বুড়োবুড়ির তট

বুড়োবুড়ির তট -- শৈলেন সরকার

শৈলেন সরকার

 

ঘুমের মধ্যেও চলে আসত সেই বুড়োবুড়ি। এলোমেলো হাওয়া, ঢেউ আর ভট্‌ভট্‌-ভট্‌ভট্‌ ধ্বনি। আরে আমিই তো। একা আমিই। চারপাশে চিকচিক করা জল, মাথার উপরে এক আকাশ অন্ধকার। একটা কোনও তারার চিহ্ন নেই কোথাও। এই ভটভটি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? আলো বলতে ওই দূরে বড় গাঙের গায়ে নির্জন তটে কে যেন একটা হারিকেন নিয়ে বসে। হারিকেনের কাঁপতে থাকা আলোয় মনে হচ্ছে একজন তো নয়, দুজন। দুজনই। যেন এক বুড়ো আর এক বুড়ি। যেন অন্ধকারে একটা কোনও শব্দ আন্দাজ করছে। গাঙ বেয়ে তা হলে আসছে কেউ। আশায় আশায় সেই বুড়ো আর বুড়ি উঁচিয়ে ধরছে হারিকেনটাকে।

ভটভটি আমাকে কোথায় নিয়ে যেত কে জানে, কিন্তু ঘুম ভাঙার পর আন্দাজ করতাম সেই বুড়ো আর বুড়ি তখনও বড় গাঙের গা-ছোঁয়া সেই তটে হারিকেন উঁচিয়ে নিশানা দিতে চাইছে। বলতে চাইছে, আয় আয়।

বড় গাঙের গায়ে ঠাকুরান নদীর মোহনায় ছোট্ট দ্বীপ কে-প্লটের পুলের বাজারের মনির চায়ের দোকানে হ্যাজাকের আলোয় সন্ধের পরপর অনেক মুখ-অনেক গল্প। আলাউদ্দিনের দিদি সায়রার প্রথম বিয়ে হয়ে গেছে, আর সেই প্রথম বিয়ের শ্বশুরঘর ছেড়ে ও তখন বাড়িতে। এমনকী ওর যে আগে বিয়ে হয়েছে একটা, তখনও অজানা আমার। সায়রার দ্বিতীয় বিয়ে তাও দু হাজার এক-দুই হবে। আলাউদ্দিন বলল, আপনি তো শুধু বুড়োবুড়ির তটের কথা বলেন, এবার ইচ্ছে করলে যেতে পারেন। বলল, সায়রার শ্বশুরবাড়ি রাক্ষসখালি, বুড়োবুড়ির তটের একেবারে উলটো দিকে।

নৌকা রসুলের। বিশ-পঁচিশ বছর আগে জঙ্গলের কাঠ চুরির হিড়িক ছিল খুব। এই নৌকা কাঠ চুরির। ছোট। মাঝখানে ছাউনি। বরবউ বসবে ওখানে। নৌকা ছাড়বে কে-প্লটের দক্ষিণে লকগেট থেকে। জোয়ারের সময় দক্ষিণে একেবারে শোঁ-শোঁ শব্দ তুলে জল আছড়ে পড়বে। বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে থাকলেও পুরো ভিজে যাবে যে কেউ। কিন্তু এটা ভাটা। আমরা লকগেট থেকে খাল বরাবর বাইরে বেরিয়ে গঙ্গার ঘাট হয়ে পশ্চিমে বনশ্যামনগরের পাশ দিয়ে যাব। বাংলাদেশের জাহাজের রাস্তা এই জলপথ। সেই বাংলাদেশ থেকে কলকাতা। দক্ষিণে আর পাঁচ-সাত কিলোমিটার গেলে সাগর। রসুল বলল, বঙ্গোপসাগর। এটা মোহনা। নদী একেবারে চওড়া হতে হতে— দেখছিও তাই। রসুলকে বললাম, এইটুকু নৌকায় সামলাতে পারবে? তার মধ্যে সিঙ্গল সিলিন্ডার—। রসুলের কথায়, কাঠ কাটতে যাওয়ার সেই টাইগারের জঙ্গল এখান থেকে কতটা পথ ধারণা আছে আপনার? বা, ওখানকার নদীর? এই নৌকা সেই টাইগার থেকে কাঠ বওয়ার, নিশ্চিন্ত থাকুন। বলল, যাব নদীতে নদীতে, ফিরব সাগর দিয়ে। বলল, ভয়ের কিছু নেই, আমি আছি।

