সত্যব্রত ঘোষ
লেখক চলচ্চিত্রনির্মাতা, চলচ্চিত্রবেত্তা, গদ্যকার
ইরফান খান যখন আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, তখন তিনি দেশ-বিদেশের চিত্রপরিচালকদের কাছে অতি-আদরনীয় এক দুর্লভ শিল্পী, স্বকীয় আলোয় উজ্জ্বল এক নাম। যে অভিনেতা, আলোকচিত্রশিল্পী, শব্দযন্ত্রী এবং অন্যান্য টেকনিশিয়ানরা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন, প্রত্যেকেরই মনে ইরফান বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। শুধু একজন অভিনেতা হিসেবেই নয়, সাহসী, সংবেদনশীল এবং সহমর্মী মানুষ হিসেবে যিনি চলতি হাওয়ার পন্থী হয়ে নিজের মেধার অপচয় করেননি।
ভারতীয় উপমহাদেশের একটি চরিত্র যখন সমকালীন আন্তর্জাতিক সিনেমার কোনও চিত্রনাট্যে গুরুত্ব পেয়েছে, চিত্রনির্মাতারা ইরফানের সঙ্গেই এযাবৎ প্রথম যোগাযোগ করেছেন। এবং অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে ওনার চরিত্রায়ন ক্ষমতা ব্যবহারে মনযোগী হয়েছেন। ইরফানের এই স্বীকৃতি হঠাৎ আসেনি। এর নেপথ্যে শুধু ইরফানেরই নয়, সামগ্রিকভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং তার আবেদনে দীর্ঘকাল ধরে ঘটে চলা বিবর্তন প্রক্রিয়াটির ভূমিকা আছে।
সিনেমা শুধু দৃশ্যময় নয়, শব্দময়ও। যে দৃশ্যমালা আমাদের চোখের সামনে ‘মুভি’ হয়ে ওঠে, তাতে শব্দ না থাকলে সিনেমার বানিজ্যিক আবেদন কতটুকু বজায় থাকত, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। সিনেমার আদিযুগে চিত্রনির্মাতারা তা টের পাচ্ছিলেন। তাই পর্দায় ছবি প্রদর্শনের পাশাপাশি একজন বর্ণনাকারী এবং কিছু বাদ্যযন্ত্রীও নিযুক্ত করতে শুরু করেন তাঁরা। দৃশ্যের মৌখিক বিবরণের পাশাপাশি আবহ সৃষ্টির জন্য পিয়ানো, ভায়োলিন প্রভৃতি বেজে উঠত। দর্শকরা সেই অভিজ্ঞতা লাভের জন্য টিকিট কিনে প্রেক্ষাগৃহে আসতেন।
এই পর্বে চার্লি চ্যাপলিন, বাস্টার কিটন এবং অন্যান্যদের নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘের নির্বাক চলচ্চিত্রগুলিও তাৎক্ষণিক মনোরঞ্জনের জন্যেই জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তীকালে দেশবিদেশের চলচ্চিত্র-অভিনেতাদের কাছে চ্যাপলিনের ‘ট্র্যাম্প’ চরিত্রায়ন হাস্যকৌতুকের আবরণ ভেদ করে শিক্ষণীয় হয়ে উঠবে। বিশেষ করে সেই সন্ধিক্ষণের পর, যখন সিনেমা সবাক হলেও চ্যাপলিন দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাক অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে ব্যক্ত করেন।
