অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
লেখক প্রযুক্তিবিদ্যার ছাত্র ও গবেষক
মার্কস বলতেন, ‘বাজারই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক।’ কথাটা যে কত বড় সত্যি আজ অনেকেই সেটাকে হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। কেবল প্রকাশ্যে সেটাকে স্বীকার করছি না। অথবা করতে চাইছি না। ‘বাম’পন্থীদের প্রতি যে একটা রীতিমতো সামাজিক বিদ্বেষ তৈরি করে তোলা গেছে, আজ ডান-বাম সকলেই সেটাকে স্বীকার করবেন। ‘বাম’ শব্দটাকে বুঝে (অথবা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই না বুঝে) আমরা একটা সাধারণ ধারণা তৈরি করে ফেলি। তাই ‘সবকিছু বেসরকারি হয়ে গেলেই, পরিষেবা ভালো হবে’ এই রকম একেকটা অতি-সরলীকরণেও উচ্ছসিত হয়ে পড়তে ইচ্ছে হয়। বেসরকারিকরণ থেকে বিশ্বায়ন, মুক্ত-বাজার থেকে কম্পিটিশন— এক নিঃশ্বাসেই সমস্তটাকে পেরিয়ে যাই। হাঁফ ছেড়ে বলি জিডিপির উত্থান এখন সময়ের অপেক্ষা কেবল।
গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ এবং অভিশাপ হল যে, তাতে সংখ্যাগুরুর মত নিয়ে চলা হয়। কোনও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যাঁদের মতকে সমর্থন করেন, তাঁরাই সেদেশের ভাগ্যনিয়ন্তাস্বরূপ আবির্ভূত হন এবং, পরবর্তীতে সেই সংখ্যার জোরটাকেই ক্রমশ অপব্যবহার করতে করতে তাঁরা তাঁদের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবক্ষয়ের শেষ প্রান্তটিতে পৌঁছে যান। একাধিকবার ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। এই তালিকায় নবতম সংযোজন সংসদে পাশ হওয়া এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়া তিনটি কৃষি বিল, যেগুলি আজ আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সংখ্যার জোরে বর্তমান শাসকদল সেগুলিকে প্রথমে অর্ডিন্যান্স হিসেবে নিয়ে আসেন, এবং পরবর্তীতে সেগুলিকে সংখ্যার জোরে লোকসভায় এবং গায়ের জোরে রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। ‘গায়ের জোরে’ শব্দবন্ধটা জ্ঞাতসারে ব্যবহার করলাম কারণ, বিরোধীদের প্রবল দাবিদাওয়া সত্ত্বেও বিলগুলিকে রাজ্যসভায় ভোটাভুটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ধ্বনিভোটে বিলগুলিকে পাশ করানো হয়। নিন্দুকেরা বলছেন যে সরকারের হাতে রাজ্যসভায় বিলগুলিকে পাশ করানোর মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যা ছিল না। তাই এভাবে ‘গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ’ করা হল। সংখ্যার জোর যে এভাবেই কখন ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি’তে ‘গায়ের জোরে’ রূপান্তরিত হয়ে যাবে, তা আমার-আপনার বুদ্ধিতে হৃদয়ঙ্গম করাটা অসম্ভব। কিন্তু এই ‘সংখ্যা’র হাতেই এখন সরকারের ভবিষ্যত।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দল হিসেবে বিজেপি পেয়েছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ৩৭ শতাংশ। ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের মিলিত প্রাপ্ত ভোট ছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ৪৫ শতাংশ। অর্থাৎ, সংখ্যাগুরুর হিসেবেও দেশের মোট ভোটারসংখ্যার, যাঁরা তাঁদের ভোটাধিকার সেই বছরে প্রয়োগ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যেও প্রায় ৫৫ শতাংশই ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধ মতাবলম্বী দল বা দলগুলিকে ভোট দিয়েছিলেন। সেই সংখ্যার হিসেব, গণতন্ত্রের সংখ্যার জটিলতায় হারিয়ে গিয়েছে। আজ পঞ্জাব হরিয়ানা মধ্যপ্রদেশ গুজরাটের বাড়তে থাকা কৃষক আন্দোলনও যে এই ‘সংখ্যা’র হিসেবটুকুতে, কতটুকুই বা তার দাগ ফেলতে পারবে, তা এখন থেকেই আমাদের পক্ষে বলাটা সম্ভব নয়। কিন্তু মানুষ রাস্তায় নেমেছেন।