দক্ষিণে না গিয়ে নৌকা অবশ্য দ্বীপটাকে পশ্চিমে বেড় দিয়ে উত্তরে উঠতে লাগল। দ্বীপের পুবের বেড়ের নদী ঠাকুরান আর পশ্চিমের বেড়ের নদী শিবুয়া। আমরা যাব, শিবুয়া ধরে পশ্চিমে। বলা যায় শিবুয়া থেকে ঢুকব অন্য এক নদীর মুখে। নদী এখানে অনেকটাই সরু, ভাটার জন্য সরু লাগছে আরও। শিবুয়ায় মাথা রেখে একটা কুমির যেন চিত হয়ে শুয়ে। আমরা যাব একেবারে বিরাট বাজারের পাশ দিয়ে সপ্তমুখী। কেউ আবার বলে শতমুখী।

বিরাট বাজার পার হওয়ামাত্রই নদীতে হুড়োহুড়ি খুব। ভাটায় পাড়ে বসিয়ে রাখা ছোট নৌকা ঠেলে নীচে নামাচ্ছে কেউ। হইচই, চিৎকার। রসুল বলল, নিশ্চয়ই কুমির ধরেছে কাউকে। কুমির শুনেই আমার সঙ্গী ছোটন, রবিন বা মৌ আঁতকে উঠল। কুমির আছে এখানে? রসুল বলল, এত হইচই দাপাদাপি না থাকলে আমাদেরও চোখে পড়ত। এখানে নদীর পাড়ে শুয়ে রোদ পোহায় তো! চেনাজানা একজনকে লক্ষ করে রসুলের চেঁচিয়ে জিজ্ঞাসায় জানা গেল, নিয়েছে কোনও এক হারুনের মাকে। মীন ধরছিল। রসুলের কথায় এখানে কুমিরের মুখে পড়ে তো অনেকেই। বলল, বডি পেতে পেতে কাল-পরশুও হয়ে যেতে পারে। কুমির এখন বডিটাকে কতদূর নিয়ে নদীর পাড়ের কোন ঝোপ-জঙ্গল কোন খাঁড়িতে গুঁজে দিয়েছে কে বলবে? এরপর সপ্তমুখী। রসুল তখন সাতটা নদীর মুখ দেখাচ্ছে। কোনটা কোন দ্বীপের গা ঘেঁসে এসেছে। কিন্তু আমি নিশ্চিত কারও কানে তখন আর রসুলের কথা ঢুকছে না। সবার মনে তখন একটু আগে পেছনে ফেলে আসা নৌকার দাপাদাপি। হইচই, চিৎকার। সবার মনেই তখন এক হারুনের মা। সবার মনের মধ্যেই এক কুমির দেখছে হারুনের মাকে দূর থেকে। ভেসে থাকা নাক আর চোখ। ছোটন, রবিন বা মৌ-এর মনের মধ্যে এক কুমির তখন দূর থেকে ডুব দিচ্ছে একজন কাউকে ধরবে বলে। একটা চিৎকার, আর রক্ত-লাল নদী।

দ্বীপের নাম জি-প্লট। কে-প্লটের মতো ছোট নয়। জি-প্লটের চাঁদমারি ঘাটে আমাদের সবাইকে নামিয়ে শুধু বর-বউ আর বরের সঙ্গে আসা দুজনকে নিয়ে নৌকা আমাদের চোখের বাইরে চলে গেল। রসুলের কথায়, ‘তোমরা ভ্যান নিয়ে বুড়োবুড়ির তটে গিয়ে অপেক্ষা করো, আমি এদেরকে রাক্ষসখালি নামিয়ে চলে যাব।’ এখনকার একেবারে ঢালাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ডিফেন্সার ভ্যান আর দুপাশের পাকা দোকানঘর গুলিতে হামলে পড়া ভিড়ের ছবির থেকে বিশ বছর আগেকার ছবি বলতে গেলে আকাশ আর পাতাল। তখন ভাঙা ইটের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পা-ভ্যান। জীর্ণশীর্ণ জেটিঘাট। সাকুল্যে পাঁচ-সাতটা মাটির দেওয়ালের দোকানঘর। ভ্যান ঠিক করে যাত্রা শুরু হতে ভ্যানওয়ালা জানতে চাইল, ‘কাদের বাড়ি যাবেন?’

—কোনও বাড়ি নয় তো। জায়গাটার নাম শুনেছি খুব, দেখতে এসেছি।

ভ্যানওয়ালা বলল, মন্দির দেখবেন। ওদিকে গোবর্ধনপুর।

—কী আছে গোবর্ধনপুরে?
—সমুদ্র, ওই দীঘাতে বা বকখালিতে যেমন তার চেয়েও সুন্দর।

রাস্তার দুপাশে ফসল ওঠা মাঠ। ধু-ধু জমি। এটা উৎসবের সময়। মেলা, পার্বন। জানা গেল, সামনেই মেলা আছে। মনসার মেলা। যাত্রা আছে, গাজন গান আছে, আর আছে হাঙ্গামা। হাঙ্গামা মানে ড্যান্স হাঙ্গামা। মিউজিকের সঙ্গে নাচ। পার্টি নাকি মেদিনীপুরের।

হঠাৎ করে মৌ জিজ্ঞেস করল, ‘পেয়েছে এখন?’

