দেব বন্দ্যোপাধ্যায়
আকরিক
তোমাকে বলেছিলাম, ওই যে সীমান্ত
যেখানে বৃষ্টিসম্ভবা মেঘবধূরা জোট বেঁধেছে..
ওই দিকটা তোমার,
জ্যোৎস্না জলে নাইতে নাইতে
ওরা ধুয়ে দেবে চাঁদবুড়ির উঠোন,
ঘুম পাড়ানি গান গাইলে
শেষ রাতে ধোঁয়া সরে স্পষ্ট হয়ে আসবে
সাত ঋষির পায়ের ছাপ
আর এই দিকের শুকনো যে আকাশটা..
ওটা আমার
অনাবিল নক্ষত্রপথ, নিশ্ছিদ্র..বাঙ্ময়
অথচ থাকবে প্রতিধ্বনিহীন ….
তবু সেদিন আচমকা
তুমি ঢেলে দিয়েছিলে জলরঙ..
তোমাতে আমাতে ছোঁয়াছুঁয়ি হঠাৎ
এ আকাশ ও আকাশ মিলে
ফ্যাকাশে হয়েছিল বাঁশপাতার ক্যানভাস
ফুটেছিল সমুদ্র গোলাপ… গাঢ় নীল
সেদিন দেখেছিলাম সে অসুখ
আমাদের চোখের অতলান্তিক গভীরে
কোনো এক পূর্বজন্মের খনিজ …
রবিবার
দরজায় দুধের বোতল । জানলার গ্রিলে শিশির ।
সিঁড়ির কোনে ঘুমোচ্ছে পল্টুদের বিড়াল ।
সরছে চাদর । ফ্যানের হাওয়া শীত শীত ।
খেলার মাঠে হারিয়ে যাওয়া বল, নিশ্চুপ ।
ঘড়িতে ন’টা । রজনীকান্তের গান । রবিবাসরীয় ।
দোকানে ভিড়, “দাদা, এ চাল বাসমতী তো?”,
“আদা আজ কত করে?” “এই আড়াইশো টমেটো দাও”
গরম কড়াই । সর্ষের তেল । তেজপাতা, থেঁতো রসুন ।
“সরস্বতীর মা, কাঁচালঙ্কার বুক গুলো চিরে দিও” ।
তৃতীয় পাতায় বাকি খবর খুঁজতে গিয়ে ঢুল আসছে
বেতারে শ্যামল মিত্র “ও শিমুল বন, দাও রাঙিয়ে মন”
গ্রিলে লেগে আছে শুকনো শিশিরের দাগ
তার গা বেয়ে সুরেল এক তৃপ্তির গন্ধ মিশছে অন্তরীক্ষ্যে ।
শহরের প্রান্তে হাইওয়ে । হাইওয়ের প্রান্তে গ্রাম । আজ প্রায় ফাঁকা ।
খেলতে খেলতে আঁতকে উঠল একটা সাদা ছাগলছানা ।
চোখে ঘুম জড়িয়ে পৃথিবী দেখার মতো। একটা মায়া-চাদর যেন জড়ানো রয়েছে। অপূর্ব চিত্রকল্প।
অশেষ ধন্যবাদ রাহুল !!