শিবাংশু দে
দিল্লির ‘সংস্কৃতি’ই লাশ গোনার। নাহ, কেউ এতে শুধু তুর্কিদের খুঁজবেন না। জম্বুদ্বীপ থেকে আজকের ভারত, বিশ্বের একটি হিংস্রতম জনগোষ্ঠীর আবাসস্থান। ইন্দ্রপ্রস্থ ছিল আজকের ‘গর্ব সে বোলো’দের স্বপ্নের স্বর্গ। সেখানে লাশ গোনার গল্প তো অনন্ত এক মহাভারত। হাজার তিনেক বছর কেটে গেছে তার পরেও। ‘ধর্মযুদ্ধে’র সেই ট্র্যাডিশন এখনও চলেছে। এই জায়গার হাওয়াপানি সেবা করলেই কেন মানুষের মনে প্লাবনের মতো ঈর্ষা, দ্বেষ, হিংসার রক্তাক্ত বীজতলা মাথাচাড়া দেয়, তার খবর কে দেবে? সেরকম একটা জায়গাই আমাদের ‘রাজধানী’। রাজক্ষমতার কেন্দ্র।
অথচ এদেশ যাঁদের নামে ধন্য হয়েছে তাঁরা সবাই বলে গেছেন ভালোবাসা ছাড়া মানুষের আর কোনও ছায়া নেই। উত্তরাধিকার নেই। অথচ টিভি দেখলে আজ কাতর হয়ে পড়ি। খবরকাগজ পড়লে বিপর্যস্ত। অক্সিজেন কোথায় পাওয়া যায়, কেউ বলতে পারে না। নিজের শুশ্রূষা খুঁজে নিতে চাওয়া নিজের কাছেই। পলায়নী মনোবৃত্তি বলতে মন চায় না। ছলনাও নয়। আমরা রাজনীতিক নই, পুলিশ নই, বিচারক নই। সাধারণ মানুষ। খুব সীমাবদ্ধ ক্ষমতানির্ভর হয়ে প্রান্তিক বেঁচে থাকি। প্রতিবাদ করতে চাই। চাই না এসব হোক। লাশের রাজনীতি থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাই। ছোট ছোট মানুষের, ছোট ছোট আশা, কে রাখে খবর তার? ইতিহাসের থেকে, প্রকৃতির থেকে ইতিবাচী ইশারা খুঁজে যাই। কেউ ভাবেন এর নামই ‘রোমান্টিকতা’? জানি না। শব্দটির হাজার অর্থ হয়। তার মধ্যে রামধনুর মতো অগণন রঙিন মাত্রা।
মুঘল আমলে দেশে নানা প্রান্তের ছোটখাট নবাব-রাজার দল নিজের নিজের রাজ্যে এই ছলনা নিয়ে অনেক খেলেছেন। শুধু যুদ্ধজয়ের তাগাদা, উদ্দাম ভোগবাসনার ফাঁদ। ইতিহাসের কালিমাখা রাজকীয় দম্ভের রোমান্টিক আখ্যান। হয় ক্রমান্বয়ে ক্ষমতাবিস্তারের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, নয় চূড়ান্ত ভোগবাদী অবক্ষয়। হয় সিপাহির লাশ গোনা, নয় কিসান-মজদুরের। মধ্যযুগে তাঁদের রাজপাট মুঘলদের মতো না হলেও খুব একটা ছোটও ছিল না। যুদ্ধবিগ্রহ করতেন তাঁরা। কিন্তু মুঘল বাদশাকে বাঁচিয়ে। ওঁদের সঙ্গে পাঙ্গা নিতে গেলেই সাড়ে সর্বনাশ। গোলকোণ্ডা, মাণ্ডু, বিদর, বিজাপুর, রায়গড়, ওর্ছা, আমের… আরও অনেক, অনেক। উত্তর-পশ্চিম মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলা রাজপুতদের কিসসা তাদেরই অন্যতম।
