আধার-ভোটার কার্ড মেলালে আর ভোট হবে? না শুধুই প্রহসন হবে?

সুমন সেনগুপ্ত

 





লেখক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুকার, সমাজকর্মী।

 

 

 

দুটো ঘটনা দিয়ে এই লেখাটা শুরু করা জরুরি।

১। ইউয়াইডিএআই হায়দ্রাবাদের তিনজন বাসিন্দাকে চিঠি পাঠিয়েছে, যে তাঁরা নাকি ভুল বায়োমেট্রিক্স দিয়ে আধার বানিয়েছেন, তাঁরা যেন দেখা করেন এবং তাঁদের আধার যে ভুল নয়, সেটা প্রমাণ করতে হবে তাঁদেরকেই। শুধু তাই নয় তাঁরা যে ভারতের নাগরিক সেটাও নাকি তাঁদের প্রমাণ করতে হবে।

২। আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ডকে সরকারিভাবে সংযোগ করানোর জন্য সরকারের আইনমন্ত্রক চিঠিপত্র লেখা শুরু করছে। এই আধার দিয়ে নাকি ভুয়ো ভোটার তাড়ানো যাবে। শুধু তাই নয়, এবার নির্বাচন কমিশন ই-ভোট চালু করতে চায়, সেই জন্য তাঁরা আইআইটি মাদ্রাজের সঙ্গে কথা শুরু করেছে। ই-ভোট কী? মানে কেউ অন্য জায়গায় আছেন, তাঁর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের থেকে তিনি হয়তো অনেক দূরে থাকেন, তা হলে এরপর থেকে তিনি সেই জায়গায় বসে ভোটের দিন তাঁর কেন্দ্রের পছন্দমতো প্রার্থীর জন্য তিনি ভোট দিতে পারবেন।

এবার প্রথম ঘটনা এবং দ্বিতীয় ঘটনাকে একসঙ্গে দেখতে হবে। প্রথম ঘটনার ক্ষেত্রে প্রশ্ন করা যায়, ইউয়াইডিএআই-র কাজ কি নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা? সেটা কি করে হয়, যখন আধার হয়েছিল তখন তো বলা হয়েছিল গত ১৮০ দিন যদি কোনও জায়গায় বসবাস করেন এবং আগামী ৬ মাস থাকবেন বলেন তাহলেই তিনি আধার পেতে পারেন। এর সঙ্গে তো নাগরিকত্বের কোনও সংযোগ নেই। দেখা যাক এই নিয়ে যে বিতর্ক চালু হয়েছে তার উত্তরে ইউয়াইডিএআই কী বলেছেন? তাঁরা গতকাল এক ট্যুইট করে জানিয়েছেন যে হায়দ্রাবাদের পুলিশের থেকে তাঁদের কাছে ১২৭ জন মানুষের নামে অভিযোগ করা হয়েছে, যে এরা নাকি ভারতীয় নয়, তাই তাঁরা এই চিঠি পাঠিয়েছেন। তারপর তাঁরা লিখেছেন যে তাঁরা যদি জানতে পারেন যে কোনও কোনও মানুষ ভুল তথ্য দিয়ে বা ভুল বায়োমেট্রিক্স (চোখের মণি, হাতের ছাপ বা মুখের ছবি) দিয়ে আধার বানিয়েছেন তখন নাকি তাঁরা সেই আধারগুলো বাতিল করতে পারেন।

এখন প্রশ্ন হল, এই পদ্ধতিটি কী? মানে কীভাবে জানা সম্ভব যে আধার নম্বরটি ভুলভাবে প্রাপ্ত? কোনও সফটওয়ার দিয়ে কি এটা বোঝা সম্ভব? উত্তর হল, না। কেন না? বেশ কিছুদিন আগে অনুপম শরাফ, যিনি আধার সংক্রান্ত লড়াইটি দীর্ঘদিন করছেন তিনি একটি আরটিআই করেন, তাতে দুটি প্রশ্ন করেন।

