দাহ
বাড়ি থেকে বেরিয়ে, প্রথমে
মুখ ঘুরিয়ে তাকালে ওপরে, বারান্দায়
মা এসে দাঁড়িয়েছে, হাত নাড়ছে, তুমি
অল্প হাত নেড়ে, হেসে, সামনে হেঁটে গেলে
তোমার পুরনো পাড়া, চারপাশে চেনা বাড়ি, মাঠ
নতুন মন্দির, স্কুল, মুদিদোকান পেরিয়ে
বড়ো রাস্তায় উঠে দেখলে আকাশে সামান্য মেঘ ঘন হয়ে আছে
সল্টলেক একঘন্টা, বাইপাস ধরে
বাস ছুটছে, ভেজা হাওয়া, জানালার ধারে বসে আছ
অফিসে ঢোকার আগে এই আলোহাওয়া পুরো মেখে নিতে নিতে
চোখ বুজে এল
আটটা থেকে আটটা, তুমি সারাদিন নকল আলোয়
ফোনে কম্পিউটারে মুহুর্মুহু ব্যস্ত থাকবে, মাঝখানে নেমে
বাইরে এসে আধঘন্টা টিফিন, সন্ধ্যায়
আবার বাইপাস, বাস, অন্ধকার পাড়া, বন্ধ স্কুল
দোকান থেকে খুচরো কিছু জিনিস কিনে তাড়াতাড়ি বাড়িতে ঢুকবে
সম্ভবত
সেদিন বিকেলে, ভেজা শান্তিনিকেতনে
দশ মিনিটের জন্য কাজ ফেলে এসেছিলে, দেখা করে যেতে
সারা শরীর থেকে বৃষ্টি পড়ছে, ভেজা চুল, ভেজা হাত, গাল
আঁচল সরানো ডৌলে প্রসন্ন উষ্ণতা, আমি বধ্যভূমিতে
প্রার্থনার ভঙ্গিটুকু বোঝাতে পেরেছি
চারটে পনেরোর ট্রেন
সেদিন, সম্ভবত, দু’তিনমিনিট দেরিতে ছেড়েছে
যশ
যতটা ডাক্তার তুমি, তারও বেশি রূপমুগ্ধ, রচনাবিহ্বল!
নিজস্ব বৃত্তের মধ্যে আরও একটা কাল্পনিক স্বভূমি রেখেছ,
সেখানে মশকরা কর, নিজের নিয়মে, অন্য কারও
পায়ে বল চলে গেলে গোলপোস্ট মুহূর্তে উধাও
করে দিয়ে প্রকাশ্য চেম্বারে ঢুকে স্টেথোস্কোপ ধর।
তবুও, তোমার সঙ্গ, মজা আর আহ্লাদে উজ্জ্বল
নারী ও আড্ডার প্রতি সহাস্যে উদ্যমী তুমি, রোজ
যতটা ডাক্তারি কর, তারও বেশি সময় দিয়ে ফোনে, ফেসবুকে
প্রাণপণ কবিসম্মেলনে, জানি, বন্ধুত্বে কাটাও
ছবিঋণ – ইন্টারনেট