Site icon ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম

দুটি বই, দুশো ব্যক্তিত্ব!

যশোধরা রায়চৌধুরী

 

I have always imagined that Paradise will be a kind of library.

―Jorge Luis Borges

বইদের কাছে কেন যে যাই আমরা? বইরা ব্যক্তিমানুষের বিকল্প, কে যেন কবে যেন মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তারপর থেকে বই পাশে নিয়ে ঘুমনো, মাথার কাছে বই নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখা। বইয়ের শেষ পাতার কাছাকাছি আসতে আসতে গলায় ব্যথা ব্যথা। উপন্যাসের চরিত্রদের সঙ্গে কথোপকথন। এইসব পাপ ঢুকে গেল আমার সিস্টেমে।

তারপর থেকে বইদের দিলাম অকারণ দৈবী মাহাত্ম্য। কেউ বই ধার নিয়ে ফেরত না দিলে তাকে জন্মের মতো আড়ি করেছি। কেউ বইয়ের মলাট সামান্য ছিঁড়ে দিলেও ক্ষিপ্ত হয়েছি, যেন গায়ের চামড়া তুলে নিল কেউ।

সেইসব সময়ের পর থেকে বইয়েরা আবার তো কতভাবে সম্পর্কিত হল আমাদের প্রজাতির সঙ্গে। ভালোমন্দের মাঝে জানা গেল পৃথিবীর শেষ বইয়ের দোকানগুলিও বুঝি প্রায় অবলুপ্ত প্রজাতির মতো ধীরে ধীরে ডানা গুটিয়ে নিচ্ছে। তবু তো দুই মলাটে ধরা স্বপ্নগুলোকে আমরা এখনও বইই বলি। আর পড়ার সময়ে, বইকে তার পার্সোনালিটি দিয়েই চিনি।

আজ কথা বলব দুটি বই নিয়ে। এক সুজিত দাসের বই “গুডমর্নিং, কলকাতা”। দুই, সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের বই, “দ্রিঘাংচুর দিগ্‌দর্শন”।

আজকাল, বইকে যারা সবচেয়ে বেশি ধোঁকা দিয়েছে বলে কথিত, সবচেয়ে পায়ের তলার মাটি নিয়ে নিয়েছে বলে জ্ঞাত, সেই ইন্টারনেটের কল্যাণে, ছোট ছোট, চৌকো গদ্যে পাঠকের মতি খুব। চৌকো গদ্যকে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ গল্প উপন্যাস এবং ক্ষুদ্র শরীরের কবিতাদের থেকে বেশি জনপ্রিয় হতে, কেননা গদ্য চিরদিন পদ্যের চেয়ে বেশি জন কল্যাণকারী, সংযোগকারী বোধ হয়ে থাকে। আবার দীর্ঘ গদ্যের ভার ও দায়িত্ব নিতে অধুনার পাবলিক খুব একটা স্বস্থ বোধ করেন না। তাই এই মাঝারি আর চৌকো গদ্য লিখছেন লেখক প্রাণভরে। আর পাঠক পড়ছেন টু মিনিট নুডলের মতো, থ্রি মিনিট রিড। মানব মনকে ধরে রাখার জন্য নাকি ওই বড় জোর থ্রি মিনিটই ঠিকঠাক। অনেকে আবার ফোন থেকে ইন্টারনেট জাত সব পত্রপত্রিকা আদি পড়েন বলে, তাদের একখানা বড়জোর সাত ইঞ্চি স্ক্রিনে আঁটা যতটুকু টেক্সট, ততটুকুর মধ্যেই ধরে দিতে হবে সত্যমিথ্যা।

এতে ক্ষতি নেই সাহিত্যের। ক্ষতি ভাবলেই ক্ষতি, কিন্তু পাঠক লেখকের তরজার ভেতরে অন্তত সংযোগের প্রয়োজনটা তো কেউ অস্বীকার করেন না। লেখক লিখছেন তো পাঠকেরই জন্যে। তিনি না পড়লে গতি কী? তাই পাঠকের প্রযুক্তি অনুযায়ী লেখককে ফরম্যাট পালটাতেই হবে। মানিয়ে নিতে হবে প্রযুক্তিগত প্রয়োজনগুলোর সঙ্গে।

