খণ্ডচিত্রে মধ্যভারতের গোণ্ড আদিবাসীদের রাজকাহিনী — দুই

অতীন্দ্রিয় চক্রবর্তী

 

…রাজকাহিনী — এক-এর পর

 

৬) বোঙাসুর – শাল বা সরণাগাছের পুজো করা কোল আদিবাসীদের আদিমতম কসমিক কনসেপশন তথা, ফিলিপিন্সের আদিবাসীদের ‘মানা’, গোণ্ড আদিবাসীদের বূঢ়া-দেওর মতোই, এই পৃথিবীতে মানুষের করা আদিতম ইষ্ট-কল্পনার নাম ‘বোঙা’। উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলের জনজাতিদের অনার্য্য রাজা বোঙাসুরের নাম থেকে বঙ্গভূমের নাম হওয়াও বিচিত্র নয়। এই সব অসুরেরা ‘গোণ্ড’ না ‘মুণ্ডা’ না অন্য কোনও আদিবাসী সম্প্রদায়ের রাজা ছিলেন, অনাদৃত, বৈরী ক্ষমতাচর্চিত ইতিহাসের পথ ধরে তার হদিস আজ পাওয়া যাবে না। সে’কালের আদিবাসীদের সম্প্রদায় ব্যবস্থা কী ছিল, সেই নিয়ে কোনও লিপিখচিত ‘এভিডেন্স’ নেই। আর্য্যসভ্যতার হাতে প্রাগার্য্য সভ্যতাদের পতনের কথা, অনার্য্য রাজাদের বধ হওয়ার কথা, উৎকট নগরধ্বংসের কথা ধরেছে ঋগবেদের কিছু শ্লোক–

ক। দস্যুরা নগরগুলিতে বাস করত। তাদের কাছে ছিল গবাদি পশু, ঘোড়া, রথ সহ অপার ধনসম্পদ (i 53/8i103/3)

খ। হে ইন্দ্র! তুমি দাস ও দস্যুদের সেই সাতটি বিরাট দুর্গ ধ্বংস করলে (VI20/10)

গ। হে ইন্দ্র! তুমি পাঁচ হাজার কৃষ্ণবর্ণ অসুরদের বিনাশ করলে এবং তাদের নগরগুলিকে সেইভাবে ধ্বংস করলে যেইভাবে মানুষ পুরাতন বস্ত্রখণ্ড ধ্বংস করে (IV – 16/3)

ঘ। হে ইন্দ্র! তুমি শম্ভরকে বধ করে তার ১০০টি শহর ধ্বংস করলে (VI – 31/4)

ঙ। হে ইন্দ্র! তুমি সহস্র বীরের সঙ্গে আক্রমণ করে বৃত্রাসুরকে বধ করলে (VI – 42/21)