বেতওয়া নদীর পাড় ধরে এক ভোরবেলা হেঁটে যাওয়া। ছত্রীগুলির উপর ভোরবেলার নরম রোদ। নদীর স্রোত বেশ খর। লালহলুদ রঙের বিপুল স্থাপত্যগুলি নিঃশব্দে গল্প বলে যায়। প্রেম, রোষ, প্রতিহিংসা, বিশ্বাসঘাত, ষড়যন্ত্র, আত্মত্যাগ, অর্থাৎ ঐতিহাসিক রোমান্স লেখার সব উপাদান মজুত সেখানে। রাজপুত বুন্দেলা রাজা রুদ্রপ্রতাপের হাতে তৈরি একটি ছোট্ট সামন্ত রাজ্য এই জায়গাটি। যেখানে প্রতিটি মহল, মন্দিরের বিধ্বস্ত দেওয়ালগুলি থেকে উপকথার ফিসফাস শোনা যায়।
মুঘলদের অতীব শত্রু রাজা বীরসিংদেও বাপ-বেটার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন। বাপ, মানে স্বয়ং জগদীশ্বরোবা আকবর। পুত্র সলিম বিদ্রোহী। বাপ পাঠালেন তাঁর বিশ্বস্ত সেনাধ্যক্ষ ও বিখ্যাত পণ্ডিত আবুল ফজল ইবন মুবারককে। বীরসিংদেও আবুল ফজলকে হত্যা করে তাঁর ছিন্ন মুণ্ড যুবরাজ সলিমকে উপহার দিলেন। প্রতিদানে কুমার সলিম বাদশাহ জহাঙ্গির হয়ে বীরসিংদেওকে ফিরিয়ে দিলেন ওর্ছার রাজপাট। বুন্দেলখণ্ডের রাজত্ব। বাদশাহ ও রাজার সৌহার্দ্যের সাক্ষী ওর্ছা দুর্গের বিখ্যাত জহাঙ্গির মহল। বাদশাহ অবশ্য সেখানে মাত্র একটা রাতই কাটিয়েছিলেন।
লাগোয়া রাজমহল প্রাসাদের বিশাল ব্যাপ্তি, তার রানিমহল, ঝরোখা, কুলুঙ্গি, পাথরে কাটা জালির পর্দা, অন্তঃপুরিকাদের ঘরগৃহস্থী, অলিন্দ, ফ্রেস্কো সব মিলিয়ে নামিয়ে দেওয়া যায় একটা ‘ঐতিহাসিক’ রোমান্স উপন্যাস। গল্প তো ছড়িয়ে আছে চারদিকেই। রাজা যুঝার সিংয়ের ভাই দিন্মান হর্দোলের নামে যে হলুদ রংজর্জর ছোট্ট প্রাসাদটি। লোকে বলে ‘উওহ তো হমারা ভগওয়ান হ্যাঁয়’। তাঁর গল্পটিও অদ্বিতীয়। সবাই বিশ্বাস করে সেই রাজপুত্র এখনও বেঁচে আছেন। সঙ্কটে পড়লে স্থানীয় মানুষদের ‘অরণ্যদেব’ হয়ে আবির্ভূত হন।
রাজা যুঝার সিংয়ের ভাই হর্দোল তাঁর স্বভাবগুণে ছিলেন প্রজাদের প্রিয়। যুঝার সিংয়ের সেটা সহ্য হত না। তিনি সন্দেহ করতেন ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর রানির অবৈধ সম্বন্ধ আছে। এই সন্দেহে হাওয়া দিতেন বাদশাহ শাহজাহানের অনুগত লোকজন। সন্দিগ্ধ রাজা রানিকে আদেশ দিলেন যদি তিনি নিষ্পাপ হন, তবে যুবরাজ হর্দোলকে যেন বিষপ্রয়োগে হত্যা করেন। রানি তো রাজি হলেন না। কিন্তু হর্দোল রানির শুচিতা প্রমাণ করতে নিজেই বিষপানে আত্মঘাতী হলেন। তাঁদের ভগ্নী যুঝার সিংয়ের এই অপরাধের প্রতিবাদ করেছিলেন। কুপিত রাজা তাঁর ভাগ্নীর বিবাহের সময় মন্তব্য করলেন, তিনি কোনও দায়িত্ব নেবেন না। তাঁরা হর্দোলের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন।
