দেবব্রত শ্যামরায়
১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসে মহেঞ্জোদারোর প্রায় পরিত্যক্ত প্রত্নস্থলে দাঁড়িয়ে করাচির কলেজে পড়া এক সদ্য তরুণ এবং সেখানকার এক ষাটোর্ধ্ব কর্মহীন গাইডের মধ্যে এইরকম কথাবার্তা হচ্ছিল—
–আমি এখানে গাইডের কাজ করতাম… এখন অবশ্য পর্যটকের চেয়ে গাইডের সংখ্যা বেশি।
–দেখে তো তাই মনে হচ্ছে৷ আমি প্রথমবার এখানে এসেছিলাম অনেক ছোটবেলায়, ১৯৭৪-এ। তখনও কি আপনি এখানে গাইডের কাজ করতেন?
–আমি আজকাল সবকিছু ঠিকঠাক মনে রাখতে পারি না৷ আমার আব্বাও এখানকার গাইড ছিলেন। তখন আরও অনেক বেশি লোক আসত এখানে।
–আপনি কি এখনও গাইডের কাজ করেন?
–তুমি চাইলে আমি এখন তোমার গাইড হতেই পারি।
–আসলে আমার কাছে বেশি টাকাপয়সা নেই।
–আরে ধুর! টাকা কে চেয়েছে? এ তো আমাদের জন্মভূমি!
–হ্যাঁ… মানে পাকিস্তান, তাই তো?
–হা হা! ঠিক তা নয়। এটা পাকিস্তানেরও জন্মস্থান।
–ইন্ডিয়া?
–না, বন্ধু! এটা ইন্ডিয়ারও জন্মস্থান…. সিন্ধুপ্রদেশ।
–হ্যাঁ, সিন্ধু নদ….।
–ঠিক তাই। সিন্ধু নদ এই জায়গাটার জন্ম দিয়েছে। মহেঞ্জোদারো৷ যা আবার ভারত ও পরে পাকিস্তানেরও জন্মস্থান। কী বুঝলে?
কথোপকথন এগিয়ে চলে। আলাপচারিতায় উঠে আসা এইসব সামান্য ইতিহাসের পাঠ তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ার কথা নয়। কিন্তু করাচির সেই কলেজপড়ুয়া নব্যযুবক নাদিম ফারুক পরাচা (Nadeem Farooq Paracha) যখন সেদিনের সেই অভিজ্ঞতা ও প্রেক্ষাপট তাঁর লেখা বই ‘Points Of Entry’ (Encounters at the origin-sites of Pakistan)-তে ব্যক্ত করেন, তাতে নিঃসন্দেহে গভীরতর মাত্রা যোগ হয়৷ নাদিম আলগোছে খেয়াল করিয়ে দেন, ১৯৮৬ সাল ছিল এমন একটা সময় যখন পাকিস্তানে ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রবল প্রতিক্রিয়াশীল জিয়াউল হক সরকার, যিনি পাকিস্তানের বহুমাত্রিক পরিচয় জলাঞ্জলি দিয়ে কঠোরভাবে রাষ্ট্রের ইসলামিকরণের পথে হাঁটছেন। মহেঞ্জোদারোর ভুবনবিখ্যাত প্রত্নস্থল প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে যাওয়া তারই প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত৷
পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক-লেখক নাদিমের এই বইটি ২০১৮-এ প্রকাশিত হয়েছে। ঠিক সে সময় পাকিস্তানের রাজনীতিতে পালাবদল ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসছেন ইমরান খান এবং গদিতে বসে, যে কারণেই হোক, একটা প্রগতিশীল অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই বইয়ে, ১৯৪৭ থেকে শুরু করে ২০১৮-এর সেই নির্বাচন পর্যন্ত সময়কালে পাকিস্তান জাতিরাষ্ট্রের সামাজিক-রাজনৈতিক নির্মাণ-বিনির্মাণের ধারণাটিকে নানা দিক থেকে বোঝার চেষ্টা করেছেন লেখক৷ ধরতে চেয়েছেন তাঁর জন্মভূমি পাকিস্তানের প্রকৃত আত্মাকে। আর এই কাজটা করতে গিয়ে তাঁকে খুঁজতে হয়েছে পাকিস্তানের বৈচিত্র্যময় ইতিহাস ও সংস্কৃতির ছড়ানোছেটানো নানা প্রবেশদ্বার, যেগুলি রাজনৈতিক পাকিস্তানের জন্মের বহু আগে থেকেই এই মহান ভূখণ্ড ধারণ করে রেখেছে, আবার পাশাপাশি এমন কিছু ঘটনাও যা সাম্প্রতিক ইতিহাসের অংশ।
