প্রাকৃতিক দুর্যোগে মেয়েদের বিড়ম্বনা

জয়িতা রায় চৌধুরী

 


লেখক পুনে-র FLAME বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির সহ-অধ্যাপক। মূল ইংরাজি লেখাটি নিচে দেওয়া হল। বাংলায় অনুবাদ করেছেন সত্যব্রত ঘোষ।

 

 

 

দীর্ঘ সময় ধরে বন্যা পরিস্থিতি চলার মতো প্রাকৃতিক আঘাতের দরুন কৃষি উৎপাদনে অত্যন্ত খারাপ প্রভাব পড়ে। তাছাড়া, এই ধরনের চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া উন্নয়নশীল দেশের ক্ষুদ্র মাপের কৃষিগোষ্ঠীগুলির ওপর অতিরিক্ত চাপও সৃষ্টি করে। কারণ সেখানকার বেশিরভাগ দরিদ্র কৃষকরাই কৃষিকার্যের জন্য মূলত বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং, উন্নয়নশীল দেশের গ্রামীণ পরিবারগুলির জন্যে দুর্ভোগের উৎস হয়ে উঠেছে আবহাওয়ার পরিবর্তন। এই ধরনের প্রাকৃতিক আঘাতের ফলে তাঁদের আয় কমে এবং সম্পত্তিও নষ্ট হয়।

বন্যা ভারতে এক অভিশাপ। বিশেষত তটভূমিগুলিতে বন্যার ভয়াবহতা এবং প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এমার্জেন্সি ইভেন্টস ডাটাবেস (EM-DAT)-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়সীমায় মোট ১৯৩টি বন্যা হয়েছে, সেগুলিতে ৪৩,৩৮২ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ৬,২২,০০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। ভারতে বন্যার কারণেই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু ঘটে থাকে— EM-DAT-এর থেকে জানা যাচ্ছে, ১৯৮৩ থেকে ২০১৩ অবধি যত মৃত্যু হয়েছে তার প্রায় ৩৯ শতাংশের জন্য দায়ী বন্যা পরিস্থিতি। বন্যা তাই ভারতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

ভারতে ৬৯ শতাংশ পরিবার গ্রামগুলিতে বসবাস করে, যা ভারত সরকারের ২০১১-১২-র কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব পরিস্থিতি (EUSI) রিপোর্ট অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার ৭১ শতাংশ। কৃষিকার্যের উপর একান্ত নির্ভরতা এবং ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলা বন্যা ও সাইক্লোনের ফলে গ্রামের এই মানুষগুলির নিয়মিত উপার্জনে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বারে বারে বন্যা হওয়ায় ফসল, বাড়িঘর এবং গণ-পরিকাঠামোগুলি নষ্ট হচ্ছে, যার ফল ভুগছেন গ্রামীণ পরিবারগুলি। দেখা যাচ্ছে ১৯৮০ থেকে ২০১১ অবধি ঘটে আসা বন্যাগুলিতে মোট নষ্ট হওয়া ফসলের পরিমাণ আমাদের জিডিপি-র প্রায় ০.১৮ শতাংশ। গ্রামীণ পরিবারের মেয়েদের কৃষিকাজে অংশগ্রহণ কিন্তু ব্যস্তানুপাতিক। তাঁরা সমস্ত কাজই প্রায় করেন, কিন্তু মজুরি পান অনেক কম। এবার এই বন্যা জাতীয় দুর্যোগে শস্যের ক্ষতি হওয়ার অভিঘাত মেয়েদের ওপরেই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পড়ে। কারণ, গ্রামীণ পুরুষদের একটা বড় অংশই কৃষিকাজ থেকে অ-কৃষিকাজে সরে গেলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা খুব একটা ঘটেনি।

