প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
১. প্রতিপদ
প্রারম্ভে শঙ্খধ্বনি, নাটমন্দিরে
অর্পণ করি দেবী… রক্তাভ পাখি
উড়ে আসে, ঝাপটায় নিবিড় শরীরে
পায়ে নয়, আমি তার ঠোঁটে ঠোঁট রাখি…
২. দ্বিতীয়া
দেবী তমসাবৃতা, ঘন হন আরও
যেভাবে বজ্রঘোর, বিহান নিনাদে
করপদ্মে তুলে ধরি অস্থি, পাঁজরও
আমায় লেহন করো, স্বাদে-বিস্বাদে
৩. তৃতীয়া
জটার গভীরে যেন সর্পানুভূতি
দংশনে দংশনে কিমাকার আলো
চরণামৃতে দেবী, গরলে বিভূতি
দ্বিখণ্ড জিভে বিদ্যুৎ চমকাল…
৪. চতুর্থী
জ্যা মুক্ত করো তবে এই দেহভার
ছিলার তন্ত্রী জানে অঙ্গুলিহেলন —
কত দূরে মোক্ষ! দেবী সারাৎসার
তূণীরে রেখেছ ভরে কী সন্মেহন!
৫. পঞ্চমী
ত্রম্ব্যকে হানো দেবী, করাল নিশান
আহা সে বক্ষভেদী, যেন শঙ্করী
বিল্বপত্রে রজঃ… ক্লীং… সামগান
সুরাসুর মর্দনে, ভীম তরবারি…
৬. ষষ্ঠী
স্পর্ধাচিহ্ন দেবী, রেখেছ বিভাবে
শানানো চক্র জানে ক্ষত প্রয়োজন
ঘূর্ণনে ঘূর্ণনে ঘাতক স্বভাবে
ছিন্ন করো এ বিকার, আগ্রাসী মন
৭. সপ্তমী
প্রহারে বিদীর্ণ করো গুহাবর্ত রাত
আহা ঘুমজাগানিয়া, শুক-সারি আলো
মুষলে রেখেছ দেবী, প্রথম আঘাত
বিস্ফোরণ শেষে ব্রহ্মাণ্ড জন্মাল…
৮. অষ্টমী
তমঃ, রজঃ, সত্ত্বে দেবী অষ্টাদশী
অগ্নিজিহ্বা জুড়ে ত্রিশূলের ছায়া
ত্রিফলায় গেঁথে তুলি ত্রিখণ্ড শশী
সূর্য গলাধঃ করে, এমন বেহায়া…
৯. নবমী
শান্তি! শান্তি, দেবী! যুদ্ধের ইতি
মোছো রক্ত, ক্লেদ মোছো শিশিরকণায়
নিবেদন করি এই কমলাক্ষ প্রীতি
তৃপ্ত হও, তৃপ্ত হও মাতৃবন্দনায়!
১০. দশমী
এই তবে শেষ, দেবী, ভাসান-প্রহর
বরাভয়ে দেখা দাও মঙ্গলালোকে
জলের অতলে জল, মাটি, কাঠ, খড়
শতাব্দী ডুবে যায় অলিখিত শ্লোকে…