সঙ্গত কারণেই, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বহুমাত্রিক সংস্কৃতির খোঁজ শুরু করার জন্য ৫০০০ বছর আগে সভ্যতার প্রথম আবির্ভাবস্থল মহেঞ্জোদারোর চেয়ে উপযুক্ত জায়গা আর কিই বা হতে পারে! ঠিক তেমনিভাবে অন্য এক অধ্যায়ে, ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিস সম্রাট আলেকজান্ডারের ভারত আগমণ ও রাজা পুরুর সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ের ময়দানে পৌঁছে যান লেখক। পাকিস্তানের অন্তর্গত পঞ্জাবে ঝিলম নদীর তীরে এই যুদ্ধ হয়েছিল, যাতে পুরু হেরে যান। এসব আমাদের সকলের কমবেশি জানা, কারণ এ ইতিহাস যৌথভাবে সমগ্র উপমহাদেশেরই ইতিহাস। কিন্তু যা জানা ছিল না, তা হল চেনাব নদী বেয়ে আলেকজান্ডারের নিষ্ক্রমণের সময় মালহি উপজাতির সঙ্গে গ্রিক বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষের কথা, মালহিদের বিষতিরে আলেকজান্ডারের প্রাণসংশয়ের কথা, অধুনা মুলতান শহরের কাছে সেই দুর্গের কথা যেখান থেকে আলেকজান্ডার তাঁর জীবনের সম্ভবত শেষ লড়াইটি লড়েছিলেন। দুর্গটি আজ আর নেই। তবে মনে করা হয়, আজ ঠিক সেই জায়গায় ত্রয়োদশ শতাব্দীর সুফি সাধক শাহ রুকন-এ-আলমের শান্ত সমাধিটি দাঁড়িয়ে আছে।
আরেকটি লেখায় উঠে আসে খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে এক প্রাচীন রহস্যময় হ্রদের কথা, যে হ্রদের জলে তিব্বতি বৌদ্ধগুরু পদ্মসম্ভবের অলৌকিক জন্ম হয়েছিল বলে মনে করা হয়। নাদিম অবশ্য তাঁর কোনও লেখাতেই এত শুষ্কভাবে ইতিহাস ও মিথের বর্ণনা করেননি, প্রতিটি পরিচ্ছেদে তিনি বুনে দিয়েছেন একটি কি দুটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ, সত্তর-আশির দশকে নিজের তরুণ বয়েসের ঝোড়ো বামপন্থী রাজনীতি ও সাংবাদিকতার দিনগুলির কথা, নানা মজাদার ‘অ্যান্যাকডোট’ যা প্রতিটি অধ্যায়কে অত্যন্ত স্বাদু করে তুলেছে। যেমন গুরু পদ্মসম্ভবের জন্মস্থলে পৌঁছনোর জন্য করাচি থেকে পেশোয়ার হয়ে সোয়াট উপত্যকায় লেখকের যাত্রার ঘটনাবহুল বিবরণ পাঠককে শেষ অবধি টেনে রাখে, অভিযানের রোমাঞ্চ এনে দেয়।
সংস্কৃতির বহুস্বর খোঁজার পাশাপাশি এই বইয়ে উঠে এসেছে রক্ষণশীলতার সঙ্গে বহুমাত্রিকতার টানাপোড়েনের ছবিও। উনিশশো একাত্তরে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন ও স্বাধীন হয়ে যাওয়ার রাগ, লজ্জা ও যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পাকিস্তান যে কীভাবে আরও বেশি করে একমাত্রিম মুসলিম জাতিরাষ্ট্রের ধারণাটিকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিল, তাও তুলে ধরেছেন নাদিম। আজ থেকে ১৩০০ বছর আগে আরব যোদ্ধা মহম্মদ বিন কাশিম সিন্ধদেশ আক্রমণ করেন এবং তৎকালীন হিন্দু রাজা দাহেরকে পরাস্ত করেছিলেন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করে জামাত-ই-ইসলামি সত্তর দশকে ‘ইয়াউম বাবুল ইসলাম’ অর্থাৎ এই ভূখণ্ডে ‘ইসলামের আবির্ভাব’ উদযাপন করা শুরু করে এবং মহম্মদ বিন কাশিমকেই প্রথম পাকিস্তানি বলে ঘোষণা করা হয়। এর পেছনের রাজনৈতিক বার্তাটি হল, মহম্মদ আলি জিন্নার পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বহু বহু বছর আগে থেকেই এই সিন্ধুদেশেই উপমহাদেশের মুসলিম জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়ে গিয়েছিল, সেইটিই পাকিস্তানের যথার্থ জন্মক্ষণ। মহম্মদ বিন কাশিমের ইসলামি রাষ্ট্রই প্রকৃত পাকিস্তান, কারণ জিন্নার সন্তান ১৯৪৭-এর পাকিস্তান অনেক আধুনিক, উদারবাদী, পশ্চিমি ধ্যানধারণার উপাদানে গড়া, ফলত অ-ইসলামীয়। বস্তুত, উত্তরপশ্চিমের সিন্ধু নদের তীরের এই স্থানই পাকিস্তানের ঐতিহাসিক ও আসল অবস্থান, তাই পূর্বের একটা ছোট অংশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও আসল পাকিস্তানের কোনও মর্যাদাহানি হয়নি। পাকিস্তান রয়েছে পাকিস্তানেই।
