সুশোভন ধর
রাজনৈতিক কর্মী ও ভাষ্যকার
গত ২০ জানুয়ারি কৃষক ইউনিয়নগুলির সঙ্গে দশম রাউন্ডের বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে এই বিতর্কিত আইনগুলিকে দেড় বছরের জন্য রদ করার একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সরকারের বক্তব্য, এই সময়ের মধ্যে একটা যৌথ কমিটি গঠন করে আলাপ-আলোচনা চালানো হবে। কিন্তু তার দুদিন পরেই সংযুক্ত কিসান মোর্চা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাদের আগের বক্তব্য অনুযায়ী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে এই তিনটি কৃষক-বিরোধী আইন সম্পূর্ণ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন যেমন চলছে, চলবে। অখিল ভারতীয় কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় সমিতি একথাও জানিয়ে দিয়েছে যে প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে ট্রাক্টর মিছিলের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থেকে তারা পিছু হটছে না।
একটু মনে করিয়ে দেওয়া যাক, কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টও এই আইন নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলে এবং চার সদস্যের একটা কমিটি বানিয়ে সরকার এবং আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেয়। এই বিষয়ে সেই কমিটির সদস্যদের নিরপেক্ষতার প্রশ্নটি ইতিমধ্যেই বহু-আলোচিত।
মোদি সরকার, বিশেষত ২০১৯-এ দ্বিতীয় দফায় জিতে আসার পর, যেরকম ফ্যাসিবাদী ঔদ্ধত্য দেখিয়ে এসেছে সে-কথা মাথায় রাখলে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সেদিনের ঘোষণা কিছুটা অস্বাভাবিক লাগতে পারে বটে। তবে, ওটুকুই। আশ্চর্যজনক মোটেও নয়। এটা খুবই স্পষ্ট যে সরকারের আসল উদ্দেশ্য হল এই কৃষক গণ অভ্যুত্থানকে যে কোনও মূল্যে শেষ করা। সরকার এজন্য আগেও অনেক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো— এমনকি আন্দোলনে লোক ঢুকিয়ে নাশকতা করে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করা, আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে কল্পিত জঙ্গিযোগের অভিযোগ গোদি মিডিয়ার সাহায্যে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া। তালিকা আরও দীর্ঘায়িত করা যায়।
সরকারের এই যে পশ্চাদপসরণ, একে বিগত ঘটনাগুলির আলোকেই বিচার করতে হবে। উত্তর ভারতের এই প্রবল শীত উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ কৃষকের প্রায় দু মাস ব্যাপী লাগাতার অবরোধ, তাদের প্রজাতন্ত্র দিবস পালনের কর্মসূচি, সেই ট্রাক্টর মিছিলের ওপর সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা জারি না করা এবং সর্বোপরি এই আন্দোলনকে ঘিরে কৃষকদের সপক্ষে দেশব্যাপী বিপুল আবেগের সঞ্চার সরকারকে ইতিমধ্যে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। ফলে আপসমূলক পদক্ষেপ নেওয়া তাদের আর কোনও গত্যন্তর ছিল না। এবং এটাও ইতিমধ্যে প্রমাণিত যে এই আন্দোলনের রেশ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা এবং ক্ষমতা রয়েছে। মনে রাখা দরকার যে শাসক দলকে আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এবং অসম, রাজনৈতিকভাবে এই দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে। বিজেপির লক্ষ্য সাম্প্রদায়িক বিভাজন। জীবন-জীবিকার প্রশ্নগুলো তাদের কাছে নৈব নৈব চ। আমরা দেখেছি ২০১৯ সালের রাজস্থান, ছত্তিসগড়, মধ্যপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে অর্থনৈতিক ইস্যুতে তাদের বিপর্যয়। ফলে আপতকালীন অবস্থায় সরকারের তরফ থেকে এই ‘শান্তি চুক্তি’ যে একটা মরিয়া প্রয়াস, সেটা বলা খুব একটা অতিশয়োক্তি হবে না।