২০১১-১২ নাগাদ ভারতের ৭৫ শতাংশ মহিলা জীবন নির্বাহের জন্য কৃষিক্ষেত্রের ওপর নির্ভর করতেন। তুলনামূলকভাবে সেইসময়ে কৃষিকার্যে নিযুক্ত পুরুষের সংখ্যা ছিল ৫৯ শতাংশ (EUSI, Govt of India)। হ্যাঁ, এটা সত্যি, অ-কৃষি জাতীয় ক্ষেত্রগুলিতে ঢোকার ফলে তাঁদের কিছু আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি হয়েছে, কৃষিকাজ নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় ভোগার বিড়ম্বনাও কমেছে। তবুও কিন্তু, এই পরিবর্তন ঘটেছে মূলত পুরুষদেরই, মেয়েদের নয়। গ্রামের বহু মেয়েই হয় নিজেদের পরিবারের জমিতে অথবা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অন্যের জমিতে কাজ করতে বাধ্য হন। তার একটি কারণ, অন্য কোনও উপার্জনের ক্ষেত্রে হয় তাঁদের প্রবেশাধিকার নেই, নয়তো যাতায়াতে নানারকম বাধা-নিষেধ থাকায় অ-কৃষি জাতীয় কাজে ঢোকার ক্ষেত্রে তাঁদের বিশেষ সুবিধা হয় না। তাই পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এখনও কৃষিক্ষেত্রের ওপরেই বেশি নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়। আমাদের দেশের মহিলাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শৌচাগার এবং জীবন নির্বাহের অন্য উপায়গুলির অধিকার থেকে বঞ্চিত। তার ওপরে নানারকম সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিধিনিষেধগুলিও তাঁদের ওপর বোঝার মতো চেপে বসে আছে।

২০০৯ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে দেখা যায় মেয়েদের জমির ওপর অধিকারও যথেষ্ট কম। মাত্র ১০ শতাংশ মহিলার কাছে জমির মালিকানা রয়েছে। শুধু জমিই নয়, উৎপাদনের উপকরণ এবং বাজারগুলির ওপরেও মেয়েদের নিয়ন্ত্রণ প্রায় না-থাকবার মতো। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে এবং দুঃসময়ের মোকাবিলা করতে মেয়েদের অনেক বেশি বেগ পেতে হয়। সমাজে নানা লিঙ্গভিত্তিক নিয়মকানুন বর্তমান। তার সঙ্গে সম্পদ ব্যবহারের মাত্রাও অসম। এইসবের কারণেই অ-কৃষিকার্যে মেয়েদের অংশগ্রহণ সীমিত। পারিবারিক দায়িত্বপালনের বোঝাও মেয়েদেরই বইতে হয়। ফলে বাইরে গিয়ে অন্য কাজে নিযুক্ত হওয়ার সুযোগও মেয়েদের তুলনামূলকভাবে কম। একদিকে বিকল্প অকৃষিকার্যে নিযুক্তির ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা, অন্যদিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কাজে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাস্তব সীমাবদ্ধতা— আমাদের এই পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এসব কারণেই বন্যা-জাতীয় দুর্যোগে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা অনেক বেশি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন।

ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট ২০০১ সালে অভিজ্ঞতাভিত্তিক এক গবেষণা (Roy Chowdhury et al.) প্রকাশ করে। তাতে দেখা যাচ্ছে বাড়ির বাইরে মেয়েদের চলাচল এবং কাজেকর্মে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কীভাবে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক নিয়মগুলি নিষেধের শৃঙ্খল হয়ে ওঠে। বন্যা জাতীয় দুর্যোগে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদেরই বেশি বিড়ম্বনায় পড়ার এটাও একটা বড় কারণ। উক্ত গবেষকরা ১৯৮৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে ভারতের ১৯টি রাজ্যে অসম বণ্টনব্যবস্থায় মানিয়ে নেওয়া মানব উন্নয়নের (ইনইকোয়ালিটি-অ্যাডজাস্টেড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট) নিরিখে বন্যার কারণে মৃত পুরুষ ও মহিলার প্রাণহানির কারণের তারতম্যগুলিকে খতিয়ে দেখেছেন। তাঁদের পরীক্ষানিরীক্ষা থেকে যা উঠে এসেছে তা হল বর্ধিত অসম বণ্টনব্যবস্থায় মানিয়ে নেওয়া মানব উন্নয়ন সূচক (IHDI) পুরুষ ও মহিলাদের ওপর আলাদা আলাদা অভিঘাত ঘটায়, যার ফলে বন্যার কারণে পুরুষদের মৃত্যুসংখ্যা মেয়েদের তুলনায় অনেকটাই কমে যায়। পরীক্ষাগুলি থেকে প্রাপ্ত এই তথ্যগুলি বন্যার সময়ে মেয়েদের বিড়ম্বনাকেই চিহ্নিত করে। ভারতের সমাজব্যবস্থা অনুযায়ী গ্রামের মেয়েদের মূলত ঘরে থেকে গৃহস্থালির কাজকর্ম এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের দেখাশুনা করতে হয়। স্থানীয় সিদ্ধান্তগ্রহণকারী সংস্থাগুলিতে তাঁদের খুব একটা অংশগ্রহণ থাকে না। মেয়েদের এই পারম্পরিক ভূমিকা তাঁদের কার্যত গৃহবন্দি করে ফেলে। এর ফলে সতর্কতামূলক কোনও তথ্য তাঁদের কাছে সরাসরি কমই পৌঁছয়। এবং দুর্যোগের সময় তাঁদের বিড়ম্বনা বাড়তেই থাকে।

