প্রকৃতির ধমকে খুলে গেল সভ্যতার আলখাল্লা

স্থবির দাশগুপ্ত

 


লেখক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ও প্রবন্ধকার

 

 

 

সামাজিক পরিসরে রাজনীতিকরা সচরাচর দীর্ঘায়ু হন না। জনমানুষের পক্ষে তা মঙ্গলজনক কিনা জানি না। তবে স্বল্পায়ু হয়েও তাঁরা সমাজজীবনে যে অসামান্য প্রতিভার দূরপনেয় ছাপ রেখে যান তা আমাদের নির্বাক করে দেয়। তাই ভাইরাসের তাড়া থেকে বাঁচতে তাঁরা যখন আমাদের মাসের পর মাস গৃহবন্দি থাকতে বললেন, তখন অবাক হইনি, বিমোহিত হয়েছিলাম। কেউ কেউ হয়তো এমনও ভাবতে পেরেছিলেন যে, আমাদের রাজনীতিকদের অকল্পনীয় ধীশক্তির কথা নিশ্চয়ই ভাইরাসের কানে পৌঁছে যাবে; আমাদের দেখাদেখি ভাইরাসের গতিও মন্থর হয়ে যাবে। তারপর শিকার সন্ধানে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত হয়ে, অবশেষে ধরাশায়ী হয়ে সে দেশছাড়া হবেই হবে। ভাবনাবিলাস আমাদের মজ্জাগত।

মানবশরীরে জীবাণু আর ভাইরাসের পুষ্টির জন্য বন্দোবস্ত আগে থেকেই মজুত থাকে। সে মানুষের দোষ না, বিবর্তনের অমনই কারসাজি। তাকে কাঠগড়ায় তোলা যায় না; তাই মানুষকেই দায়ী করা। নইলে সংক্রমণের প্রথম প্রতিষেধক হিসেবে গৃহকোণে পড়ে থাকার যুক্তি জীববিজ্ঞান বা ডাক্তারিবিজ্ঞান আর সমাজবিজ্ঞান, কোথাও নেই। অনেকে অবশ্য যুক্তি আবিষ্কার করে বলেছেন, ‘লকডাউন’-এর সুযোগে নাকি স্বাস্থ্য পরিষেবার ঘরদোর একটু গুছিয়ে-গাছিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু সে-যুক্তিও অচল, কেননা এখানে জনস্বাস্থ্যের পরিষেবা মোটেই অগোছালো না, বরং তা বহুকাল গৃহহীন, অন্নবস্ত্রহীন, পাগলপ্রায়। আমরা আজকাল ‘সুপার স্পেশ্যালিটি’র সাধনা করি; তাই সাপের ছোবল মাথায় পড়লে বেসামাল হয়ে পড়ি। তাহলে দেখাই যাচ্ছে, যে-কোনও সমস্যার ভুল ব্যাখ্যায় কর্তৃপক্ষই যে সবচেয়ে সিদ্ধহস্ত সেকথা সত্যিই।

রাজনীতিকরা অবশ্য উপদেষ্টাদের কথায় চলেন। উপদেষ্টারা ক্ষণজন্মা; তাই প্রাণভরে তাঁদের কথা শুনতে-শুনতে আমরা কত কিছুতেই নিগূঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে শিখে গেলাম। আমাদের এই নিঃসঙ্কোচ শিক্ষার মাত্রা এমনই যে, একটা হাসপাতালে একজনের সংক্রমণ ধরা পড়লে গোটা হাসপাতালেই তালা লাগিয়ে দিই। পাড়ায় কেউ ভাইরাসে সংক্রামিত হলে আমরা এখন গোটা পাড়াটাকেই দুর্গ বানিয়ে, কার্ফিউ লাগিয়ে দিতে জানি। আমাদের মগজেও। অদৃশ্য ফোঁটাণু (‘ড্রপলেট’) বয়ে বেড়ানো অপবিত্র মানুষ যেন কোনও ছিদ্রপথ দিয়ে গলে না-যেতে পারে। ‘সামাজিক দূরত্ব’ এমন এক ব্রহ্মাস্ত্র যে তাতে শুধু ভাইরাস না, জনমানুষও কাবু হয়ে গেল। এমন ‘যুদ্ধকৌশল’ আমরা শিখেছি যে, একটুকরো সাবান প্রতিদিন, প্রতিঘরে বিলি করার কথা মাথায় আসেনি। আমাদের অর্থনীতি নাকি বটবৃক্ষ, তবুও।

