বিবেচনার দোর আটকে ভয়ের টিকাঠাকুর

স্থবির দাশগুপ্ত

 



প্রাবন্ধিক, ক্যানসার বিশেষজ্ঞ

 

 

 

Medicine is a social science and politics is nothing else but medicine on a large scale.

‘করোনা’র বর্ষপূর্তি চলছে। সরকার জানিয়েছে, ‘টিকা’র আরতি করে বর্ষপূর্তি উদযাপন করতে হবে। দেশের নামীদামী বিশেষজ্ঞ, সুপ্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবী এবং পরহিতকাতর ডাক্তাররা জানিয়েছেন, বটেই তো, বটেই তো! ‘কোভিড’-এর টিকা উন্নত বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির সন্তান। টিকার সমারোহ দেখে ‘করোনা’ যে পিঠটান দেবে এ নিয়ে তাঁদের মনে কোনও সংশয় নেই। অর্থাৎ তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, আপাদমস্তক বিজ্ঞানচেতনায় স্নাত আমাদের সরকার জনমানুষের পরিত্রাণের লক্ষ্যে ক্লান্তিহীন, নিদ্রাহীন। যাঁরা তা মানেন না তাঁরা জনসমাজের পক্ষে বিপজ্জনক।

এই ‘বিপজ্জনক’ মানুষজন তেমন দৃঢ়চেতা হতে পারেননি, কেননা তাঁদের কাছে বিজ্ঞান কোনও বিশ্বাসের বস্তু না, তাই তাঁরা প্রশ্নবাচী। তাঁরা নির্দিষ্ট প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর দাবি করেন, উত্তর যাচাই করতে চান। কারণ, মানবসভ্যতার বয়েস অনেক হল, অভিজ্ঞতাও। আধুনিক ডাক্তারি বিজ্ঞানও বয়সের দিক থেকে নিতান্ত ছেলেমানুষ না, যথেষ্ট পরিণত। তার মানে, এতদিনে তার বিচারবুদ্ধি পরিণত হওয়ার কথা। কথায় বলে, প্রজ্ঞা আসে বয়সের হাত ধরে। কিন্তু গত এক বছরে আধুনিক ডাক্তারি বিজ্ঞানের হালচাল দেখে মনে হয়, কখনও কখনও বয়স একলা-একলাই আসে!

 

অতি সম্প্রতি প্রখ্যাত সাহিত্যিক অমিতাভ ঘোষ একটি বই নিয়ে আলোচনায় বললেন, যেসব প্রযুক্তিগত উন্নতিকে আমরা ‘প্রগতি’ বলে মেনেছিলাম, সময়ের উদবর্তনে তাদের কুফলগুলো যখন সামনে চলে আসে, তখন আমাদের ভুল ভাঙে। এর চেয়েও বড় কথা হল, এই প্রগতির ঠেলায় আমরা হাজার বছর ধরে অর্জিত গুণগুলো হারিয়ে ফেলি; কীভাবে প্রকৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হয় তা ভুলে যাই। অথচ এই শিক্ষার গুণেই তো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমরা বেঁচেছিলাম, আছি, থাকবও। তাঁর কথাগুলো আমাদের ভাবায়। ভাবনা আরও বাড়ে যখন দেখি, সরকারি আশ্বাসবাণীর সঙ্গে টিকাসংক্রান্ত নথিপত্রগুলো মিলতে চায় না।

যেমন, আমরা এতকাল জানতাম যে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটা আদর্শ টিকার লক্ষ্য দুটো:

এক, গুরুতর অসুস্থতা এবং মৃত্যু থেকে আমাদের বাঁচানো; আর দুই, সংক্রমণ রোধ করে দেওয়া যাতে রোগ আর ছড়াতে না-পারে।

অথচ এই মর্মে গত বছর অক্টোবর মাসে প্রকাশিত ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল-এর একটি প্রবন্ধ আমাদের হতাশ করে দিল। এতে বলা হয়েছে, টিকা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে যে তৃতীয় পর্যায়ের যাচাইকাণ্ড (ট্রায়াল) চলছে তাতে ওই দুটো লক্ষ্যের কোনওটারই উল্লেখ নেই। যাচাইকাণ্ডের ছকটাই (ডিজাইন) এমনভাবে তৈরি যে, গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যুর আশঙ্কা যে কমবে, কিম্বা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা যে কমবে, কোনওটাই প্রমাণ করা যাবে না।