বৈদিক ও উত্তরবৈদিক কালের পুঁথিগুলোতে পণ্ডিতরা নানান কলঙ্ক লেপন করে লিখে রেখেছেন নানান অনার্য্য রাজাদের কথা। পাওয়া যায় প্রবল পরাক্রমশালী অনার্য্য রাজা বিক্রম, ভৈরোচন, মুচকুন্দ, ভৈরব, ত্রিপুর, বিটঠবর্তস, কপিলাসুর, সহস্রবাহু, বাণাসুর, কীর্তবীর্য্য, জলন্ধর, কংস, জরাসন্ধ, বাসুকি, তক্ষক, দিবোদাস, দেবদাস, নরকাসুর, কৃষ্ণাসুরদের কথা, পাওয়া যায় ময়‘দানব’ ও তাঁর সাম্রাজ্যের আশ্চর্য স্থাপত্যশিল্পের কথা, যায় হিরণাক্ষ ও তাঁর ভাই হিরণ্যকশ্যপের কথা, হিরণ্যকশ্যপের পুত্র প্রহ্লাদের কাহিনীর থেকে যেমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় আর্য্য-আক্রমণের সামনে অনার্য্য রাজাদের কিছুটা হলেও নতিস্বীকার ও আর্য্য সংস্কৃতিকে মেনে নেওয়ার কথা, তেমনই পাওয়া যায় প্রহ্লাদের পৌত্র বলিরাজার পুনরায় আর্য্যশক্তির বিরুদ্ধে মাথা তোলার কথা। বৈদিকযুগের ইন্দ্রর মতোই উত্তর-বৈদিক যুগে বিষ্ণুকে দেখা যায় নানান অবতারে বিভিন্ন অনার্য্য রাজাদের সাথে ঘোর সংগ্রামে লিপ্ত হতে– তাই নরসিংহ চিরে দিল হিরণ্যকশ্যপের বুক, পরশুরাম কুঠার হানে কীর্তবীর্য্যের শরীরে, বামনাবতার বধ করে বলিরাজাকে, রাম বধ করে বালিরাজা ও রাবণরাজাকে, মারা পরে জলন্ধর-কীর্তবীর্য্যরা, কৃষ্ণের হাতে অথবা প্ররোচনায় আবার যখন উপমহাদেশের উত্তরদেশের কংস ও জরাসন্ধের পতন ঘটছে, তখন থেকেই সেই সব অঞ্চলে অনার্য্য রাজাদের হারিয়ে সাম্রাজ্য বিস্তার করছে আর্য্যশক্তি, কামরূপের নরকাসুর-বধ মাধ্যমে থাবা বাড়াচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। আদিবাসীদের খুন করাকে গৌরবান্বিত করছে সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থের শ্লোকেরা– ‘পরিত্রাণায় সাধুনম বিনাশায় চ দুষ্কৃতম’– আজও তাই নারায়ণপুর সহ বস্তারের বিভিন্ন থানার উপর বড় বড় করে লেখা থাকে এই শ্লোক। আগে থাকত না, গত আড়াই দশক ধরে যখন নকশাল দমনের অজুহাতে আদিবাসী-দমন তথা এরিয়া-ডমিনেশন-মাধ্যমে নানান মাইন ও তথাকথিত ‘বিকাশ’-এর হিড়িক তুঙ্গে উঠেছে, ভয়াল অস্ত্রশস্ত্রে শ্বদন্ত বিকশিত করেছে আর্য্যভারত, তবের থেকেই এই শ্লোকের প্রতি যেন ঘনঘোর ফোকাস।

৭) রাবণ ও রাবণগোষ্ঠী– আর্য্যদের মহাকাব্যিক বিজয়গাথা রামায়ণদত্ত কুলপরিচয়ে রাবণরাজার উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন পূলস্থ-ঋষির আর্য্যৌরস। পূলস্থ মুণিপুত্র বিশ্রবা, ‘সোমালি রাক্ষস’-এর তিন ‘রাক্ষসী’ কন্যা কৈকসী, পুষ্পোৎকটা আর রাকার কথা। কৈকসীর তিনপুত্র রাবণ-কুম্ভকর্ণ-বিভীষণ এককন্যা শূর্পনখা, পুষ্পোৎকটার তিনপুত্র খর, মহোদর, মহাপার্শ্ব্য ও এককন্যা কুম্ভনসী, রাকার ত্রিপুত্র দূষণ, ত্রিশিশ ও বিদ্যুজ্জিহ্ব– এইভাবে, রাক্ষসনামে কলঙ্কলেপনের মাধ্যমে আর্য্যগাথা রামায়ণ রাবণ ছাড়াও রাবণগোত্রের আরও ক’জন আদিবাসী রাজারাণীদের কথা ধরে রাখল রাবণিয়া বংশতালিকা বিরচনের মহাকাব্যিক তাগিদে।