ভাইরাসকে একটা জীব বলা যায় কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা আজও বিভ্রান্ত। তাদের কোষ নেই, তারা নিজের জোরে উৎপাদন করতে জানে না, অন্য কোনও জীবকোষ ছাড়া তাদের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ও নেই; তাই তারা নাকি অণু মাত্র। এমনকী, বাহন ছাড়া তারা চলতেও পারে না। কিন্তু অন্যেরা বলেন, তাতে কী; ওই ভাবগতিকই তো প্রমাণ করে দেয় যে, তারা জীবই, তবে অ-কোষীয়, অতি ধুরন্ধর। বাহন-নির্ভর, পরজীবী হয়ে মহানন্দে কাটিয়ে দেবার নমুনা তো মানবসমাজেই অঢেল; তার বেলা? আসলে কোষবিহীন ভাইরাসের প্রাণময়তা থেমে থাকে, যাকে বলে, ‘সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশন’। উদ্ভিদের বীজের মধ্যেও অমন সুপ্তাবস্থা দেখা যায়, প্রাণীজগতেও। এমনকী, একটা জাতি হিসেবে বাঙালিও তো কবে থেকে জীবন্মৃতই।

তা নইলে ভাইরাসের আতঙ্কে আমরা সুড়সুড় করে বিচিত্র ‘মডেল’-মহলে ঢুকে পড়লাম কী করে? এক-এক মডেলের এক-এক ছিরি। লন্ডনের একগুচ্ছ সাহেব বললেন, এই মুহূর্তে দেশটাকে বন্দি করে না-রাখলে অচিরেই ৫ লক্ষ ১০ হাজার মানুষ মারা যাবেন। আমরা শুনে বললাম, তাইতো, তাইতো, আমাদেরও তাহলে…! ক’দিন পরে তাঁরাই জানালেন, অঙ্কে একটু ভুল হয়ে গেছে, মারা যাবেন প্রায় কুড়ি হাজার। আমেরিকান সাহেবরা জানালেন, ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখলেও ১ লক্ষ থেকে আড়াই লক্ষ লোকে মারা যাবেন। আমরা ভাবলাম, তাইতো, তাহলে কী করা? আবার ক’দিন পরে তাঁরা জানালেন, সংখ্যাটা হবে ৬১ হাজার! এইসব ভ্রান্তিবিলাস দেখেও আমরা ভাবলাম, অঙ্কে-টঙ্কে অমন ভুলচুক হয়েই থাকে, ভুলের পরিমাণ এমনকী, ৯৮ শতাংশ হলেও কিছু বলা চলবে না। সাহেবসুবো তো!

তবু সাহেবরা মাঝেসাঝে ভুল স্বীকার করে নেয়, কেউ পদত্যাগও করেন। আমাদের ওসব বালাই নেই; আমাদের নকলনবিশি আকাশচুম্বী, নির্বুদ্ধিতাও। অশিক্ষিত পটুত্ব সম্বল করে আমরা বুঝতেও পারি না যে, মডেলের সরল অঙ্কগুলো জীববিজ্ঞানের চলমানতার সঙ্গে খাপ খায় না, বরং জোর করে খাটাতে গেলে জনজীবনে সীমাহীন বিপর্যয় ডেকে আনে। তাই সেগুলোকে ‘তথ্যপ্রমাণ’ বলা চলে না। ডাক্তারিবিদ্যাও কোনও নিরালম্ব, বায়ুভূত শাস্ত্র না যে, তার সূত্রগুলো খপ করে লুফে নিয়ে যেকোনও মাটিতে পুঁতে দিলেই ফুল ফুটবে। বর্ণময় উপদেষ্টারা না-হোক, সাধারণ ডাক্তারসমাজের তো এসব ভুলবার কথা না। কিন্তু কী করা, মুষ্টিমেয় ব্যতিক্রমী ছাড়া, বদ্যিসমাজ এখন ‘হাতে বন্দুক পায়ে বন্দুক’ আর শিরস্ত্রাণ নিয়ে কী এক ‘যুদ্ধাভিযানে’, আর নয়তো ভাইরাসের আতঙ্কে ‘হেঁটমুণ্ড ঊর্ধপদ’।