শুধু তাই না, টিকা ঠিক কাদের ওপর প্রয়োগ করা হবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা। শিশু, কিশোর, অন্তঃসত্তা, স্তন্যদাত্রী এবং যারা আগে থেকে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত (ইমিউনোকম্প্রোমাইজড), তারা টিকার আওতার বাইরে। ভালো কথা। কিন্তু তাহলে আওতায় থাকবে কারা? এক প্রশ্নের উত্তরে সরকারি আধিকারিক এবং টিকাবিজ্ঞানী জানিয়েছিলেন যে, শুধু সংক্রমিত হলেই চলবে না, যাঁরা সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন কেবলমাত্র তাঁরাই এই পরীক্ষার আওতায় থাকবেন, নইলে টিকা যে সত্যিই কার্যকর তা বোঝা যাবে না।

কিন্তু এই আধিকারিকরা তাঁদের কথা রাখেননি। বরং টিকা কোম্পানিগুলোর যাচাইকাণ্ডের যা নথিপত্র পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে যে, সংক্রমণ মৃদু বা মাঝারি হলেও টিকা প্রয়োগ করা হবে।

কোম্পানিগুলো তাহলে কথা রাখল না কেন?

তার একটা কারণ হল, সংখ্যার মহিমা। গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা এতই কম যে তা দিয়ে কিছু যাচাই হয় না, কিছু প্রমাণও করা যায় না। সেকথা ‘মডার্না’ নামে একটি কোম্পানি স্বীকার করেছে। বেশ; কিন্তু তাহলে টিকার দ্বিতীয় লক্ষ্য, সংক্রমণ রোধের ব্যাপারটার কী হবে? তাও নাকি করা যাবে না। এক কোম্পানির অধিকর্তা সেকথা সরাসরিই জানিয়ে দিয়ে বলেছেন, সংক্রমণ রোধ করা যাচ্ছে কিনা যাচাই করতে গেলে প্রতিটি রোগীর ওপর সপ্তাহে দুদিন করে ‘করোনা পরীক্ষা’ চালাতে হবে, আর এই পরীক্ষা চলবে বহুদিন ধরে। সময় আর খরচের কথা হিসেব করলে, এটা কার্যত অসম্ভব। এও ঠিক; কিন্তু তাহলে তো এই টিকা লক্ষ্যহীন হয়ে দাঁড়াল!

এইসব কথা তুলে ওই একই পত্রিকায় গত নভেম্বর মাসে আবার বলা হল, তাহলে হচ্ছেটা কী? কোম্পানিগুলো তো বলছে, টিকা নাকি ৯৫ শতাংশ কার্যকরী! কিন্তু কাদের ওপর কার্যকরী? কোভিড রোগে যাঁদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ভয় বেশি, তাদের ওপর তো না। যাঁরা অন্যান্য রোগে ভোগেন তাঁরা তো টিকার আওতার বাইরেই।

আর তাছাড়া, পরিসংখ্যানের ভাষায় ওই ৯৫ শতাংশ আসলে একটা আপেক্ষিক (রেলেটিভ) হিসেব; চরম (অ্যাবসলিউট) সংখ্যায় হিসেব করলে তা দাঁড়ায় ১ শতাংশেরও কম!

আধুনিক ওষুধপত্রের বাজারে ওই ‘চরম’ সংখ্যার হিসেবটাই কঠোর বাস্তবকে দেখিয়ে দেয়। তাছাড়া, টিকার কার্যকারিতা টিকবে কতদিন, ছয় মাস, নয় মাস, নাকি বারো মাস? সেই হিসেব কষার সময়ই এখনও আসেনি। সময় এলে ফ্লু-এর টিকার সঙ্গে তুলনা করা যাবে, কেননা সেই টিকার সুফল তো এক বছরও টেকে না।

এর পর আসছে নিরাপত্তার কথা। মনে রাখতে হবে, টিকা নিয়ে বিপদের ইতিহাস খুব কম না।

১৯৫৫ সালে পোলিও টিকায় দূষণ ধরা পড়েছিল, ১৯৭৬ সালে ফ্লু-এর টিকা নিয়ে স্নায়ুতন্ত্রের রোগ ধরা পড়েছিল (গুলান বেরি সিনড্রোম), ২০০৯ সালে ফ্লু-এর টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায় অন্য স্নায়ুরোগও হয়েছে (নার্কোলেপ্সি)। ২০১৭ সালে ফিলিপিন্সে ডেঙ্গুর টিকা দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবান শিশুদের মধ্যে ডেঙ্গু ধরা পড়েছিল, অনেকে মারাও পড়েছিল।