  1. আধার দিয়ে কি ঠিকানা, জন্মতারিখ প্রমাণ করা যাবে? বা আধার কি কোনও পরিচয় বহন করে?
  2. সিআইডিআর বা যেখানে আধার তথ্য সুরক্ষিত থাকে বলে জানা গেছে সেখানে যদি কোনও একজনের বায়োমেট্রিক্স দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়, যে এটা কি সেই ব্যক্তি? তাহলে তারা কি সেই ব্যক্তির আধার নম্বর বার করে আনতে পারে?

এই দুটো প্রশ্নের উত্তরেই তাঁরা জানিয়েছেন যে তাঁরা বলতে পারেন না আধার কোনও পরিচয়পত্র কিনা। তাঁরা এটাও বলেন যে কোনওভাবেই এটা বলা সম্ভব নয়, যে কোনও একজন মানুষের আধার নম্বর তাঁর বায়োমেট্রিক্সের সঙ্গেই যুক্ত করা আছে। তাহলে কী দাঁড়াল? আধার কোনও পরিচয়পত্র নয়, এবং এর মধ্যে কোনও অভিনবত্ব বা ইউনিকনেস নেই।

সুতরাং যে বা যাঁরা বলেন আধার একটি অভিনব নাগরিত্বের পরিচায়ক তাঁদের  জন্য ‘আধার অ্যাক্ট’ একটি জরুরি পাঠ্য। যাতে প্রথমেই বলা আছে একজন মানুষ ‘স্বেচ্ছায়’ আধার নিতে পারেন। যেখানে প্রথম শব্দটিই হচ্ছে ‘স্বেচ্ছায়’ তাহলে তা নিয়ে এত জোরাজুরি কেন? এখানেই আসল রহস্য। যদি খেয়াল করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে গতবারের কেন্দ্রীয় সরকার একটি প্রকল্প চালু করেছিল যার নাম ছিল জন ধন যোজনা অর্থাৎ যে কোনও মানুষ আধার দিয়ে একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে আর কোনও পরিচয়পত্রের প্রয়োজন নেই। সঙ্গে তাঁর ফোন নম্বরটি যুক্ত থাকলেই হবে। এই জন ধন অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে যদি আধার যুক্ত থাকে তাহলে এই অ্যাকাউন্টগুলো হয়ে দাঁড়ায় টাকা ট্রান্সফার করার মাধ্যম, যেহেতু আধার ছাড়া অন্য কোনও পরিচয়পত্র লাগে না এই অ্যাকাউন্ট খুলতে।

এবার আসা যাক অন্য একটি প্রসঙ্গে। ধীরে ধীরে একটা সাম্প্রদায়িক বাতাবরণ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া  হয়েছে। গুজরাট, ভাগলপুর, কাসগঞ্জ, বসিরহাট, কালিয়াচক, এরকম ছোট বড় দাঙ্গার খবর আমরা ইতিমধ্যেই শুনে নিয়েছি। এর মধ্যে গুজরাট ছিল সবচেয়ে বড়, যাতে প্রায় ২০০০ জন মুসলমান মানুষকে চিহ্নিত করে মারা হয়। আফরাজুল, জুনেইদ, পেহেলু খান বা উমর খানদের মতো ঘটনা, মানে ব্যক্তিবিশেষকে চিহ্নিত করে মারার ঘটনাও ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ দেখে ফেলেছে। এর সঙ্গে সঙ্গেই চলেছে আধারের মাধ্যমে মানুষকে চিহ্নিতকরণের কাজ। আপনি কোথায় থাকেন, অঞ্চলটা কি মিশ্র, ফেসবুক বা টুইটারে কী পোস্ট করেন, সেটা কি সরকার বিরোধী ইত্যাদি। খেয়াল করে দেখুন, অর্থনীতি মোটামুটি তলানিতে, চাকরি নেই, লোকের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে বিমুদ্রাকরণ এবং জিএসটি-র জন্য। এখন একটাই কাজ— সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাও, তারপর গণহত্যা করো। রোয়ান্ডার রেডিও আর আজকের মোদির মন কি বাত প্রায় সমান।

