ছটি কবিতা
রচনাধর্মী
তর্ক থেকে ফিরে যাচ্ছি তর্কে—
বুঝিলে না, কমলিকা?
এক মরুভূমি পার করে অন্য একটা মরুভূমি, একটা
তির্যক আলোর শহর;
যার মাঝখানে দাঁড়িয়ে দেখছি,
কাহিনিরাই কখন হয়ে উঠছে ইতিহাস!
হলুদ অ্যাকোরিয়ামের মতো অসুস্থ নির্জন শহরে
নিভিয়ে দিলে হ্যালোজেন
আমরাও গুটিগুটি ঢুকে পড়ছি
সেই ইতিহাসের কাহিনিবৃত্তে।
ঋতু
রং, বড় সুন্দর, তোমার পাড়ায়।
এই বসন্ত পেরোনো দিন থেকে, সাধ হয়
একটুকরো বিকেল কেড়ে আনি।
ঘরবন্দি স্মৃতি থেকে দু এক পশলা খোদাই করে দিই
দূরে নেভা পড়ন্ত আলোয়…
স্মৃতি
বহু দূরের পথে নক্ষত্রের মতো জেগে আছে বনফুল
সারারাত চাঁদের আলোয় জ্যোৎস্নায় যেখানে বাঁক
এসব স্মৃতি
কবেকার ঘটে যাওয়া, বাসরের রাত—
বাসনা
আতরের শিশিও নিঃস্ব হয়ে গেলে
তাতে লেগে থাকা সুগন্ধ ডেকে আনে বিষণ্ণ গভীর।
মৃত্যুর মতো সেই গন্ধ মুছে নিয়ে রেখে যাওয়া একটা আয়নায়
বেলা পড়লে ভেসে ওঠে মৃত সব গ্রাম
আর সেখানে বেঁচে থাকা একমাত্র দাস্তানগো
যার সারা শরীর জুড়ে জোনাকিরা লিখে চলেছে
কীভাবে পুরনো প্রেম ভুলে নতুন যৌবনে ফিরে যাওয়া যাবে আবার
উপত্যকা
যেসব দুপুরে তুমি আসো, সারা রাত ধরে নদী বয়ে যায়।
জানালা বেয়ে এগিয়ে আসে অপরাজিতার লতা
সারা ঘর জুড়ে শান্ত শান্ত ঘুম
হারিয়ে ফেলা চাবি। অবাক স্বপ্নে
শুকনো নদীখাত এবং তাতে পড়ে আছে
পিরামিড গঠনের ব্যস্তসমস্ত রহস্য।
ডাকপিয়ন
এই যে তুমি মিলিয়ে দিচ্ছ এমন
কথা দিয়ে চিঠি আনতে আনতে বসিয়ে রাখছ
রাতভোর—
ততক্ষণ জল ভরছি; জল ঢালছি
অথচ গাছের স্বপ্নদের
পড়ে ফেলতে পারছি না কিছুতেই—
শুধু তালাচাবির আদিম লুকোচুরির মাঝেই
দমকা হাওয়া এলে হঠাৎ
ভাবছি, আলাদিনই কী করে যেন
রোজ রোজ ভরসা হয়ে উঠছে প্রদীপের…