তাঁদের ‘সঙ্কোচের বিহ্বলতা’ এমনই যে অক্লেশে ভাবতে পারলেন, একটা সংক্রামক ব্যাধি এসে গেলে অন্যান্য রোগবিরোগগুলো নির্বাসনে থাকবে। যেন জনসমাজে সংক্রমণ ছাড়া বাদবাকি সব ফাউ। কোথায় গেল শিক্ষা আর পারদর্শিতার অহমিকা, কোথায় সহমর্মিতা, মানবিকতা? নাকি এসব আসলে ছিলই না, সবটাই আলখাল্লা, ঘুমের ঘোরেই আমরা তাঁদের মনোহর মূর্তি গড়েছিলাম? নাকি বিদেহী, বিদেশি ভাইরাস ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়ে গেল, জনজীবনে তাঁরা তেমন অপরিহার্য না! পক্ষান্তরে প্রমাণ হয়ে গেল, তাঁদের না-হোক, রোগীদের জীবনীশক্তি অফুরন্ত। তাই মনে হয়, ‘এলিট’, সুভদ্র, বিদগ্ধ সমাজই নব-জড়বুদ্ধির জন্মদাতা, চরাচরব্যাপী জনমানুষ তার শিকারমাত্র। এমনকী, সংক্রমণে মৃত ব্যক্তিকে প্লাস্টিকে মুড়ে ফেলে রাখবার নিদানও এলিটদের মাথা থেকেই এসেছে। কীসের বিজ্ঞান, কীসের হিতবুদ্ধি, কীসের অভিজ্ঞা? বিজ্ঞজনেরা বোধহয় শোনেননি, ‘এভাবে নয়, এভাবে ঠিক হয় না’।

এমন বৈদগ্ধ আর বিচক্ষণতা পরিহার করলেই বা সমাজের ক্ষতি কী? এতকাল জানতাম, শিক্ষা জনসমাজের পক্ষে অপরিহার্য পরিষেবা, যাকে বলে ‘এসেনশিয়াল’; এখন জানলাম, তা মোটেই না। জানতাম, মহামারির গতি নির্ভর করে মানুষের উপর, তার যানবাহনের উপর। গুটিবসন্ত এসেছিল জাহাজের গতিতে, ম্যালেরিয়া রেলগাড়িতে, আর কোভিড এসেছে এরোপ্লেনের গতিতে। এখন জানলাম, মহামারির চেয়ে মহামারি-সৃষ্ট আহাম্মকির গতি অনেক বেশি; সে ছড়িয়ে পড়ে সংবাদমাধ্যমে দেখানো ছবির গতিতে, নির্বোধ কলরবের গতিতে। নতুন শতক সেই মতিভ্রম কলরবের শতক। সেই শ্বাসরুদ্ধকর কোলাহল আমাদের জানাল, চার শতাংশের ভয়ঙ্কর অকালমৃত্যু অনিবার্য। ছিয়ানব্বুই শতাংশ যে নিরাপদ সেকথা আমাদের কেউ ভাবতে বলেনি। অথচ এখন জানা যাচ্ছে, আমাদের দেশে সংক্রমণের হার এক লক্ষে দশ জন। উপদেষ্টাদের বোলচালে মৃত্যুহারও গুলিয়ে গেছে।

কর্তৃপক্ষের অসীম বদান্যতায় আমাদের নতুন প্রাপ্তি হল, বিচ্ছিন্নতা। পণ্ডিতরা বলেন, বিচ্ছিন্নতা আর একাকিত্বও একটা অণু, ভাইরাসের মতোই। আমাদের অজান্তেই সে শরীর আর মনে ধ্বংসের বীজ পুঁতে দেয়, জিনচরিত্রের বদল ঘটে যায়, ধেয়ে আসে নানান্‌ রোগ। মনে হয়, বার্ট্রান্ড রাসেলের কথাই ঠিক— একটা সমস্যার সুরাহা করতে গিয়ে দশটা নতুন সমস্যা তৈরি করে দেওয়াই আধুনিক বিজ্ঞানের চরিত্র। তাহলে এ কেমন বিজ্ঞানচর্চা? বিজ্ঞান তো একটা মানবিক উদ্যোগ; যে-বিজ্ঞান মানবিক যুক্তির বিপরীতে হাঁটে সে কেমন বিজ্ঞান? তাহলে কি বিজ্ঞানচিন্তা নিয়ে কাগজে আর সভায় শিক্ষিত বাঙালির যে এতকালের এত নিরলস পরিশীলন, এই তার পরিণাম? এক কোভিড-১৯এই আমাদের এমন হিজিবিজি অবস্থা, এর পর তো আসবে কোভিড-২০, ২২, ২৪; বাঁচাবে কোন বিজ্ঞান?