যেমনটা তারা নেমেছিলেন ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ৬ থেকে ১২ তারিখ, মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে মুম্বাইয়ের রাজপথে। কিসান লং মার্চ, ২০১৮। আমরা কি তারই পুনরাবৃত্তি দেখব? ‘সংখ্যা’র হিসেব কিন্তু তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত ৫ই নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ১৫ থেকে ১৬টি রাজ্য মিলিয়ে দেশের অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার জায়গাতে, ২৫০টি কৃষক সংগঠনের ডাকে ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা ভারত কিসান সংঘর্ষ কমিটি বা এআইকেসিসির বক্তব্য অনুযায়ী এই আন্দোলন সরকারের আনা নতুন কৃষি আইনগুলির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফার আন্দোলন যা চলবে এ মাসের শেষ অবধি, ২৫-২৬ নভেম্বর। ওই সময়েই সারা দেশ থেকে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে কৃষকেরা লং মার্চ করে রাজধানীতে পৌঁছবেন। ২৬শে নভেম্বর, ওই একই তারিখে ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে ভারত-বনধেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। কৃষক-শ্রমিক এই যুগলবন্দির আন্দোলন সেইদিন নয়াদিল্লির রাজপথে কেমনতরো চেহারা নিয়ে আসে, তার দিকেই আমাদের নজর থাকবে।
বেসরকারিকরণের ফলে যে পরিষেবা কতখানি ভালো হতে পেরেছে, তা আমাদের দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রাইভেটাইজেশনের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। বেসরকারি হাসপাতালগুলির পরিষেবা আজকের দিনে এতটাই ভালো হয়ে দাঁড়িয়েছে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই সেই সমস্ত হাসপাতালগুলির খরচের বহর শুনলেই আঁতকে উঠে (অ)সুস্থ হয়ে পড়ছেন। আমি নই, কৃষিতে বিশ্বায়নের প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই তুলনা টেনেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কৃষি-অর্থনীতিবিদ পি সাইনাথ স্বয়ং। কাজেই এমএসপি বা নূন্যতম সহায়ক মূল্য থাকবে কি থাকবে না সেই বিষয়ে একটিও শব্দ খরচ না করে কৃষক-মান্ডির বেসরকারিকরণের বিষয়ে সম্মতি দিয়ে ফেলা সরকার যে আসলে কৃষকদের যেটুকুও বা নিরাপত্তা ছিল সেটুকুকেও বিসর্জন দিতে চলেছেন তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সব শেষে বৃহৎ পুঁজিপতিদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা ছাড়া কৃষকদের হাতে আর পেনসিলটুকুও থাকবে না বোধহয়। কেউ কেউ ‘সঠিক পদ্ধতিতে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন’-এর উপরে জোর দিতে চাইছেন। পি সাইনাথ বলছেন, মান্ডি-প্রথা এবং এমএসপি নিয়মের ক্রমশ বিলুপ্তিকরণ আর বেশি দূরে নয়। একবার সেইটুকুতে সরকার সফল হতে পারলেই গ্রামীণ কৃষি-অর্থনীতিতে যে বিপুল শূন্যতার সৃষ্টি হতে পারবে সেই শূন্যতার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবে পুঁজিপতিদের দলবল। এই তথ্য চাষিদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাওয়াতেই, বিশেষ করে সরকার-ঘনিষ্ঠ পুঁজিপতিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েছে।