এর আগে আমরা দেখেছি এই আন্দোলনকে খলিস্তানিদের প্ররোচনা আছে বলে দেগে দেওয়ার একটা চেষ্টা করা হয়েছিল। যথারীতি শাসকদলের একটা অংশই এর পেছনে ছিল। কিন্তু যখন তার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় তখন সরকারের তরফে যেসব মন্ত্রীরা কৃষকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালাচ্ছিলেন, তাঁরা এই বিষয়ে দায় অস্বীকার করে নিজেদের হাত ধুয়ে ফেলেন। বিদেশেও এই ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়, এবং সেসব একটা অন্য মাত্রা লাভ করে যখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্তিন ত্রুদ্যো এবং কিছু ব্রিটিশ সাংসদও আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানান।
এই সুসংগঠিত কৃষক আন্দোলন তার অভূতপূর্ব ধারাবাহিকতা এবং ব্যাপ্তিতে শুধু সরকারই নয়, শাসক দলের ধাত্রী সংগঠন আরএসএসকেও যথেষ্ট বিপন্ন করে তুলেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আরএসএসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সুরেশ ‘ভাইয়াজি’ জোশি বলেই ফেলেছেন যে লাগাতার কৃষক আন্দোলন কোনও স্থায়ী সরকারের কাছেই কাম্য হতে পারে না।
সরকারের এই সাময়িক পিছু হঠা কি আন্দোলনের আংশিক বিজয় বলে ভাবা যেতে পারে? এতে কি উল্লসিত হওয়ার কোনও কারণ আছে? দুটি প্রশ্নেরই উত্তর— অবশ্যই হ্যাঁ। এটা ঠিক, এতে আত্মতুষ্ট হয়ে পড়ার বা উল্লাসে ভেসে যাওয়ার কোনও অবকাশ নেই। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এটাও বুঝতে হবে যে কৃষকদের এই সামগ্রিক সংগঠিত প্রয়াসের ফলস্বরূপ এই ঘটনা আমাদের সকলের কাছে অবশ্যই উদ্দীপক, আত্মবিশ্বাস-সঞ্চারী। এই সংগঠিত প্রয়াসই আজ সরকারকে রক্ষণাত্মক বাধ্য করেছে। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেশের লাখো লাখো কৃষকের। তাঁরা নিজেদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যাওয়া অবস্থায় এই লাগাতার লড়াই চালিয়ে গেছেন। এই সংগ্রাম কিন্তু মৌলিকভাবে খুব সরল এবং স্পষ্ট। নিজেদের জীবন জীবিকা কৃষকরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করবেন, নাকি এই সরকারের আবাহনে কর্পোরেটরা এসে দেশের কৃষিক্ষেত্রের দখল নেবে। দেশের কৃষিক্ষেত্র শেষ তিন দশকে ভয়াবহ সংকটে নিমজ্জিত। যার প্রত্যক্ষ ফল ঋণের জ্বালায় গত পঁচিশ বছরে ৪ লক্ষেরও বেশি কৃষকের আত্মহত্যা, বা কয়েক কোটি কৃষকের কৃষিকাজ ছেড়ে, গ্রাম ছেড়ে শহরগুলিতে অভিবাসন। এর কোনওটাকেই কি অস্বীকার করা সম্ভব? এই পরিস্থিতির থেকে মুক্তি পেতে একটা বৃহত্তর রাজনৈতিক সংগ্রাম অবশ্যই প্রয়োজন। এই বর্তমান সংগ্রামকে সেই লক্ষ্যে একটা সূচনা বলা যেতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে এই সংগ্রাম সেই হাজার হাজার গণতন্ত্রপ্রিয় দেশবাসীর মনেও একটা আশার আলোকবর্তিকা হিসেবে দেখা দিয়েছে, যে মানুষগুলি কায়মনোবাক্যে এই ফ্যাসিস্ট জমানার বিরুদ্ধে লড়তে চাইছেন।