মোট সতেরটা পরিচ্ছেদে বিভক্ত এই বই। প্রতিটি পরিচ্ছেদ একটি করে অজানা পাকিস্তানের ছবি সামনে নিয়ে আসে। যেমন সিন্ধি সম্প্রদায়ের এক সাধকের ছবি বম্বেতে এক হিন্দু পরিবারের ঘরের দেওয়ালে দেখেছিলেন নাদিম। সেই সাধক জুলে লাল, যার নাম সিন্ধি পরিবারটিকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, একটি নদীর ঠিক মাঝখানে পদ্মের ওপর বসে আছেন, তাঁর সাদা দাড়ি উড়ছে, তিনি সংস্কৃত ভাষায় লেখা একটি পুঁথি ডান হাতে ধরে আছেন। পদ্মের চারিদিকে নদীর মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বহুবর্ণ মাছ৷ পরবর্তীকালে, লেখক একই ছবি দেখতে পান সিন্ধু প্রদেশের একটি গ্রামে। এক্ষেত্রে পরিবারটি মুসলিম, ছবিতে একটি মাত্র পার্থক্য, জুলে লাল এখানে সংস্কৃত পুঁথির বদলে কোরান হাতে ধরে আছেন। প্রশ্ন করলে জানা যায়, ইনি বাবা শেখ তাহির। একই মানুষের দুই নাম ও ভিন্ন ধর্ম হয় কীভাবে? লেখকের নাছোড় অনুসন্ধিৎসায় ক্রমে সত্য বেরিয়ে আছে৷ জানা যায় জুলে লালের শেষ জীবনে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়ে বাবা শেখ তাহির হওয়ার গল্প, যাঁর হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়েরই অগণিত ভক্ত ছিল৷ যেসব সিন্ধি হিন্দুরা দেশভাগের পর পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে এসেছেন, যেমন লেখকের দেখা বম্বের সেই হিন্দু পরিবারটি, তাঁরা সাধকের জুলে লাল-রূপটিরই ভজনা করেন। জুলে লাল-ই তাঁদের ঈশ্বর বা মহাগুরু। প্রসঙ্গত, সিন্ধি হিন্দুদের আচার সংস্কার অন্যান্য হিন্দুদের থেকে ভিন্ন, সাধক জুলে লালের প্রভাবে এঁরা অনেক বেশি সহজিয়াপন্থী, এঁরা বর্ণহিন্দুদের মতো জাতিভেদ মানেন না। আমরা বুঝতে পারি, লেখক এইসব ঘটনার উল্লেখের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তান নামের স্টিরিওটাইপড মূর্তিটিকে ভেঙে দিতে চাইছেন।
নানা অধ্যায় থেকে জানা যায় করাচির বার্নস রোডে নিহারি, হালিম, পসিন্দা রান্নার জিভে-জল-আনা হালহাকিকৎ, অবশ্যই এর সঙ্গে থাকে মানবিক উত্থান-পতনের গল্প; আমরা দেখতে পাই আজন্ম লন্ডনে কাটানো উচ্চশিক্ষিত ধর্মনিস্পৃহ মুসলিম পরিবারের ছেলে কীভাবে পরিবর্তিত হয়ে ইসলামি ব্যাঙ্কের মৌলবাদী তত্ত্ব প্রচার করে, অবাক হয়ে দেখি বন্দর শহর করাচিতে ৭১২ খ্রিস্টাব্দে আসা আফ্রিকা অধিবাসীদের বংশধারাকে৷ পর্তুগিজ গোয়া থেকে উনিশ শতকে গোয়ানিজ খ্রিস্টানদের পাকিস্তানে পৌঁছোনোও তেমনি আরেকটি উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট অফ এন্ট্রি। ১৯৭৭ পর্যন্ত অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা আসার আগে অবধি পাকিস্তানের বার বা নৈশক্লাবগুলিতে ব্যান্ডসঙ্গীতের রমরমার জন্য দায়ী ছিলেন এই গোয়ানিজ সম্প্রদায়ের মানুষেরাই। আরও জানা যায়, ১৯৪৯ সালে চিন বিপ্লবের সময় চিন থেকে পাকিস্তানে পালিয়ে আসা বিরাট সংখ্যক চৈনিকদের কথা, ক্রমে করাচি-লাহোর-ইসলামাবাদে ডেন্টাল ক্লিনিক এবং চিনে রেস্তোরাঁ খুলে বসার কথা। দাঁতের ডাক্তার? মুহূর্তে মনে পড়ে কলকাতা ও তার আশেপাশে চিনে ডাক্তারদের দন্তচিকিৎসায় পসারের কথা। হাজার কিলোমিটার দূরে থেকে আমরাও কি তাহলে একই ইতিহাসকে বহন করে চলেছি?