লোকে বলে, তথাকথিত ‘মৃত’ যুবরাজ হর্দোল নিজে সেই বিবাহসভায় সক্রিয়ভাবে অতিথিদের আদরযত্ন করেছিলেন। লোকে মানে, হর্দোল স্থানীয় সব বিবাহসভায় উপস্থিত থেকে কন্যাদায়গ্রস্ত মানুষদের উদ্ধার করেন। ঐ এলাকায় যত বিয়েশাদি হয়, হর্দোলের নামে একটি নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়। নবদম্পতির জন্য তাঁর কাছে আশীর্বাদ চেয়ে। লোকে রুষ্ট হয়, যদি কোনও বাইরের লোক গল্পটি বিশ্বাস না করে। তাঁদের মতে হর্দোল ‘কভি ভি জিন্দা হো সকতে হ্যাঁয়।’
বীরসিংদেওয়ের পুত্র যুঝার সিং ও তাঁর পুত্র বিক্রমজিৎকে মুঘল সেনাপতি শাহ দাওরান বাদশাহ শাহজাহানের আদেশে মুণ্ডচ্ছেদ করে হত্যা করেন।
ওর্ছা কিলার মধ্যে ভারি সুন্দর একটা ছোট্ট প্রাসাদ রয়েছে রাই পরভিনের নামে। তিনি ছিলেন বুন্দেলরাজা ইন্দ্রমণি সিংয়ের দয়িতা নটী। তাঁর খ্যাতি স্বয়ং বাদশাহর কানেও পৌঁছোয়। রাজার আপত্তি অগ্রাহ্য করে বাদশাহ রাই পরভিনকে নিজের হারেমে সামিল করার জন্য লোকলশকর পাঠিয়ে দেন। রাজার কিছু করার ছিল না। কিন্তু রাই পরভিন বাদশাহের সামনে বলেন, জাঁহাপনা, শুধু রাজার সেবক, কাক ও কুকুর অন্যের স্পৃষ্ট অন্নগ্রহণ করে। আপনি কেন করবেন?
রাই পরভিনের বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ বাদশাহ তাঁকে সসম্মানে রাজার কাছে প্রত্যর্পণ করেন।
এগারো শতকে একটি রাজপুত গোষ্ঠী বুন্দেলা রাজত্বের পত্তন করে। ওর্ছার বুন্দেলা রাজপুতরা ছিলেন বনারসের গহরওয়ার বংশের মানুষ। তাঁদের প্রথম রাজধানী ছিল ‘গড়খুয়ারে’। ষোলো শতকে রাজধানী চলে আসে ওর্ছায়। আঠেরো শতক পর্যন্ত সেখানেই ছিল। রাজা রুদ্রপ্রতাপ ১৫৩১ সালে ওর্ছায় বুন্দেলা রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। বুন্দেলা আর মুঘলদের সম্পর্কটি চিরকালই ছিল অশান্ত। সতেরো শতকের প্রথমে রাজা ছিলেন বীরসিংদেও। তিনি ছিলেন মুঘল যুবরাজ সলিমের ঘনিষ্ঠ। সলিম, বাদশাহ আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে বীরসিংদেও তাঁকে সাহায্য করেন। সেই অপরাধে সলিমের বিদ্রোহদমন করার পরে আকবর বুন্দেলাদের রাজত্ব ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। বীরসিংদেওয়ের কপাল ফিরল জহাঙ্গির বাদশাহি পাওয়ার পর। পরবর্তী বাইশ বছর, ১৬২৭ সাল পর্যন্ত, বুন্দেলা আর মুঘলদের