প্রশ্ন হল, এই সব চৌকো গদ্য ফোনসই, চোখসই, দ্রুতগামী বহুগামী চঞ্চলমতি পাঠকের মনসই, হতেই পারে, কিন্তু তাই বলে তাদেরকে কি বইতেও আটকাতে হবে, সেই একই ফর্মে? বইয়েরা, সেই আদিকাল থেকে যারা টেক্সট আঁকড়ে ঘুমোয়, তাদের কি নতুন মাপের এই ছোট গদ্যেই খুশি থাকতে হবে?

অন্তত এই দুই লেখক ভেবেছেন, হবে। ভেবেছেন, গদ্যদের নামকরণ করা যাক, নামকরণের শুদ্ধিকরণেই জাতে তুলে দেওয়া যাক চৌকো বা ঈষৎ লম্বাটে লেখাদের।

ছায়া কবিতা বা মায়া গদ্য। গুডমর্নিং কলকাতায় এইভাবেই টেক্সটগুলোকে নামাঙ্কিত করতে চেয়েছেন সুজিত দাস। ছায়া কবিতা কী? মায়াগদ্যই বা কাকে বলে? এর আবিষ্কর্তা কি সুজিত দাস নিজে? নাকি আগেও এমন লেখা লেখা হয়ে গেছে?

আমার কাছে, সুজিত দাসের এই লেবেলিং প্রয়াস খুব প্রয়োজনীয় থাকে না। ফেসবুকের স্ট্যাটাস যখন থেকে খুব জনপ্রিয় হল, আমাদের হাসাহাসি হত, এইবার লোকজন স্ট্যাটাস সমগ্র বার করবে। এত ভাল গদ্য ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখা হয়ে গিয়েছে মানুষের, যে সত্যিই একাধিক বই আমরা হাতে নিয়ে দেখতে পাচ্ছিও, ফেসবুক চালু হবার চোদ্দ বছরের মধ্যে।

তাই, গুডমর্নিং কলকাতার এ সব লেখাকেও, অনায়াসে ফেসবুক স্ট্যাটাসের সংকলন বলে আন্ডারপ্লে করা যেত। অথবা এসব লেখাকে আদৌ লেবেলিং না করেও থাকা যেত। কেননা, লেবেলিং, ব্যাপারটার তো বিরোধীই সুজিত দাস। তা তো স্পষ্ট তার “ভূমিকা বাদ” এই ঘোষণা থেকেই। তিনি তো বলছেনই, স্পর্শে দস্তানা থাকতে নেই। বলছেন প্রতিটি কবিতা তীব্র স্পর্শদোষে দুষ্ট হয়ে উঠুক। এবং বলছেন, নিঃসঙ্গতার কোনও ভূমিকা নেই। গুডমর্নিং কলকাতা এক অনার্য ডায়ালেক্ট। বিষণ্ণ ফোর-প্লে।

সুতরাং, লেখাগুলোর ভেতরেই প্রবেশ করা অনেক কাজের কাজ। অন্তত টেক্সট হিসেবে এই লেখাগুলো নিঃসন্দেহে রিচ টেক্সট। নিজেকে ব্যাপৃত রাখার জন্য এটুকুই যথেষ্ট নয়কি? কবিতা ধরলে কবিতা, গদ্য ধরলে গদ্য, সত্য বললে ম্যাজিক সত্য আর মিথ্যা বললে, সুন্দর মিথ্যা, শুশ্রূষার মিথ্যা।

