ব্রতী মুখোপাধ্যায়
চন্দ্রনাথ বোসের মেয়ে নিঝুম। নিঝুম জানে তাথৈরা নিখিলেশের নাম দিয়েছে নেকলেস। নিখিলেশ চলায়বলায় একটু বেশি কোমল। নাহলে ফিল্মিহিরোর ভাব। সেজেগুজে সবসময়। খুশিখুশি চোখ। তিনতলার পুবমুখো ব্যালকনিতে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চেয়ে থাকে নিঝুম যখন কলেজে বের হয়।
অংশু ঠিক বিপরীত। ইনফরমাল। দাঁতগুলো বেরিয়ে থাকে। গায়ের রঙ চাপা, ঝকঝকে ত্বক। জোরে বাইক চালায়, আর ফ্ল্যাটের গেটে প্রায় দিনই– কলেজে পৌঁছে দেব?
এখনও ভ্যাবলা কারও নাম হয় ভাবতে পারে না নিঝুম। যখন দেখো, বাটিক প্রিন্টের পাঞ্জাবি প্যান্টের ওপর। বুকপকেটে কলম। কাঁধে ব্যাগ, শান্তিনিকেতনি। তার ভেতর তাথৈ বলে কবিতার বই, নিজের লেখা বই। লাজুক। সরাসরি চোখের দিকে তাকায় না। সবসময় আড়চোখে। ভ্যাবলাদার বয়েস কিছু বেশি, তবে হ্যান্ডসাম।
ইন্দ্রজিৎ প্লেয়ার। সেকেন্ড ডিভিশনে ফুটবল খেলে। মুখে খিস্তিখেউড়। দেখা হলেই নিঝুম দূরে সরে যায়। কাছাকাছি হলে গায়ে হাত দেবে। অসভ্য।
অঞ্জনদাও গায়ে হাত দেয়। তাথৈ বলেছে। অঞ্জনদা ব্যাঙ্কে কাজ করে। দিনকয়েক কলেজগেটে ভিকিরিভিকিরি চোখ। নিঝুম নিশ্চিত, তার জন্যেই অঞ্জনদা দাঁড়িয়ে থাকে।
নিঝুমরা দক্ষিণদিকের দোতলায় থাকে। হিস্ট্রি অব লিটারেচার সামনে নিয়ে এইসব ভাবতে ভাবতে একসময় খেয়াল হল ইলেকট্রিকের তারের ওপর কুচকুচে কালো কোন পাখি দুলতে দুলতে তার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে।
নিঝুমের হঠাৎই মনে হল নিখিলেশ, অংশু, ভ্যাবলাদা, ইন্দ্রজিৎ, অঞ্জনদা, কেউই চন্দ্রনাথ বোসের মতো না। মনে হতেই…