অথচ নমস্য গবেষকরা গত কয়েক মাস ধরে বলে চলেছেন, একটু কাণ্ডজ্ঞান খাটান। কোভিড রোগের ভাইরাস মানবজাতিকে ধ্বংস করে দেবে এমন ভাববার কোনও কারণ নেই। গম্ভীর কণ্ঠে যেসব হিসেবনিকেশ প্রচার করা হচ্ছে তাতে গোলমাল বিস্তর। তাছাড়া অতি-গাম্ভীর্য মানেই কৃত্রিমতা। কিন্তু তাঁরা তো জানেন না, অন্তত আমাদের দেশে কাণ্ডজ্ঞানের মহাপ্রয়াণ ঘটে গেছে। বহুকাল হল, আমরা তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ব্যস্ত। সেই বিচিত্র আয়োজনের মধ্যেই এল প্রকৃতির আর এক প্রখর ধমক, আমফান। তার যা যা করার কথা ছিল তা তো করলই, কোনও খামতিই রাখল না প্রায়। কিন্তু প্রকাণ্ড খামতি দেখা গেল অন্যত্র— আত্মরক্ষার সজ্জা-সংস্থানে। খামতি অবশ্য আমাদের কাছে নতুন না; কোনও পরিষেবাই এখানে কোনওদিন যথার্থ ছিল না, আজও নেই।

ওদিকে, শুধু আমফান তো না, ভাইরাসের অজুহাতে অ-সরকারি হাসপাতালগুলো যেভাবে মুনাফা তৈরির নতুন নতুন পথ আবিষ্কার করে ফেলল, সেও দর্শনীয়। একে তো প্রকৃতির ধমক, তার উপর বর্বর মুনাফাবৃত্তি, জনমানুষের স্বল্পকালীন স্মৃতিতে এমন অভিজ্ঞতা দুর্লভই বটে। তাই অসঙ্গত হলেও, জনজীবনে প্রশ্ন উঠছে, সরকার ঠিক কতটা দরকার! কারণ, সরকার বলে সত্যিই যদি কিছু থাকে তাহলে সে শুধু হ্রেষাধ্বনি দিয়ে জানান দেয় না, তার বহু কিছু করণীয় থাকে। অমানবিক, অসভ্য আচরণের বিরুদ্ধে সে পদক্ষেপ নিতে পারে। সেই সদিচ্ছা আর চোখে পড়ে না। তাহলে কি এটাই সাব্যস্ত হবে যে, আশাহত, অপমানিত, বিতাড়িত জনমানুষ নিজের উদ্যোগে নিজের জীবন রক্ষার দায়িত্ব হাতে তুলে নেবে? সেই দৃশ্যও কি খুব লাবণ্যময় হবে?

তবে একটা দৃশ্য সত্যিই মনোজ্ঞ, হৃদয়গ্রাহী। তা এই যে, ধ্বংসলীলার সঙ্গে আমফান আরও একটা কাণ্ড ঘটিয়ে গেল; একটা সংক্রমণ সামলাতে আমরা যতরকম বর্বরতার নমুনা রেখেছি তা নিমেষে ধূলিসাৎ করে দিল। দিগন্ত বিস্তৃত হাহাকারের মধ্যে আবার মানুষ মানুষের হাত ধরেছে, সান্নিধ্য চেয়েছে, বিচ্ছিন্নতা না। অপার নির্বুদ্ধিতার মুখে ঝামটা মেরে সাধারণ মানুষই বুঝিয়ে দিয়েছে, আমরা মিলনপিয়াসী, বিচ্ছেদ-বিলাসী না। আমরা জানতাম, বিবর্তনের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী আমরাই— শুধু নিজে টিকে থাকার স্বার্থেও আমরা ভয়াবহ যুক্তি রচনা করতে পারি। কিন্তু একই সঙ্গে পরার্থপরতাও যে আমাদের চরিত্রের আর এক দিক তা আর একবার প্রমাণিত হল। এও আমাদের এক পরম প্রাপ্তি।