তার ওপর আছে জিন নিয়ে নাড়াচাড়ার (ম্যানিপুলেশন) ভয়। যে-জিনটিকা বাজারে ছড়ানো হচ্ছে তা এর আগে কখনও জনমানুষের ওপর ব্যবহার করা হয়নি, কেউ অনুমতি দেয়নি। কারণ, তাতে যে-উপাদানগুলো রয়েছে তার অনেকগুলোই অতি ভয়ঙ্কর। এখন তাহলে কী এমন ঘটল যে, জনমানুষের ওপর এগুলো প্রয়োগ করা হবে? আমাদের শরীর কি ওষুধ কোম্পানিগুলোর সম্পত্তি? এসব কথা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং বিজ্ঞানীরাই তুলেছেন।

অর্থাৎ, যাচাইকাণ্ড নিয়ে প্রশ্নগুলো স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ; এগুলোর উত্তর নেই বা থাকলেও অস্পষ্ট আর অস্বচ্ছ। যেমন,

টিকা নিয়ে আমাদের দেশে যা চলছে তা কি ‘ট্রায়াল’? যদি ‘ট্রায়াল’ হয় তাহলে সেকথাই প্রচার করার কথা; তা হচ্ছে কি? ‘ট্রায়াল’-এর পদ্ধতি আছে, যেমন ‘প্ল্যাসিবো’ (ছদ্ম ওষুধ); তা আছে কিনা কেউ জানে না। ‘ট্রায়াল’ হলে ‘ইনফর্মড কনসেন্ট’ থাকবার কথা, মানে যিনি টিকা নিচ্ছেন তিনি আগে থেকে টিকার গুণ আর অগুণ সবই বিস্তারিত জানবেন, তারপর মনস্থির করবেন। সেই ব্যবস্থা আছে কি? ‘ট্রায়াল’-জনিত দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের কথা ওঠে; তার ব্যবস্থা নেই। কোনও কোম্পানি এই দায়িত্ব নিতে চায়নি, সরকারও নেয়নি। যারা টিকা নেবেন সব দায়দায়িত্ব কেবল তাঁদেরই।

তবু প্রচার চলছে; বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাও অনুরোধ উপরোধ জানাচ্ছেন। তাঁরা সুপণ্ডিত।

‘করোনাভাইরাস’-এর সঙ্গে ফ্লু-এর তুলনা টানতে গেলে বলা হয়, ফ্লু কেন, গুটিবসন্ত নয় কেন, পোলিও নয় কেন? কাল হয়তো বলবেন, টিটেনাস বা ডিপথেরিয়া বা ইবোলা নয় কেন? বলিহারি পাণ্ডিত্য! কোন রোগে মৃত্যুহার কত, জনজীবনে বিভীষিকা কেমন, কোন বিভীষিকা কাল্পনিক আর কোনটা সত্যি, এইসব সামাজিক অঙ্কগুলো যদি ডাক্তাররাই ভুলে যান তাহলে তো আর এক অশনিসঙ্কেত!

ফ্লু যেমন আমাদের আদি-অনন্তকালের প্রতিবেশী, করোনাও তাই। শুধু মৃত্যুহারের দিক থেকে না, অন্যান্য দিক থেকেও তারা যে তুল্যমূল্য সেকথা করোনাকালের প্রথমার্ধেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন।

টিকার কথা উঠলেও একই কথা। বৃদ্ধ মানুষজনের ওপর ফ্লু-এর টিকা নিয়ে যাচাইকাণ্ড কোথাও, কোনওদিন হয়নি। বৈজ্ঞানিক নিয়মসম্মত যাচাইকাণ্ড হয়েছিল দুটো; কোনওটাতেই গুরুতর অসুস্থতা কমে কিনা বা মৃত্যুহার কমে কিনা তা দেখা হয়নি।

জনমানুষের মঙ্গল-অমঙ্গলের সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানের প্রশ্নগুলোকে দেশভক্তি দিয়ে, করোনাতঙ্ক ছড়িয়ে আর চটকদার, ভাবালু বাক্যবন্ধ দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। বরং বুঝতে হয়, ‘বিজ্ঞান’ বলে যা প্রচার করা হচ্ছে তা কি আদৌ বিজ্ঞান? কাণ্ডজ্ঞানই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান, আর তা থাকে জনমানুষের আঁচলে, হাজার বছর ধরে।