—কী?
—বডি। সেই হারুনের মা-র।

ভ্যানওয়ালা পা চালাতে চালাতেই জিজ্ঞেস করল, ‘কে হারুনের মা? কী হয়েছে?’

যতটুকু জানা ততটুকুই বলল রবিন। লোকটার তাপ-উত্তাপ নেই কোনও। বলল, ভাটা চলছে, যাবে আর কতদূর, তবে জোয়ারের আগে খুঁজে বের করতে হবে।

তটের বাজারের মন্দির নাকি পুরনো খুব। পুরনো মানে কয়েকশো বছরের। পাশের পুকুর বা এই মন্দিরের চারপাশে মাটি খুঁড়তে গিয়ে অনেকেই নাকি পেয়েছে অনেক কিছু।

—অনেক কিছু মানে?
—এই ধরুন ঠাকুরের মূর্তি, তখনকার দিনের মাটির হাড়ি-কলসি, এমনকী সোনার অলঙ্কারও।
—দেখা যাবে এগুলি?
—যে যা পেয়েছে সব কি রেখেছে নিজের কাছে? অনেক দামে বিক্রি করে দিয়েছে বাইরে। মাটির জিনিসপত্রও আছে অনেক, স্কুলে গেলে দেখবেন একটা ঘরে সাজানো আছে। লাল মাটি, কালো মাটি— নানা রকমের। তাছাড়া তখনকার টাকা।
—লোককে বললে দেখাবে না?
—আপনারা তো অচেনা মানুষ, আপনাদের কেন দেখাবে? বড়জোর ইশকুলে গিয়ে মাস্টারমশাইদের বললে ইশকুলের ঘরে রাখা জিনিস যদি দেখায়। দেখুন বলে। ওই যে ইশকুল।

ভ্যানওয়ালার নাম শ্যামল হালদার। জমি আছে অল্প কিছু। ভ্যান চালায় ফাঁক পেলে। বলল, ‘আমাদের এই জি প্লটে তো আর একটা ঘাট নয়। আর সারাদিন ঘাটে দাঁড়ালে নৌকায় যাত্রী এলে তবে তো আয়। নৌকার আয়ে সংসার চলবে? ভ্যানে পা-ভ্যান চালানো ছাড়া অন্যের জমি বা বাড়িতে কাজ পেলে করবে। শ্যামল হালদার খেটে খাওয়া লোক। একটা নিচু জায়গায় ঝোপ-জঙ্গলের এক রাস্তার মুখে নামিয়ে দিয়ে বলল, দেখার জিনিসের খোঁজ পরে করবেন, আগে বাজারে গিয়ে কোনও দোকান পান কিনা দেখুন। খেতে তো হবে কিছু? বলছেন চেনেন না কাউকে, দেখতে এসেছেন।

এই এতক্ষণে যেন পেটের কথা মনে পড়ল। সরু জঙ্গুলে সেই পথ শেষ হয়েছে এক মন্দিরে। জঙ্গুলে সেই পথ ছেড়ে হঠাৎই অনেকটা উঁচু হয়ে যাওয়া জমি। দোকান-পাট আছে তবে ঝাঁপ বন্ধ। বাজার বা পথ কোথাও জনপ্রাণীর চিহ্ন নেই। এবার দেখি খিদে পেয়েছে সবারই। আলাউদ্দিন বলল, এক মহিলা উঁকি মেরে দেখছে আমাদের। ওঁকে জিজ্ঞেস করে দেখুন। মৌকেই এগিয়ে দিলাম। ওকে ওঁর ঘরে দিকে এগিয়ে যেতে দেখে ভদ্রমহিলাই এগিয়ে এলেন। জানতে চাইলেন, কার বাড়ি?

কারও বাড়ি নয় শুনে বললেন, দোকান খোলা থাকলেও এখানে ভাত পেতেন না তো। এটা তো শহর নয়। বেলা দেড়টা বাজে, কিছু আগে হলেও না হয়—। এবার ওঁর ঘর থেকে একটি বউ, বছর তেরোর একটি মেয়েও বেরিয়ে এল। মেয়েটি সেই ভদ্রমহিলার কানে কানে বলল কিছু। ভদ্রমহিলা এবার ডাকলেন মৌকে। বললেন, তোমরা বরং আমার মেয়ের সঙ্গে গাঙধার থেকে ঘুরে আসো, দেখছি কী করা যায়। সেই বছর তেরোর মেয়েটির নাম মিতা। মৌকে পেয়ে খুশির শেষ নেই তার। বলল, মৌদি, আসতে বলো সবাইকে, চলো গাঙধার থেকে ঘুরে আসি, মা তার মধ্যেই—।

