Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

আন্দোলন চলবেই, প্রয়োজনে তীব্র করা হবে… : GKCIET-র ছাত্রছাত্রীরা

মিতুল দত্ত

 

মালদহের গনি খান চৌধুরী ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি। সংক্ষেপে 'GKCIET'। টিভিতে দেশ-দুনিয়ার খবর রাখেন, সংবাদপত্রের পাতা ওল্টান, সোশাল মিডিয়ায় চোখ রাখেন এমন কেউই বোধহয় অবশিষ্ট নেই, যারা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম জানেন না৷ এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা বিগত সাত বছর ধরে এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার শিকার, যেখানে শিক্ষা সমাপ্ত হবার পর তারা জানতে পারছে যে শিক্ষা শেষে কলেজ থেকে প্রাপ্ত শংসাপত্রের কোনও স্বীকৃতি বা অনুমোদন নেই, অর্থাৎ চাকরির বাজারে সার্টিফিকেটগুলি বিচার্যই নয়৷ এর প্রতিবাদে প্রথমে মালদায় ও পরে কলকাতায় প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, ডেপুটেশন, ও অবস্থান বিক্ষোভে নামে গনি খান কলেজের ছাত্রছাত্রীরা৷ ছাত্রছাত্রীদের এই লড়াইয়ের প্রথম থেকেই চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম তার সীমিত ক্ষমতা নিয়ে তাঁদের পাশে থেকেছে। দীর্ঘ কয়েক মাসের লড়াইয়ের পর এই মুহূর্তে কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন তা আরেকবার বোঝার চেষ্টা করল চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম। বিগত ৬ই সেপ্টেম্বর রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশনসহ এক মহামিছিলের ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম-এর তরফ থেকে কথা বললেন মিতুল দত্ত।

গত ৬ই সেপ্টেম্বরের মিছিল কি সফল?

অবশ্যই। আমরা গনি খান কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ভাবতেই পারিনি কলকাতা শহরের বুকে আমরা একটা এত বড় মিছিল করতে পারব।

কারা যোগ দিয়েছিলেন এই মিছিলে?

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজসহ বহু ছাত্রছাত্রী এই মিছিলে আমাদের সঙ্গে হেঁটেছেন। এছাড়াও আমাদের জন্য পথে নেমেছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্টজন।

কলকাতার ছাত্রসমাজ আর নাগরিক সমাজ, এই মিছিলে তাঁদের ভূমিকা কী ছিল?

এই মিছিলে কলকাতার ছাত্রসমাজের যোগদান, নৈতিক ও আদর্শগতভাবে আমাদের অনেকখানি শক্তি যোগাল। আমরা বুঝতে পারছি যে কয়েকশো কিলোমিটার দূরের জেলা সদরের একটি কলেজ থেকে এলেও, এই শহরে আমরা একা নই। ছাত্রদের পাশাপাশি কলকাতার নাগরিকবৃন্দও আমাদের সাহস যুগিয়েছেন৷ সবাই এখন বুঝতে পারছে যে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচালিত একটি শিক্ষাকেন্দ্রের প্রায় ৮০০ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে।

রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে?

মাননীয় রাজ্যপাল আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে উনি পুরো বিষয়টি জানিয়ে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি লিখবেন।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সম্প্রতি কলেজের বৈধ শংসাপত্র ও মডিউলার সিস্টেমের সমাধান করে যে গেজেট প্রকাশ করেছে, তাতে এই আন্দোলনের নৈতিক জয় হল। নয় কি?

আমরা তা মনে করি না। কারণ এক্ষেত্রে বি টেক সার্টিফিকেট কে দেবে তা আমরা জানি না। আগেও একইরকমভাবে আমাদের জানানো হয়েছিল যে NIT আমাদের বৈধ শংসাপত্র দেবেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা তা দেননি। অতএব আমরা মন্ত্রকের এই ঘোষণায় উল্লসিত বোধ করছি না। তাছাড়া আমাদের আন্দোলনের আরও বেশি কিছু দাবিদাওয়া আছে, যেমন ল্যাটেরাল অ্যাডমিশন প্রক্রিয়ার বৈধতা আদায় ইত্যাদি। ফলে, আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ কি কোনও আলোচনার জন্য ডেকেছে ছাত্রছাত্রীদের?

ওনারা আলোচনায় ডাকবেন আমাদের? আমাদের ফোনই কেউ তোলেন না, উলটে ধমকি দেন।

ম্যাকাউটের সঙ্গে সোমবার যে মিটিং, তার বিষয়বস্তু কী?

মন্ত্রকের যে গেজেটের কথা বলা হচ্ছে, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে আমাদের ভর্তি নিতে মাক্যাউট-এর তো কোনও অসুবিধা থাকার কথা নয়। যদি তারা এই গেজেটের বক্তব্য মেনে নেন কিন্তু আমাদের ভর্তি নিতে না চান, তাহলে তাদের তা লিখিত জানাতে হবে।

ডিপ্লোমাধারী ছাত্রছাত্রীরা কি এবার বি.টেক-এ ভর্তির সুযোগ পাবে?

বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।

যে সমস্ত প্রাক্তন ছাত্রদের সার্টিফিকেট অবৈধ ঘোষিত হয়েছিল, তা কি বৈধতা পাবে?

যতক্ষণ না কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন, এই বিষয় নিয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

আন্দোলনের আগামী রূপরেখা কী?

আন্দোলন চলবে৷ কলেজ কর্তৃপক্ষ এই মাসের ১১ তারিখ কলেজ খোলা নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ভর্তি না নেওয়া হলে, আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে, প্রয়োজনে আমরা দিল্লি যেতেও পিছপা হব না।