একটু আগে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল-এ প্রকাশিত যে-প্রবন্ধটির উল্লেখ করেছি, সেই প্রসঙ্গে দিন কয়েক আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত, ইংল্যান্ডের এক বিজ্ঞানী ওই একই জার্নালে কিছু অতিরিক্ত মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন,

বিপুল সংখায় টিকা দেওয়ার (‘মাস ভ্যাক্সিনেশন’) কিছু প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ পরিণতি আছে। সেগুলো ভেবে দেখা দরকার।

প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া তিনরকম— প্রাথমিক, মধ্যবর্তী এবং দূরবর্তী। লোকে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াকেই সবচেয়ে বেশি ভয় পায়; তাই টিকা নিয়ে বিব্রত থাকে। কিন্তু করোনায় যে-ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে তাতে মধ্যবর্তী এবং দূরবর্তী প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। সেই কুফলগুলো অনেক দিন পরে ঘটলেও, বড় মারাত্মক, চিকিৎসার সুযোগও কম, পরিণতিও অশুভ। এরকম অপ্রত্যাশিত, দুর্ঘট রোগের উত্থান ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা মোটেই বিরল না।

কিন্তু টিকার একটা পরোক্ষ পরিণতি আছে যার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না; তা হল, ভাইরাসের ‘মিউটেশন’ বা চালচলনের পরিবর্তন। ‘করোনাভাইরাস’-এর এই বিবর্তন প্রায় সব দেশেই দেখা গেছে; কিন্তু প্রায় সব দেশেই তা ঘটেছে টিকার কার্যক্রম হাতে নেওয়ার পর। ‘মিউটেশন’-এর খবর প্রচারিত হওয়ার পর কোনও কোনও দেশে নতুন করে ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে ‘লকডাউন’ যে একটা রাজনৈতিক কূটকৌশল ছাড়া কিছুই না সেকথা এখন ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। ভাইরাসের ‘মিউটেশন’ও নতুন কথা না; বরং ‘করোনা’র মতো ‘আরএনএ’ ভাইরাসগুলো ওই ‘মিউটেশন’-এর জন্যই পরিচিত।

কিন্তু তার পিছনে কিছু কারণ থাকে। অনেক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন যে, ‘মিউটেশন’-এর পিছনে ‘লকডাউন’ এবং টিকারও অবদান আছে; তারা ভাইরাসের বিবর্তনে ঘৃতাহুতি দেয়।

কীভাবে দেয়? তার পরোক্ষ প্রমাণ আছে।

ভারত এক বিশালকায় দেশ, জনসংখ্যাও বিপুল। গত পাঁচ মাস ধরে এখানে ‘লকডাউন’ নেই; আর সেই অবসরে ভাইরাসের আক্রমণও কমতির দিকে। যে-দ্বিতীয় ঢেউ (‘সেকেন্ড ওয়েভ’)-এর কথা বলা হচ্ছে তা পাকিস্তান আর বাংলাদেশে এসে গেছে শীতকালেই, কিন্তু ভারতে তখন আসেনি। এরই মধ্যে জনসমাজে উৎসব, পরব, অনুষ্ঠান, আন্দোলন, মিটিং মিছিলও চলেছে। তা সত্ত্বেও সংক্রমণ কমেছে, মৃত্যুহারও। এখানে টিকাকরণ চালু হল ১৬ই জানুয়ারি; এবং লক্ষ করা গেল, ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েছে, মৃত্যুর সংখ্যাও একটু একটু করে বাড়ছে। ঠিক একই ঘটনাক্রম দেখা গেছে ব্রাজিলে। ইংল্যান্ড এবং ইজরায়েলের দিকে তাকালেও দেখা যায় যে, সংক্রমণ ও মৃত্যুর পুনরাগমণ আর টিকার আবির্ভাব প্রায় অঙ্গাঙ্গী। এই পরোক্ষ প্রমাণগুলো আমাদের চিন্তা বাড়ায়।

প্রশ্ন আরও। যেমন, ‘অতিমারি’ কাকে বলা হবে তা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাই (‘হু’) সংশয় তৈরি করে দেয়। কখন যে সে কীসের সংজ্ঞা কীভাবে পালটে দেবে তা বলা মুশকিল। আগে জানা ছিল, সংক্রমণ অতি তীব্র এবং মৃত্যুহার ভয়াবহ নাহলে তাকে ‘অতিমারি’ বলা যায় না।

অথচ ২০০৯ সালে, অতিমারি ঘোষণা করার এক মাস আগেই হঠাৎ ‘তীব্র’ আর ‘ভয়ঙ্কর’ শব্দযুগল বাদ পড়ে গেল! কেন বাদ তার ব্যাখ্যা নেই; তাহলে কি কারও ইঙ্গিত? ডাক্তারি জার্নালগুলোই প্রশ্ন তুলেছে।