এর পর একদিন আমরা যখন ভাইরাসদের সঙ্গে বোঝাপড়া করার মতো একটা মানবিক যুক্তিময়, সর্বজনগ্রাহ্য পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারব, সেই দিনই হবে নতুন সভ্যতার শুরু। ‘মহা আশ্বাসের প্রবল নিঃশ্বাসে’ সেদিন আমাদের প্রাণ জুড়োবে, সেই আশায় থাকা।

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4880 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

6 Comments

  1. স্থবির দাশগুপ্ত খুব সুন্দর লেখেন। সংবাদপত্রে ওঁর লেখা আগেও পড়েছি। শুধু একটাই বলার এই অতিমারীর মোকাবিলা কোন পথে করাটা আমাদের দেশে বাস্তবানুগ হত সে ব্যাপারে আলোচনা থাকলে আরো ভালো লাগত।

  2. স্থবির অস্থিরতা র মাঝে ফেললে। আরও অনেক কথা বল । সমাজের উপকার হবে । এগিয়ে নিয়ে চল ।

  3. মৃত্যুর হার ১%,২%,৪% যাই হোক না কেন সেই শতকরা হিসেবে আমরা সবাই আতঙ্কিত।বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধ তাদের কথা তো ভাবতেই হচ্ছে। আসলে নানাপ্রকার মত আমাদের আরো গোলমাল পাকিয়ে দিচ্ছে।এই অবস্থায় এটা সঠিক মত ও পথের প্রয়োজন।

  4. Darun Sthabirda! I worked with Dr Ashok Maulik, for 30 yrs, and heard your name many many times from him. But your writing beauty is so excellent, I did never know. Keep well dada. Hari.

  5. খুব যুক্তিপূর্ণ আলোচনা কিন্তু নেই কোনো দিশা।

    • সত‍্য অনুভূত হয় তার উপরে মতামত হয়না।

      ওজনদার কথা বা পরামর্শ না শোনার দলে যারা, শুধু বয়সের অভিজ্ঞতাই যাদের পাথেয়, আমরা তাদের কি বলে চিহ্নিত করব, তার পরোয়া ওদের নেই, ওরাই ভালো আছে। বাড়ি, শহর থেকে অন্তত ১০০ মাইল দূরে, কোয়ারান্টাইন উচ্চারণ করতে পারেনা, দরকার ও নেই ওদের। শহুরে মাপে ৭০ বা ৮০ শতাংশ, ওরা চেস্টা করছে কাজ করতে, কেড়ে নিয়েছি আমরা যারা ৯০ দিন দেশ চালাতে ৫০০০এর উপর অর্ডার বার করেছি! কয়েকজনের সাথে কথায় জেনেছি ওদের পাড়ায় কারো নজর কাড়া শারীরিক অসুবিধা হয়নি। গুটি কয়েক মাতব্বর গতর খাটিয়ে রাস্তায় বাঁশ বেঁধেছে, বাইরের কাউকে ঢুকতে দেয়নি ইত্যাদি, আর এতেই নাকি আটকে গেছে ভাইরাস! ধারনা বদ্ধমূল হয়েছে গ্রামের সবার। এরা সবাই পার্টির লোক! সব কাজ যে বন্ধ হয়ে গেল দুনিয়া জুড়ে তার দায় যখন ভাইরাসের, কোর্টের বিচার অবান্তর হোলো, বিচার হবে ভোটে, তাই শুরু h1b ভিসা, হিন্দুমুসলমান।
      অস্বাভাবিক কিছু হয়েছেকি আমার দেশের প্রেক্ষিতে? অসুখের প্রকোপে কবে আমরা একজন আরেকজনের কোলে বসেছি? বসন্ত, কলেরা, ম‍্যালেরিয়া নামক মহামারীতে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনেই তো বেঁচেছে দেশটা আর তার কাজকর্ম! যাদের কথা দিয়ে শুরু করেছি তারা এই অভিজ্ঞতার জোরেই বাঁচছে, মরটালিটি রেট দেখে নয়। দিশাতো ছিলই,আছেই, নতুন করে দেখাবার কি আছে? স্লোগান, পোস্টার, টিভি আর মোবাইলে বাঁচার চেস্টায় শহর, অভিজ্ঞতা আর বই বড্ড দূরে হয়ে গেছে।

আপনার মতামত...