বইয়ের শিরোনাম যতটাই কলকাতার, বইয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে ততটাই অ-কলকাতা এসে হানা দেয় পাঠকের ওপরে। এ বই তো আসলে কলকাতা থেকে বহুদূরের এক অতিথির, অথবা বেঘর বেসাহারা মানুষের। এ বই তো রঙ্গিত রায়ডাক তিস্তা আত্রেয়ীর, তোর্ষা বালাসন জলঢাকার, কালজানি মহানন্দার। এ বই কীভাবে কলকাতার হয়? এ বইয়ের ছত্রে ছত্রে তো বালিগঞ্জ টালিগঞ্জের পাশাপাশি রয়েছে চালসা খুনিয়া মোড় সুকনা। গানের মতো চলনে কখনও বা এ বই আবিষ্ট করে, আর কখনও তুলে নিয়ে যায় শ্লেষ ব্যঙ্গ বঙ্কিম এক ধরনের গড়ানো জার্নিতে।

তবে এ বইয়ের নাম কেন গুডমর্নিং, কলকাতা? তবে কি এর লেখক কোনও অন্য টাইম জোনের? দূরাগত ধ্বনির মতো কেন এই ডাক, এই সম্বোধন?

এর পর পরই, ধন্ধ কাটিয়ে, “গুডমর্নিং, কলকাতা” নামের অন্য, স্পষ্টতর, স্পর্শনযোগ্য আর একটা মানে তৈরি হতে থাকে। দূর থেকে কোনও আগন্তুকের ফোন তুলে কলকাতাকে ডাকার সুর শুনতে পাই নামটার ভেতর। ওটা আর নাম থাকে না, হয়ে ওঠে একটা কথোপকথনের এক প্রান্ত। খু-ব সত্যি। সত্যি মানে রিয়েল অর্থে সত্যি।

“চালশা থেকে ডাইনে গিয়ে যে খুনিয়া মোড় সেখানেও বৃষ্টি এল বলে। খুনিয়া মোড় হল ইন্‌কা সভ্যতার শেষ রেলিক।”

“বালিগঞ্জের মায়াবী তিনশো স্কোয়ার ফুট আর বাতাবাড়ির নির্জন চায়ের দোকান। অসময়ের বৃষ্টি কাউকেই ছাড়ে না।”

এই বইতে আছে বাঙালির কালচার বাতিকের ছদ্মবেশ ছিঁড়ে একেবারে ন্যাংটো হয়ে যাওয়া বেগানা আর দেউলিয়াপনার কথা।

“আজ দশটা বেজে দশের শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসে তিল ধারণের জায়গা নেই। …আজ সাতই পৌষ। আজ সব রাস্তা রোমে যাবে না। এথনিক আঁচল থেকে টিউব টপ, রাগেড জিন্স থেকে গলাবন্ধ খাদির কোট। ঘামরঙের বালিকা থেকে শানেলের মাঝবয়েস, ঝাঁকড়া চুলের যাদবপুর থিক ক্রু কাট নেতাজিনগর বয়েজ।/// আজ সব ট্রেন বোলপুর যাবে।”

এই সব ছায়ামায়া মিথ্যাসত্য গদ্যে আছে লেখকের/কবির শৈশব কৈশোরের সবরকমের চিহ্ন। সে স্বভাবে এ জিয়া নস্টাল বই বইকি। তাই দি নিউ ছায়া স্টোর্স, প্যারাডাইস লজ, মহাজাতি সদন, পি সি সরকার আছে। আড়াইশো গ্রাম ওজনের চিঠি আর অপারেটরের সঙ্গে মিহি টোনে কথা আছে। আছে লিসিয়ার ব্রা, আর বডিস-এর যুগের কথা। যখন লঁজেরি একটি হিব্রু শব্দ। দোলের দিন মাল খাওয়া আর বকফুলের বড়া খাওয়া, লুকনো অ্যালবাম আর মিসেসের প্রেম আছে।