‘হু’ জবাব দেয়নি; তার কাজ, আতঙ্ক প্রচার! তাই সংক্রমণ নিয়ে আমাদের ভয় কাটে না। অবশ্য মাঝে মাঝে আশার আলোও দেখা যায়। তো, এইসব ব্যাপার নিয়ে মাইকেল কিঞ্চ নামে এক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ একটা উৎকৃষ্ট মানের বই লিখেছেন।

তাতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৭৬ সালে বিজ্ঞানীরাই জানিয়েছিলেন যে, ইনফ্লুয়েঞ্জার একটা নতুন ধরন (‘স্ট্রেইন’) এসে গেছে, ‘সোয়াইন ফ্লু’— তাতে অতিমারি অবধারিত এবং তা ১৯১৮ সালের ‘স্প্যানিশ ফ্লু’-এর মতোই ভয়ঙ্কর। কিন্তু ৪০ বছর পরে ঐতিহাসিকরা জানিয়েছেন যে, কোনও কোনও জায়গায় এই ধরনের ফ্লু হয়েছিল ঠিকই, তবে ওটা অতিমারি ছিল না, মহামারিও না।

তাহলে ঠিক কী হয়েছিল?

প্রেসিডেন্ট ফোর্ডকে তার পরামর্শদাতারা ওই ‘ভয়ঙ্কর’ খবরটা জানাতেই চারদিকে সাজ সাজ রব— টিকা লাও! টিকা এল; ফোর্ড বললেন, এটা বাধ্যতামূলক। সাত মাসের মধ্যে কর্মসূচি তৈরি হয়ে গেল, ৪ কোটি লোকের টিকা নেওয়া হয়ে গেল। তার পর ক্রমশ ধরা পড়তে লাগল সেই স্নায়ুরোগ, ‘গুলান বেরি’, বেশ কয়েকশো। অনেকে তখন বলেছিলেন, রজ্জুতে সর্পভ্রম হলে আর অযথা তাড়াহুড়ো করলে অমনই হয়।

কিন্তু সরকার বলেছিল, ‘গুলান বেরি’র মতো রোগ তো এমনিতেও হয়, এখন না-হয় একটু বেড়েছে! কিন্তু টিকার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই। কিন্তু এদিকে জনমত আছে, ভোট নামে একটা সংস্কারও আছে; তাই তখনকার মতো টিকা বন্ধ থাকল।

কিন্তু এখান থেকে যা বুঝবার তা হল, মহামারি ছিল না সেটা যেমন ভালো কথা, তেমনি মহামারির নামে যে কী কী করে ফেলা যায় তাও দর্শনীয়।

এখানে আরও একটা কথা আছে— সরকার নিজে কি অমন মিথ্যে কথা বলতে পারে? একথার উত্তরে আর এক ঐতিহাসিক, হাওয়ার্ড মার্কেল বললেন,

নিশ্চয়ই পারে, ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারিতেও রাষ্ট্রপতি সরাসরি মিথ্যেই বলেছিলেন, “president is literally lying through his teeth!”

এখন কথা হল, মিথ্যে কথা বলার অভ্যেস কি মার্কিন দেশেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে? তাহলে বিশ্বায়ন কীসের!

তো, টিকা নিয়ে বলতে গেলে এতসব কথা চলেই আসে। টিকার ওপর লোকের ভরসা থাকা দরকার; কিন্তু সেই ভরসা জন্মাবে কী করে?

এক, টিকাকে যথেষ্ট নিরাপদ হতে হবে; দুই, টিকা যদি সম্পূর্ণভাবে রোগ প্রতিরোধ করতে না-পারে তাহলে লোকে একটা প্রতিরোধের মায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকবে, তাতে বিপদ বাড়বে; আর তিন, একটা নিম্নমানের টিকা একবার চালু হয়ে গেলে উচ্চমানের টিকার জন্য যাচাইকাণ্ডে লোকে আর উৎসাহ দেখাবে না।

শুধু যদি নিরাপত্তার কথাই বলি, তাহলে শুধু টিকা কেন, কোনও ওষুধই যে একশো শতাংশ নিরাপদ না সেকথা আজকাল একটা শিশুও বোঝে।

অথচ আমাদের দেশের ক্ষমতাবান এবং ক্ষমতার আশেপাশে বিচরণকারীরা জানিয়েছেন, কোভিডের টিকা নাকি শুধু একশো না, একশো দশ শতাংশ নিরাপদ।

তাঁরা মস্করাপ্রিয় মানুষ আর আমরা, নাগরিকরা তো মস্করার যোগ্য!