রামরাবণের লড়াইতে বিভিন্ন ভূমিকায় দেখে গিয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়-রূপক চরিত্রদের। হনুমান ছিল আর্য্যশক্তির সাথে হাত মেলানো ‘কুইসলিং’সুলভ বিশ্বাসঘাতক সমাজের প্রতিভূ যে হয়তো, রূপকে, ‘বনের পাতায় পাতায়’ শ্রুতিপ্রসারে বুনে রেখেছিল হেরে যেতে থাকা কৌমশোকস্তব – অথচ আর্য্য মিথষ্ক্রিয়ায় সে হিন্দুদের এমনকি অন্ত্যজ দলিত লোকসমাজে প্রসার-প্রসিদ্ধি পেল প্রভুভক্তির অধীশ্বর দেবতা হিসেবে হিন্দুশোষিত লোকসমাজের শোষিত ভৃত্যের প্রভুভক্তির প্রতিমূর্তি হয়ে। আবার আসে অন্ত্যজ নাপিত জীবিকানির্বাহী সমাজ তথা গোণ্ড চার-দেও উপাসক টোটেমধারী ‘শম্বুক শেড়মাকে’-দের আদিরাজা শম্বুকের কথা, যে পরমজ্ঞানী অনার্য্য বীর ঘোর যুদ্ধ করে হেরে গেল রামচন্দ্রের কাছে, ‘শূদ্র’ হয়েও লেখাপড়া করার অপরাধে গোণ্ড ‘শম্বুক-শেড়মাকে’ গোত্র আর কিছু নাপিতদের সম্প্রদায়ের আদিপুরুষ শম্বুককে মেরে ফেলল রামচন্দ্র– রামায়ণে এই অসুরবধ সেলিব্রেটেড হয়েছে। শম্বুকের স্ত্রী তুঙ্গভদ্রার নাম আর নানান ভুলে যাওয়া আদিবাসী ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে একটা নদী, ধারণ করে রেখেছে একটা শহর (ভদ্রাবতী)। সেই দেবাসুরের উৎকট, চলমান বর্ণসংগ্রামের সূত্র ধরেই আসে ভাই বালির রাজত্ব তথা জমি হাতাতে তৎপর আদিবাসী সুগ্রীব, আসে ক্ষত্র-পৌরুষের যুদ্ধে আর্য্য-অনার্য্য কামলালসার শিকার হয়ে যাওয়া বালিরাজার মহিষীর তারার কথা, আসে ধীবর-নিষাদদের অন্ত্যজচিহ্নবাহী অনার্য্যবংশে জন্মানোর জাতকথাবাহী কৃষ্ণবর্ণ আর্য্য মহাকবিদ্বয় ব্যাস ও বাল্মিকীর কথা, আসে হিন্দুদের বর্ণবাদী ভক্তিগ্রন্থনে আপনা ভক্তিজ এজেন্সী-হারা শবরী কথা, যার এঁটো করা বেল রামচন্দ্রের খাওয়ার কথা স্পর্শসংস্কারে আচ্ছন্ন রামায়ণ-বিশ্বাসী হিন্দু বর্ণবাদীরা ক্রমঃস্বরে বলে আসে রামায়ণের পাতা ধরেই।

