Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

রোবসন-কথা : দ্বিতীয় ভাগ

দেবাশিস মৈত্র

 

(প্রথম ভাগ এখানে)

 

পল রোবসন # ৩

এই ঘটনাটা যে সময়ের, পল রোবসন তখন খ্যাতির তুঙ্গে। রাষ্ট্র এবং সমাজ তখনও ‘দেশদ্রোহী’ বলে তাঁর কপালে উল্কি দেগে দেয়নি।

পরিচিত একজনের বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেছেন পল। অপরিচিত এক শ্বেতাঙ্গ ভদ্রলোক এগিয়ে এলেন তাঁর দিকে। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি পল রোবসন?’

পল হেসে বললেন, ‘হ্যাঁ। আপনি?’

ভদ্রলোক বললেন, ‘আমিও রোবসন!’

পল অবাক হয়ে চেয়ে রয়েছেন দেখে ভদ্রলোক বললেন, ‘আসলে আমি রোবারসন, তবে রোবসন বললেও ক্ষতি নেই। আমার ঠাকুরদার ‘রোবারসন প্ল্যান্টেশনে’ ক্রীতদাস ছিলেন আপনার বাবা। আমাদের বংশের পদবীটাই একটু পালটে নিয়ে উনি লিখতেন, ‘রোবসন’। আপনাদের আসল পদবী যে কী, সেকথা তো আর জানা ছিল না কারও!’

ভুবন-ছড়ানো খ্যাতির অধিকারী, বিশ্বের অন্যতম সেরা কণ্ঠশিল্পী হিসাবে সমাদৃত পল রোবসন ছিলেন অদ্ভুত নিরহঙ্কার, selfless এক মানুষ। জীবনে এই একবারই বোধহয় অহঙ্কারের সুর বেজেছিল তাঁর কথায়। গম্ভীর হয়ে কিছুক্ষণ ভদ্রলোককে নিরীক্ষণ করে পল বলেছিলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিন ভাই! বহু বছর আগে এক ক্রীতদাস পালিয়ে গিয়েছিল আপনার পূর্বপুরুষের ডেরা থেকে। সেইজন্যেই তো আজ সারা পৃথিবীর মানুষ আপনার বংশের পদবী কী তা জানতে পারছে!’

পল রোবসন # ৪

১৯২৭ সালে পল রোবসন সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করতে শুরু করেন। চামড়ার রঙের ভেদাভেদ সেখানেও ছিল, তবু নিগ্রো হওয়ার অপরাধে আমেরিকার তুলনায় ইংল্যান্ডে অপেক্ষাকৃত কম অপমান সহ্য করতে হত তাঁকে। ইংল্যান্ডে অনেকগুলি নাটক এবং ফিল্মে অভিনয় করেন তিনি। এর পাশাপাশি চলতে থাকে তাঁর গান, এবং সেই সূত্রে সারা ইউরোপ এবং আফ্রিকা জুড়ে ভ্রমণ। মাঝে মাঝে আমেরিকায় এসে কিছুদিন থাকতেন; ব্রডওয়ের কোনও নাটকে অভিনয় করতেন, অথবা দু’চারটি গানের প্রোগ্রাম।

এতদিন রোবসনের সঙ্গীতভাণ্ডারের সিংহভাগ জুড়ে থাকত আফ্রো-আমেরিকানদের মাটির গান– নিগ্রো স্পিরিচুয়াল, গোসপেল, অথবা নিগ্রো কয়েদীদের গান। এবার নানান দেশের লোকসঙ্গীত শিখতে শুরু করেন রোবসন। শুধু পাণ্ডুলিপি দেখে গান গাওয়া নয়, সেইসব ভাষাও তিনি শিখতে থাকেন। রোবসনের মন্ত্রশিষ্য, আর এক কিংবদন্তী গায়ক হ্যারি বেলাফন্টে এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, রোবসন ২৫টি বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন, তার মধ্যে ১৪টি ভাষা তিনি বলতে, পড়তে এবং লিখতে পারতেন।