‘টকি’ একদিকে যেমন সিনেমাকে বাণিজ্যিক প্রকল্প হিসেবে আকর্ষণীয় করে তোলে, অন্যদিকে তা চলচ্চিত্রনির্মাতা ও শিল্পীদের সামনে প্রতিকূলতাও সৃষ্টি করে। চরিত্ররা কথা বললে এবং নেপথ্যে আবহসঙ্গীত থাকলে গল্প বলবার কাজটি সহজ হয়ে যায় বটে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কথা এবং উচ্চকিত বাদ্যযন্ত্র প্রয়োগগুলিতে যে আলোড়নগুলি সৃষ্টি হয়, তাতে সিনেমার নিজস্ব অভিব্যক্তি ম্রিয়মাণ হবার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যহিত পরে টেলিভিশনের প্রসার ঘটলে সিনেমা মাধ্যমটির বিশেষত্বগুলি আবিষ্কারের প্রতি ঝোঁক বাড়ে তাঁদের, যাঁরা সিনেমার বাণিজ্যিক দায়বদ্ধতাকে অতিক্রম করে নিজেদের শিল্পীসত্তাকে গুরুত্ব দিতে চেয়েছেন। এবং এই পর্বের সিনেমা থেকেই আবার নৈঃশব্দকে নতুন করে মর্যাদা দেওয়া শুরু হয়। চিত্রনাট্যে সংলাপের বহর ছোট হয়— সাহিত্যে ব্যবহৃত যতিচিহ্ন এবং অনুচ্ছেদ ভাগের মতো করে চলচ্চিত্রে নীরবতা ব্যবহারের নিত্যনতুন কৌশলে মাধ্যমটি ক্রমশ বহুচর্চিত হয়ে ওঠে।
কাহিনিচিত্রে অভিনেতাদের ভূমিকা অপরিসীম। অভিনয়শিল্পে যারা দক্ষ, তাঁদের চাহিদা রয়েই যায়। কিন্তু যে শিল্পীরা বাচিকশিল্পকেই অভিনয়ের পরাকাষ্ঠা বলে ধরে নিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে সিনেমায় অভিনয় করাটা পীড়াদায়ক হয়ে ওঠে। কারণ চিত্রপরিচালকের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁদের মুখস্থ করা সংলাপ বলা বারবার থামাতে হচ্ছে এবং বহুক্ষেত্রে শব্দ উচ্চারণের নাটকীয় ওঠা-নামাগুলিকে পরিচালকের ভাবনার সাযুজ্যে বলতে হচ্ছে, যা তাঁদের আয়ত্ত করা দক্ষতার ‘অপমান’। অভিনেতাদের থেকে পরিচালকদের প্রত্যাশা তখন একটাই— কাহিনির যে চরিত্রগুলির ভূমিকা তাঁদের দেওয়া হয়েছে, সেগুলি যেন পর্দায় বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। সংলাপ বলাও যেখানে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই অভিনেতার নীরব উপস্থিতিতে দৃশ্যে প্রাণসঞ্চার ঘটানোর দিকেও পরিচালক তখন মনোযোগী।
সিনেমা নির্মাণের যে যন্ত্র-নির্ভরতা, তাতে চরিত্রগুলির স্বাভাবিক আচরণ পর্দায় ফুটিয়ে তোলবার অত্যন্ত জটিল দায়িত্বটি চলচ্চিত্র-অভিনেতাদের উপর বর্তায়। ততটাই তাৎপর্যময় হয়ে ওঠে সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের কাজটি। অর্থাৎ, কোনও একটি বিশেষ দৃশ্যে দুই বা তার বেশি অভিনেতাদের মধ্যে একজন নিজের ভূমিকাটি সুচারু উপায়ে পালন করলেই দৃশ্যটি সম্পন্ন হয় না। অন্য অভিনেতাদের পারদর্শিতার নিরিখে কথা বলা বা না বলা, যথার্থ চোখ-মুখ-হাতের ব্যবহার, নিয়ন্ত্রিত চলন এবং আচরণকে চিত্রনাট্য অনুযায়ী রূপ দেওয়াটা এক্ষেত্রে আবশ্যিক। এক অর্থে, সিনেমার অভিনেতাদের তাই ‘ক্রিয়া’র চেয়ে ‘প্রতিক্রিয়া’র উপরেই বেশি নজর দিতে হয়।
ইরফান খানের মতো সদা-উৎসুক শিল্পীরা এমন পরিবেশেই নিজেদের যথার্থে উজাড় করে দিতে পারতেন। আমরা এমন একজন অভিনেতাকে পেলাম, যিনি এসে, ‘তারকা’দের মতো নিজের কাজটুকু করে নিশ্চিত হয়ে চলে গেলেন না যে সিনেমার পর্দাটা শুধুমাত্র ‘আমিময়’ থাকবে। বরং সহশিল্পীদের সঙ্গে অভিনয়ের তাল ও ছন্দ বেঁধে রাখবার জন্য তিনি অবিরত চিত্রপরিচালকের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের অভিনয়ের পরিসরটিকে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রসারিত এবং সঙ্কীর্ণ করতেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রের তথাকথিত ‘তারকাখচিত’ রাজত্বে, এই দলগত মনোবৃত্তি এবং স্বার্থত্যাগ নাসিরুদ্দিন শাহ ছাড়া আর আর কারও ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ করা যায়নি এযাবৎ।
কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। বিশাল ভরদ্বাজের ‘সাত খুন মাফ’ ছবিটিতে ইরফানের চরিত্রটি ছিল অত্যন্ত জটিল। গালিব-ভক্ত কাশ্মিরী কবিটির যৌন বিকার সুসান (প্রিয়াঙ্কা চোপড়া) বিয়ের পর জানতে পারে। এই অন্তরঙ্গ দৃশ্যটি তোলবার আগে পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ ইরফানকে বিশেষ কিছু নির্দেশ দেন প্রিয়াঙ্কার অগোচরে, যার মধ্যে দিয়ে চরিত্রটির ক্রূরতা ও নিষ্ঠুরতা স্পষ্ট হবে। ‘অ্যাকশন’ বলবার পর ইরফান সচেতনভাবে প্রিয়াঙ্কাকে যে পীড়া দিতে শুরু করেন তাতে নায়িকার চমকে রেগে যাওয়ার প্রতিক্রিয়াটি বিশাল ধরতে চাইছিলেন। এই দৃশ্যটিকে ইরফান যে সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে প্রিয়াঙ্কার শারীরিক অভিব্যক্তিতে বিবমিষা জাগিয়ে তোলেন, তা শুধু পরবর্তী প্রজন্মের কাছেই নয়, সমসাময়িক এবং বর্ষীয়ান শিল্পীদের মধ্যে আজও বিস্ময় জাগায়।
সমন্বয় ও সহযোগিতার প্রসঙ্গে প্রিয়দর্শন নির্দেশিত ‘বিল্লু’ ছবিটির বিশেষ কিছু দৃশ্যের কথা বলতে হয়। বন্ধু তারকা (শাহরুখ খান) বিল্লুদের গ্রামে শুটিং করতে এসেছে। বিল্লুর মেয়ে ও ছেলে এবং স্ত্রী তারকা শাহরুখ খানের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়ার জন্য বিল্লুর কাছে অনবরত বায়না করতে থাকে। বিল্লু নিজের ক্ষুদ্রতা নিয়ে সঙ্কুচিত। তাই পরিবারের চাহিদা মেটাতে তার অনীহা। এই অনীহার অন্য মানে করে পরিবারের সবাই বিল্লুকে লাগাতার নানাভাবে মানসিকভাবে অগ্রাহ্য করে চলেছে। বিল্লু তা নীরবে সহ্য করছে। কিন্তু বিল্লুর উপর কথা আর আচরণের যে তীক্ষ্ণ বাণগুলি শিশু অভিনেতা দুজন একটার পর একটা ছুঁড়েছে, সেগুলিতে শান দেওয়া এবং অভিনেতাদের এই ‘অশালীন’ আচরণের জন্য প্রস্তুত করবার কাজটি ইরফানের দ্বারাই সম্পন্ন হয়েছিল।
সুজিত সরকারের ‘পিকু’ ছবিটিতে বিরক্ত গাড়ি চালক ইরফান সহ্যের সীমা অতিক্রম করে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ছুরি বার করে পিকু (দীপিকা পাডুকোন)-এর উপর আক্রমণে উদ্যত হয়। ডক্টর ভাস্কর ব্যানার্জি (অমিতাভ বচ্চন) গাড়ি থেকে নেমে এসে এই ঝগড়া থামায়। ‘পিকু’ ছবির এই দৃশ্যে তিনজন অভিনেতার সুসমঞ্জস আচরণ ভারতীয় সিনেমার একটি বিশেষ সম্পদ। যে পরিশ্রম, ধৈর্য, অধ্যাবসায় এবং সমন্বয়ে এই দৃশ্যটি গৃহীত হয়েছিল, তা শুধু অন্য অভিনেতাদের জন্যই নয়, পরবর্তী প্রজন্মের চিত্রপরিচালকদের কাছেও একটি অনুপ্রেরণা বিশেষ।
