তিনটি কবিতা
রিসর্ট
১
রিপুভ্রমণে কোনও প্রস্তুতি লাগে না। শুধু বাইপাসে গাড়ি থামিয়ে মদ তুলে নিতে হয়। কাউন্টারে যে ছেলেটা খুচরো ফেরত দেয়, তোমায় দেখে বাঁকা হাসে, অস্বস্তি দেয়, তাকে চিনে রাখো। ও জানে কোন পকেটে তুমি অফ করে রেখেছ মোবাইল! ও জানে কোথায় কোন জঙ্গলে বাংলো বুক করা আছে। অথবা কম আঁচে কতক্ষণ মুরগি রোস্ট হলে তোমার খেতে ভালো লাগে, পাঁজরের পুরোনো ব্যাথা ইত্যাদি ইত্যাদি..
২
রাত বাড়লে আলো নিভিয়ে সিগারেট হাতে পায়চারি করো। অপেক্ষায় থাকো মদ খেয়ে কেয়ারটেকার কখন ঘুমোয়, বা ঘুমোনোর ভান করে, আর কখন নিঃশব্দে কোন দরজা খুলে যায়। সারারাত ধরে খাদান থেকে কয়লা ওঠে। হেডলাইট নিভিয়ে আসে ট্রাক। অবৈধ খননের ঘামে মাটি ভিজে যায়।
৩
চেক আউট। ঘর খালি হলে বুড়ো এসে দাগ-ধরা চাদর বদলাবে। তার ক্ষয়াটে আঙুলে নোট গুঁজে দিতে দিতে দেখো, ক’দিনের কাজ লেগে আছে!
জেন
এই যে এত কথা বলছি
আসলে বলা হচ্ছে না কিছুই
চামড়ার নীচে জমে উঠছে
আঁধার-গিঁট…
কখন বোমের মতো ফাটবে..
টেম্পো এল।
কোনও ভাড়া উঠে যাচ্ছে অন্য কোথাও,
কার হাত থেকে বাসন পড়ে গেল
কলতলায়
মুহূর্তের ভেতর
শূন্য নিয়ে বসে আছি,
তবু ঘুম পাচ্ছে না একফোঁটাও
আলো আর হাওয়া এসে
ভাসিয়ে দিচ্ছে
অপেক্ষার উঠোন।
ট্রামচালক, আপনাকে
আচ্ছা, সেই পরিত্রাণহীন সন্ধ্যায় দাঁড়িয়ে
আপনি ঠিক কী ভাবছিলেন?
মেঘের কী রঙ ছিল সেদিন?
কানে এসেছিল কোনও ঘাইহরিণীর ডাক?
সামান্য কি অন্যমনস্ক ছিলেন?
গোপন প্রেমিকা টেমিকা নিশ্চয়ই নয়..
স্ত্রীর অসুখ? পড়ানোর খরচ?
হ্যাঁ, সেই চুয়ান্ন সালে কতই বা মাইনে ছিল আপনার?
সেদিন বরফ পড়েছিল কলকাতায়…
আপনার মনে আছে?
কারণ বরফের চেয়ে বেশি শান্ত ও পরিহাসময়
কোনও শোক তখনও অবধি খুঁজে পায়নি কেউ।
বাদ দিন..
শুধু ভেবে বলুন,
সেই মরা আলোর দিকে তাকিয়ে
আপনি কি একবারের জন্যও বুঝতে পেরেছিলেন
ওই ধুতি, মলিন চেকশার্ট…
আর কেউ নয়,
আপনারই যমজ?