না, রসুল নৌকা নিয়ে ফেরেনি তখনও। ওপারে রাক্ষসখালি। মিতার কথায় সায়রার শ্বশুরঘর তাহলে ওপারেই। বলল, দক্ষিণেই কিন্তু সাগর। ও এই স্কুলেই পড়ে ক্লাস সিক্সে। স্কুলের কথায় জানতে চাইলাম, ইতিহাস বইয়ে দেখা প্রাচীন যুগের হাড়ি-পাতিলের মতো কিছু ওদের স্কুলে—। ও জানে সব। বলল, থেকে যাও সবাই মিলে আজ, কাল গিয়ে দেখিয়ে আনব। ‘কিন্তু কাল তো থাকব না আমরা, আমরা তো আজই—’, বলতে গিয়েও বলা হল না মেয়েটিকে।

কতক্ষণ গাঙধারে ছিলাম মনে নেই। এক সময় বছর ষোলোর একটি ছেলে এসে ডাকছে মিতাকে। আমাদের নিয়ে যেতে বলছে ঘরে। গিয়ে দেখি ডাল, সবজি এমনকী পুকুরের মাছও। বাজারের মিষ্টির দোকান খুলিয়ে আনিয়েছেন দানাদার।

যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। মিতা শুধু বলছে, আসবে তো আবার, মৌদি বল না, আসবে তো? মিতার মা, মিতার ভাই, দাদা, বৌদি, পাশের বাড়ির কাকিমা। মিতাদের ঘর থেকে বুড়োবুড়ির তটের ঘাট পর্যন্ত ছোটখাটো মিছিল একটা। রসুল এসে গেছে। আমাদের দেখে মাঝনদী থেকে পাড়ে আসার জন্য ইঞ্জিন স্টার্ট করল। ও খেয়ে এসেছে সায়রার শ্বশুরবাড়ি থেকে। রসুল সেখানে কী কী খেয়েছে শুনে রবিন আমাদের খাওয়ার কথা বলল। রসুল অবাক। বলল, হোটেল কোথায় এখানে? মিতার মায়ের কানে গেল কথাটা, বলল, ও ছেলে হোটেল কেন হবে, কুটুম আছে না?

রসুল ইঞ্জিন স্টার্ট দিতে মনে হল, আরে এবার তো সত্যিই চলে যাচ্ছি। আর যাব নদী দিয়ে নয়, রসুল বলেছিল, সাগর হয়ে। একেবারে বঙ্গোপসাগর।

‘মৌদি আবার আসবে তো, ও মৌদি।’ মিতা বিশ্বাস করতে পারছে না আমাদের চলে যাওয়া। কাঁদছে। আঁচল দিয়ে চোখ মুছছে মিতার মা। পাড় ছেড়ে আমরা যখন মাঝনদীতে, মিতার গলার আওয়াজ পাচ্ছি তখনও। ‘আসবে তো, তোমরা আসবে তো আবার?’

বুড়োবুড়ির তট ছেড়ে আমাদের ছোট্ট নৌকা তবে এবার নদীর মোহনা ছেড়ে সাগরের দিকে। বড় গাঙ। সন্ধ্যা নামছে। সাগর থেকে ভট্‌ভট্‌-ভট্‌ভট্‌ শব্দ তুলে মাছের ট্রলার ফিরছে। পতাকা উড়ছে জলদস্যুদের জাহাজের মতো। ট্রলারগুলি আমাদের নৌকা পার হয়ে ঘরে ফেরার তাড়ায় দ্রুত নদীর ভেতর ঢুকছে। বুড়োবুড়ির তট অস্পষ্ট হচ্ছে ক্রমে। মিতা বা মিতার মায়েদের কাউকেই এখন আর বোঝা যাচ্ছে না স্পষ্ট করে। স্বপ্নে দেখা সেই বুড়োবুড়ির তটের কথা মনে পড়ল। হারিকেন জ্বেলে কে অপেক্ষা করছিল? চোখ বুজলে এখনও সেই এলোমেলো বাতাস, ঢেউ আর আকাশ জুড়ে অন্ধকারই মনে পড়ে। আর ভটভটির ঝিম ধরানো ধ্বনিতে ডুবে পাড়ের দিকে তাকালে অস্পষ্ট হতে থাকা সেই আলোকবিন্দু। এই আলোকবিন্দু ভালবাসার। শহরে থেকে একেবারে ভুলে যাওয়া এক অনুভূতির। এই আলোকবিন্দু পরকে আপন করার।

 

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4879 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...