এই লেখাগুলির সঙ্গে রিলেট করার কোনও বিশেষ বয়স হয়ত নেই তবে চূড়ান্ত মজা আর বিষণ্ণ ফুৎকারের মিশেলে লেখাগুলি খুবই যৌবন আসক্ত। একরকমের মধ্যবয়সী অনুতাপবোধ থাকলেও, আসলে যা আছে তা ছোকরা ছোকরা বাই। আর সেইসঙ্গে, ওই যা বললাম, কলকাতাকে মফস্বল দিয়ে, উত্তরবঙ্গ দিয়ে, শিলিগুড়ি বা শান্তিনিকেতন দিয়ে ঘেরার এক প্রকল্প আছে। হাতে তুলে নিলে পড়া হয়ে যাবে হু হু করে। বুকের ভেতর হু হু করতেও পারে, না করতেও পারে। তবে বইটি, বইই হয়েছে। তার একটা ব্যক্তিত্ব নয়, দুশো ব্যক্তিত্ব আছে। কখনও চোঙাপ্যান্ট পরা সবজেটে রোদচশমার ব্যক্তিত্ব, কখনও হরমোন আর ফেরোমনের খেলাধুলোর বিষাদের ব্যক্তিত্ব, আর কখনও বা সিঁড়ি, সূর্য আর লাইব্রেরির নিস্তব্ধতার স্মার্ট মসমস শব্দের ব্যক্তিত্ব। টাক ঢাকার জন্য চুল পালটানো অথবা চুপি চুপি লিপস্টিক পরে বিবর্ণতা ঢাকা, স্প্যান্ডেক্সের ব্যক্তিত্ব।

দ্রিঘাংচুর দিগ্‌দর্শনের উপজীব্য কলকাতা, এবং কলকাতা। “সেই ত্রিকালদর্শী মহাপ্রাজ্ঞ সনাতন বায়সবংশীয়ে দাঁড়িকুলীন” মহল্লার হালহকিকত দেখে, তাঁর ব্যারিটোন একপর্দা ছুঁয়ে গেলেন : কঃ! কালোবরণের অ্যাবস্ট্রাক্ট বক্তব্য কনস্ট্রাক্ট করেই হোক কিংবা ডিকনস্ট্রাক্ট করে — পৌঁছনো গেল সে এক জায়গায়… কলকাতা। …মানে কঃ থেকে কলকাতা।

ডা. সিদ্ধার্থ মুখার্জি এই মাঝারি সাইজের দু এক পাতার লেখাগুলিকে দ্রিঘাংচুর দেখা নাম দিয়ে একভাবে তাকে উজ্জ্বল উদ্ধারের তাকে তুলেছেন। যেভাবে রাশি রাশি ভারা ভারা শস্য গোলায় ওঠে, এখানে উঠেছে স্মৃতির সম্পদ। নস্টালজিয়া বাঙালির অন্যতম তীব্র প্যাশন ও আলস্যের অবলম্বন আজ। আজ স্মৃতিতে ডুবে চলেছে বাঙালি, তাদের প্রতিটি হারানো জিনিসের প্রতি এক গভীর অবসন্নতা অনুশোচনা জ্ঞানপাপীর অনুতাপ কাজ করছে। বাঙালির হারাচ্ছে পুরনো জীবনযাপন। আর এই দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে দাঁড়িয়ে সে প্রাচীনের দিকে তাকিয়ে নিজের অস্তিত্বকে পুনর্নির্মাণ করতে চাইছে।

দ্রিঘাংচু কোনওভাবেই নয় অলস অথবা অবসন্ন। সে বরঞ্চ অতি সক্রিয়তায় তার আশৈশবের দেখা ও শোনাকে গ্রন্থায়িত করতে চায়, ডকুমেন্টেড করে রাখতে চায়। সে ধরে রেখেছে সাবেকি সব ঘরানাকে, ধারাবাহিকতাকে। সৈয়দ মুজতবা আলির ঘরানা বা অবন ঠাকুরের কলম। তাই তার লেখায় “দিনকানা গলির কানাকানি, ঘুনধরা আসবাবের নিলামঘর, সাতপুরনো গালার চাকতি গ্রামোফোন রেকর্ড, ঠাকুমা-পিসিমার হলুদ লঙ্কার ছোপ ধরা রেসিপিখাতা, ধুলোগন্ধী ব্রতপাঁচালি… আর অন্তর্জালের “অনন্ত কুয়ার জল”।