দুর্যোগের কারণে প্রাণহানির ঘটনাগুলির বিশ্লেষণ করতে গেলে আর্থিক এবং মানব উন্নয়নের আলোচনা খুবই জরুরি। মানব উন্নয়ন সূচক [The Human Development Index (HDI)] একটি বহুমাত্রিক সূচক যাতে দেশের সামাজিক এবং আর্থিক অগ্রগতি পরিমাপের জন্যে তিনটি জরুরি উপাদানকে হিসেবে আনা হয়— জন প্রতি আয়, শিক্ষা এবং আয়ু। ফলত, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভালো থাকা-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এই বিপর্যয়জনিত মৃত্যু এবং সম্পত্তিহানিকে অনুধাবন করতে HDI জন-প্রতি-আয়ের মাপকাঠির চেয়ে অনেক বেশি উপযুক্ত। HDI-র তিনটি মূল উপাদানের— অর্থাৎ জন-প্রতি আয়, শিক্ষা এবং আয়ু— গিনি সহগ (Gini coefficients) দিয়ে IHDI গঠিত। মূল HDI-তে বণ্টনব্যবস্থার অসাম্যগুলি ধরা পড়ে না, কিন্তু IHDI দিয়ে মানব উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসমতাগুলিকে আমরা বুঝতে পারি।

ভারতের মতো দেশে বন্যার কারণে মৃত্যুর সঙ্গে লিঙ্গভেদের সম্পর্কটি বোঝা বিশেষ করে জরুরি। কারণ, এ-দেশের অধিকাংশ মেয়েরাই আবহাওয়া-সংবেদনশীল কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে মেয়েরা মূলত কৃষি এবং তার সহযোগী অন্যান্য কাজগুলি করেন, যা প্রায়শই বিভিন্ন মাত্রার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পারিবারিক দায়দায়িত্ব এবং পারম্পরিক প্রথাসমূহ তাদের বাইরের জগত তো দূরের কথা, এমনকি গ্রাম-পর্যায়ের জনসভাগুলি থেকেও তাদের দূরে সরিয়ে রাখে। এর ফলে জরুরি এবং সময়োপযোগী তথ্য বা সতর্কতাগুলিও তারা জানতে পারে না। সমাধানের উপায়গুলিও তাই তাদের অজানা রয়ে যায়।

লিঙ্গ-সংবেদনশীল একটি কার্যপ্রক্রিয়া তৈরি করা তাই সরকারের পক্ষে একান্ত আবশ্যক। লক্ষ্য অবশ্যই হবে দুর্যোগজনিত প্রাণহানির সংখ্যা শূন্যেতে নামিয়ে আনা। সামাজিক, রাজনৈতিক এবং আর্থিক সিদ্ধান্ত নির্ধারণে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি, যাতে মেয়েদের বিরুদ্ধে পারম্পরিক সংস্কৃতির একপেশে ধারণাগুলিকে বাদ দেওয়া যায়। তাছাড়াও, লিঙ্গ-ভিত্তিক বাজেটে ব্যয় এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকলে বন্যার কারণে লিঙ্গভিত্তিক এই বিড়ম্বনা কমতে থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা সরকারকে একটি সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে যেখানে IHDI এবং লিঙ্গ-নির্বিশেষে বন্যার কারণে প্রাণহানির ক্ষেত্রে তার অভিঘাতগুলিকে ভারতের নিজস্ব প্রসঙ্গে বিবেচনা করে প্রয়োগ করতে হবে। দুর্যোগ হেতু প্রাণহানি কমানোর জন্যে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নীতিসমূহ রচনা ও প্রয়োগ একান্ত আবশ্যিক।


Women’s vulnerability to the effects of natural disasters

Joyita Roy Chowdhury

Assistant Professor of Economics, FLAME University, Pune

Environmental shocks like prolonged floods have major implications for agricultural production. Moreover, these extreme weather conditions exert additional pressures on small farming communities in developing countries where most poor farmers depend on rain-fed agriculture. Therefore, climate variability is a critical source of risk for rural households in developing countries. These shocks impose costs on them primarily through loss of income and destruction of assets.