কৃষি আইনগুলিকে— এবং সঙ্গে সঙ্গে নতুন শ্রম কোডগুলিকেও এই আলোচনার ক্যানভাসে ধরতে হবে। এই তথাকথিত সংস্কারগুলিকে কারা উদ্বাহু সমর্থন করছেন? দেশের বড় বুর্জোয়া এবং তাদের পেটোয়া মিডিয়া। আসলে এই আইনগুলিকে বলা যেতে পারে দেশের কৃষি সঙ্কট উপলক্ষে এক দক্ষিণপন্থী দাওয়াই বিশেষ। ফলে মূল ধারার সংবাদমাধ্যম এবং একদল অর্থনীতিবিদ যে এখানে মূল সমস্যা হিসেবে কৃষকদের এই আইনের তথাকথিত সুফল বুঝতে না পারার পিছনে বিরোধীদের চক্রান্তকে দেখাতে চাইবেন তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। আবার এই আন্দোলনে এমনকি তারাও সামিল হয়েছে যারা কিনা অতীতে কৃষিনীতির প্রশ্নে আজকের সরকারের মতোই কৃষক-স্বার্থের বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়েছিল। বস্তুত আজ কংগ্রেস, এনসিপি, তৃণমূলের মতো দক্ষিণপন্থী দলগুলির কৃষকদের সমর্থনে বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য হওয়া যে এই আন্দোলনের সাহসী চরিত্র এবং কৌশলগত সাফল্যের সাক্ষ্য দিচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। এর সঙ্গে এই আন্দোলন যে একটা বাস্তব অর্থনৈতিক ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটাও ভুললে চলবে না। কিন্তু বিষয়টির গভীরে ঢুকলে পরিষ্কার বোঝা যাবে যে এই রাজনৈতিক শক্তিগুলি মোটেই কোনও বামপন্থী অবস্থান থেকে কৃষি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে না। এই বুর্জোয়া পার্টিগুলির ওপর বেশি ভরসা করাও বোকামো হবে। এই যেমন এই আইনগুলি পাশ করানোর সময়েও বিজেপি যথারীতি একই পদ্ধতি নিয়েছিল। তা হল সংসদ এবং আদালতের মতো গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া, অবজ্ঞা করা। কিন্তু ভুললে চলবে না যে সমস্ত বুর্জোয়া দলগুলিই ১৯৯০ থেকে দেশে নয়া-উদারনৈতিক নীতি রূপায়ণে যথেষ্ট উৎসাহ দেখিয়েছে। আমাদের কাছে একমাত্র আশার আলো হল এই নয়া-উদারনৈতিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক পিরামিডের নিচুতলার লাগাতার প্রতিরোধ। বর্তমান কৃষক আন্দোলনের শক্তি এবং দুর্বলতা, এবং এর সাফল্যের সম্ভাবনা, সবই নির্ভর করছে কৃষকরা যে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা এখনও পর্যন্ত দেখিয়ে এসেছেন, তার ওপর।
এই ক্ষুদ্র-মাঝারি-বড় কৃষক এবং এমনকি কিছু কৃষি শ্রমিকদের সংগঠনেরও এইভাবে একত্রিত হওয়াটা কীভাবে সম্ভব হল? আন্দোলনের প্রসার ঘটাতে এই সংগঠনগুলি কতটা সফল? কৃষি সঙ্কটের বৃহত্তর প্রেক্ষিত থেকে কৃষক সমাজের নিচের তলায় যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, বর্তমান আন্দোলনের নেতারা তার প্রতি কতটা সংবেদনশীল? প্রকৃতপক্ষে, এখনও পর্যন্ত এই কৃষক আন্দোলন গণতন্ত্রের এক অসাধারণ প্রয়োগ দেখিয়েছে। এটাই তার শক্তি। এই শক্তিকেই আরও গভীর করার দিকে মনোযোগী হওয়া দরকার।
একটা জিনিসই খানিক উদ্বেগের— শ্রমিকশ্রেণি এখনও সেইভাবে এই আন্দোলনের পাশে সামিল হয়ে ওঠেনি।
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যান্য আন্দোলনগুলির থেকে এই আন্দোলন আরও একটি বিষয়ে আলাদা। তা হল, ব্যাপক সংখ্যায় বামপন্থী শক্তিগুলির অংশগ্রহণ। যাদের মধ্যে আবার অনেকেই সংসদ বহির্ভূত বামপন্থী। এতে যেমন একদিকে এক অভূতপূর্ব সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, আবার অন্যদিকে এদের নিজস্ব সঙ্কীর্ণতাগুলি যেন না আন্দোলনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেটাও নজরে রাখা প্রয়োজন।