পঞ্জাবের মোগা এবং সাঙ্গরুর জেলাতে সরকার-ঘনিষ্ঠ দুই গুজরাতি পুঁজিপতির নিয়ন্ত্রণাধীন মান্ডির সামনে গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই দিনরাত লাগাতার ধরনা-আন্দোলন চলছে। ২০০৮ সালে প্রকাশ সিং বাদলের সরকার মোগা জেলাতে এই মান্ডিটি তৈরির অনুমতি দেন। কৃষকেরা স্বীকার করছেন যে এই মান্ডিটি থেকে তাঁরা এর আগে যথেষ্ট পরিমাণে ফসলের দাম পেলেও তাঁদের আশঙ্কা সরকারি নিয়ন্ত্রণ একবার উঠে গেলেই দামের ব্যাপারে আর কোনও কথা বলারই তাঁদের কোনও অধিকার থাকবে না। বিশেষ করে সরকার-ঘনিষ্ঠ দুটি নির্দিষ্ট শিল্পগোষ্ঠীর প্রতিই তাঁদের প্রধান অসন্তোষ। গত কয়েক বছরে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে যেভাবে বিশেষ এই দুটি গোষ্ঠীর হাতেই বারেবারে তুলে দেওয়া হয়েছে বা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে— সেই সমস্ত প্রাপ্ত সংবাদ থেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পঞ্জাব তথা ভারতবর্ষের কৃষক সম্প্রদায়। পঞ্জাবের অন্তত ৩৭টি জায়গাতে সরকারি বেসরকারি মান্ডিগুলির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিকেইউ সংগঠনের কৃষকেরা। মানসা জেলার বানাওয়ালা এবং পাতিয়ালার রাজপুরায় দুটি বেসরকারি সংস্থার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের সামনেও কৃষক-বিক্ষোভ দেখা গেছে। এরমধ্যে প্রথমটির মালিকানা রয়েছে বেদান্ত কোম্পানির হাতে (সেই বেদান্ত যারা ছত্তিশগড়-ওডিশা সহ একাধিক রাজ্যে, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে শিল্পের নামে নিরবচ্ছিন্ন অত্যাচার, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং পরিবেশ ধ্বংসে অভিযুক্ত)। দেশের প্রান্তিকেরা কি শেষ অবধি উপলব্ধি করতে পারছেন যে দিনের শেষে তাঁদের সকলেরই সাধারণ শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছেন সেই এক বা একাধিক পুঁজিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই? লড়াইটা ক্রমশই জোটবদ্ধ হচ্ছে। পঞ্জাবের এই দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন প্রায় জ্বালানিশূন্য হয়ে পড়েছে। কারণ, প্রায় দু মাস ধরে চলা লাগাতার ‘রেল রোকো’ আন্দোলনের ফলে কয়লা বা অন্যান্য অত্যাবশকীয় পণ্যবাহী ট্রেনগুলিও পঞ্জাবে ঢুকতে পারেনি। খাদ্যশস্য এবং অন্যান্য অত্যাবশকীয় পণ্যের জোগানে টান পড়ায়, পঞ্জাবের অন্তত ৩০টি জায়গায় চলতে থাকা ‘রেল রোকো’ আন্দোলনকে কিছুটা শিথিল করার ব্যাপারে আন্দোলনকারীরা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। কিন্তু পণ্যবাহী ট্রেন চলার ব্যাপারে আন্দোলনকারীরা কিছুটা নরম হলেও তাঁরা যে এখনই যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে দেবেন না সেই বিষয়টাকেও তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত এই ‘রেল রোকো’ আন্দোলনের ফলে গত প্রায় ২০ দিন ধরে একটিও পণ্যবাহী ট্রেন পঞ্জাবে ঢুকতে পারেনি। আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এও অভিযোগ করেছেন যে, পণ্যবাহী ট্রেনের বিষয়ে তাঁরা আন্দোলনে ছাড় দেবার কথা বললেও কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছে করে পণ্যবাহী ট্রেন চালাতে গড়িমসি করছে যাতে এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো যায়। পঞ্জাব