রোবসনের জীবন এবং তাঁর চিন্তাধারা অনেকটাই বাঁক নেয় স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময়। স্বৈরাচারী জেনারেল ফ্রাঙ্কোর বিরুদ্ধে স্পেনের রিপাবলিকানদের লড়াইয়ে যোগ দিতে পৃথিবীর ৫২টি দেশ থেকে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ স্পেনে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। অনেক প্রতিভাবান লেখকও ছিলেন তাঁদের মধ্যে, ছিলেন ক্রিস্টোফার কডওয়েল, পল নিজান, র‍্যালফ ফক্স, ডেভিড গেস্ট-– এঁরা সকলেই স্পেনের গৃহযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। রোবসন স্পেনে গিয়েছিলেন ১৯৩৮ সালে। সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছে তিনি চেষ্টা করেছিলেন পরাজয়ের মুখোমুখি দাঁড়ানো ইন্টারন্যাশনাল ব্রিগেডকে অনুপ্রাণিত করতে। স্পেন থেকে ফিরে আসার পর রোবসন ঘোষণা করেছিলেন, “The artist must elect to fight for Freedom or for Slavery. I have made my choice. I had no alternative.” এর পর থেকেই রোবসন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলনের পাশে খোলাখুলিভাবে দাঁড়াতে শুরু করেন।

ইংল্যান্ডে থাকার সময়েই রোবসনের প্রথম সোভিয়েত দেশে যাত্রা। পরে আরও অনেকবার সেদেশে গান গাইতে গেছেন তিনি। তাঁর আত্মজীবনী ‘Here I stand’-এ রোবসন লিখেছিলেন, রাশিয়ায় গিয়েই তিনি প্রথম অনুভব করেন যে, তাঁর চারপাশের প্রতিটি মানুষ তাঁকে একজন মানুষ হিসাবেই দেখছে, কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে নয়। ঠিক এই কারণেই পরে নিজের ছেলেকেও তিনি পড়তে পাঠিয়েছিলেন রাশিয়ায়। তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর ছেলে মানুষ পরিচয় নিয়ে বাঁচতে শিখুক, নিগ্রো পরিচয় নিয়ে নয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রাক্কালে রোবসন সপরিবারে ফিরে আসেন আমেরিকায়। সেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষা করে ছিল প্রথমে বীরের সম্বর্ধনা এবং পরে চূড়ান্ত অপমান ও নির্যাতন।

সঙ্গের ছবিটিতে Showboat নাটকের একটি দৃশ্যে পল রোবসন।

 

পল রোবসন # ৫

ইংল্যাণ্ডে থাকাকালীন, বিশেষত স্পেনীয় গৃহযুদ্ধ স্বচক্ষে দেখে আসার পর থেকে, পল রোবসন ক্রমশ বামপন্থীদের কাছাকাছি আসতে শুরু করেন। একাধিক ব্রিটিশ বামপন্থী সংগঠনের কাছের লোক হয়ে ওঠেন তিনি। অনেক ব্রিটিশ বন্ধু তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, এত খোলাখুলি নিজের কমিউনিস্ট প্রীতির কথা ঘোষণা না করতে। রোবসন কর্ণপাত করেননি।

১৯৩৯ সালে পল এবং তাঁর স্ত্রী এসল্যাণ্ডা রোবসন ব্রিটেনের পাট চুকিয়ে দেশে ফিরে এলেন। অ্যামেরিকার মাটিতে কমিউনিস্ট বিদ্বেষ তখনও অত প্রবল হয়ে ওঠেনি। তখন বিশ্বের সামনে সবচেয়ে বড় বিপদ, হিটলারের ফ্যাসিবাদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত রাশিয়া তখন অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে জোট বাঁধতে চলেছে। ফলত পল রোবসনকে তাঁর সোভিয়েত-প্রীতির জন্য সে সময়ে বিশেষ কোনও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়নি। বরং ঠিক বিপরীত ঘটনাই ঘটেছিল। ১৯৩৯ সালে আর্ল রবিনসনের লেখা এবং পল রোবসনের গাওয়া সুদীর্ঘ ব্যালাড— ‘দ্য ব্যালাড অফ দ্য অ্যামেরিকানস’– রেডিওতে সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকে সারা দেশ জুড়ে রোবসন বীরের সম্বর্ধনা পেতে থাকেন।