এটি রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে কোনও কৃষক অভ্যুত্থান নয়— অনেকেই যেরকম অভ্যুত্থানের স্বপ্ন দেখে থাকেন। আবার এটি নিছক ধনী কৃষকদের আন্দোলনও নয়— বহু বামপন্থী যে-কথা বলছেন। এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক জনগণের একটি আন্দোলন, যেখানে তাঁরা নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য আশু এবং দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে লড়ছেন। বামপন্থীদের সামনে সুযোগ এসেছে তাঁদের জীর্ণ হয়ে যাওয়া মতাদর্শগত ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে এসে হিন্দুত্ববাদের একটি বলিষ্ঠ বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার। সেই সুযোগ নষ্ট করা এক অমার্জনীয় অপরাধ হবে।
বামপন্থীদের আপাতত একে এক পুঁজিবাদ-বিরোধী সর্বাত্মক গণ-আন্দোলনে পরিণত করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করা উচিত। সমাজের, বিশেষ করে মেহনতি জনগণের বিভিন্ন অংশের দাবিগুলিকে এর সঙ্গে সমন্বিত করা প্রয়োজন। যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি বা খাদ্য-নিরাপত্তার দাবিগুলি সাধারণ মানুষের কাছে এই আন্দোলনের আবেদন বৃদ্ধি করবে, আন্দোলনে শক্তি সঞ্চার করবে। অন্যান্য জায়গায় মেহনতি জনগণ যেসব আন্দোলন করছেন তাদের সঙ্গে সংহতি স্থাপন করাও খুবই জরুরি।
এই আন্দোলন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। সেটা হল— কেবলমাত্র নির্বাচনী জোট করেই কি ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করা সম্ভব? না, নিচের থেকে ব্যাপক শক্তিশালী গণ-অংশগ্রহণের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদকে সদর্থকভাবে মোকাবিলা করা যায়? নির্বাচনের বাস্তবতাকে স্বীকার করেও আমাদের অবশ্যই ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থার বিবর্তন এবং দক্ষিণপন্থার গতিপথকে অধ্যয়ন করা উচিত। হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি কিন্তু সেই ১৯৪০-এর দশক থেকেই তাদের মৌলিক অবস্থানের কোনও পরিবর্তন করেনি। নির্বাচনে হারিয়ে কিন্তু এদের কর্মসূচির মূলোচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পক্ষে আগামীদিনেও হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণের রাস্তায় যাওয়া সম্ভব হবে না। সেইজন্যই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বামপন্থীদের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। শ্রেণিসংগ্রাম বা গণআন্দোলনের এইরকম সুযোগ সামনে এলে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জোটের নামে বুর্জোয়া জোটসঙ্গীকে আঁকড়ে বসে থাকলে সেই সুযোগ কিন্তু কাজে লাগানো যাবে না।
এই কৃষক আন্দোলন এবং তার আংশিক বিজয় আমাদের পথ দেখাচ্ছে। এই হিন্দুত্ববাদের নাগপাশকে ছিন্ন করার জন্য নির্বাচনী জোটসঙ্গী খুঁজে বেড়ানোর চাইতে নিচতলা থেকে শক্তিশালী গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা অধিকতর কার্যকর। আজ থেকে ছ মাস পর এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে? আমরা জানি না। তার চেয়ে বরং সেই প্রাচীন চিনা প্রবাদটা স্মরণ করা যাক— ‘হাজার মাইল দীর্ঘ যাত্রাও একটি পদক্ষেপ থেকেই শুরু হয়।’