তিনটি কবিতা
ক্ষত
ফনিমনসার কাঁটাতে লেগে থাকা ক্ষতচিত্রের দীর্ঘায়িত আলোড়ন
আশ্চর্য রূপকথা হয়ে শব্দ তোলে বিষাদবোনা দুঃখদিনে
শূন্য মাঠময় ভেসে বেড়ায় অসংলগ্ন ভালোবাসার পাঠক্রম
হারিয়ে যায় দুপুরের পাঠশালা, নৈঃশব্দের নীরব, নীরবতর গান।
মেঠো বাউলের ঝুলিতে যত উপচে ওঠে পরমান্ন সুখ
ততই বাড়ে নিরন্তর কাঁটার ছোবল, পথের দুয়ারে কান্না প্রবহমান
পুরানো ক্ষতের গায়ে প্রাচীন কবিরাজি, হলুদের ভেষজ গুণ…।
বিয়োগ ব্যথা অকাতর হৃদয়ের অতলে জ্বালায় দীপ
চলকে ওঠে দুঃখ দুঃখ খেলা আলো জ্বলে চিরায়ত তুলসীমূলে।
অসুখ
অসুখ সেরে গেলে সহজ বালকের মতো ছুঁয়ে যাব তোর প্রশান্তি
চিনিয়ে দেব বুড়ি ময়রার থান, সেঁয়াকুলের ঝোপ, ডাহুকের বাচ্চা
হিসেব এনে দেব গাঁ-গঞ্জের, চুপজলে যুবতীর স্নানকথা
তুই আবারও গান গাইবি বসন্ত দিনের, বাজবে পুরানো হারমোনিয়াম।
অসুখ সেরে গেলে বয়স বেড়ে যাবে আম-বট-জাম বৃক্ষের মতো
মোরামের রাস্তা সব পালটে যাবে কংক্রিটে উন্নয়নের সূত্র ধরে
বর-বউ খেলায় খেলায় সূর্যাস্ত হয়ে যায় ফেলে আসা সময়কাল।
অসুখ সেরে গেলে তোর বয়সের পাশে কিছু ব্যথা রেখে যাব
বহু জন্ম আগে তুই ছিলি সহজ কিশোরী, আমিও অবাধ্য কিশোর…।