এরই হাত ধরে দু খণ্ডের অতি নয়নমনোহর বইখানিতে এসেছে ভবানীপুর কেয়াতলা অঞ্চল, চারের দশক পাঁচের দশকের গন্ধমাখা। সন্দেশের ভিয়েনের গন্ধ আর গায়কের রেওয়াজের শব্দ। উত্তমকুমার থেকে উড়িষ্যার রসিক ভিয়েন, বুদ্ধদেব গুহ থেকে মেঘনাদ সাহা, মুচি সুরেশ্বর রাম থেকে নীরদ সি চৌধুরীর পত্নী পুঁটি অমিয়া চৌধুরী, কে নেই এই শব্দ কল্প দ্রুমে। ছিদাম মুদি লেন ঘুরে এ কাহিনি চলে গিয়েছে বিদেশেও, লাহোর গিয়েছে, গিয়েছে জার্মানিতে, লন্ডনে।

অথবা এই বই আসলে একটা যাত্রাপথ, জার্নি। কী মায়াময় সে জার্নি। গুমঘর লেন থেকে বকুলবাগান রোড, সেখানে থেকে কলেজ স্কোয়ারের প্যারামাউন্ট, অথবা এক নম্বর ব্যাঙ্কশাল স্ট্রিটের ইন্ডিয়া ক্লাব। যেন ছোট ছেলে থেকে বয়স্ক ডাক্তারবাবু হবার পথের প্রতিটি রাস্তা প্রতিটি বাঁক প্রতি ফুটপাত প্রতি ইট একে একে যেন পায়ে পায়ে পেরিয়ে যেতে থাকেন, গুণেগেঁথে লিখে চলেন ডা. মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে নেন পাঠককে। আর তাদের থেকে চুঁইয়ে আসা কলকাতার মেজাজ, তার সম্পন্নতা, তার প্রতিষ্ঠার স্বাদ, তার ওম রেখে যান… শুধুই বিখ্যাতরা নন, ডাক্তারির সূত্রে পাওয়া অসংখ্য সাধারণ মানুষের অসাধারণ সঙ্গের কথা এখানে তুলে তুলে রেখেছেন লেখক। এক একটি কাহিনি এক একরকম ভাব আনে মনে, কিন্তু সব মিলিয়ে সে এক মিষ্টি নোনতা টক ঝালে মেশানো অপরূপ রসায়নই হয়ে ওঠে। মেজাজে খুব ক্লাসিকাল কিন্তু ভাষায় স্বাধীন, ইংরেজি বাংলার দোলাচলে বেশ কিছুটা ‘অ-প্রথাগত’। অসম্ভব স্পর্শকাতর এক গরীব মায়ের কাহিনি এ বইতে আছে, যে তার সর্বস্ব দিয়ে মেয়েকে করেছিল বিসিএস অফিসার। আবার আইনস্টাইনের স্ত্রীর কাহিনিটিও কম বেদনাজাগানো নয়।

এই আশ্চর্য বইটি যখন প্রকাশিত হয়েছিল কলকাতার এক সভাঘরে, এসেছিলেন সুরেশ মুচি যিনি রেট্রো ক্লাসিক বাজাতেন স্যাক্সোফোনে, শিবরামবাবুর কাছের লোক তপন মাইতি আর “খোকনদা” — যিনি চা কফি দেন আর রাতে র‍্যাবো, চেকভ, গুন্টার গ্রাস রূপান্তরিত করেন।

আশ্চর্য এক রাসায়নিক ব্যাপার, কলকাতারই মতো জটিল ও সরল এই বই, তার পেছনের মানুষ লেখক সিদ্ধার্থবাবু আর অন্য সবকটি চরিত্রই।

এত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বই কি আর আছে? এক বাঙালির চরিতাভিধান ছাড়া?