শ্রীজাতা গুপ্তের কবিতা

ছয়টি কবিতা

 

মৃত্যুদিন

চলে যেও। তারপর কথা নাকি হবে নিয়মিত
সিঁড়ি ভেঙে ছায়া এসে
দাঁড়িয়েছে,

অর্ধনিমজ্জিত

দেখা নাকি হবে ফের
জ্যামিতিক ভুল চিনে চিনে।

প্রেমের প্রতিটি
আর

প্রতিটি প্রেমের মৃত-দিনে

 

চারাগাছ

হাতের রেখায় পথ বাঁচিয়ে
অনেক কষ্টে আগলে রাখা বুকে

হঠাৎ এসে ফুটবে যেদিন

এক ঘটি জল দেবে না, মৃত্যুকে?

…..

এই যে কেমন জলের খেয়াল। লিখছি এলোমেলো।
দু’চার শব্দ নামবে না কি? চোখে?

 

ঠিকানা

ঘুমন্ত বিড়ালের আলস্যে আড়মোড়া যেন, সর্পিল বেঁকেচুড়ে ভেঙে ওঠা হাই,
তরতাজা পশমের ঝরে পড়া অনিচ্ছা যত, সেভাবেই উঠে আসে আমাদের মার্জার শোক।
ঘেঁটি ধরে রাস্তায় ফেলে এলে পথ চিনে ফিরে আসে ঠিক।

 

মিথ্যে

ঘুমের নামে আগুন আসে চোখে।
সত্যিকে রোজ ভয় করেছে, এবার
আগুন ভয় পাবে স্বপ্নকে।

…..

যে চিতা দেখিনি কোনওদিন
এসেছে স্বপ্নে অবিকল
ভোরের, হে পূর্ণ, আগুনে
সত্যি, পুড়িয়ে দিল জল

 

টেলিগ্রাম

একাই থাকছি। বাইরে লবণ।
অনভ্যস্ত স্নায়ুর শেষ খবর
আমার পাশে,
আত্মা না হোক, একের পর এক
বসেছে অক্ষর

 

ডাক

রোজ অফিস যায়। রিটায়ারমেন্টের পরেও। আত্মীয় বন্ধুদের বাড়ি খুঁজে দেখা দিয়ে আসে। পাড়ায় ক্রিকেট মাঠে ফুটবলে উৎসাহ দেয়। বাড়ি ফিরে টিভি দেখে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে একবার ঠাকুরের ঘর ছুঁয়ে আসে। এরপর একদিন ভাঙবে না ঘুম। এমনই তো স্বাভাবিক। ক্লান্ত হ’তেই বুঝি পারে। আমরা কেবল ডেকে যাই। কাল ফের ডাকব, সকালে।

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4596 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

2 Comments

  1. ৮হাজার মাইল দূরে এক অসহ্য রোদেপোড়া সকালে ঘুম ভেঙে উঠে ফোন কোলে নিয়ে ফেসবুকে দেখি বিভাস পোস্ট করেছে শ্রীজাতার কবিতা। শ্রীজাতা মৃত্যুর চারাগাছে জল দিয়েছেন, ডাক দিয়েছেন, প্রেমের মৃত্যুতে করেছেন উৎসব! সবচেয়ে ভালো লাগল যে অন্ত:মিলের চিক মিক অশ্রু নেই। ঝরঝরে স্বল্প কথায় টানটান লেখা। আশাকরি তোমার বই বেরুবে আগামী বইমেলায় তাহলে সংগ্রহ করে নেব। ভালো থেকো লিখে যাও আরো।

    • Oshonkhyo dhonyobad. Tobey, ”kobi’ daak Amar namer samne bemanan. Shudhu nam-i Bhalo 🙂 Boibhashik Prokashoni amar kichhu lekha prokash korechhen dui molate. Sujog holey porey janaben oboshyoi…

Leave a Reply to Goutam Datta Cancel reply