বইয়ের দীর্ঘতম অধ্যায়টি পাকিস্তানে পাশ্চাত্য লঘু সঙ্গীতের আগমন, উত্থান ও পতন নিয়ে। নাদিম নিজে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের অনুরাগী হওয়ায় ও সাংবাদিকতার সূত্রে পাকিস্তানে পপ সঙ্গীতের বিবর্তনকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন৷ বস্তুত, ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হলিউডের সিনেমা ‘রক এন্ড রোল’ থেকেই পাকিস্তানে পপ সংস্কৃতির সূচনা৷ নানা ঘটনা, অ্যালবাম ও ব্যক্তিনাম উঠে আসে৷ তার মধ্যে থেকে আমরা চিনে নিতে পারি বেশ কয়েকজনকে যাঁদের খ্যাতি সীমান্ত পেরিয়ে এপারেও পৌঁছেছিল বিভিন্ন সময়ে— যেমন রুনা লায়লা, আলমগীর, নাজিয়া ও তাঁর বিখ্যাত উর্দু ডিস্কো অ্যালবাম ‘ডিস্কো দিওয়ানে’, গানের দল ভাইটাল সাইন্স, সে দলের প্রধান গায়ক জুনেইদ জামশেদ ও তাঁর তুমুল জনপ্রিয় গান ‘দিল দিল পাকিস্তান’। এঁদের মধ্যে অনেকের সঙ্গেই লেখকের ব্যক্তিগত সখ্য পাকিস্তানের পপ সঙ্গীত জগতের অন্তরঙ্গ ছবি তুলে ধরে। সঙ্গীতের হাত ধরে যে নতুন প্রজন্মের মধ্যে যে আশার জন্ম হয়েছিল, জিয়াউল হক জমানার কড়া ধর্মীয় শুচিবায়ুগ্রস্ততা তাকে অকালপ্রয়াণে যেতে বাধ্য করে।
নাদিম পরাচার ‘পয়েন্টস অফ এন্ট্রি’ ভারতীয় সংবাদপত্র পড়ে চেনা গতানুগতিক পাকিস্তানের বাইরে অচেনা পাকিস্তানকে জানাবোঝার একটি মহার্ঘ প্রবেশদ্বার৷ এই দেশটি, ভারতের মতোই, বহুবর্ণ, গতিশীল, নানা পরস্পরবিরোধী চিন্তাস্রোতের টানাপোড়েনে সমৃদ্ধ৷ নাদিম দক্ষ সাংবাদিক, তাঁর গদ্য সাবলীল, পাঠককে এক মুহূর্তের জন্য হোঁচট খেতে হয় না কোথাও। সবগুলো অধ্যায় একইরকম আকর্ষক নয় অবশ্য, কোথাও দৈনিক কলাম লেখকের সহজাত অভ্যাসে খুব গভীরে না যাওয়ার ছাপ চোখে পড়ে। কিন্তু নাদিম তো এখানে ইতিহাস বিশ্লেষণ করতে বসেননি, তাঁর দৃষ্টিকোণ মূলত নৈব্যক্তিক, নির্মোহ চোখে তিনি ইতিহাস ও বর্তমানকে বিবৃত করে যান, কিন্তু তাঁর উদারপন্থী মৌলবাদ-বিরোধী পক্ষপাতের চিহ্ন শুরু থেকে শেষ অবধি সারা বইতে ছড়িয়ে থাকে৷
নাদিমের ‘পয়েন্টস অফ এন্ট্রি’ আমাদের আরেকবার মনে করিয়ে দেয়, ভারত-ই হোক বা পাকিস্তান, একমাত্রিকতা কোনওদিনই এই উপমহাদেশের ভবিতব্য হতে পারে না৷
[পয়েন্টস অফ এন্ট্রি- এনকাউন্টারস এট দ্য অরিজিন-সাইটস অফ পাকিস্তান। নাদিম ফারুক পরাচা। ট্রানকুবার। ২০১৮। মূল্য- ৪৯৯/-]