আবার আসে আর্য্য ‘ব্রহ্মাপুত্র’ পরিচয়বাহী ইম্পোজিশানের জঞ্জাল ঠেলে জাম্বুবানের কথা, যে শ্যামন্তক মণিকে কৌমসমাজের আয়ত্তে রাখার অভিপ্রায়ে আর্য্যশক্তির প্রতিভূ বিষ্ণুর সাথে অনন্তকাল লড়াইতে নিমজ্জমান। কিছু সাহিত্যিক অনুমান করেছেন, মোগলরাজা বাবরের কাছে আসা কোহিনুর হীরকখণ্ড আসলে শ্যামন্তক মণি। হীরে-মোতি-জহরত-সোনা-রুপো-লোহা-অ্যালুমিনিয়ামের ধাতব লড়াইতে গোণ্ড তথা আদিবাসী সম্প্রদায় যেন বাস্তবিকভাবেই চিরদ্বন্দ্বে রত। উনবিংশ শতাব্দীর ইংরেজ কোম্পানী-এজেণ্ট বর্ণিত সম্বলপুরের হীরক খনির কথা বা বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভভাগের বূমকাল বিদ্রোহে লোহার খনির বিরুদ্ধে লড়াই করা আদিবাসী মেয়েদের গল্পতেই নয়, একবিংশ শতাব্দীতেও গোণ্ড আদিবাসীদের লিঙ্গদর্শন চিনিয়ে দেওয়া লেখায়  থাকছে গোণ্ড আদিবাসীদের পরিচিত ধাতুরা– সেই সকল ধাতুর অধিষ্ঠাত্রী প্রক্রিয়াজ ঐশীবোধ সম্পৃক্ত ইষ্টনামে। গোণ্ড নামচিহ্নে চিহ্নিত বস্তু বা ধাতুগুলি তথা গোণ্ড আদিবাসীদের পরিচিত তথা উপাস্য মিনারেল ও ধাতুরা হল হল– পারা, সিসা, মকর, রেডিয়াম, ক্যালসিয়াম, দস্তা, ফসফরাস, গন্ধক, হীরা, সোডিয়াম, লোহা, রাঙতা, অ্যালুমিনিয়াম, পটাশিয়াম, সিলিকন, ইউরেনিয়াম, প্ল্যাটিনাম, টিন, মলিক্লেনাম, ক্যালিফোর্নিয়াম, ব্রোমিন, সোনা, রুপো, তামা ও নিকেল। হয়তো ঠিকঠিক ইংরেজির সাথে সবকটা ধাতুর গোণ্ডিনামই ম্যাচ করে যাবে বা হয়তো করবে না, কিন্ত আর্য্যশক্তির সাথে আদিকাল থেকে ধাতু বা মিনারেল সম্পদের মালিকানার লড়াই রাম-রাবণের হিন্দু-আদিবাসী লড়াইয়ের আঙ্গিকে থেকে গেল জাম্বুবান-বিষ্ণুর শ্যামন্তকের অধিকার নিয়ে নিরন্তর লড়াইতে। আবার মহাকাব্য-বিপরীত মিথষ্ক্রিয়া-মাধ্যমে অন্ধ্র-তেলেঙ্গানার কৌমলোকের কিছু মানুষ তাঁদের ইণ্ডিজিনাস রাজা জাম্বুবানকে অদ্যবধি পরম ভক্তিতে পুজো করতে লাগল, মধ্যভারত ভূখণ্ডের তীরন্দাজ আদিবাসী সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ যেইরকম মহাভারত মহাকাব্যর বিজয়-রোলের বিপরীতে, তাঁদের কৌমের কোনও প্রাচীন পূর্বপুরুষ একলব্যের প্রতি ভক্তিতে কেবলমাত্র তর্জনী ও মধ্যমার মাধ্যমে ধনুকের জ্যা টেনে সুনিপুণ শরক্ষেপে অভ্যস্ত। ব্রাহ্মণের তাড়নায় কেটে যাওয়া বুড়ো আঙুল তাঁদের প্রয়োজন হয় না স্বাভিমানী তিরন্দাজীতে। রাবণও সেইরূপ স্বাভিমানের প্রতিমূর্তি হয়ে আদিম রাজা হিসেবে পুজো পেয়ে এসেছে অস্ট্রিক-দ্রাবিড় প্রাগার্য্য সময়কাল থেকে ভারত ভূখণ্ডের মূলভূত বাসিন্দা আদিবাসী লোকসম্প্রদায়ের।

গোণ্ড আদিবাসীরা বিশ্বাস করেন, তাঁদের ‘মাণ্ডাভি’-টোটেম বা কুলখচিত পদনাম এই রাবণরাজারই পরিচয়বাহী– অর্থাৎ, ‘মাণ্ডাভি’ পদবীধারী গোণ্ড আদিবাসীদের বিশ্বাসে, পূর্বপুরুষ ছিলেন এই ‘রাভেন মাণ্ডাভি’।

