সৌমনা দাশগুপ্ত
ইচ্ছেসাপ
তারপর কুম্ভ থেকে জেগে উঠছেন
ঝড়ের দেবতা
অশ্রুমুখী বাতায়ন
নক্ষত্রের সমাধিতে
পূর্বাভাস ছিল
তর্জনী ও মধ্যমার মাঝে কুশ
আগুন ও মধুভাণ্ড-মাঝে ঘৃৎপ্রপাত
ইস্পাতের নরম দণ্ডটি গলে যাচ্ছে ফোঁটায় ফোঁটায়
মাঝেমধ্যে মনে হয়
সবই স্পর্শাতীত
মাঝেমাঝে জ্বলন্ত করোটি
হাঁড়িকুড়ি সামান্য তণ্ডুল আর নুন লঙ্কার দিন
ইচ্ছেসাপ ডুকরে কাঁদছে রোদে
ধুনুরিবাজনার তালে উড়ে যায় শীতেলা-দুপুর
আনএডিটেড
বিষয় কুকুর হয়ে ঘোরে
লাল জিভ
মাংস ছিঁড়ে খাচ্ছে দাঁত
বিষয় কুকুর হয়ে ঘোরে
ভূমার চোখের জল নদী
হ্লাদিনী কমলা এক সূর্য
বিকেলের স্রোতে ভেসে
আংরা বমনের পথে পথে
বিষয় কুকুর হয়ে ঘোরে
লালা ঝরে
এটুকুই অপেক্ষা পড়ে থাকে
এইটুকু লোভ
স্বতোৎসারিত কূপ
ফাঁকা পেডেস্টালে স্থপতির
চোখ থেকে রক্ত ও পুঁজের
ফণাগুলি সটান দাঁড়িয়ে
বিষয় কুকুর হয়ে পথ থেকে পথে
লিখে রাখে কাগজের ধ্বনি ও কামড়
ফাঁস
বাঁধন ছিল না জানি তবু কেন ফাঁস এঁটে বসে
চূড়ান্ত কামড় লিখে দাগ টানছ লক্ষ্মণরেখায়;
আমি তবে স্রোত হব তোমার নদীতে বন্যাজল
সামাল সামাল মাঝি সিগনালে লালবাতি জ্বলে
আমাকে ভ্রমের থেকে দূরতর কোনও এক দ্বীপে
নামিয়ে রেখেছি নিজে— যেমতি একলা নিশীথিনী
নামায় শিকড় তার বালুচাপা নদীটির বুকে;
একান্ত পাতাল ফুঁড়ে জন্ম নিচ্ছে গাছ ও শেকড়
পঞ্চাশ বর্ণের মালা নৃমাতৃকা কমলিনী ঘোরে
উগ্রচণ্ডা হয়ে আসি, আসি যেন উড়ন্ত শকট
এক তার চাকা গেঁথে বলে ওঠে, এভাবে ধারণ
করো যত হলাহল নিমবিষ চুঁয়ে চুঁয়ে নামে;
তুমি শুধু ছুঁয়ে থাকো এইভাবে দিবসরজনী
ঐন্দ্রজালিক
কুহক রঙের আলো, আমারও তো পাতার স্বভাব
খসে পড়ি উড়ে যাই, প্রশাখার বেদনাসঞ্জাত
এক ধ্বনি অবিরল ঈড়া ও পিঙ্গলা বেয়ে নামে
মায়াকবুতর আসে হাত থেকে খুঁটে খায় দানা
ছলনার দিকে যাব হাড়ের পাশায় দেব চাল
বৃষ্টির ভান করে চলি নতমুখ গাভীন ধূমিকা
নিজেকে বুঝি না আমি, শুধু বুঝি অশনি ডেকেছে
এ কলিজা বাজে পোড়া, তুমি তবু রুমাল ওড়াও
সহস্র ঝরনা নামে ওড়ে লাল নীল প্রজাপতি
দর্শক আসন থেকে ভেসে আসে নিয়ন্তার হাসি
ললাট লিখন বলে! বলো হে গোঁসাই মধুরাতে
এমনও দংশন ছিল, গহীন অঙ্গারকথা ছিল
কেমনে ফসল রুই কোন হাতে জল সামলাই