‘দ্য ব্যালাড অফ দ্য অ্যামেরিকানস’ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত আমেরিকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান। এক দীর্ঘ ন্যারেটিভ (পাশ্চাত্য সঙ্গীতের পরিভাষায় এই ধরনের গানকে বলা হয় Cantata), যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পরিচয়বিহীন এক কথক বলে চলেছে তার নিজের কথা, তার দেশের কথা। সে বর্ণনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গড়ে ওঠার ইতিহাস, দেশের বরেণ্য নায়কদের কথা শ্রোতাদের শুনিয়ে চলেছে; আর কিছুক্ষণ পরপরই কোরাসে গানের সুরে শ্রোতারা যেন তার কাছে জানতে চাইছে-– কে সে, কী তার পরিচয়? কথক জবাব দিচ্ছে, ‘আমি হলাম ইঞ্জিনিয়ার, আমি গায়ক, আমি জমাদার, ছুতোর, শিক্ষক, চাষী, কেরানি। আমি ট্রাক-ড্রাইভার, খনি-শ্রমিক, মাটি-কাটা মজুর, আমি সমস্ত ইত্যাদি আর প্রভৃতির দলে।’

প্রশ্নকর্তারা এই উত্তর শুনে সন্তুষ্ট নয়। তারা জানতে চায়, ‘তুমি কি আমেরিকান?’ আর তখন পল রোবসন তাঁর সুগভীর ব্যারিটোনে উত্তর দিচ্ছেন–

‘Am I an American?

I’m just an Irish, Negro, Jewish, Italian,

French and English, Spanish, Russian, Chinese, Polish,

Scotch, Hungarian, Swedish, Finnish, Greek and Turk and Czech and double-check American.’

‘দ্য ব্যালাড অফ দ্য আমেরিকানস’ এমন এক স্বপ্নের আমেরিকার কথা শোনায় যেখানে সাদা-কালোর ভেদাভেদ নেই, গরিব-বড়লোকের ভেদাভেদ নেই, যে দেশের প্রতিটি নাগরিক একে অপরের সমান। এমন এক সাম্যবাদী অ্যামেরিকার স্বপ্নই তো রোবসন দেখতেন। আর রাষ্ট্র চাইত, নাগরিকরা এই স্বপ্নেই আপাতত বিভোর হয়ে থাকুক, কারণ দুর্দিন ঘনিয়ে আসছে দেশের সামনে। বহু নাগরিককে এখন যুদ্ধে পাঠাতে হবে, আর বাকিদের তৈরি থাকতে হবে সবরকম কৃচ্ছসাধনের জন্য।

মাত্র কয়েক বছর, তারপর অবস্থা দ্রুত বদলে গেল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হল। অতঃপর জার্মানি আর অস্ট্রিয়াকে মিলে-জুলে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার পর রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে শুরু হল ঠাণ্ডা যুদ্ধের দিন। রোবসন এই দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর জন্য অক্লান্তভাবে সওয়াল করতে শুরু করলেন। তারই সঙ্গে চলতে থাকল মার্কিন সমাজের যাবতীয় অন্যায় আর অসঙ্গতির বিরুদ্ধে তাঁর সোচ্চার প্রতিবাদ। তখন বিশ্ব জুড়ে বিরাজ করছে শান্তির বাতাবরণ, আর দেশের ভিতরের অবস্থা দ্রুত বদলাচ্ছে। সাদা-কালোর সঙ্ঘাত ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে সারা দেশ জুড়ে। চারের দশকের সেই দিনগুলিতে তো চিন্তাও করা যেত না যে, একদিন কোনও কালো মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ; শ্বেতাঙ্গদের পাশাপাশি হাজার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ সৈনিক যুদ্ধে যে অবদান রেখেছে, তা তখন ইতিহাস। কৃষ্ণাঙ্গরা আবার আগের মতো নিজভূমে পরবাসী, অবাঞ্ছিত সংখ্যালঘুর দল। ‘দ্য ব্যালাড অফ দ্য অ্যামেরিকানস’-এর কথা মানুষ ভুলে গেছে।

ইতিমধ্যে ১৯৪৫ সালে রুজভেল্টের মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট হয়েছেন হ্যারি ট্রুম্যান। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কুখ্যাততম এই প্রেসিডেন্টের আমলে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্রমশ বাড়ছে কমিউনিস্ট বিদ্বেষ, কৃষ্ণাঙ্গ আর ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষ, আর রাষ্ট্র গোপনে তার অস্ত্রে শান দিয়ে চলেছে-– নাগরিক অধিকার নামক অবাঞ্ছিত বস্তুটিকে দেশ থেকে সমূলে উৎপাটিত করতে হবে।

