন কমিটির ফুলঝুড়ি ছুটিয়েছেন। সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো আর ফেরেনি। তাই ডাক্তারদের আন্দোলন কোথাও গিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনও বটে। দুঃখের ব্যাপার সেটাকে ফোকাল পয়েন্ট হিসাবে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে দুইরকমের বাধা আছে।

বাধা ১: এ-দেশের ও এ-রাজ্যের সরকার নীতিগত দিক থেকেই ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে। তারা এ ব্যাপারে সরাসরি কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের গুরুদের মুখাপেক্ষী। তাই বিভিন্ন সরকারি কর্মক্ষেত্রে ঠিকা (পড়ুন সিভিক) শ্রমিক নিয়োগের এত বাড়বাড়ন্ত। স্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনীহা দিন-কে-দিন প্রকট হচ্ছে। এর কারণ ভয় ও হুমকির সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা এবং সরকারপক্ষের সবরকম কায়েমি স্বার্থকে টিকিয়ে রাখা।

বাধা ২: স্বয়ং আমি ও আপনি। আমরা। দেশের বুনিয়াদি গণতন্ত্রের কাঠামো সম্পর্কে আমরা এতটাই অবিশ্বাসী হয়ে উঠেছি যে কোনও আন্দোলনের ভিতরকার দলীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজস্র গালগল্প শোনা ও ছড়ানোয় আমরা অধিকতর আগ্রহী হয়ে পড়েছি। এই সন্দেহ যদি সর্বাত্মক হত তাহলে তবু মানা যেত, কিন্তু আমরা শাসকপক্ষের রাজনীতির কাছে মাথা বিকিয়ে রেখে অপর দল সম্পর্কে এ-সন্দেহ প্রকাশ করে চলেছি। শাসকের দুর্নীতি, শাসকের প্যারালাল সিস্টেম, শাসকের দেখানো ভয়কে আমরা সর্বাগ্রে চিরকেলে নিয়মনীতি বলে মেনে নিয়ে তারপর তাদের সন্দেহগুলিকেই নিজেদের সন্দেহ বলে শিরোধার্য করে তুলেছি। এ-দেশের নাম ভারতবর্ষ। দেশের একটা সংবিধান আছে। সেই সংবিধানে বহুদলীয় গণতন্ত্র বলে একটা স্বীকৃত ব্যবস্থাপনা আছে। এই ব্যবস্থা সম্পর্কে একাধারে অত্যন্ত অনীহা থাকার ফলেই কি আমরা বারংবার আন্দোলনকে আদ্যোপান্ত অরাজনৈতিক হিসাবে দেখতে চাইছি?

এই পথে সিঁধ কেটে ঘরে চোর ঢোকে। তাই কিছুদিন ধরে মেধার বাড়বাড়ন্ত শোনা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। আন্দোলন নাকি মেধাবীদের। তারা যদি এত শোষিত হয় তাহলে আমরা যাই কোথা? পূর্ব-অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এর চেয়ে বড় বালাই কোনও নেতৃত্বের পক্ষে হয় না। জনবিচ্ছিন্নকরণের সবচেয়ে সুন্দর ডাকটি হল— ও বড় মেধাবী। এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা যায় বড্ড সহজে। তাই ‘মেধাবী’ ছাত্রদের সহজেই এলিট প্রতিপন্ন করে টাকার গদিতে বসে থাকা নেতাগণ হুঙ্কার ছাড়ছেন ‘সাব-অল্টার্ন’ সেজে। অবিলম্বে মেধার বালাই থেকে আন্দোলনকে মুক্ত করতে না পারলে ছুঁচ ফালে পরিণত হবে। হয়েছেও বা হয়তো অনেক স্থানে। কেননা সর্বশক্তিমান এজেন্সির সাপোর্ট আছে তাদের হাতে।

তবু বারবার মনে করিয়ে দেওয়া যাক আন্দোলন আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক। রাজনীতি-ব্যাতিরেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন হতে পারে না। কিন্তু তার চরিত্র গণ। তাই আন্দোলনের মিছিলে আপাত যুযুধান পক্ষও মিশে আছে রাজ্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় শাসকের বিরুদ্ধে। এদের নিজেদের মধ্যে হয়তো অন্য পঁচিশটা বিষয়ে ফাটাফাটি হবে। কিন্তু গণতন্ত্রের প্রশ্নে এরা একজোট হয়েছে। তাই প্রতিটা মিছিলে জাতীয় পতাকা এত জ্বলজ্বল করে উড়ছে।


*মতামত ব্যক্তিগত