মেঘনা গুলজার কৃত ‘তলোয়ার’ ছবিটিতে সিবিআই অফিসার হিসেবে আবির্ভূত ইরফান ইতিমধ্যেই জেনে গেছে যে খুনের তদন্তে যথেষ্ট গাফিলতি হয়েছে। সেই ছিদ্রগুলি অন্বেষণ করবার পর ক্রমশ যত সে সত্যির কাছাকাছি পৌঁছাতে চায়, উপর মহল থেকে একটার পর একটা বাধা আসতে থাকে। ডিপার্টমেন্টাল এনকোয়ারি দৃশ্যটিতে যেখানে ইরফানের থেকে কেসটি কেড়ে নেওয়া হয়, সেখানে সমন্বিত অভিনয়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। কিন্তু নীরব অভিব্যক্তি দিয়ে ইরফান যে বার্তাটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন, কেসটি প্রসঙ্গে সচেতন দর্শকসমাজ ট্র্যাজিক ঘটনাটির শোক এবং সামগ্রিক ব্যবস্থার প্রতি রাগ একই সঙ্গে অনুভব করতে পেরেছেন।
ম্যাকবেথের যে মানসিক সঙ্কট বিশাল ভরদ্বাজের ‘মকবুল’-এ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তার জন্য ইরফানের চোখা চোখা সংলাপ বলতে হয়নি। পর্দায় নীরব উপস্থিতি দিয়েও তিনি আমাদের বোঝাতে সমর্থ হয়েছেন সিনেমায় সংলাপ তখনই ব্যবহার করা সঙ্গত, যখন তা মোক্ষম হয়ে উঠবে। ঠিক যেভাবে চার্লি চ্যাপলিন তাঁর ‘গ্রেট ডিক্টেটর’ এবং ‘মঁসিয়ে ভার্দু’ ছবি দুটিতে শব্দোচ্চারণের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে প্রবেশ করেছেন।
শব্দ ব্রহ্ম। সিনেমার ক্ষেত্রে এই সার সত্যিটা একজন অভিনেতাকে উপলব্ধি করতেই হবে। তিনি তা উপলব্ধি করলে বুঝবেন নীরবতা কতটা বাঙ্ময় হয়ে ওঠে। ইরফান খানের অভিনয়কৃতি নিয়ে পরবর্তীকালে যখনই আলোচনা হবে, তখন বারবার একথাটা উঠবেই। নৈঃশব্দকে তিনি একের পর এক ছবিতে যেভাবে মর্যাদা দিয়েছেন, তেমন আর কতজনেই বা পারেন। এই বিশেষ ক্ষমতাটি আয়ত্ত করতে তাঁর অনেকটা সময় লেগেছে— মীরা নায়ারের সালাম বোম্বে থেকে রীতেশ বাত্রার ‘দ্য লাঞ্চবক্স’— এই দীর্ঘ যাত্রাপথে ‘বনেগি আপনি বাত’, ‘চন্দ্রাকান্তা প্রভৃতি টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলিও ছিল, যেখানে সংলাপ আউরানোটাই ছিল অভিনয় দক্ষতার প্রধান মাপকাঠি। চলচ্চিত্রে আবহসঙ্গীত প্রদানের জন্য খ্যাতিসম্পন্ন জুড়ি সেলিম-সুলেমানের সেলিম (মার্চেন্ট) প্রয়াত ইরফান খানের শ্রদ্ধার্ঘ্যে যে মন্তব্যটি করেছেন, তা এই প্রসঙ্গে প্রনিধানযোগ্য। তিনি বলছেন, “চিত্রপরিচালকেরা আমাদের নিযুক্ত করেন এইজন্য যে সম্পাদনার পরেও ছবিটির কিছু পরিসর ফাঁকা রয়ে যায়, যা সঙ্গীত দিয়ে ভরাট করা প্রয়োজন (ইন্ডাস্ট্রির ভাষায় যাকে ‘কার্পেটিং’ বলা হয়)। ইরফান ভাই পর্দায় এসেছেন, কথা বলছেন না— এমন দৃশ্যগুলিতে আমরা সঙ্গীত প্রয়োগ করতে চাইতাম না। কারণ ইরফান ভাইয়ের নীরব উপস্থিতির যে সুরেলা ভাব, তাতে সঙ্গীত আরোপ করলে দৃশ্যগুলির কাব্যময়তাই হারিয়ে যাবে।”
একটি পর্যায়ে পৌঁছে ইরফান বুঝতে পারছিলেন, জীবনটা শেষ অবধি সবকিছু ছেড়ে দেওয়ারই এক দীর্ঘ ক্রিয়া (“I suppose, in the end, the whole of life becomes an act of letting go”)। অতি সংবেদনশীলতা এবং সচেতনতার দীর্ঘ প্রক্রিয়াটির মধ্যে নির্লিপ্তির তাৎপর্য যে কম নয়, অভিনেতা ইরফান খানের সিনেমার মাধ্যমে বারবার তা আমাদের মনে পড়বে।