পল রোবসন একই সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ এবং কমিউনিস্ট মনোভাবাপন্ন। সাদা মানুষদের কাছে রোবসন ক্রমশই অসহনীয় হয়ে উঠছেন। আর রাষ্ট্র? নেহাত রোবসনের বিশ্বজোড়া খ্যাতি আর জনপ্রিয়তার কারণে রাষ্ট্র তখনও এই মূর্তিমান উপদ্রবটিকে সহ্য করে চলতে বাধ্য হচ্ছে বটে, কিন্তু আর বেশিদিন যে তা করবে না, সেই আভাস তখন মিলতে শুরু করেছে।

চারজন কালো মানুষের লিঞ্চিং-এর (পাথর ছুঁড়ে হত্যা) এক ঘটনার পর রোবসন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করলেন, পূর্ব-প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও লিঞ্চিং-এর বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন ট্রুম্যান তখনও করেননি। ট্রুম্যান জবাব দিলেন, সেরকম আইন প্রণয়নের উপযুক্ত সময় আসেনি। রোবসন বললেন, তাই যদি হয়, তাহলে কৃষ্ণাঙ্গরা এবার থেকে তাদের নিজেদের অধিকার নিজেরাই বুঝে নেবে। ভয়ঙ্কর ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রুম্যান রক্ষীদের ডেকে রোবসনকে ঘর থেকে বার করে দিলেন।

এইবার পাওয়া গেল সুযোগ! খোদ প্রেসিডেন্টকে হুমকি দেওয়া? এমন দুর্বিনীত নাগরিকের প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। সরকারি নির্দেশে শুরু হল রোবসনের উপর এফ-বি-আইয়ের নজরদারি। তাঁর নামে গোপন ফাইল খোলা হল এফ-বি-আইয়ের দপ্তরে।

এসময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত বৈরিতা চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছেছে। বহু বছর চোখের আড়ালে থাকার পর আবার আবির্ভাব ঘটেছে সাদা চামড়ার লুম্পেনদের কুখ্যাত সংগঠন কু-ক্লুক্স-ক্ল্যানের। এরা ছিল ঘোর নিগ্রোবিদ্বেষী, ইহুদিবিদ্বেষী, গণতন্ত্রবিরোধী এবং নাগরিক অধিকারেরও বিরোধী। চোরাগোপ্তা আক্রমণে এরা প্রায়ই খুন করত অসহায় নিগ্রো, ইহুদি, চিনা এবং অন্যান্য অভিবাসীদের। বহু বছর আগে, ১৮৯১ সালে, এই কু-ক্লুক্স-ক্ল্যানের পৈশাচিকতা নিয়ে ব্রিটিশ লেখক আর্থার ক্যানন ডয়েল লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত শার্লক হোমস কাহিনি, ‘The five orange pips.’ অনেক বছর ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার পর কু-ক্লুক্স-ক্ল্যান আবার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে নখে-দাঁতে শান দিতে শুরু করেছে, অবশ্যই রাজনৈতিক নেতাদের সস্নেহ প্রশ্রয়ের দৌলতে। যুদ্ধ-পরবর্তী সেই অবিশ্বাস আর অসহিষ্ণুতার দিনগুলিতে শ্বেতাঙ্গদের উপর এই সংগঠনের প্রভাব অতি দ্রুত বেড়ে চলেছে।

পল রোবসন প্রথম থেকেই ছিলেন কু-ক্লুক্স-ক্ল্যানের চক্ষুশূল। কিন্তু অত্যন্ত জনপ্রিয় এক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ার দরুণ চট করে তাঁর উপর আক্রমণ শানাতে সাহস পাচ্ছিল না তারা। সেই সুযোগ এল রোবসন দেশের সরকারের বিষনজরে পড়ার পর। নিউ ইয়র্ক স্টেটের পীকস্কিল-এ রোবসনের এক একক সঙ্গীতানুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কু-ক্লুক্স-ক্ল্যানের পৈশাচিকতা এক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছল। সরাসরি রোবসনকে হত্যার চেষ্টা হল এই প্রথম।

পীকস্কিল-এর সপ্তাহব্যাপী ঘটনাবলী আজও রাষ্ট্র-সমর্থিত গুণ্ডাদের ভয়াবহ দাঙ্গাবাজির এক অনন্যসাধারণ উদাহরণ হয়ে আছে।

 

(তৃতীয় ভাগ এখানে )