এই রামরাবণীয় সাম্রাজ্যবিস্তারের লড়াই তথা আর্য্য নগর ও প্রাগার্য্য গ্রামের লড়াই আসলে সংস্কৃত ও প্রাকৃতের টক্করও নানান সামাজিক টানাপোড়েনকে সামনে নিয়ে আসে। হিন্দুবাদীদের দ্বারা অপমানিত হয়ে সর্বাঙ্গে রামনামের উল্কি এঁকে একশো বছরের বেশী সময় ধরে ক্রমে ক্রমে আদিবাসী অভিধার আইডেণ্টিটি ত্যাগ করে হিন্দু অন্ত্যজ সমাজের দিকে যাত্রা করেছে রামনামী সমাজের মানুষেরা। যেমন কৃত্তিবাসী রামায়ণের এক চরিত্র তরণি সর্বাঙ্গে রামনাম লিখে রাবণপক্ষের হয়ে রামচন্দ্রের সাথে লড়াই করতে নেমেছিল, যদিও সেই নামার পেছনে ঘোরভক্তির লেপন বুলিয়েছেন সামাজিক ক্ষমতাচক্রের অংশ উপাধ্যায়-ব্রাহ্মণ সমাজের কবি। আবার একবিংশ শতাব্দীর বস্তারের জগদলপুর, কাঙ্কের সহ টাউন অঞ্চলের আর-এস-এসের হিন্দুত্ববাদী পুরুষ রামনবমীর দিনে তরোয়াল আর গেরুয়া আবীর-ময় বিজয়-আস্ফালনে রত হয়। রামের যাত্রাপথ হিসেবে ছত্তিসগড় রাজ্যের উত্তরদিকের গোণ্ড আদিবাসী অঞ্চল সীতামাঢ়হি থেকে বস্তারের দক্ষিণতম দুয়ার কোন্টা অবধি চিহ্নিত করে ২০১৬ সালের রামনবমী ফিচার হিসেবে প্রকাশ করে হিন্দি কাগজ দৈনিক ভাস্কর। বিভিন্ন ঢিলছোঁড়া অনুমানের ভিত্তিতে ফিচারকর্তা হিসেব করে বসেন যে রাম ছত্তিসগড় রাজ্যে তাঁর বনবাসের ১২ বছর কাটিয়ে, উত্তরের কোরিয়া জেলা থেকে দক্ষিণে সুকমার কোন্টা অঞ্চল অবধি ১১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেন। পথিমধ্যে বধ করেন অজস্র অসুরদের। সেইসব জায়গায় মন্দির বানানোর উসকানিমূলক ইঙ্গিতে পরিপূর্ণ ‘মর্যাদা পুরুষোত্তম’ শব্দবন্ধনে আরম্ভ করা সেই লেখার ফিচারকর্তা অবশ্য আবার ক্যাভিয়েট দিচ্ছেন এই লেখায়– টেকটনিক প্লেটের নড়াচড়ার কারণে রামের চলার এই পথ সঠিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব নয়।

এই ধরনের লেখা ও লেখায় ব্যক্ত কদিচ্ছাসমূহ বস্তারের টাউন, সদর ও বর্ধিষ্ণু গাঁ অঞ্চলের অনাদিবাসী হিন্দুত্ববাদী মানুষের কাছে আদর পায়। আর-এস-এস-এর স্বঘোষণে ছত্তিসগড় ১৯৭৭ সালের পর থেকে ক্রমাগত হিন্দুত্ববাদী জনতা পার্টি ও ভারতীয় জনতা পার্টির বামনা-বেনেদের শাসন শোষণের সুবিধা পেয়ে গদগদ হয়ে বলে– ছত্তিসগড় তাঁদের ল্যাবরেটরি। কিসের ল্যাবরেটরি বলে না, তবে বিজেতা আর্য্যশক্তির তাচ্ছিল্য-বিদ্রূপে প্রতিভ হয়, কায়েমী হিন্দুত্ববাদী স্বার্থ বজায় রাখতে মানুষে মানুষে দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়ার চেনা ছকের বর্ণবাদী-ফ্যাসিবাদী রাজনীতির স্বার্থসিদ্ধি অন্বেষণের ল্যাবরেটরী। রাবণের প্রতি আদিবাসীদের ভক্তি বুঝে আজও হিন্দুত্ববাদীরা থরথরি কম্পমান হয় আশ্রয় নেয় আর্য্যরাজা রাম আর তাঁর ভৃত্য বজরংবলীর ভক্তিদূর্গদেশে।

এরপর …রাজকাহিনী — তিন

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4873 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...