আধার এখন প্রায় সবকিছুর সঙ্গে যুক্ত করার কাজ চলছে, এরপর শুধু বাকি আছে ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার যুক্ত করার কাজ। আচ্ছা এটা করলে কী হতে পারে? আমি আপনি কোনওদিনই আর এই মোদির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সরাতে পারব না, কারণ আমার আপনার সমস্ত তথ্য আজ ওদের হাতের মুঠোয়। আমি আপনি এখন শুধুমাত্র একটা সংখ্যা। আমাকে বা আপনাকে মুছে দেওয়া আজ ওদের এক ইশারাতেই হয়ে যাবে। এরপর শুরু হবে চিহ্নিত করে মারার কাজ, কেউ থাকে মোমিনপুরে, কেউ থাকে খিদিরপুরে, এটা তো ওদের জানা হয়ে গেছে, কিংবা অমিত, মৃণালরা যে অন্যরকম কথা বলে সেটা তো তার সোশ্যাল মিডিয়ার চলাফেরা দেখেই বোঝা সম্ভব। সুতরাং চিহ্নিত করে মারা হবে এবার, এতবড় গণহত্যা সারা পৃথিবী কোনওদিনও দেখেনি। যারা ভাবছেন এখনও যে আধার একটা সারা দেশের একমাত্র পরিচয়পত্র, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন, বিশ্বের বড় বড় পুঁজিপতিদের কাছে গিয়ে মোদি কথা দিয়ে এসেছেন দাভোস-এ যে ভারতের জনসংখ্যা কমাব, কারণ না কমালে এই পুঁজিপতিদের অসুবিধা হচ্ছে। এত দানখয়রাতি আর তারা করতে পারছে না। পেনশন, একশো দিনের কাজ, এই ভাতা, ঐ ভাতা আর দেওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রথমে আধারের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হবে, তারপর গণহত্যা সংগঠিত হবে।

তাই গত নির্বাচনে এই বিষয়ে প্রথম পদক্ষেপ করা চালু হয়েছে, যাদের ভোটার লিস্টে নাম আছে কিন্তু ভোটার কার্ড নেই তাদের জন্য এবছর প্রথমবার অন্যান্য আরও দশটা পরিচয়পত্রের সঙ্গে আধারকেও মান্যতা দেওয়া হয়েছে। এতে কোথায় অসুবিধা? আধার কোনও পরিচয়পত্র নয়, কারণ আধার মূলত তৈরি করা হয়েছে অন্তত দুটো প্রাথমিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে। দ্বিতীয়ত আধারে কারও সই নেই, আধার কারও দ্বারা প্রত্যয়িত নয়, আধার ডেটাবেস পরীক্ষিত নয়। সুপ্রিম কোর্টে প্রাথমিক মামলা চলাকালীন ইউয়াইডিএআই যে হলফনামা জমা দেয় তাতে এনরোলমেন্ট এজেন্সির নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর তারা জানাতে বাধ্য নয় বলে জানিয়েছে। এছাড়াও যদি কারও স্মরণে থাকে মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন ৪৯০০০ আধার এনরোলমেন্ট সেন্টার বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন কারণে। কিন্তু এটা তিনি বলেননি সেই এনরোলমেন্ট সেন্টারের করা আধারগুলো বাতিল হয়েছে কি না? যদি ধরে নেওয়া যায় প্রতিটি সেন্টার গড়ে দিনে ৫টা ভুল আধার করেছে তাহলে কত ভুল আধার এই আধারের ডেটাবেসে আছে বলুন তো? ৪৪৭,১২৫,০০০ ন্যূনতম ভুল আধার থাকতে পারে। সুতরাং এর মধ্যে থেকে যে কোনওটি নিয়ে কেউ যদি ভোট দিতে আসে বা ই-ভোট হয়, তাহলে যিনি ভোট করাচ্ছেন তাঁর পক্ষে এটা কি বোঝা সম্ভব যে তিনি ভুল আধার নিয়ে এসেছেন? আপনি বলতেই পারেন ভোটার লিস্টে তো ছবি আছে, সেটা দেখে মিলিয়ে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু আপনিও ভালো জানেন ভোটার লিস্টের ছবি কেমন হয়, আর সেটাও পাওয়া অসম্ভব নয়। ভুয়ো আধার নিয়ে ধরা পড়ার অজস্র ঘটনা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে আবার ভুয়ো আধার নিয়ে সরকারি সুযোগসুবিধা নেওয়ার বহু উদাহরণ আমরা জেনেছি। কারণ যেহেতু আধার কোনওভাবেই পরীক্ষা করা সম্ভব নয়, তাই কোনটা ভুয়ো আর কোনটা আসল আধার এটাও বোঝা যাওয়া অসম্ভব। এছাড়াও তথ্য জানার অধিকার আইনে জানা গেছে যে এখনও অবধি ১১৮ কোটি আধারের মধ্যে প্রায় ৫৮ কোটি আধারের আজ অবধি একবারও হাতের ছাপ কিংবা চোখের মণির সত্যতা যাচাই বা অথেনটিকেশন করা হয়নি। তার মানে এই ৫৮ কোটি ভুয়ো আধার থাকলেও অবাক হবার কিছু নেই।