অবশ্য অমন বেলাজ ভাষণ শুনতে আজকাল আমরা অভ্যস্ত হয়েছি। কোভিড-এর টিকা নিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে হৈহুল্লোড় পড়ে গেল; কিন্তু তথ্য নেই। নভেম্বর মাসে আমাদের দেশে, ‘সেরাম ইন্সটিটিউট’-এর সিইও আদার পুনাওয়ালা ঘোষণা করে দিলেন, টিকার লক্ষ লক্ষ ডোজ তৈরি হয়ে গেছে। অথচ তখনও ট্রায়াল শুরু হয়নি। তাহলে এত তাড়াহুড়ো কেন? বলা হল, দরকারের সময় যাতে দেরি না-হয় তাই অমন পদক্ষেপ। কদিন বাদে তিনি জানালেন, সরকার যেন আশি হাজার কোটি টাকা নিয়ে তৈরি থাকে। তখনও কিন্তু টিকার কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি। অনেকে আমাদের জানিয়েছেন, বিদ্যুৎগতিতে এই টিকা আবিষ্কার হল অতি-আধুনিক বিজ্ঞানের জয়যাত্রার প্রমাণ। আমরা ভাবলাম, সত্যিই তো, এ যেন মানবসভ্যতার পরিত্রাণে ‘ম্যানহাটান প্রোজেক্ট’কেও হার মানায়।

এত এত বিপুল মনীষাসম্পন্ন বিজ্ঞানী যে আমাদের মধ্যে আছেন তা জেনে আমরা যখন পুলকিত, চমৎকৃত ঠিক তখনই আবার এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতীয় বিজ্ঞানী সত্যজিৎ রথ জানালেন,

আমাদের হাতে তো কোনও টিকা নেই, যা আছে তা হল ‘ভ্যাক্সিন ক্যান্ডিডেট’!

ইনি কিন্তু সরকারি সংস্থায় কর্মরত বিজ্ঞানী, আর প্রশ্নকর্ত্রী সন্ধ্যা শ্রীনিবাসন একজন নামী গবেষক ও সাংবাদিক। তাঁর আলোচনা থেকে আমরা জানলাম, যাকে টিকা বলে ভাবছি তা আসলে টিকার সম্মান পাওয়ার জন্য প্রার্থী হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে। আগে তাকে যোগ্যতার মাপকাঠি পেরোতে হবে।

এদিকে সরকার যে ভোটের আগেই ‘এমএলএ-এমপি’র নাম ঘোষণা করে দিল!

অথচ প্রার্থী ‘টিকাগুলোর’ উপযোগিতা নিয়ে কোনও তথ্য আজও প্রকাশিত হয়নি। বরং একদল বিজ্ঞানী, গবেষক এবং আইনবিশেষজ্ঞ টিকার মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার তথ্য জানবার আগ্রহে সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন জানিয়ে আজও সাড়া পাননি।

তাহলে দাঁড়াচ্ছেটা কী? পদে পদে গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা; তার ওপর আর এক আপদ— প্রশ্ন আর সংশয় জানালেই অনেকে বলেন, এসব টিকাবিরোধীদের মতলব। তো আজ যাদের গায়ে টিকাবিরোধী বলে তকমা মেরে দেওয়া হচ্ছে, আগামীকাল তাদেরকে ‘দেশদ্রোহী’ বলতে আটকাবে না। যেকোনও প্রশ্নে সরকার নিরুত্তর থাকবে, জানি; কিন্তু আমাদের মননশীল মানুষজন? তাঁরা কোথায় হেঁটমুণ্ড ঊর্ধ্বপদ হয়ে আছেন? সঙ্কটকালে তাঁরাই তো জনমত তৈরি করেন। তাই তাঁদের সামনেই আমাদের সংশয়গুলো রাখা যাক। তাঁদের মেধার ওপর আজও আমাদের আস্থা অটুট; তাই দেশের বিপুল মেধাশক্তির অপচয় আমাদের ব্যথিত করে।

