অগ্নি রায়
লেখক কবি ও সাংবাদিক।
এক
বসন্তের কোনও টীকা হয় না। কোচকে অমান্য করা প্রতিভাসম্বল সেন্টার ফরোয়ার্ডের মতন সে স্থিতাবস্থাকে দু’পায়ে ড্রিবল করতে করতে পৌঁছে যায় রং-এর সিঁড়িতে। তীব্র কপাল টিপে কার অশ্রু জমাট, সে জানে। জানে, কোন অন্ধকারে নিভছে জ্বলছে পাহাড়ি জোনাকির আলো। মাস শেষের ম্লান তারিখগুলিকে সে পরিয়ে দেয় বরমাল্যখানি। কোচিং ক্লাস ফেরত অকস্মাৎ ছুঁয়ে যায়, সাইকেলে সাইকেল। বসন্ত বেজে ওঠে। আবার নিভেও যায়। এরপর জুলিয়েট-ক্লান্ত বারান্দায় কে কার কপাল থেকে চুল সরাবে? কে কার চশমা খুলে নিয়ে ভাসিয়ে দেবে ধারাবাহিক আঁধারে? তোমার নতুন ফ্রেমে ততক্ষণে গোলাপজল-মেশানো রোদ এসে পড়ে। তোমার কাচে বিম্বিত পলাশ-সভ্যতা। সংকেত উড়তে থাকে সুগন্ধী গুঁড়ো হয়ে – হে কণকোজ্জ্বল সবিতাবরণে!
দুই
লাভ ইন দ্য টাইম এর চিকেনপক্স-এর মুখরা লিখে কবেই চলে গেছো। ফিরে এসো। দণ্ডিত পাঠকেরা অতীত বসন্ত থেকে আজ পর্যন্ত অপেক্ষায়। হাসপাতাল ও বন্যায় যাদের সব গিয়েছে। কংক্রিট ফাটিয়ে হাসছে যে রুগ্ন গাছ, তার কাছে এসে বসো আজ একবার। দ্যাখো, মখমলবাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে পতঙ্গঘ্রাণ। এই সময়ই মেষবালিকার হাতছানি তোমার আকাশে কপ্টারের চাকার মত ঘুরতে ঘুরতে চলে যায়। পড়ে থাকে মোবাইল ডেটা, ভ্রমরগুঞ্জন, ভেরোনিকার শাদাটে পাপ। অবিন্যস্ত কেশদামে রাতের জটিল স্বর্গ লেগে থাকে।
তিন
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার ঘোর গলিতে দাঁড়িয়ে সম্বৎসর গিটার বাজিয়ে যাওয়ার পর কানহাইয়ার আজ টুপি খুলে বাও করার দিন। স্থলে জলে বনতলে পাওনাকড়ি বুঝে নেওয়ারও। মাতাল পাক অজুহাতের সকাল। মালানা ক্রিমের সুবাসে নড়ে চড়ে বসুক পাড়া। চৌকাঠ পেরোলেই যে আবিরের পাহাড় তা যেন কোনও বলিউডের অতীত ফ্রেমজব্দ। এ সবের মাঝে রঙে ভারাক্রান্ত থাকো বরং। জল ও বাতাসে একটু একটু করে পেন্টিংসম্ভবা হয়ে ওঠো বেলা গড়ালে। যতক্ষণ না নুপূরের ঢেউ এসে স্থানীয় বাতাসকে এশিয়ান পেন্টস-এর বিজ্ঞাপন করে দেয়। ব্যর্থতার ক্লিভেজ খুঁজতে রঙ এবং সাবান— দু’জনেরই দেরি হয়ে যায়।
[ছবি- শিল্পী শুভেন্দু দাস।]