আধারের তথ্যভাণ্ডার মানে সিআইডিআর এবং এনপিআর যে এক সেটা বোঝার জন্য ২০০৯ সালের একটি সরকারি নির্দেশে ফিরে যেতে হবে যেখানে বলা হয়েছে যে এই এনপিআর, যা নিয়ে ইদানীং এত আলোচনা চলছে, সেই এনপিআর আপডেট করতে আধার লাগার কথা সংসদেও আলোচনা হয়েছে। অনেকে বলতে পারেন এই  আধার তথ্য দিলে কী অসুবিধা? আবার অনেকে বলছেন এই প্রশ্নগুলোই এনআরসির ভিত্তি নয় তো? এখানেই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, কারণ কোনও কোনও নেতা মন্ত্রী বলছেন এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা বাধ্যতামূলক, আবার কেউ বলছেন এটা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইন যদি দেখা যায় এনপিআর কিন্তু কোনও আইন নয়, এটা সরকারি রুল যা আমলারা তৈরি করেন, এবং ২০১০-এ যে রুল হয়েছিল তা বদলাবে কিন্তু সরকারি আমলারাই। তার মানে সরকারই কি আমলাদের এই নির্দেশিকা দিয়েছে যে এই রুল বদল করতে, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ২০০৩-এর আইন দিয়ে কিন্তু এটা করা বেআইনি। এটা নিয়েও যদি কেউ আদালতে যায় সরকার অস্বস্তিতে পড়তে বাধ্য।