  • কোনও এক ‘চৈনিক’ ভাইরাস এসেছে বলেই কি দেশে এক গুচ্ছ ‘একুশে আইন’ চালু হয়ে গেল?— নাকি আইনগুলো চালু করার জন্যই ভাইরাসের অজুহাত?
  • ভাইরাস এল বলেই কি ‘নিউ নর্মাল’-এর আবির্ভাব?— নাকি ‘নিউ নর্মাল’ চালু করতে হবে বলেই ভাইরাসের আবির্ভাব?
  • গত এক বছর ধরে আমরা এক অদ্ভুত ‘হরর ফিল্ম’ দেখলাম। এই সিনেমার ঐতিহাসিক চিত্রনাট্যে কেউ ঘন্টায় ৯০ কোটি টাকা উপার্জন করে, কারও জীবিকা জাহান্নমে যায়, আর কেউ এক হাজার কিলোমিটার পথ হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে, টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে থাকে রেলের লাইনে, হাতে ধরা থাকে আধ খাওয়া রুটি।– এই হিমালয়প্রমাণ অসাম্য কে সৃষ্টি করে দিল, একটা মৃদু ক্ষমতার ভাইরাস, নাকি আমাদের অপার অবিমৃষ্যকারিতা? প্রাকৃতিক ‘হার্ড ইমিউনিটি’র তত্ত্বটাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়াল কারা?
  • হিটলারের সময় জার্মানি ছিল শিক্ষিতের হারে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ। আধুনিক ডাক্তারিবিজ্ঞানের স্বর্গরাজ্য ছিল জার্মানি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা তখন হিটলারের পিছনে দাঁড়িয়ে। যে-জিনচর্চার আরতি দিয়ে এখন টিকার মহোৎসব পালিত হচ্ছে তার রাজকীয় অভিষেক হয়েছিল হিটলারের জমানায়; ‘ইউজেনিক্স’ তারই একটা ঝলক মাত্র।– কিন্তু সেই শিক্ষার অভিমান তো টেকেনি; আমাদের অভিমান কি টিকবে?
  • আপনারা বিজ্ঞানের আশীর্বাণী প্রচার করতে চান। ভালো কথা। যে-অভিনব প্রযুক্তি দিয়ে টিকা আবিষ্কার হল তা নিশ্চয়ই শক্তিশালী; অ্যাটম বোমা আর হাইড্রোজেন বোমাও তো শক্তিশালীই ছিল।– কিন্তু তা কি জনমানুষের হিতসাধন করেছে? শক্তিশালী মানেই গ্রহণযোগ্য, এটা কোন বিজ্ঞানের শিক্ষা?
  • বিপুল সংখ্যার লোকের দেহে জিন-প্রযুক্তি আরোপ করার সুফল নিয়ে আপনারা কতটা নিশ্চিত, কীভাবে? কৃষিক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা তো ভিন্ন।– লক্ষ লক্ষ একর জমি কীভাবে বন্ধ্যা হয়ে যায় তা আমরা দেখেছি। আপনারা?
  • এই যে পেশায় হৃষ্ট আর বিদ্যায় পুষ্ট ডাক্তাররা সংবাদমাধ্যমে অবতীর্ণ হয়ে নিয়ম করে মৃত্যুভয় ছড়ালেন তা কি বিজ্ঞানসম্মত ছিল?— চিকিৎসাবিজ্ঞান কি আতঙ্কবিজ্ঞান? আমাদের দেশে তো কোভিড-এ মৃত্যুহার ১০ লক্ষে ১০৪ জন, আর পশ্চিমবাংলায় ১০ লক্ষে ৯১ জন। সরকারি হিসেব। যাঁরা সংক্রমিত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে মৃত্যুহার ১.৩৩ শতাংশ, আর সমগ্র জনসমাজে মৃত্যুহার ০.০১ শতাংশ।– অথচ মৃত্যুভয় দেখিয়ে অন্যান্য রোগবিরোগের চিকিৎসপত্র বন্ধ রাখা হল, ‘প্যানডেমিক’ হয়ে গেল ‘সিনডেমিক’! এটা বিজ্ঞানসম্মত? আর ‘মিউটেশন’ মানেই ক্ষতিকর, এটাই বা কোন বিজ্ঞানের শিক্ষা?

অতএব, আমরা বিবেচনাপ্রার্থী। তবে বিবেচনার কথায় আমাদের মনে হাসি-ভয়-বিষাদের মিশ্রিত অনুভূতি জাগে। বিবেচনাবোধ যাতে তৈরি হতে না পারে, তার টিকা আমাদের মনে-বুদ্ধিতে লাগিয়ে দেওয়া হয়, একেবারে জীবনের শুরুতে। অক্ষরের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয় “ওই অজগর আসছে তেড়ে”-র ভয় দিয়ে। তাই সেই প্রবাদবাক্যই স্মরণ করি: Tell the truth… and run! সত্য বলার চেয়ে ‘দুষ্কর্ম’ আর নেই— তাই, যদি বা বল, বলেই দাও দৌড়। তেড়ে আসছে অজগরের গুষ্টি!