সম্পর্ক ছিল খুব ভালো। শাহজাহান বাদশাহ হওয়ার পর আবার সম্পর্কে অবনতি ঘটে। বীরসিং উত্যক্ত হয়ে বিদ্রোহ করেন। কিন্তু তেরো বছর বয়সী শাহজাদা অওরঙ্গজেব যুদ্ধে বুন্দেলাদের হারিয়ে দেন। পরে আঠেরো শতকে বুন্দেলারা আবার রাজত্ব উদ্ধার করে ফেলেছিলেন। ১৭৮৩ সালে বুন্দেলাদের রাজধানী ওর্ছা থেকে টিকমগড়ে স্থানান্তরিত হয়ে যায়।
ওর্ছা কেল্লাটি বেতওয়া বা বেত্রবতী নদীর একটি দ্বীপের উপর নির্মিত হয়েছিল। একটি সেতুর মাধ্যমে যুক্ত ছিল মূলভূমির সঙ্গে। কেল্লার জাঁক দেখানো প্রাসাদ ছিল জহাঙ্গির মহল। সতেরো শতকে বাদশাহ জহাঙ্গিরের ওর্ছা আসা উপলক্ষে এই বিশাল প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। রাজা বীরসিংদেও নির্মিত জহাঙ্গির মহল ওর্ছা কেল্লার প্রধান আকর্ষণ। সুরম্য এই প্রাসাদটি যেমন মজবুত, তেমন সূক্ষ্ম কারুকার্যমণ্ডিত। কেল্লার অন্য প্রধান প্রাসাদ, রাজমহলও একটি দর্শনীয় নির্মাণ। বাগানঘেরা আরেকটি প্রাসাদের নাম রাই পরভিন মহল। রাই পরভিন ছিলেন কবি, গায়িকা, নৃত্যশিল্পী এবং রাজার প্রণয়িনী। তাঁকে নিয়ে নানা রোমান্টিক গল্পকথা। লোককথার চরিত্রগুলো ক্রমশঃ তৈরি হতে থাকে।
ওর্ছার প্রধান মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতা রামচন্দ্র। রাজা মধুকর শাহ ছিলেন বিষ্ণুপূজক। কিন্তু রানি গণেশীবাই ছিলেন রামভক্ত। তিনি অযোধ্যায় তীর্থ করতে গিয়ে রামকে অনুরোধ করেন ওর্ছায় বিরাজমান হবার জন্য। রামলালা বালকরূপে তাঁর সঙ্গে এসে প্রাসাদে রানির মহলে বিরাজমান হলেন। রাজা মধুকর শাহ একটা মস্ত মন্দির বানিয়ে যখন রামের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করতে গেলেন তখন রাম আর নড়লেন না। রাজা আবার স্বপ্ন পেলেন রাম সেখানেই থাকতে ইচ্ছুক। শেষ পর্যন্ত রাজার প্রাসাদটিই হয়ে গেল রামের মন্দির। রাম হয়ে গেলেন রামরাজা। নাম হল রাজারামের মন্দির। নবনির্মিত রামের মন্দিরটি বিগ্রহহীন অবস্থায় রয়ে গেল। সুসজ্জিত, সুনির্মিত কিন্তু শূন্য গর্ভগৃহ, দেবতাহীন, অন্ধকার। রাজার বিষ্ণুভক্তির কথা মনে রেখে ‘চতুর্ভুজ’ মন্দির তৈরি করেছিলেন রাজমহিষী গণেশীবাই। সেখানে পূজিত হন বিষ্ণুদেবতা। বিশাল চতুর্ভুজ মন্দির ছাড়া রয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির। এর স্থাপত্যটিতে মন্দির ও দুর্গের মিশেল দেখা যায়। ভিতরের ফ্রেস্কোগুলি লক্ষণীয়। ওর্ছার বিশেষত্ব নদীর ধারে রাজাদের একরাশ, মোট চোদ্দোটি, স্মৃতিমন্দির। এদের স্থানীয় ভাষায় ‘ছত্রী’ বলা হয়। নদীর ঘাটের নাম কাঞ্চনঘাট।