The phenomenon of natural disasters in the form of high floods is widespread in India, mainly in the coastal belts. Between 1983 and 2013, 193 floods killed 43,382 people and affected 622 million people (Emergency Events Database (EM-DAT)). Floods have caused the highest death toll, with nearly 39% of the people killed due to floods between 1983 and 2013 (EM-DAT). Hence, flooding is the most lethal disaster in India.

In India, 69% of households live in rural areas, accounting for 71% of the total population (Govt. Of India, Employment and Unemployment Situation in India (EUSI), 2011-2012). The high dependence on agriculture with the increasing frequency of floods and cyclones creates extreme volatility of income. The frequent occurrence of floods adversely affects rural households through damage to crops, houses, and public infrastructure, with crop losses at 0.18% of total GDP annually due to floods between 1980 and 2011. Women in rural India are disproportionately occupied in the agricultural sector for their livelihood and are most likely to be impacted by crop damage caused by flood disasters. No significant income diversification has occurred for women despite a structural shift of employment from the agricultural to the non-agricultural sector.

In 2011-12, 75% of the female had to depend on the agricultural sector for their livelihoods compared to 59% of the male workforce (EUSI, Govt. of India, 2011-12). Although the access to the non-agricultural sector for better economic opportunities helps to reduce the uncertainties faced by farm households, this opportunity is most likely to be opted by men relative to women. Many rural women work on family farms or as casual wage laborers due to lack of access to resources and restrictions on mobility to take up alternate employment opportunities in non-agricultural sectors. Therefore, women depend more heavily on the agricultural sector than do male workers. Even today, a significant proportion of women do not have access to education, health care, sanitation, and livelihood measures. In addition, social and cultural norms restrict women’s mobility from the agricultural sector to non-agricultural sectors.

According to the report published by the United Nations (2009), women have limited rights over land, with fewer than 10% of women owning land. Less control over productive assets and markets hinders women’s ability to adapt and respond to natural disasters. Gender social norms coupled with unequal access to resources adversely affect female labor force participation in the non-agricultural sector. A disproportionate burden of family responsibility is placed on women, hindering their ability to opt for outside employment opportunities. The lack of alternate non-agricultural employment opportunities coupled with the mobility constraints forced upon women by the traditional cultural practices in the patriarchal social system contributes to making them more vulnerable than men to flood disasters.

An empirical study by Roy Chowdhury et al. (2001), published in World Development, showed how social and cultural norms restrict women’s mobility and participation outside the household, resulting in greater vulnerability than men to flood disasters. The authors examined the differential impact of inequality-adjusted human development on male and female deaths due to floods for 19 Indian states from 1983 to 2013. The study finds that an increase in the inequality-adjusted Human Development Index (IHDI) affected men and women differently as higher human development greatly reduced male fatalities from floods compared to female flood fatalities. These findings indicate the greater vulnerability of women to floods. Given that rural women in India are primarily confined to household chores and family care work, they are not fully capable of participating in local decision-making. Thus, women’s traditional role behavior and social responsibilities impose structural constraints on their participation in activities outside the household, which reduces their access to warning information, thus increasing their vulnerability to disasters.

In particular, when we focus on disaster-related deaths, it is essential to consider a comprehensive measure of economic and human development. The Human Development Index (HDI) is a multi-dimensional index that combines three essential indicators: per capita income, education, and longevity to measure a country’s social and economic progress. Thus, HDI is a better measure than per-capita income to assess disaster-related mortalities and economic losses closely associated with social and economic well-being. The inequality-adjusted human development index (IHDI) is constructed by estimating the Gini coefficients for three major parameters of HDI; income, education, and longevity. The original HDI does not account for distributional concerns; however, the IHDI helps us understand inequalities in human development.

Estimating the relationship between gender and flood-related deaths is important, particularly in the context of India, where most women depend on climate-sensitive agriculture. Rural women in India are mostly occupied in the agriculture and allied sectors, which suffer frequent crop damages due to varying degrees of natural disasters. The familial responsibilities and traditional practices restrict their interaction with the outside world, including participation in village-level public meetings. In addition, these practices severely limit their access to critical and timely information, including flood warnings and mitigation measures.

The government needs to prepare gender-responsive actions, leading to a zero-disaster mortality rate. Enhancing the involvement of women in social, political, and economic decision-making is essential, including the electoral process, which can eliminate the traditional cultural bias against women. In addition, increased expenditure on gender budgeting and greater participation of women in political decision-making can reduce gender-based vulnerability to floods. Moreover, the government must focus on a comprehensive measure of development by considering the application of the inequality-adjusted HDI and its impact on gender-disaggregated mortality due to floods in the Indian context. This would help create gender-sensitive policies to mitigate disaster fatalities.

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4879 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...