দোহাই —

  1. প্রথম  উদ্ধৃতি। Rudolf Virchow on pathology education. http://www.pathguy.com/virchow.htm
  2. অমিতাভ ঘোষ। March 22, 2021.After Cooling: On Freon, Global Warming, And The Terrible Cost Of Comfort.Eric Dean Wilson.Simon & Schuster, New York, 2021.
  3. Peter Doshi. Will covid-19 vaccines save lives? Current trials aren’t designed to tell usBMJ 2020; 371, 21 October 2020. https://doi.org/10.1136/bmj.m4037
  4. https://blogs.bmj.com/bmj/2020/11/26/peter-doshi-pfizer-and-modernas-95-effective-vaccines-lets-be-cautious-and-first-see-the-full-data/
  5. Rapid response to the above mentioned essay. BMJ, 22 March 2021. IndraniRoy. Scientist. UCL. London, UK
  6. Peter Doshi. The elusive definition of pandemic influenza. Bull World Health Organ. 2011;89:532-538.
  7. Between Hope and Fear: A History of Vaccines and Human Immunity. Michael Kinch. Pegasus Books; 1st edition. 2018.
  8. ‘Never have I seen a pandemic more politicized’: Medical historian (Dr Howard Markel) looks at COVID vaccine. https://wjla.com/news/local/pandemic-politicized-medical-historian-covidvaccine?video=e8225e6f73404816a48863bc1b04234e&jwsource=cl
  9. The Public Must Be Aware of the COVID-19 Vaccine’s Limitations. Sandhya Srinivasan. 15.11.2020. https://science.thewire.in/health/covid-19-vaccines-immunisation-insufficient-tests-financial-stake-vaccine-related-injuries/
  10. https://www.worldometers.info/coronavirus/

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4879 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

4 Comments

  1. বাড়ীর সকলে মিলেই পড়লাম । পরিস্কার চিন্তার স্পষ্ট পরিবেশন । বন্ধুদেরও পড়ালাম । বিভ্রান্তি সাধারণের মধ্যে প্রচুর । বাকিটা ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর’ । লেখাটির অব্যর্থ শিরোনামের যথার্থ টীকাঠাকুরের কৃপা !

    অনেক ধন্যবাদ স্থবিরদা ।

    কিন্তু ৮০-৮৫ বছরের বাবা মা কে টীকা দেওয়াবো নাকি দরকার নেই ?
    আমেরিকায় বেশ কয়েকটা বড় ইউনিভার্সিটি যা আপনি লিখেছেন তাইই করছে , সপ্তাহে দু’বার করোনা পরীক্ষা, টীকার পরও । ছেলের কাছ থেকে জানতে পারছি । বিশাল ডেটাবেইস তৈরী করে এগুচ্ছে । এ দেশে সেই ট্রায়াল তো ব্যয় ও সময়সাপেক্ষ – প্রায় অসম্ভব ।
    অতএব ভোলা করেটা কি স্যার ?

  2. অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখা। মানুষের জীবনের অসুখ রোগ জ্বালা ও ওষুধ প্রতিষেধক ইত্যাদি নিয়ে রাজনীতি ও ব্যাবসা করা একশ্রেণীর অসাধু মানুষের স্বভাব । চিরকাল এটা হয়ে আসছে। বিভিন্ন চিকিৎসকের ও বিজ্ঞানীদের পরস্পর বিরোধী মতামত সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক বোধ বুদ্ধি বিবেচনা ‌সব গুলিয়ে দিচ্ছে। সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে অনেক সময় লাগবে। ততদিন রাজনীতি ও ব্যাবসা চলবে চুটিয়ে। আমরা চোখ কান বোধ বুদ্ধি খোলা রাখবো। আরো স্থবির দাশগুপ্তের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ শুনবো। ধন্যবাদ।

  3. টিকার বিষয়ে যদি চাপ আসে উপর মহল থেকে,লক ডাউন পরিস্থিতিতে, উন্মুক্ত মনের মানুষরা যোগাযোগ রেখে চলুন।অসামান্য লেখা।ধন্যবাদ।

  4. একঘরে হয়ে যাচ্ছি…
    কাছের লোকেরাও আমায় অপ্রকৃতিস্থ বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে..

আপনার মতামত...