বাংলা এবং কেরল এই নতুন এনপিআর স্থগিত রাখার প্রস্তাব এনেছে, আর কংগ্রেস শাসিত রাজ্যেরা বলেছে যে এই ৮টি প্রশ্ন বাদ দিলে তারা রাজি আছে। যেহেতু ২০১০-এর এনপিআর থেকে কোনও এনআরসি হয়নি তাই এই প্রশ্ন ওঠাটা কি অযৌক্তিক? এবার অনেকে বলতে পারেন কি করে বলা হচ্ছে যে এই এনপিআর থেকে এনআরসি হতে পারে? সরকার যদি জেনে ফেলে যে দেশের সমস্ত মানুষের বাবা মায়ের জন্মস্থান কি, তাহলে নতুন আইন অনুযায়ী ১৯৮৭ সালের ১ লা জুলাই এর পর যারা জন্মেছেন সেই মানুষদের তখনই নাগরিক বলে গণ্য করা হবে যদি সেই মানুষটির বাবা মা দুজনেই ভারতীয় নাগরিক হন। আরও সহজে বুঝতে গেলে একটা ছোট উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ধরা যাক এক দেশের রাজা চাইলেন যে সেই দেশের সমস্ত ফলের তালিকা তৈরি করা হোক। সেই অনুযায়ী আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, বেদানা সহ সব ফলের তালিকা তৈরি করার জন্য, টাকাও ধার্য হল। সেই অনুযায়ী সমস্ত ফলের তালিকা তৈরি হল। এরপর রাজা যদি ইচ্ছে প্রকাশ করেন যে উনি আর কাঁঠাল খেতে চান না, তাই যেখানে যেখানে কাঁঠালের ফলন হত সেখানগুলিতে যেন এরপর আম ফলানো হয়, সেটা কি রাজামশাইয়ের কাছে খুব কঠিন কাজ হবে? কিংবা যদি রাজামশায়ের মনে হয় তিনি চান না আর পেয়ারা খেতে উনি তো সহজেই পেয়ারার ফলন বন্ধ করে দিতে পারেন, কারণ এখন তাঁর কাছে তো সমস্ত তথ্য রয়েছে।

এবার আসা যাক সরকার এই তথ্যগুলো কেন চাইছে বা চাইতে পারে? কোনও একজনের আধার তথ্য যদি সরকারের কাছে থাকে তাহলে সেই আধার অনুযায়ী সেই মানুষটির ডেমোগ্রাফিক তথ্য— অর্থাৎ মানুষটি কোথায় থাকে, কী লিঙ্গ, সেই সঙ্গে তার সব বায়োমেট্রিক তথ্য এক জায়গায় চলে আসে। ঠিক যেমন অসমে হয়েছিল। তাহলে একজন মানুষকে তালিকায় রাখা হবে কি হবে না সেটা স্থানীয় রেজিস্ট্রারের ইচ্ছা অনুযায়ীই হবে না কি? যদি খেয়াল করা যায় দেখা যাবে অন্যান্য যে নথিগুলো চাওয়া হয়েছে তার বেশিরভাগ হচ্ছে প্রাথমিক নথি, যা দেখিয়ে মানুষ আধার পেয়েছিলেন, পরবর্তীকালে যেগুলোকে আধার নম্বরের সঙ্গে সংযোগ করানোর জন্য সরকার থেকে নানা সময়ে চাপ দেওয়া হয়েছে। এখন এনপিআরের সময়ে যদি এই সমস্ত তথ্যভাণ্ডারকে এক জায়গায় আনা যায়, তাহলে যে এই তথ্যের অধিকারী হবে, সে কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠবে সেটা কি সহজেই অনুমেয় নয়? একজন মানুষের সমস্ত তথ্য যদি এক জায়গায় আনা যায় এবং সেটা যদি একটি সংখ্যা হয় তাহলে সেই সংখ্যাকে মুছে ফেলা তো অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। যদি খবর নেওয়া যায়, তাহলে দেখা যাবে তেলেঙ্গানা নির্বাচনের সময়ে শুধু ৩৮ লক্ষ মানুষের ডেমোগ্রাফিক তথ্য এবং বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে তাঁদের ভোটার তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সুতরাং আধার-এনপিআর-এনআরসি-ক্যা এই সবকিছুকে দেখতে হবে একসঙ্গে এবং ভোটার আইডি এবং আধার এর সংযোগ করার বিরুদ্ধে রাস্তার লড়াই করতে হবে। না হলে গণতন্ত্র বাঁচানো যাবে কি না সেটা যথেষ্ট সন্দেহজনক।

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4596 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

1 Comment

আপনার মতামত...