পাঁচটি কবিতা
অক্ষর
যেকোনও অক্ষর দিয়ে শুরু করা যায়
এতদিন কেন যে লিখিনি!
যতটা নামাজ পড়া হল, তার চেয়ে বেশি কাজা
তসবীর দানাগুলো অনাহত, ছিঁড়ে যাওয়া ছড়ে
আবার কি বাজবে বেহালা?
ঘ্রাণের অধিক কিছু বাতাসে ছড়ানো
জোরে শ্বাস নিতে গেলে ফুসফুসে ঢোকে
যাকিছু জেনেছি তার সবটুকু
সাদা পাতা থেকে নেওয়া
বেকার দিনের পাশে প্ররোচনা, আরও থাকে
বারুদের লকলকে ফণা
ভেক খিলাফত
আজ এইখানে আমাদের ভেক খিলাফত
দুজনের চোখে সাদা কাপড়ের ফালি, পরনে কাফন
এরপর মাধুকরী, মৃতের জীবন
এই যে ধরেছি হাত, জানি এ-ও রক্তমাংস
তবু যেন পেরিয়েছি শ্মশান, কবর
পাশাপাশি শুয়ে থেকে শবসাধনার পাঠ
তোমার চোখের তারা জ্বলে
আমি ভাবি– চিতার আগুন
স্বয়ম্ভু বিশ্বের অখণ্ডমণ্ডলে জেগে থাকে
অনাহত নাদ, ধ্বংসের ক্রন্দন
স্বর্গ
অবশেষে স্বর্গে গিয়ে দেখি অগণিত দুঃস্থ নারী
বুক নেই পাছা নেই, চোয়ালের হাড় জেগে আছে
এ কেমন প্রতারণা, ঐশী আশ্বাসের এ কী ফলাফল!
পবিত্র ঘোড়াটি, যার ছিল ওড়ার অভ্যাস
ঘাস আর দানার অভাবে রুগ্ন হয়ে গেছে
কয়েকটি দেবদূত থালা হাতে বসে আছে পথে
প্রভুর মৃত্যুর পরে সকলেই নিরন্ন কাঙাল
বৃষ্টি নেই, বৃক্ষ নেই, এমন অফলা–
মরুর পাথুরে মূর্তি আরও এক মরুভূমি বানিয়ে রেখেছে?
নায়ক
নেকড়ের মতো হাসো। যেন এক পুরুষ খানকি
ফাঁদ পেতে রাখো ভুবনে ভুবনে
বুনো ঘ্রাণে খয়েরের বনে হাওয়া ওঠে
পলিমাটি ভিজে যায় নিভৃত জোয়ারে
বিকেলের মাঠে চার-ছয় মেরে জানালার
কাচ ভেঙে দাও
ব্যালকনি জুড়ে মাধবীর লতা
সবকিছু তোমাদের, শুধু চোখ দিয়ে চাইলেই হয়
খবর
মিশরের এক চিড়িয়াখানায় গাধার শরীরে দাগ এঁকে
জেব্রা বানানোর কথা শোনা গেল
এমন খবর চিনেও দেখেছি। লোমশ একটি কুকুরকে নাকি
সিংহ বলে চালিয়েছে দু হাজার তেরো সালে
কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে উঠতেই
সব ফাঁস হয়ে গেছে!
আমাদের কাছে এসব ঘটনা বড়ই মামুলি
এখানে চোরের গায়ে লেখা হয় ‘দেশনেতা’
খুনিদের জামায় লিখেছে ‘জনপ্রতিনিধি’
ভালো লেখা। ‘স্বর্গ’ বিশেষ ভাবে দাগ কেটে যায়।