বুন্দেলা রাজাদের পতন শুরু হয় মরাঠাদের দৌলতে। পেশোয়া বালাজি বাজিরাও ১৭৪১ সালে ওর্ছায় আসেন। উত্তরভারতে তাঁদের একটা উত্তম কেল্লার প্রয়োজন ছিল। তাঁরা বুন্দেলাদের থেকে রাজা বীরসিংদেওয়ের তৈরি ঝাঁসি দুর্গটি নিয়ে নেন। বুন্দেলাদের থেকে ওর্ছা আর দাতিয়া রাজ্যের অধিকাংশ অংশ অধিকার করে মরাঠারা ঝাঁসিরাজ্যের পত্তন করেন। বুন্দেলারা টিকমগড়ের দিকে সরে যান। ইংরেজদের হাতে ঝাঁসির শেষ রাজা, রানি লক্ষ্মীবাইয়ের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে বুন্দেলখণ্ডে রাজপুতদের গরিমা শেষ হয়ে যায়।
ওর্ছা গিয়েছিলুম একটা বসন্তের মরশুমে। এমনিতেই বুন্দেলখণ্ডে বৃষ্টির দেখা বিশেষ পাওয়া যায় না। ঝাঁসি থেকে আগরার পথে একটু উত্তরে গেলেই সেই চম্বল নদী। তার অভিশপ্ত বেহড়ের টানা চরাচর। মাটি, পাথর আর বালুর চর, রং বদলে যায় বারবার। কখনও ছোটবড় পাথরের টিলা, পাহাড়, কাঁটাবন, সাকুলেন্ট গুল্মরাজির ছোপ ছোপ সবুজ। তার মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকা বেত্রবতী। পাথর পেরিয়ে, মাটি ভিজিয়ে, সবুজের দাগ টানতে টানতে গড়িয়ে যাচ্ছে দক্ষিণে। শিমুল-পলাশ যাই যাই। কৃষ্ণচূড়ার সময় আসেনি। আসন্ন শিবরাত্রির পুণ্য অর্জন করতে মন্দিরে মন্দিরে লাল চুনরির ঘোমটায় বুন্দেল সুন্দরীরা। ছ গজ পাগড়ির রোয়াবমস্ত লম্বা চওড়া বুন্দেলা রাজপুতদের কপালে লাল টিকা। দূর চক্রবালে, বেতওয়া নদী পেরিয়ে কেল্লার বারুদখানা, উটখানার ওপারে, বহুদূরে টানা পাহাড়ের ওপারে সূর্যদেব বাড়ি ফিরছেন।
ব্রাহ্মণীর সঙ্গে রানিমহলের অলিন্দ থেকে পশ্চিমে জালিকাটা ঝরোখায় নরম রোদের আলপনা দেখি। এত হিংসা, দ্বেষ, রক্তপাতের চাপে জানু ভেঙে পড়ে যাওয়া ছাড়া কি কোনও বিকল্প নেই? ভাবি, আমাদের মতো হীন মানুষজনের জন্য দৈবী রোমান্সের একটা আশ্রয় যদি ওর্ছায় তৈরি হয়? ভালোবাসা ছাড়া যে আমাদের আর কোনও ছায়া নেই। শুশ্রূষাও নেই। সুপরামর্শহীন ভারতদেশে আশ্চর্য সব মানুষের প্রতীক্ষায় আমাদের রাতদিন…
মনে হয় এর চেয়ে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ভালো।
এইখানে
পৃথিবীর এই ক্লান্ত এ অশান্ত কিনারা দেশে
এখানে আশ্চর্য সব মানুষ রয়েছে।
বেতোয়ার পশ্চিমে সাঁঝ নেমে আসে…
হেডার এবং লেখার সঙ্গের ছবি লেখকের তোলা