সরকার সংবিধান-বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে যে তিনটি নতুন কৃষি বিল রাজ্যে প্রয়োগের জন্য আনতে চলেছে সেগুলি বর্তমানে পঞ্জাবের রাজ্যপালের কাছে রাজ্যের বিধানসভার অনুমোদনক্রমে, সইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে সেই বিলগুলিকে দেশের রাষ্ট্রপতির কাছেও পাঠানো হবে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাইলে রামনাথ কোভিন্দ তাঁকে সেই সময় দিতে অস্বীকার করেছেন। সৌজন্য, রীতিরেওয়াজ সমস্ত কিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে অন্ধ সংখ্যার গরিমাতে দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে শাসকেরা যেভাবে প্রতিদিনেই হাস্যাস্পদ করে তুলছেন তার পরে আর তেমন কিছুই বলার থাকে না।
আন্দোলন ছড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী হরিয়ানাতেও। সেখানে সিরসা এবং মালকানাতেও অন্তত ৩৫টি কৃষক সংগঠনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে। ফতেহাবাদ জেলায় রিলায়েন্স পরিচালিত একাধিক পেট্রোলপাম্পের সামনে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত করেন। কেবল ফতেহাবাদেই অন্তত ১৫ থেকে ১৬টি জায়গায় এই বিক্ষোভ হয়েছে বলে শোনা গিয়েছে। হরিয়ানায় সব মিলিয়ে অন্তত ২০ থেকে ২৫টি জায়গাতে ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি চলেছে। যদিও অসুস্থ মানুষ এবং অ্যাম্বুলেন্সকে এর আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। ৯ই নভেম্বর কৃষক সংগঠনের ডাকে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্য অন্তত ২,৫০০টি জায়গায়, ২৫০টি সংগঠনের নেতৃত্বে এই ৫ই নভেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ‘চাক্কা জ্যাম’ সহ অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি আইনগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে বলে সারা ভারত কিসান সংঘর্ষ কমিটি নিশ্চিত করেন। এই পর্যায়ের আন্দোলন চলবে ২৬শে নভেম্বর পর্যন্ত। ২৬শে নভেম্বরই দিল্লিতে পৌছবে কৃষকদের লং মার্চ।
জুন ২০১৭তে কৃষিঋণ মকুবের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো নিরস্ত্র কৃষকদের উপরে গুলি চালিয়েছিল মধ্যপ্রদেশের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন সরকার। অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছিলেন। তারপর অনেক জল গড়িয়েছে। একবার নয়, দু-দুবার গদি পালটেছে মধ্যপ্রদেশ সরকারের। মুখ্যমন্ত্রিত্বে এসেছিলেন কমল নাথ। পরে আবার তাঁকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন শিবরাজ সিংহ চৌহান। রাজনীতির এই পালটাপালটিতে কেউ রাজা হয়েছেন, কেউ বা মসিহা উপাধি পেয়েছেন। কৃষিঋণে জর্জরিত কৃষকদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত যে তিমিরে, সেই তিমিরেই থেকে গিয়েছে। অক্টোবর থেকে নভেম্বর। এক সরকার থেকে আরেক সরকার। এক লং মার্চ থেকে আরেক লং মার্চ। কৃষক-শ্রমিক-খেটে-খাওয়া মানুষদের কেবল হেঁটে চলাই ‘নিয়তি’। আমরা তাঁদেরকে নিয়ে কাব্যি করব, দু-চার কলম লিখব, দু-একটি ছবি আঁকব। আমাদের কেবল ওইটুকুই ভবিষ্যত।
লং মার্চ শুরু হয়ে গেছে— মানুষের, কৃষকের। আমরা কোথায়? নিউজপ্রিন্টের চারের পাতায়, ওপরের কলামে… আমাদের কাছে এখনও লং মার্চের আর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। আমরা বরং গণতন্ত্রের গুণগান করি আসুন।